জুলাই-আগস্টে ছাত্র আন্দোলনের সময় সংঘটিত গণহত্যার বিবরণ, তথ্য-উপাত্তসহ সব নথি আলাদাভাবে সংরক্ষণে বিটিআরসি-এনটিএমসিকে নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তদন্ত সংস্থার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল গতকাল বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন। তদন্ত সংস্থাকে এ কাজে সহযোগিতা করতে সব মোবাইল অপারেটর ও ইন্টারনেট প্রোভাইডারদেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

পরে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা আদেশ ছাড়াই যে কোনো ব্যক্তি, কর্তৃপক্ষকে ডাকতে এবং যে কোনো তথ্য-উপাত্ত চাওয়ার এখতিয়ার রাখেন। 

হাসিনাসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ
২০১৩ সালে লক্ষ্মীপুর জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ডা.

ফয়েজ আহমদকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর সামরিক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ জমা পড়েছে। ফয়েজ আহমদের বড় ছেলে হাসানুল বান্না গতকাল ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে এ অভিযোগ জমা দেন। 
২০১৩ সালের ২৩ ডিসেম্বর গভীর রাতে ফয়েজ আহমদকে শহরের উত্তর তেমুহনী এলাকায় নিজ বাসায় গুলি করে হত্যার অভিযোগ রয়েছে র‍্যাবের বিরুদ্ধে। স্বজনের অভিযোগ, র‍্যাব পরিচয়ে ঢুকে ফয়েজকে গুলি করার পর বাড়ির ছাদ থেকে ফেলে হত্যা করা হয়েছে।

মুগ্ধর পরিবারের অভিযোগ দাখিল
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনে অভিযোগ দিয়েছেন মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধর পরিবারের দুই সদস্য। গতকাল অভিযোগ দেওয়ার পর মুগ্ধর বড় ভাই মীর মাহমুদুর রহমান দীপ্ত বলেন, নির্দিষ্ট কারও নাম উল্লেখ না করে শুধু অভিযোগ দায়ের করেছি। ট্রাইব্যুনাল তদন্ত করে যে বা যারা প্রকৃত অপরাধী ও যারা তাদের এই অপরাধ করতে সাহায্য করেছে, তাদের মামলায় আসামি করবেন। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অপর ধ তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী

২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সুদান এক ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের মধ্যে পড়ে। ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নিতে দেশটির সামরিক বাহিনী এবং শক্তিশালী আধা সামরিক গোষ্ঠী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে শুরু হওয়া তীব্র লড়াই থেকে এই গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধে পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয় এবং সেখানে গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার অভিযোগও ওঠে।

সম্প্রতি আরএসএফ এল-ফাশের শহরটি দখল করার পর এর বাসিন্দাদের নিয়ে বড় ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত সারা দেশে দেড় লাখের বেশি মানুষ মারা গেছেন এবং প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। জাতিসংঘ এটিকে বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সংকট বলে অভিহিত করেছে।

পাল্টাপাল্টি অভ্যুত্থান ও সংঘাতের শুরু

১৯৮৯ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে ২০১৯ সালে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই দফায় দফায় যে উত্তেজনা চলছিল, তার সর্বশেষ পরিস্থিতি হচ্ছে বর্তমান গৃহযুদ্ধ।

বশিরের প্রায় তিন দশকের শাসনের অবসানের দাবিতে বিশাল জনবিক্ষোভ হয়েছিল। তারই প্রেক্ষিতে তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয় সেনাবাহিনী। কিন্তু দেশটির মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যায়। যার পরিপ্রেক্ষিতে একটি যৌথ সামরিক-বেসামরিক সরকার গঠিত হয়। কিন্তু ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে আরও একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারটিকে উৎখাত করা হয়। এই অভ্যুত্থানের কেন্দ্রে ছিলেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ও দেশটির কার্যত প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তাঁর ডেপুটি ও আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো।

এই দুই জেনারেল দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ ও বেসামরিক শাসনে ফিরে যাওয়া নিয়ে প্রস্তাবিত পদক্ষেপে একমত হতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে মূল বিরোধের বিষয় ছিল প্রায় এক লাখ সদস্যের আরএসএফ-কে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা এবং নতুন এই যৌথ বাহিনীর নেতৃত্ব নিয়ে। ধারণা করা হয়, দুজন জেনারেলই তাঁদের ক্ষমতা, সম্পদ ও প্রভাব ধরে রাখতে চেয়েছিলেন।

আরএসএফ সদস্যদের দেশের বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হলে সেনাবাহিনী বিষয়টিকে নিজেদের জন্য হুমকি হিসেবে দেখে। এ নিয়ে ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। সেই লড়াই দ্রুত তীব্র আকার ধারণ করে এবং আরএসএফ খার্তুমের বেশির ভাগ অংশ দখল করে নেয়। যদিও প্রায় দুই বছর পর সেনাবাহিনী খার্তুমের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়।

জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান (বামে) এবং আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো (ডানে)

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুদানে ‘গণহত্যা’ হয়েছে
  • একাত্তরের গণহত্যার জন্য জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে হবে: আলাল
  • সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী