নালিতাবাড়িতে নলকূপ খননের সময় বেরিয়ে এল গ্যাস
Published: 24th, October 2025 GMT
শেরপুরের নালিতাবাড়িতে নলকূপ খনন করার সময় প্রাকৃতিক গ্যাসের সন্ধান পেয়েছেন এলাকাবাসী। উপজেলার রুপনারায়নকুড়া ইউনিয়নের গাছগড়া গ্রামের হোটেল শ্রমিক নূর মোহাম্মদের বাড়িতে নলকূপ বোরিং করার সময় গ্যাস বেরিয়ে আসে বলে জানান তারা। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে গাছগড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায় অনেক মানুষ জটলা করে আছেন নূর মোহাম্মদের বাড়িতে।
স্থানীয়রা জানান, গত ১৪ অক্টোবর (মঙ্গলবার) সকালে মিস্ত্রিরা টিউবওয়েলের বোরিং শুরু করেন। দেড় ইঞ্চি পাইপ দিয়ে ৫৫ ফুট বোরিংয়ের পর পাইপ দিয়ে অনবরত গ্যাস আসতে থাকে। এরপর নতুন করে আরো দুইটি স্থানে ৪০ ফুট বোরিং করার পরেও গ্যাস পাওয়া যায়। পরে মিস্ত্রিরা দুইটি বোরিং মাটি চাপা দিয়ে রাখলেও একটি দিয়ে অনবরত গ্যাস বের হতে থাকে। এই গ্যাস দিয়ে গত ১০ দিন ধরে খাবার রান্না করছেন অনেকে।
বাড়ির মালিক নূর মোহাম্মদ বলেন, “গ্যাস একটি ঝুকিপূর্ণ জিনিস। মাটির নিচে কি পরিমাণ গ্যাস আছে এটা তো বুঝা যায় না। এই আগুন যদি মানুষের ক্ষতি করে তাহলে তো বিপদ। সরকার যদি এই জায়গা খনন করে দেখতো, তাহলে আমি নিশ্চিন্ত হতাম। আমিতো ভয়ে আছি। কখন যে কোন বিপদ হয় আল্লাহ ভালো জানেন।”
স্থানীয় যুবক শরিফুল ইসলাম বলেন, “গ্যাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক সম্পদ। এই সম্পদ সরকারের। সাম্প্রতিক সময়ে পাশ্ববর্তী জামালপুরে গ্যাসের খনির সন্ধান পাওয়া গেছে। এখানেও গ্যাস থাকতে পারে। তাই সরকারের এদিকে নজর দেওয়া দরকার। সরকার অনুসন্ধান করলে আমাদের সেই কাঙ্খিত সোনার হরিণ মিলতেও পারে।”
রুপনারায়নকুড়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ হযরত বলেন, “গ্যাস বের হওয়ার খবর শুনে ঘটনাস্থলে এসে আমি সত্যতা পেয়েছি। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে (ইউএনও) অবগত করে ভিডিও পাঠিয়েছি। এই বিষয়টি নিয়ে আমরা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি। কখন কি হয় বুঝা মুসকিল। দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি ব্যবস্থা দরকার।”
নালিতাবাড়ির ইউএনও ফারজানা আক্তার ববি বলেন, “বিষয়টি স্থানীয়ভাবে অবগত হয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে এনেছি। এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/তারিকুল/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম হ ম মদ সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
বরিশালে সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডিসি-ইউএনওর সামনে হামলা–ভাঙচুর
বরিশালের মুলাদীতে একটি সেতুর নাম উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান পণ্ড হয়ে যায়।
আজ শনিবার সকালে মুলাদী উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের আড়িয়াল খাঁ নদীর ওপর নির্মিত একটি সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটে। অনুষ্ঠানের জন্য সেখানে উপস্থিত জেলা প্রশাসক (ডিসি), উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) সামনেই হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলাকারীরা সেতুর নামফলক, সভামঞ্চ ও চেয়ার ভাঙচুর করেন এবং অনুষ্ঠানস্থলে বিছানো লালগালিচা তুলে নিয়ে যান। পরে মুলাদী ও পার্শ্ববর্তী মাদারীপুর জেলার কালকিনি থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রত্যক্ষদর্শী কাচিচর দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা সাইফুল ইসলাম বলেন, শনিবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে বরিশালের জেলা প্রশাসক মো. খায়রুল আলম, ইউএনও মো. গোলাম সরওয়ার, মুলাদী থানার ওসি মো. সফিকুল ইসলামসহ অন্য কর্মকর্তারা সেতুর পশ্চিম প্রান্তে উপস্থিত হন। সকাল ১০টার দিকে নাজিরপুর ও রামারপোল গ্রামের লোকজন সেতুর পূর্ব পাশ থেকে ‘উদ্বোধন মানি না’ স্লোগান দিতে দিতে অনুষ্ঠানস্থলে আসেন। এরপর জেলা প্রশাসকসহ কর্মকর্তাদের সামনেই নামফলক, মঞ্চ ও চেয়ার ভাঙচুর করা হয়।
স্থানীয় সূত্রের ভাষ্য, সেতুটির পূর্বনির্ধারিত নাম ছিল ‘নাজিরপুর–রামারপোল সৌহার্দ্য সেতু’। স্থানীয় লোকজনের মতামত উপেক্ষা করে নাম পরিবর্তন করে ‘৩৬ জুলাই সেতু’ নামে উদ্বোধনের চেষ্টা করা হচ্ছিল।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঢাকার সঙ্গে নাজিরপুর এলাকার যোগাযোগ উন্নয়নের লক্ষ্যে ২০১৪ সালে আড়িয়াল খাঁ নদীর ওপর ‘নাজিরপুর–রামারপোল সৌহার্দ্য সেতু’ নামে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ থাকার পর চলতি বছর মূল সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হয়। তবে সংযোগ সড়কের কাজ অসম্পূর্ণ থাকা অবস্থায় মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তে সেতুটির নাম পরিবর্তন করে ‘৩৬ জুলাই সেতু’ রাখা হয় এবং ৬ ডিসেম্বর উদ্বোধনের দিন নির্ধারণ করা হয়।
মুলাদী থানার ওসি মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় কিছু লোকের হামলা ও ভাঙচুরের কারণে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান পণ্ড হয়ে গেছে।
মুলাদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. গোলাম সরওয়ার বলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে সেতুটির নাম পরিবর্তন করে ‘৩৬ জুলাই সেতু’ নামে উদ্বোধনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তবে নাম পরিবর্তন নিয়ে স্থানীয়রা আগেই আপত্তি জানিয়ে অভিযোগ দিয়েছিলেন, যা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছিল।