খুলনায় সাবেক এমপি বাবু ও ৩ পুলিশ কর্মকর্তার নামে চাঁদাবাজির মামলা
Published: 15th, January 2025 GMT
খুলনা-৬ (কয়রা ও পাইকগাছা) আসনের সাবেক এমপি আকতারুজ্জামান বাবু ও তিন পুলিশ কর্মকর্তার নামে চাঁদা দাবির অভিযোগে মামলা হয়েছে। নুরুল ইসলাম নামে স্থানীয় এক স্কুলশিক্ষক বাদী হয়ে মঙ্গলবার কয়রা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেছেন।
মামলায় স্থানীয় তিন ইউপি চেয়ারম্যানসহ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের ১০৮ নেতাকর্মীকেও আসামি করা হয়েছে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে সিআইডিকে তদন্তের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে আছেন– কয়রা সদর ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বাহারুল ইসলাম, বাগালী ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ গাজী, একই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আব্দুস সাত্তার পাড়, কয়রা থানা পুলিশের উপপুলিশ পরিদর্শক মো.
অভিযোগ করা হয়েছে, মামলার আসামিরা বিভিন্ন সময়ে বাদীর কাছে চাঁদা দাবি করেছেন এবং হুমকি দিয়েছেন। মামলায় জড়িত থাকা পুলিশ সদস্যরা সাবেক এমপি বাবুর নির্দেশে নাশকতার মামলাসহ বিভিন্ন মামলায় জড়িয়ে ও ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়ে চাঁদা আদায় করেছেন। বাদীসহ অন্যরা একটি মামলায় খুলনা জেলা আদালতে হাজিরার জন্য যাওয়ার পথে এজাহারে উল্লেখিত আসামিরা ও অজ্ঞাতনামা শতাধিক ব্যক্তি তাদের গতিরোধ করে গাড়ি থেকে নামিয়ে মারধর করে টাকা ও স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেয়। এ সময় তারা বাদীর কাছে ১৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। পরবর্তী সময়ে চাঁদার টাকা না দেওয়ায় বাদীর বসতঘরে প্রবেশ করে তাঁর স্ত্রীসহ পরিবার সদস্যদের অস্ত্র ঠেকিয়ে জিম্মি করে নগদ অর্থ লুট করে নিয়ে যায়।
মামলার বাদী কয়রা উপজেলার শরিষামুঠ গ্রামের নূরুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আসামিরা যোগসাজশে আমিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের নানাভাবে হয়রানি করেছে। পুলিশ মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে। বিভিন্ন সময়ে হুমকি-ধমকি দিয়ে চাঁদা আদায়সহ ঘরবাড়িতে লুটপাট করেছে। এখন ন্যায়বিচার পাবেন এ আশায় মামলা করেছেন।
গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে আকতারুজ্জামান বাবুসহ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা পলাতক।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা
হবিগঞ্জে ছোট-বড় মিলেয়ে চা বাগানের সংখ্যা প্রায় ৪১টি। এসব বাগানের বাসিন্দা প্রায় দেড় লাখ। এর মধ্যে, স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ৩২ থেকে ৩৫ হাজার মানুষ চা পাতা উত্তোলনে জড়িত।
চা বাগানে একজন শ্রমিককে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়। এর বিনিময়ে মজুরি পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। অভিযোগ রয়েছে, কোনো কোনো বাগানে নিয়মিত এই মজুরিও দেওয়া হয় না।
শ্রমিকদের দাবি, দৈনিক মজুরি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করতে হবে। বর্তমানে যে মজুরি পাওয়া যায় তা দিয়ে সংসার চলে না। প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। সেই সঙ্গে চা শ্রমিকদের নৈমিত্তিক ছুটির ব্যবস্থা করতে হবে।
আরো পড়ুন:
বৈষম্য কেন? নারী শ্রমিকেরা পান না সমান মজুরি
ধান কাটায় আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার, পেশা বদলাচ্ছেন কৃষি শ্রমিকেরা
সরেজমিনে কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, শ্রমিকরা ছোট্ট কুঠুরিতে গাদাগাদি করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসবাস করেন। পুষ্টিকর খাবার তো দূরের কথা, দু-বেলা পেটভরে খেতে পারেন না।
শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘‘দুই বছর অন্তর চা শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি ও সমস্যা নিয়ে চা বাগান মালিক পক্ষের সংগঠনের সঙ্গে চা শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিনিধির বৈঠক হয়। সর্বশেষ গত বছরের আগস্টে বৈঠক হয়েছে। সে সময় ৮ টাকা ৫০ পয়সা বৃদ্ধি পেয়ে মজুরি ১৭৮ টাকা ৫০ নির্ধারিত হয়েছে।’’
শ্রমিকদের কষ্টের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এই টাকায় চলা যায় না। দেশের কোথাও এতো সস্তা শ্রমের দাম নেই। বর্তমানে একজন কৃষিশ্রমিক দিনে ৫০০-১০০০ টাকা আয় করেন, একজন রিকশাচালকের প্রতিদিনের আয় ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা। সেখানে একজন চা শ্রমিক পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। এজন্য তাকে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়।’’
চা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে নাটক ও গানের মাধ্যমে দাবি জানিয়ে আসা জেলার চুনারুঘাট উপজেলার দেউন্দি প্রতীক থিয়েটারের সভাপতি সুনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘দৈনিক ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা মজুরিতে শ্রমিকদের চলা কঠিন হয়ে পড়েছে। অচিরেই মজুরি ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হোক। এছাড়া, শ্রমিকদের আরো সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’’
ঢাকা/রাজীব