স্বামীর জন্মদিনে আবেগঘন কনকচাঁপা, শোনালেন অজানা গল্প
Published: 26th, January 2025 GMT
দেশের নন্দিত সংগীতশিল্পী কনকচাঁপা। এই পর্যায়ে আসাতে বাবা আজিজুল হক মোর্শেদ ও স্বামী সুরকার-সংগীত পরিচালক স্বামী মইনুল ইসলাম খানের অবদান সবচেয়ে বেশি। আজ স্বামী জন্মদিনে তাকে নিয়ে ফেসবুকে আবেগঘন কথা লিখেছেন কনকচাঁপা।
ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, ‘আজ থেকে ৬৬ বছর আগে এইদিনে তুমি জন্মেছিলে। বুড়িদাদির মতো আমার খুব সেই আঁতুড় ঘর দেখতে ইচ্ছে হয়! শীতের রাত, আমার প্রিয়তমা শাশুড়ি আম্মা না জানি কত কষ্ট করেছেন। তখন তো আর ডায়াপার ছিল না। কি গোলাপি একটা তুলার বল না জানি ছিলে! একটু দেখতে পেতাম! তোমার পয়লা স্কুলে যাওয়ার দিন তোমাকে কেমন দেখাচ্ছিল সেটা জানার খুব আগ্রহ। যদিও পারিবারিক এলবামে আমি তোমার অনেক ছোট বেলার ছবি দেখে তোমার শৈশব কৈশোর মুখস্থ। আমার শ্বশুর শাশুড়িকে কৃতজ্ঞতা তাঁরা তোমাকে জন্ম দিয়েছেন।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘আজ তোমার জন্মদিন, অনেক আয়োজন করার কথা কিন্তু তুমি তো এগুলো পছন্দই করো না। আমি অনেক চেষ্টা করেছি উৎসব জমাতে, তুমি সেই উৎসবে পানি ঢালো ফি বছর তাই ভেবেছি এগুলো আর করবো না। তবে তোমার জন্মদিনে কিছু ‘না বলা কথা’ বলি, কথাগুলো হল- এই এক জীবনে তোমার কাছে আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। তুমি আমাকে লালন না করলে আমি কি ‘আমি’ হতাম? আমার হাজার হাজার রেকর্ডিং, হাজার হাজার মঞ্চে তুমি যেভাবে চোখ দিয়ে আমাকে আগলে রেখেছ তা সত্যিই বিরল। তোমার হাত ধরে রাস্তা পার হতে যেমন আমি ডানে বামে তাকাই না তেমন গাইতে গেলে আর কতক্ষণ গাইবো সময় গুনি না। দর্শকভাবে কনকচাঁপা নিজে একটার পরে একটা সাজিয়ে গাইছেন কিন্তু নেপথ্যে তোমার সরব উপস্থিতি অনেকেই বোঝে না। তুমি আমাকে শিল্পী হিসেবে, তোমার স্ত্রী হিসেবে মুক্তা যেমন সযত্নে তুলায় পেঁচিয়ে রাখে তেমন রেখেছ আজীবন। সেখানে আমি কতটুকু বা প্রতিদান দিতে পারি!’
সংসার জীবনের কথা তুলে কনকচাঁপা লিখেছেন, ‘তুমি বাজার না করলে আমি রান্না করে কোন শান্তিই পাই না। সামান্য নুন ও আমার নুন বলে মনে হয় না। আর তোমার সাথে ঝগড়া না করলে আমার দম আটকে আসে আর তারচেয়েও বড় কথা আমি তোমার সাথে ঝগড়া করে অনেক মজা পাই। কারণ, তুমি বেশিরভাগ সময় যুৎসই শব্দ খুঁজে না পেয়ে খেই হারাও আর আমার মুখে সারগামের সপাট তানের মতো খই ফোটে হাহা। অগত্যা তুমি যখন অসহায় হয়ে বলো ছি.
সবশেষে তিনি লিখেছেন, ‘তুমি সবসময় মানুষের কাছে নিজের বয়স বাড়াও। এই কাজ আর কখনো করবে না। আর একটা কথা, আম্মা তো নাই, এখন আমিই তোমার একমাত্র আশ্রয়। আমার আরও কিছু গাছ দরকার, ঠিকঠাক কিনে দিও আচ্ছা? আর এ বছর সিগারেটটা ছেড়ে দাও প্লিজ। আজকের দিনে আল্লাহর কাছে আমার এই দোয়া করি, আল্লাহ যেন তোমাকে অনেক লম্বা নেক হায়াত দেন, সুদীর্ঘ আয়ু নিয়ে আমাকে সাথে নিয়ে বেঁচে থাকো। শুভ-জীবন বন্ধু।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আল ল হ
এছাড়াও পড়ুন:
কলিজা ঠান্ডা করে দেওয়া ছবি ‘উৎসব’
‘উৎসব’ দেখে মন ভরে গেছে। বাংলাদেশের সিনেমা দেখতে যাওয়া, বয়স হওয়ার পর, একটা বিড়ম্বনা। একটা কারণ, সিনেমা হলের বের হওয়ার দরজার মুখে ক্যামেরা দাঁড়িয়ে থাকে। বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জিজ্ঞাসা করে, ‘কেমন দেখলেন।’ কী বলবেন? সিনেমা যাঁরা বানান, তাঁরা আমাদের ভাইবেরাদার, বোন-দুলাভাই, মামা-চাচা, ভাইপো-ভাইঝি, না হলে আমার আরেকটা নাটকের প্রডুসার, একটা চ্যানেলের মালিক, সত্য কথা বলে এই বয়সে বন্ধুহারা, ভাইহারা হতে কে চায়।
বেশির ভাগ সিনেমা শেষ পর্যন্ত দেখলে একটা উপকার হয়, নিজের ধৈর্যশক্তি বাড়ে, সহ্যক্ষমতা পোক্ত হয়! সম্পূর্ণ ভালো লেগেছে, এমন ছবি আমার তালিকায় খুব কম। একটা দুটোর নাম করি, ‘সূর্য দীঘল বাড়ি’, ‘মুক্তির গান’। ‘নিরন্তর’ ভালো লেগেছিল, ‘শঙ্খনাদ’ পছন্দ করেছিলাম, ‘টেলিভিশন’ কিংবা ‘স্বপ্নজাল’ দেখেও প্রশংসা করেছিলাম...এই রকম হাতে গোনা কয়েকটা ছবি। হাতে গোনা ব্যাপারটা হলো, আপনি হাতের আঙুল দিয়ে গুনতে পারবেন, অঙ্গুলিমেয়, আঙুলের দাগ ধরে ধরে গুনবেন, বিশটার বেশি হবে না। আমার মনে হয়, দুই হাতের দশটা আঙুলের চেয়ে বেশি বাংলাদেশি সিনেমার নাম আমি বলতে পারব না, যা আমার বেশ ভালো লেগেছে।
তানিম নূর পরিচালিত এবারের ঈদের ছবি ‘উৎসব’ দেখলাম ১৩ জুন ২০২৫। অপরাহ্ণ শো। দুদিন আগেই টিকিট কাটা ছিল। আমরা আটজনের একটা দল, বন্ধুবান্ধব, ছেলেমেয়েসমেত স্টার সিনেপ্লেক্সে গিয়ে হাজির। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হলো। এত বড় লাইন, সবার হাতে টিকিট, সবাই একটা সিনেমা দেখতে দাঁড়িয়ে আছেন হাসিমুখে, কী সুন্দর একটা দৃশ্য।
উৎসব সিনেমার পোস্টার