বিশ্বে ৩৬১ সাংবাদিক কারাবন্দি, বাংলাদেশে চারজন
Published: 18th, January 2025 GMT
বাংলাদেশে গত বছর চার সাংবাদিককে কারারুদ্ধ করা হয়েছে। তাদের সবাইকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ সহযোগী বলে মনে করা হয়। গত বছরের আগস্টে গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে।
সাংবাদিকদের নিয়ে কাজ করা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টসের (সিপিজে) ২০২৪ সালের জেল শুমারি প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল শুক্রবার সিপিজে তাদের ওয়েবসাইটে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, অভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতনের পর পরই তার সমর্থক হিসেবে পরিচিত কয়েক ডজন সাংবাদিক অপরাধ তদন্তের লক্ষ্যবস্তু হন।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী ৩৬১ জন সাংবাদিক কারারুদ্ধ হয়েছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আটক হয়েছেন চীনে। দেশটিতে ৫০ জনকে আটক করা হয়। এর পরই আছে ইসরায়েল। দেশটিতে আটক আছেন ৪৩ জন। ইসরায়েলের আটক করা সব সাংবাদিকই ফিলিস্তিনি।
কারাবন্দি সাংবাদিকদের সংখ্যার ভিত্তিতে সিপিজের করা র্যা ঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪তম। তিন কারাবন্দি সাংবাদিক নিয়ে প্রতিবেশী ভারত আছে ১৫তম স্থানে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতে কারারুদ্ধ তিনজনের মধ্যে দু’জন ২০২৩ সালে কাশ্মির থেকে গ্রেপ্তার হয়েছেন। গত বছর বাংলাদেশ ও ভারতের তুলনায় আফগানিস্তানে কম সংখ্যক সাংবাদিক কারাবন্দি হয়েছেন। দেশটিতে দু’জন সাংবাদিক কারারুদ্ধ হন।
২০২৪ সালে গ্রেপ্তার সাংবাদিকদের মধ্যে একজনকে মৃত্যুদণ্ড ও ১০ জনকে যাবজ্জীবন দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ৫৪ জন সাংবাদিককে ১০ বছরের বেশি ও ৫৫ জনকে পাঁচ থেকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সিপিজের প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজনৈতিক প্রতিবেদকরাই সবচেয়ে বেশি আটক হয়েছেন। ৩৫ সাংবাদিক আটক করে তালিকায় তৃতীয় স্থানে মিয়ানমার, ৩১ জনকে আটক করে চতুর্থ স্থানে বেলারুশ ও ৩০ সাংবাদিকে কারাগারে নিয়ে পঞ্চম স্থানে রয়েছে রাশিয়া।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক র বন দ হয় ছ ন বছর র
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ