সা‌বেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব কবির বিন আনোয়ার ও তার স্ত্রী তৌফিকা আহমেদের বিরুদ্ধে মামলা ক‌রে‌ছে দুর্নী‌তি দমন ক‌মিশন। দুজ‌নের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের সত‌্যতা পাওয়ায় রবিবার (১৯ জানুয়ারি) এই দম্প‌তির বিরু‌দ্ধে পৃথক দু‌টি মামলা ক‌রে দুদক।

ক‌মিশ‌নের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এই মামলা দুটি করা হয়েছে। বিকা‌লে দুদ‌কের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো.

আক্তার হোসেন এ তথ‌্য নি‌শ্চিত ক‌রে‌ছেন।

মামলায় সা‌বেক ম‌ন্ত্রিপ‌রিষদ স‌চিব ক‌বিরের বিরুদ্ধে ২ কোটি ৮৪ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং ৯টি ব্যাংক হিসাবে ১৫ কোটি ৩৮ লাখ টাকার বেশি অর্থ অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ আনা হ‌য়ে‌ছে।

আরো পড়ুন:

বিজিবিকে মেরে মহিষ ছিনিয়ে নিলেন বিএনপির নেতাকর্মীরা 

বিএনপি নেতার বাড়িতে মিলল মাদক ও টাকা, স্ত্রী-ছেলে গ্রেপ্তার

পৃথক মামলায় কবির বিন আনোয়ারের স্ত্রী তৌফিকা আহমেদের বিরুদ্ধে ৪ কোটি ৫৩ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ এবং ৬টি ব্যাংক হিসাবে ৭ কোটি ৭৮ লাখ টাকার অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ আনা হ‌য়ে‌ছে।

এই মামলায় কবির বিন আনোয়ার আসামি। স্ত্রীর নামে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও তা দখলে রাখতে সহায়তা করার অভিযোগ এনে ক‌বির‌কে আসা‌মি করা হ‌য়ে‌ছে।

১৯৮৮ সালে বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে সহকারী কমিশনার হিসেবে যোগ দেন কবির বিন আনোয়ার। সরকারের বিভিন্ন দায়িত্ব পালনের পর ২০২২ সালের ১৫ ডিসেম্বর তিনি মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে যোগ দেন এবং পরের বছর, অর্থাৎ ২০২৩ সালের ৩ জানুয়ারি অবসরে যান।

অবসরের পর একই বছরের ৫ জানুয়ারি তিনি আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে দলীয় নির্বাচন কমিটির কো-চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান।

কবির বিন আনোয়ার ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হল ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

আব্দুস শহীদের না‌মে মামলা
অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাবেক কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুস শহীদের বিরুদ্ধে মামলা ক‌রে‌ছে দুর্নী‌তি দমন ক‌মিশন।

৭ কোটি ৭২ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং ১৮টি ব্যাংক হিসাবে ২৬ কোটি ৯৩ লাখ টাকার অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক লেনদেন করার অভিযোগে রবিবার তার বিরু‌দ্ধে এই মামলা করা হয়।

এছাড়া মৌলভীবাজার-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুস শহীদের স্ত্রী উম্মে কুলসুমের বিরুদ্ধে ৩৯ লাখ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে।যাচাই-বাছাই কর‌তে তাকে সম্পদ বিবরণীর হিসাব দা‌খি‌লে নো‌টিশ দে‌বে দুদক।

দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন বলেন, “উম্মে কুলসুমের নামে ও বেনামে আরও সম্পদ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে, সেজন্য তাকে তার সম্পদ বিবরণী দাখিলের নির্দেশ দিয়ে চিঠি পাঠানো হবে।”

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আওয় ম ল গ

এছাড়াও পড়ুন:

আসাদুজ্জামান নূরের চারটি ফ্ল্যাট ও ১০ কাঠা জমি জব্দের আদেশ

সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের ৪টি ফ্ল্যাট ও ১০ কাঠা জমি জব্দ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁর নামে থাকা ১৬টি ব্যাংক হিসাবও অবরুদ্ধ করার আদেশ দেওয়া হয়েছে।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. সাব্বির ফয়েজ আজ সোমবার এ আদেশ দেন।

দুদকের আবেদনে বলা হয়, আসাদুজ্জামান নূরের অর্জিত সম্পদ সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করা যায়নি। তবে তদন্তকালে তাঁর নামে পাওয়া স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ যেন তিনি হস্তান্তর ও স্থানান্তর করতে না পারেন, সে জন্য তা জব্দ ও অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন।

দুদকের পক্ষ থেকে আদালতকে লিখিতভাবে বলা হয়েছে, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকার সম্পদ অর্জন ও ১৫০ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে গত ৩০ জুলাই মামলা করেছে দুদক। তাঁর নামে ৪টি ফ্ল্যাট ও ১০ কাঠা জমি রয়েছে। আরও রয়েছে তাঁর ১৬টি ব্যাংক হিসাব।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূর ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৫ কোটি ৩৭ লাখ ১ হাজার ১৯০ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন এবং তা নিজের দখলে রেখেছেন। এ ছাড়া তাঁর নামে থাকা বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১৯টি হিসাবে ১৫৮ কোটি ৭৮ লাখ ৪৭ হাজার ৮৯৮ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। এই লেনদেনের মাধ্যমে অর্থ স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের অভিযোগ আনা হয়েছে, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও দুদক আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

এজাহারে আরও বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূরের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে ৮৫ কোটি ৭২ লাখ ৬৬ হাজার ৫৯৩ টাকা জমা এবং ৭৩ কোটি ৫ লাখ ৮১ হাজার ৩০৫ টাকা উত্তোলন হয়েছে। এসব লেনদেনের উৎস অস্পষ্ট।

দুদকের অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০০৩-০৪ করবর্ষ থেকে ২০২৩-২৪ করবর্ষ পর্যন্ত আসাদুজ্জামান নূরের বৈধ আয় ছিল ৩২ কোটি ৯৬ লাখ ৮৩ হাজার ৬৮৮ টাকা। এ সময়ে তাঁর পারিবারিক ব্যয় ছিল ৯ কোটি ৩২ লাখ ২৫ হাজার ৭৬১ টাকা। সে অনুযায়ী নিট সঞ্চয় দাঁড়ায় ২৩ কোটি ৬৪ লাখ ৫৭ হাজার ৯২৭ টাকায়। অথচ তাঁর অর্জিত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ২৯ কোটি ১ লাখ ৫৯ হাজার ১১৭ টাকা। এতে ৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকার উৎস পাওয়া যায়নি বলে দুদক জানিয়েছে।

২০০১ সালে নীলফামারী-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আসাদুজ্জামান নূর। এরপর ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও সর্বশেষ ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনের পর সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাবেক মন্ত্রী ও এমপিদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার শুরু করে দুদক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলো। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর বেইলী রোডে নিজ বাসা থেকে আসাদুজ্জামান নূরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আরও পড়ুনআট মাসে ১৯২ একর জমি, ২৮ ভবন ও ৩৮ ফ্ল্যাট জব্দ ১৭ মে ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সিসিটিভি ফুটেজ যাচাই করে কারচুপির অভিযোগকারী ছাত্রীকেই সন্দেহ কমিশনের
  • পুলিশের ৯ কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসর
  • ইতিহাসের দ্রুততম মানবের এখন সিঁড়ি ভাঙতে দম ফুরিয়ে আসে
  • আসাদুজ্জামান নূরের চারটি ফ্ল্যাট ও ১০ কাঠা জমি জব্দের আদেশ
  • জেমকন গ্রুপের পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীর বিরু‌দ্ধে মামলা কর‌বে দুদক
  • জেমকন গ্রুপের দুই পরিচালকের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করবে দুদক