মেলবোর্নের রড লেভার অ্যারেনায় ২০১৫ সালে যখন সেমিফাইনাল খেলেছিলেন, সেই সময় ম্যাডিসন কেইসের বয়স ছিল ১৯। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে ফাইনাল খেলতে অপেক্ষা করতে হয়েছে এক দশক। ২৯ বছরে এসে ক্যারিয়ারের প্রথম গ্র্যান্ডস্লামের স্বপ্ন দেখা যুক্তরাষ্ট্রের এ টেনিস কন্যার সামনে কঠিন বাধা। শনিবার নারী এককের ফাইনালে হ্যাটট্রিক শিরোপার সামনে দাঁড়ানো আরিয়ানা সাবালেঙ্কার বিপক্ষে পাঁচবারের দেখায় মাত্র একবার জিতেছেন ম্যাডিসন। 

ইতিহাস আর পরিসংখ্যানও ম্যাডিসনের পক্ষে নেই। ২০২১ সালে বার্লিনে জার্মান ওপেনে বেলারুশ তারকাকে হারানোর সুখস্মৃতিই আজকের ফাইনালে ম্যাডিসনের বড় প্রেরণা। গ্র্যান্ডস্লামে ২০২৩ উইম্বলডন এবং ইউএস ওপেনে ম্যাডিসনের বিপক্ষে জেতা সাবালেঙ্কা মেলবোর্নে বেশ আত্মবিশ্বাসী। নারী এককে সুইজারল্যান্ডের সাবেক টেনিস সেনসেশন মার্টিনা হিঙ্গিসের (১৯৯৭-১৯৯৯) পর টানা তিনবার অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জয়ের হাতছানি সাবালেঙ্কার।

টেনিসের মেজর প্রতিযোগিতায় তিনবার ট্রফি উঁচিয়ে ধরেছেন সাবালেঙ্কা। মেলবোর্নের দুটির সঙ্গে গত বছর জিতেছিলেন ইউএস ওপেন। ফাইনালে পা দিয়ে ইতোমধ্যে বেশ কিছু কীর্তি গড়েছেন ২৬ বছর বয়সী বেলারুশ টেনিস তারকা। ২০১৭ সালে সেরেনা উইলিয়ামসের পর মেলবোর্নে টানা তিনবার ফাইনাল খেলছেন তিনি। ২০০২ সালে হিঙ্গিসের পর কম বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে মৌসুমের প্রথম গ্র্যান্ডস্লামের শিরোপামঞ্চে। তৃতীয় খেলোয়াড় হিসেবে একটি গ্র্যান্ডস্লামে টানা ২০ ম্যাচ জয়ের কীর্তি আছে তাঁর। শনিবার জিতলেই সাবালেঙ্কার নামটি জড়িয়ে যাবে টেনিসের কয়েকজন কিংবদন্তির সঙ্গে। মার্গারেট কোর্ট, ইভোন গুলাগং, স্টেফি গ্রাফ ও মনিকা সেলেস তিনবার করে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিতেছেন। 

সাতবার চ্যাম্পিয়ন হলেও আমেরিকান সেরেনা উইলিয়ামস কখনোই টানা তিনবার ট্রফি উঁচিয়ে ধরতে পারেননি। ‘আমার কাছে এটা ভাবতেই ভালো লাগছে, এমন একটা অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছি যে ম্যাচ জিতলে কিংবদন্তিদের কাতারে আমার নাম যুক্ত হবে।’

প্রতিপক্ষের সক্ষমতা এবং পরিসংখ্যান সম্পর্কে অবগত আছেন ম্যাডিসন। ফেব্রুয়ারিতে ৩০তম জন্মদিন পালনের আগে ক্যারিয়ারের প্রথম গ্র্যান্ডস্লাম জয়ের স্বপ্নটা পূরণ করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ তিনি। ফাইনালে ওঠায় ২০১৯ সালের পর প্রথমবারের মতো মেয়েদের র্যাঙ্কিংয়ে সেরা দশে চলে আসবেন ম্যাডিসন। সেটা ভাবনায় নেই তাঁর। গত বছরের অক্টোবরে বিয়ের জন্য মৌসুমের সমাপ্তি টানা ম্যাডিসন বিয়ে করেছেন তাঁর কোচ বিয়ন ফ্রাটাংগেলোকে। ২০১৭ সাল থেকে ম্যাডিসনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ানো বিয়ন তাঁর কোচ হন ২০২৩ সালে। আজকের ফাইনাল এমন একটি ম্যাচ, যেটি কিনা দু’জনের জন্যই প্রথমবার একসঙ্গে কোনো মেজর টুর্নামেন্ট জয়ের সুযোগ।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

আইএমএফের পর্ষদ বৈঠক ২৩ জুন, এরপর মিলতে পারে দুই কিস্তি অর্থ

২৩ জুন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্বাহী পর্ষদের বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেই বৈঠকে বাংলাদেশের সঙ্গে আইএমএফের চলমান ঋণ কর্মসূচির দুই কিস্তির অর্থ ছাড়ের বিষয়টি উত্থাপনের কথা রয়েছে। বৈঠকে অনুমোদন হলে চলমান ঋণ কর্মসূচির আওতায় একসঙ্গে দুই কিস্তির অর্থ পাবে বাংলাদেশ। আইএমএফ গতকাল শুক্রবার তার কার্যসূচিতে নির্বাহী পর্ষদের বৈঠকের এ তারিখ নির্ধারণসংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করেছে।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, আইএমএফের এ বৈঠকে চলমান ঋণ কর্মসূচির তৃতীয় ও চতুর্থ পর্যালোচনার (রিভিউ) প্রতিবেদন উপস্থাপনের কথা রয়েছে। এ প্রতিবেদন পর্ষদ অনুমোদন করলে বাংলাদেশ একসঙ্গে পেয়ে যাবে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ। দুই কিস্তির অর্থ একসঙ্গে হতে পারে ১৩০ কোটি মার্কিন ডলার।

এর আগে ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য সাড়ে তিন বছর মেয়াদি ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে। ঋণ অনুমোদনের সময় আইএমএফ বলেছিল, বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, ঝুঁকিতে থাকা ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেওয়া এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও পরিবেশসম্মত প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা করবে এ ঋণ কর্মসূচি। চলতি হিসাবের ঘাটতি বেড়ে যাওয়া, টাকার দরপতন ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়া—মূলত এ তিন কারণে ওই সময় আইএমএফের কাছে ঋণ চেয়েছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার।

আইএমএফের ঋণ কর্মসূচির মধ্যে বর্ধিত ঋণসহায়তা (ইসিএফ) ও বর্ধিত তহবিলসহায়তা (ইএফএফ) বাবদ ঋণ রয়েছে ৩৩০ কোটি ডলার। আর রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ) বাবদ ঋণ রয়েছে ১৪০ কোটি ডলার। আরএসএফ আইএমএফের একটি নতুন তহবিল, যেখান থেকে এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশকেই প্রথম ঋণ দেওয়া হচ্ছে। ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি আইএমএফের কাছ থেকে প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার পায় বাংলাদেশ। একই বছরের ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ও ২০২৪ সালের জুনে তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। অর্থাৎ তিন কিস্তিতে আইএমএফ থেকে এখন পর্যন্ত ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। বাকি আছে ঋণের ২৩৯ কোটি ডলার।

আইএমএফের ঋণের চতুর্থ কিস্তির অর্থ গত বছরের ডিসেম্বরে পাওয়ার কথা থাকলেও তা আর পাওয়া যায়নি। আইএমএফের সদর দপ্তর যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে অবস্থিত। প্রায় প্রতিবছর ওয়াশিংটনসহ প্রতিবেশী রাজ্যগুলোতে বড় ধরনের তুষারপাত হয়। গত বছরও তাই হয়েছে। অতিমাত্রার বরফের কারণে অচল হয়ে যায় জনজীবন। মার্কিন প্রশাসন সতর্কবার্তা জারি করে। তুষারপাতের কারণে আইএমএফসহ অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল অনেক দিন।

পরে আইএমএফের পক্ষ থেকে প্রথমে এ বছরের ফেব্রুয়ারি ও পরে মার্চে পর্ষদ বৈঠকের কথা বলা হয়। গত এপ্রিলে আইএমএফের একটি দল পর্যালোচনা করতে ঢাকায় আসে দুই সপ্তাহের জন্য। এর মধ্যে শর্ত পরিপালন নিয়ে দর–কষাকষিতে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড় আটকে যায়। এরপর ওয়াশিংটনে গত ২১ থেকে ২৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের বসন্তকালীন বৈঠকে এ বিষয়ে আরও আলোচনা হলেও কোনো সুরাহা হয়নি। তখন দর-কষাকষি হচ্ছিল মূলত মুদ্রা বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করা নিয়ে। আইএমএফ তা চাইলেও করতে চাইছিল না সরকার।

সবশেষে গত মাসে এ নিয়ে আইএমএফের সঙ্গে কয়েকটি ভার্চ্যুয়াল বৈঠক করে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত ১২ মে দুই পক্ষ চূড়ান্ত সমঝোতায় পৌঁছায় ও বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করে বাংলাদেশ। ১৪ মে আইএমএফ ওয়াশিংটন থেকে এক বিবৃতিতে জানায়, দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে এবং ঋণের অর্থ ছাড় করা হবে জুনে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সাধারণত পর্ষদ বৈঠকে অনুমোদন হওয়ার দুই থেকে তিন দিনের মাথায় আইএমএফ অর্থ ছাড় করে দেয়। এবারও এর ব্যতিক্রম হবে না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ১৫ মাসে খেলাপি ঋণ বেড়ে তিন গুণ
  • টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন চক্রে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ কারা
  • শাহরুখের পারিশ্রমিক ৪২৩ কোটি টাকা!
  • অন্য বছরের চেয়ে এই জুনে ডেঙ্গু বেশি
  • ইরানকে পরমাণু জগতে ঠেলে দিয়েছে ইসরায়েলই
  • আগামী সপ্তাহে বাংলাদেশের কিস্তির প্রস্তাব উঠছে আইএমএফ পর্ষদে
  • আইএমএফের পর্ষদ বৈঠক ২৩ জুন, এরপর মিলতে পারে দুই কিস্তি অর্থ
  • সামরিক শক্তিতে ইরান-ইসরায়েলের মধ্যে কে এগিয়ে  
  • চার দেশের পাঁচ লাখ অভিবাসীকে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়ার নির্দেশ
  • চার দেশের পাঁচ লাখ অভিবাসীকে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করার নির্দেশ