দক্ষিণ কোরিয়ার অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের বার্ষিক বেতন বাড়ানো হয়েছে। দেশটির সরকার গতকাল রোববার এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

২০২৫ সালের জন্য ইউনের বেতন আগের বছরের (২০২৪ সাল) চেয়ে ৩ শতাংশ বাড়িয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার মুদ্রায় ২৬২ দশমিক ৬ মিলিয়ন (২৬ কোটি ২৬ লাখ) করা হয়েছে। মার্কিন ডলারের হিসাবে তা ১ লাখ ৭৯ হাজার।

সবাইকে হতবাক করে দিয়ে গত ৩ ডিসেম্বর দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন জারি করেছিলেন ইউন। কিন্তু তীব্র প্রতিবাদ-প্রতিরোধের মুখে মাত্র ছয় ঘণ্টার মাথায় তিনি তা প্রত্যাহারে বাধ্য হন।

স্বল্পস্থায়ী এই সামরিক আইন জারির জেরে গত ১৪ ডিসেম্বর ইউনকে দেশটির পার্লামেন্টে অভিশংসন করা হয়। প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব থেকে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

রাষ্ট্রদ্রোহ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে শুরু হয় ফৌজদারি তদন্ত। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তদন্তকারীদের তলবে হাজির হতে ইউন অস্বীকৃতি জানান। এর জেরে গত ৩১ ডিসেম্বর ইউনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন দেশটির একটি আদালত।

ইউনকে গ্রেপ্তারে ৩ জানুয়ারি প্রেসিডেন্টের বাসভবন কমপ্লেক্সে যান দেশটির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের দুর্নীতি তদন্ত কার্যালয়ের (সিআইও) কর্মকর্তারা। তাঁদের সঙ্গে ছিল পুলিশ। কিন্তু প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তা বাহিনীর (প্রেসিডেনশিয়াল সিকিউরিটি সার্ভিস-পিএসএস) বাধার কারণে ইউনকে গ্রেপ্তারে ব্যর্থ হন তদন্তকারীরা।

ইউনের বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানার মেয়াদ ৬ জানুয়ারি শেষ হয়। গ্রেপ্তারি পরোয়ানার মেয়াদ আদালত বাড়িয়েছেন বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।

দক্ষিণ কোরিয়ার সাংবিধানিক আদালত ইউনের অভিশংসন বহাল রাখলে তাঁকে প্রেসিডেন্টের পদ থেকে চূড়ান্তভাবে অপসারণ করা যাবে। ফলে তাঁর ভাগ্য ঝুলে আছে সাংবিধানিক আদালতের সিদ্ধান্তের ওপর। সাংবিধানিক আদালতের সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত তিনি পদে বহাল থাকছেন। তবে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সাময়িক বরখাস্ত অবস্থায় আছেন তিনি।

ইউন সামরিক আইন জারির যৌক্তিকতা তুলে ধরতে রাষ্ট্রবিরোধী শক্তি ও প্রতিবেশী উত্তর কোরিয়ার হুমকির কথা বলেছিলেন। কিন্তু দ্রুতই স্পষ্ট হয়, বাহ্যিক কোনো হুমকির কারণে তিনি সামরিক আইন জারি করেননি। বরং অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সমস্যা সামাল দিতে তিনি এ পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।

ইউনের বেতন বাড়ানোর খবর দক্ষিণ কোরিয়ায় সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। দেশটির নাগরিকদের কেউ কেউ বলেছেন, তাঁরা বিশ্বাসই করতে পারছেন না যে সাময়িক বরখাস্ত অবস্থায় ইউন এখনো বেতন পাচ্ছেন। আর ইনক্রিমেন্ট তো দূরের কথা।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কেউ কেউ বলছেন, ইউনের বার্ষিক ৩ শতাংশ বেতন বৃদ্ধি দেশটির ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির প্রায় দ্বিগুণ।

এক্সে (সাবেক টুইটার) এক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘যেখানে মানুষের বার্ষিক ন্যূনতম মজুরি বেড়েছে ১ দশমিক ৭ শতাংশ, সেখানে ইউনের বেড়েছে ৩ শতাংশ। তাঁর এই বেতন বৃদ্ধি কিসের জন্য?’

এক্সে দেওয়া এই পোস্টে হাজার হাজার ‘লাইক’ পড়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যুর সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব।’’

তিনি মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান এলে যেকোনো অসাংবিধানিক প্রক্রিয়া ঠেকানো যাবে।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনকে যদি অনিশ্চিত করা হয় বা বিলম্বিত করা হয়, তাহলে তার সুযোগ নেবে ফ্যাসিবাদী বা অসাংবিধানিক শক্তি। এর পরিণতি জাতি অতীতে বহুবার ভোগ করেছে। আমরা আবার সে পরিস্থিতি চাই না।’’

অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে পৃথক এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতেই সাংবিধানিকভাবে এই সরকার গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সে দেওয়া সেই মতামত এখনো বহাল আছে। এর বিপরীতে সুপ্রিম কোর্ট কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তাই এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা আসলে রাজনৈতিক বক্তব্য, এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই।’’

সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘যেকোনো সাংবিধানিক আদেশ জারি হলে তা আগামীকাল বা পরশু চ্যালেঞ্জ হতে পারে। আমরা এমন খারাপ নজির জাতির সামনে আনতে চাই না। তাই সমাধানের বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। সবাইকে বিবেচনায় নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।’’

পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের অধিকার আছে। তবে পিআর পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়, শেষ পর্যন্ত জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’’

তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘‘পিআর পদ্ধতিতে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের ঝুঁকি থেকে যায়। তাতে রাষ্ট্র ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ সম্ভব হয় না। আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যেতে পারি না।’’

সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘জনগণই হলো সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। এই দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বারবার গণতন্ত্রকে সংকট থেকে উদ্ধার করেছে।’’

আগামী সংসদে কিছু মৌলিক বিষয়ে সংশোধনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘‘আমরা কিছু বিষয়ে ইতোমধ্যে একমত হয়েছি। তবে, ঐকমত্য কমিশনের সনদের ভেতরে যেসব পরিবর্তন হবে, সেগুলোতে অবশ্যই গণভোট নিতে হবে।’’

ঢাকা/আসাদ/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
  • জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ আবারও রাস্তায় নামবে: জামায়াত নেতা রফিকুল
  • বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে ঐকমত্য না হলে গণভোট ছাড়া উপায় নেই: এবি পার্টি
  • রোহিঙ্গা সমস্যায় রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করতে হবে
  • হুংকার দিয়ে জাতীয় নির্বাচন ঠেকান যাবে না: জাহিদ হোসেন
  • মাঠের জবাব মাঠে দেওয়া হবে: সালাহউদ্দিন 
  • জামায়াত কীভাবে জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করার দাবি তোলে: আনিসুল ইসলাম মাহমুদ
  • জুলাই সনদ নিয়ে যেসব বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে
  • ফরিদপুরে সীমানা নিয়ে ডিসির চিঠি, এলাকাবাসীর ৫ দাবি
  • জামায়া‌তের তিন‌ দি‌নের কর্মসূচি ঘোষণা