উৎসবের শেষ দিনে ‘বলি’, থাকছে চঞ্চল-রুনা ও মেহজাবীনদের সিনেমাও
Published: 19th, January 2025 GMT
ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের পর্দা নামছে আজ। বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে ৯ দিনব্যাপী উৎসবের সমাপনী দিনে প্রধান অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। ৭৫টি দেশের ২২০টি চলচ্চিত্র নিয়ে গত ১১ জানুয়ারি শুরু হয়েছিল উৎসবের ২৩তম আসর। চলচ্চিত্র উৎসব ঘিরে ছিল চলচ্চিত্রপ্রেমীর ভিড়। ‘নান্দনিক চলচ্চিত্র, মননশীল দর্শক, আলোকিত সমাজ’ স্লোগানে উৎসবটির আয়োজন করেছে রেইনবো চলচ্চিত্র সংসদ। আজ সন্ধ্যায় উৎসবের সমাপনী চলচ্চিত্র হিসেবে প্রদর্শিত হবে ‘বলি’। বাংলাদেশের এই চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন ইকবাল চৌধুরী। শেষে সাত ক্যাটেগরিতে সাতটি চলচ্চিত্র পাবে ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের পুরস্কার।
জাতীয় জাদুঘর [সুফিয়া কামাল অডিটোরিয়াম]
দুপুর ১টায় থাকছে চলচ্চিত্র ‘গডস্পিড’। চীনা চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন জিয়াওজিঙ্ক ই। বিকেল ৩টায় প্রদর্শিত হবে চলচ্চিত্র ‘দ্য মোস্ট বিউটিফুল কাবুলি ড্রেস’। আফগানিস্তানের এ চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেছেন কাজিম আজরান। এরপর থাকছে অ্যাস ইফ ইট কুড [বেলজিয়াম], হার স্টোরি [আর্মেনিয়া], বটলস [মরক্কো], আ বার্ড ফ্লিউ [কলম্বিয়া] ক্লার্ক [ভারত] চলচ্চিত্রের প্রদর্শনী।বিকেল ৫টায় প্রদর্শিত রাশিয়ান চলচ্চিত্র ‘এঞ্জেলস ডোন্ট বাজ’। এটি পরিচালনা করেছেন আলেক্সান্ডার সেলিবার্স্তভ।
সন্ধ্যা ৭টায় থাকছে কোরিয়ান চলচ্চিত্র ‘আইলস অব স্নেকস’। এটি পরিচালনা করেছেন ইউ-মিন কিম
শিল্পকলা একাডেমি [জাতীয় চিত্রশালা অডিটোরিয়াম]
দুপুর ১টায় দেখানো হবে চলচ্চিত্র ‘দ্য মিডসামার’স ভয়েস’। এ চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন জুডি জ্যাঙ্ক। বিকেল ৩টা ৩০ মিনিটে হবে ‘কিউর সানা’ চলচ্চিত্রের প্রদর্শনী। স্পেনের এ সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন লুইস গোমেরো। এরপর হবে ‘দ্য এম্পায়ার অব নয়েজ’ [মেক্সিকো], ‘ডন গোয়ো’ [ইকুয়েডর] চলচ্চিত্রের প্রদর্শনী।
বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটে থাকছে ‘নো ল্যান্ডস’, ‘রাজিয়া’, ‘গ্রোন উইথ দ্য ফ্লো’, ‘আ লেজি নুন’, ‘এম’আদার’, ‘পৈতৃক ভিটা’ চলচ্চিত্রের প্রদর্শনী।
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি অডিটোরিয়াম
বিকেল ৩টায় দেখানো হবে চলচ্চিত্র ‘নীল পদ্ম’। বাংলাদেশের এ চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন তৌফিক এলাহী। বিকেল ৫টায় থাকছে চলচ্চিত্র ‘পদাতিক’। ভারতের এ চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন সৃজিত মুখার্জী
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই অভ্যুত্থানের সময় ভিপিএনও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় ইন্টারনেটের পাশাপাশি ওয়েবসাইটে প্রবেশের বিকল্প মাধ্যম ভিপিএন বা ভার্চ্যুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্কও বন্ধ করে দিয়েছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। গণ-অভ্যুত্থানের বিভিন্ন পর্যায়ে থ্রি-জি ও ফোর-জি ইন্টারনেটের গতি দুর্বল করে দেওয়া হয়েছিল।
তথ্যব্যবস্থায় প্রযুক্তির প্রভাব নিয়ে গবেষণাকারী প্রতিষ্ঠান ডিজিটালি রাইটের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। ‘দ্য লংগেস্ট সাইলেন্স: ইন্টারনেট শাটডাউনস ডিউরিং বাংলাদেশ’স ২০২৪ আপরাইজিং’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি বৃহস্পতিবার প্রকাশ করা হয়েছে।
ডিজিটালি রাইটের গবেষণায় গণ-অভ্যুত্থান চলাকালে ২২ দিন ইন্টারনেট বন্ধের (শাটডাউনের) ঘটনাকে পাঁচ ধাপে ভাগ করা হয়েছে। এরপর প্রতি ধাপে ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণের মাত্রা ও ধরন কেমন ছিল, তা বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
প্রতিবেদন তৈরির সঙ্গে যুক্ত ডিজিটালি রাইটের গবেষক তৌহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, দুই ধাপে ইন্টারনেট সম্পূর্ণ ব্ল্যাকআউট হয়েছিল। প্রথমবার ১৮ জুলাই থেকে ২৩ জুলাই এবং দ্বিতীয়বার ৫ আগস্ট। এ দুই ধাপে মোবাইল ডেটা ও ব্রডব্যান্ড সংযোগ সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল। ফোর-জিকে টু-জিতে নিয়ে আসা হয়েছিল। পাশাপাশি ফিল্টারিং প্রযুক্তি ও ক্যাশ সার্ভার বন্ধ করে দিয়ে ইন্টারনেটের গতি ধীর করে দেওয়া হয়েছিল।
সারা বিশ্বে ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের নিয়ন্ত্রণ পর্যবেক্ষণকারী যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অলাভজনক বৈশ্বিক সংস্থা ‘ওপেন অবজারভেটরি অব নেটওয়ার্ক ইন্টারফেয়ারেন্স’র সহযোগিতায় প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।
সময় ও অন্তর্ভুক্ত এলাকার আওতার বিবেচনায় ২২ দিন ইন্টারনেট বন্ধের ঘটনাকে বাংলাদেশে অন্যতম ব্যাপক ‘ইন্টারনেট শাটডাউন’ বলে অভিহিত করা হয়েছে প্রতিবেদনটিতে।
প্রতিবেদনে ইন্টারনেট শাটডাউন ও নানা মাত্রায় নিয়ন্ত্রণকে সময়ভিত্তিক পাঁচ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যেমন প্রথম ধাপ জুলাই ১৫-১৭, দ্বিতীয় ধাপ জুলাই ১৮-২৩, তৃতীয় ধাপ জুলাই ২৪-৩১, চতুর্থ ধাপ আগস্ট ১-৩ ও পঞ্চম ধাপ আগস্ট ৪-৫।
ভিপিএনের ওপর নিয়ন্ত্রণ শুরু হয় ২৪ জুলাই। এ সময় প্রোটন ভিপিএন, নর্ড ভিপিএন ও টানেলবিয়ারের মতো অ্যাপগুলো নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া হয়েছিল। প্রসঙ্গত, ভিপিএন হলো নিরাপদ ও গোপন পথে ওয়েবসাইটে প্রবেশের উপায়, যা ব্যবহারকারীর অবস্থান ও ডেটা গোপন রাখে। বিশেষ করে ব্লকড করে দেওয়া ওয়েবসাইটে প্রবেশে এগুলো ব্যবহার করা হয়।
প্রতিবেদনটি জানাচ্ছে, সারা দেশে মোবাইল নেটওয়ার্ক সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়ার পর থেকে ব্রডব্যান্ড সংযোগের গতি নিয়ন্ত্রণ ও সুনির্দিষ্ট কিছু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করে দেওয়ার মতো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। কোনো ধরনের সরকারি নির্দেশ ও ঘোষণা ছাড়াই তা করা হয়েছিল। একই সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা দিয়ে ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সেবা বন্ধেরও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।
ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি), বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ও টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তর থেকে এসব নির্দেশনা এসেছিল।
ডিজিটালি রাইটের গবেষণা থেকে জানা গেছে, ইন্টারনেটের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপের সিদ্ধান্ত ব্যাপকভাবে বাস্তবায়ন করতে ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান (আইএসপি), ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) এবং মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলোকে সরকার থেকে মৌখিক ও অনানুষ্ঠানিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।
ইন্টারনেটের ওপর নিয়ন্ত্রণ শুরু হওয়ার বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের ১৪ জুলাই রাতে কোটাবিরোধী আন্দোলন বেগবান হওয়ার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় মোবাইল ডেটার প্রবাহকে ধীরগতির করে দেওয়া হয়। ১৫ জুলাই সকাল থেকে শাহবাগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় থ্রি-জি ও ফোর-জি ইন্টারনেটের গতি দুর্বল করে দেওয়া হয়। এরপর আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষাপটে ১৫ জুলাই মধ্যরাত থেকে ১৬ জুলাই থেকে দ্রুতগতির ইন্টারনেটকে বাধাগ্রস্ত করা হয়।
সহিংসতার তীব্রতা বাড়তে থাকলে ১৮ জুলাই থেকে দেশব্যাপী ইন্টারনেট শাটডাউন শুরু করে সরকার। ওই দিন রাত সাড়ে আটটার দিকে ব্রডব্যান্ড সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। আর ওই দিন দিবাগত রাত ১টা ২৯ মিনিটের দিকে মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, যা ২৩ জুলাই পর্যন্ত অব্যাহত ছিল।
২৪ থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, ভিপিএন, মোবাইল ইন্টারনেট ও ব্রডব্যান্ডের গতি কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ১ থেকে ৩ আগস্টের মধ্যে নিয়মিত বিরতিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করে দেওয়া, ভিপিএন বাধাগ্রস্ত করা ও মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ ছিল। ৪ থেকে ৫ আগস্ট সম্পূর্ণ ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউট ও ক্যাশ সার্ভার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল উল্লেখ করা হয়েছে ডিজিটালি রাইটের প্রতিবেদনে।