বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, ফ্যাসিবাদের পতনের পর তা‌দের নেতারা ভারতে ও দুবাই পালি‌য়ে গিয়ে ফুর্তি করছে, আরাম-আয়েশ করছে। পালানোর সময় তাদের কোনও কর্মীকে সঙ্গে নেয়নি। এখন সেই কর্মীরাই বাড়ি থাকতে পারছে না। বিএনপি-জামায়াত ও ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের নামে দেশে হাজার হাজার মামলা হয়েছে, তাদের ধরে নিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। ইমাম ও আলেম-ওলামাদের ওপর নির্যাতন করা হয়েছে। ঢাকায় ঘুম থেকে ওঠে দেখে চৌদ্দগ্রামে গাড়ি পোড়ানোর মামলার আসামি, এসব কিছু ফ্যাসিবাদী আমলে দেখেছি।

শুক্রবার সন্ধ্যায় দেবিদ্বার উপজেলার ধামতী ইউনিয়নে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

মতবিনিময় সভায় হাসনাত আরও বলেন, দেশে একটি রাজনৈতিক বিভাজন তৈরি হয়েছে। এই বিভাজনে আল্টিমেটলি লাভ তাদের যারা ভারতে পালি‌য়ে আছে। এই বিভাজন দূর করে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে জাতির স্বার্থে।

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, নেতা হতে হবে জনমুখী, ক্ষমতামুখী নয়। আপনি কোন নেতার পিছনে ঘুরবেন কাকে সমর্থন দেবেন এগুলো একটু বুঝেশুনে করবেন। নেতা যদি অত্যাচারী-নির্যাতক হয়, নেতা যদি মানুষের অধিকার হরণ করে, জমি দখল করে ওই নেতা আমাদের কোনও প্রয়োজন নেই।

ভারতে পালিয়ে যাওয়া নিয়ে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, কেউ কেউ ভারতে বসে বসে গুজব ছড়াচ্ছে, আমরা নাকি দেশ থেকে পালিয়ে গেছি। দেশ থেকে পালিয়ে কোথায় আসছি, নিজের বাড়িতে আসছি। নিজের বাড়িতে আসলে কি সেটা পালানো হয়। যারা এই গুজব ছড়াচ্ছে, তারাই এখন ভারতে পালিয়ে আছে। তারা ভারতে পালিয়ে থেকে আমাদের বলছে, আমরা নাকি পালানোর জায়গা পাবো না। তারাই এখন পালিয়ে আছে আর পালিয়ে থেকে আমাদের বলছে, আমরা নাকি পালানোর জায়গা পাবো না। এটি খুবই হাস্যকর।

ধামতী ইউনিয়ন ছাত্র প্রতিনিধি জাহিদুল বাবুর সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন, বুয়েট প্রফেসর খোরশেদ আলম, দেবিদ্বার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মুহ্তাদির যারিফ সিক্ত, নাগরিক কমিটির নাজমুল হাসান নাহিদ, মুজিবুর রহমান, আন্দোলনে আহত হাবিবুল্লাহ বাছির প্রমুখ।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

বদলীর পরও কুমিল্লায় বহাল এএসপি শামীম

বদলীর আদেশ কার্যকর হওয়ার সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও কুমিল্লা ছাড়েননি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. শামীম কুদ্দুছ ভূঁইয়া। দিনাজপুর ইন সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারে যোগদানের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও তিনি এখনও কুমিল্লাতেই দায়িত্ব পালন করছেন। 

বহাল থাকার বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে তাদেরকে মামলার হুমকি দেন কুমিল্লার চাঁদাবাজির অডিও ফাঁস হওয়ায় ঘটনায় আলোচিত এএসপি মো. শামীম কুদ্দুছ ভূঁইয়া।

বদলির কারণ প্রসঙ্গে এই প্রতিবেদক জানতে চাইলে শামীম কুদ্দুছ ভূঁইয়া বলেন, “আমি অসুস্থ, আমি বক্তব্য দিতে পারব না। আমার বিরুদ্ধে কোন নিউজ করলে মামলা করে দিব। সাংবাদিক সম্মেলন করব। আপনি নিউজ করেন, আমি দেখে নিব।”

সম্প্রতি দুটি অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। একটিতে তাকে ব্যক্তিগত কারণে দায়িত্বে অনীহা প্রকাশ করতে শোনা যায়। অপরটিতে সার্জেন্ট ও ট্রাফিক ইন্সপেক্টরদের (টিআই) নির্দেশ দিতে শোনা যায়, বাসস্ট্যান্ড থেকে সংগৃহীত টাকা সরাসরি তার ঘনিষ্ঠদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য।

গত ২০ আগস্ট পুলিশ সদর দপ্তরের প্রজ্ঞাপনে শামীম কুদ্দুছ ভূঁইয়াকে কুমিল্লা থেকে বদলি করে দিনাজপুরে পাঠানো হয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, চলতি বছরের ৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নতুন কর্মস্থলে যোগ না দিলে ৭ সেপ্টেম্বর থেকে তাকে তাৎক্ষণিক অবমুক্ত করা হবে। তবে নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও তিনি নতুন কর্মস্থলে যোগ দেননি।

চলতি বছরের আগস্টে বিভিন্ন গণমাধ্যমে পরিবহন সেক্টরে চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগে তার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশিত হয়। তবে এসব অভিযোগ তিনি ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছিলেন।

কুমিল্লা জেলা পুলিশ নজির আহমেদ বলেন, “জনস্বার্থে তাকে বদলি করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্ত সাপেক্ষে যাচাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সাংবাদিকদের হুমকির বিষয় অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/রুবেল/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ