জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সব শক্তিকে একসঙ্গে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের গৃহায়ন, গণপূর্ত ও শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। 

রোববার বিকেলে মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সভাকক্ষে গণঅভ্যুথানে শহীদ পরিবারের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় ১৬ শহীদ পরিবারের মাঝে আর্থিক অনুদান তুলে দেওয়া হয়।

আদিলুর রহমান খান বলেছেন, ‘ফ্যাসিবাদ বারবার আসার চেষ্টা করবে, আমাদের প্রধান কাজ তাদের প্রতিহত করা। ফ্যাসিবাদ যেন কখনোই মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে। বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদী শক্তিকে চিরস্থায়ীভাবে মাটিচাপা দেওয়া হবে। কিন্তু সেই চিরস্থায়ীভাবে মাটিচাপা দেওয়ার পরও তারা আবার বের হওয়ার চেষ্টা করে; তাই প্রতিহত করার জন্য ভিজিলেন্স থাকতে হয়।’

৫ আগস্টের শক্তির মধ্যে একটু ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটা হতে দেওয়া যাবে না। জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুথানের সব শক্তিকে একসঙ্গে থাকতে হবে; যেন ফ্যাসিবাদ কখনও ফিরে আসতে না পারে; যেন অন্য কোনো দেশ বাংলাদেশে আগ্রাসন চালানোর সুযোগ না পায়। যেন সাহস না পায়।’

বাংলাদেশের গড়ে তোলা প্রতিরোধ সারা পৃথিবীর কাছে একটা শিক্ষণীয় ব্যাপার হয়ে আছে বলেও উল্লেখ করেন আদিলুর রহমান খান। তিনি বলেন, সারা পৃথিবীর তরুণেরা যখন সংগ্রাম করবে, তখন বাংলাদেশের তরুণদের মতো করবে।

জেলা প্রশাসক ফাতেমা তুল জান্নাতের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের পরিচালক নাসিরউদ্দিন এলান, ছাত্র প্রতিনিধি আদৃতা ইবনাদ নাবিলা, আজিম আহমেদ সিফাত, আরাফাত রায়হান সাকিব, শহীদ সজল মোল্লার ভাই সাইফুল ইসলাম, শহীদ আশরাফুল ইসলাম অন্তরের মা হামিদা ভানু প্রমুখ।

সংস্কার ও নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে শিল্প উপদেষ্টা বলেন, ‘সংস্কার ও নির্বাচনের উত্তর হঠাৎ করে দিতে পারব না। কেন দিতে পারব না; সেটাও জানেন। এ ব্যাপারে আমি এককভাবে একটা কথা বলে গেলে কাজ হবে না। কারণ, এখানে আমাদের অবস্থানটা রাজনৈতিক ঐকমত্যের ওপরে। এর অন্যথা (হলে) কী হতে পারত সেটাও আপনারা জানেন।’

গণঅভ্যুথানে শহীদ ও আহত পরিবারের সদস্যদের নানা প্রশ্নের জবাব দেন উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। তিনি এ সময় বলেন, অভ্যুত্থানের প্রায় ছয় মাস হয়ে গেছে। হতাহতের পরিবারের অসংখ্য প্রশ্ন, তাদের যেসব আকাঙ্ক্ষা ছিল, তা অবাস্তবায়িত অবস্থায় আছে। তাদের সন্তানদের আত্মত্যাগ এখনও জ্বলন্ত। 

এ সরকারের অনেক চ্যালেঞ্জের কথা জানিয়ে আদিলুর রহমান খান বলেন, ‘জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে এই চ্যালেঞ্জগুলো আমরা সমাধানের চেষ্টা করছি। কীভাবে চেষ্টা করছি? মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় মুক্তিযোদ্ধাদের যেভাবে দায়িত্ব নিয়েছে; এই জুলাইয়ের যোদ্ধারা একইভাবে দায়িত্ব নেবেন। সেটার অধিদপ্তরও প্রায় তৈরি হয়ে গেছে।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর ব র র গণঅভ য

এছাড়াও পড়ুন:

‘বিচার প্রক্রিয়া ও সংস্কারের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হবে’

অন্তবর্তী সরকারের শিল্প, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, “বাংলাদেশ বর্তমানে এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। সবাইকে ধৈর্য ধরে বিচার প্রক্রিয়া, সংস্কার এবং নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হবে। সারাদেশ এখন জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার অপেক্ষায় রয়েছে।”

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) জাহাঙ্গীরনগর বিবিদ্যালয়ে নির্মিত জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম স্মৃতিস্তম্ভ ‘অদম্য ২৪’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন তিনি।

এর আগে, অদম্য ২৪ উদ্বোধন করেন তিনি। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নির্মিত জুলাইয়ের ভিডিও ও ফটো ডকুমেন্টারি উপভোগ করেন।

আরো পড়ুন:

জবির পরিত্যক্ত ডাস্টবিনগুলো সংস্কার করল ছাত্রদল

রাকসু থেকে জাতীয় পর্যায়ের নেতৃত্বে যারা

আদিলুর রহমান খান বলেন, “১ বছর আগে বাংলাদেশে যে ঐক্য গড়ে উঠেছিল, সেই ঐক্যই পারে বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যেতে। বিচার প্রশ্নে বলতে চাই কোনো অবস্থাতেই গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে তৈরি হওয়া সরকার বিচারের ক্ষেত্রে দুর্বলতা স্কোপ রাখবে না। খুব দ্রুতই বেশ কয়েকটি বিচারের কাজ দৃশ্যমান হবে।”

তিনি আরো বলেন, “তরুণ ছাত্র-জনতা ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্তি এবং দেশকে বাঁচানোর জন্য জীবন দিয়েছেন। ছাত্র-জনতার মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলার মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী শক্তিকে পরাজিত করা সম্ভব হয়েছে। সেই ঐক্য ধরে রাখতে হবে।” এছাড়া স্মৃতিস্তম্ভ ‘অদম্য-২৪’ বিভাজন ভুলে একাত্ম হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন।

সমাপনী বক্তব্যে জাবি উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান বলেন, “সংঘবদ্ধ আন্দোলনে ৫ আগস্ট আমরা বিজয় অর্জন করেছি। এর মানে এই নয় যে, অন্য যেকোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে আর স্বর আপনারা শুনবেন না। আপনারা দেখবেন, জাহাঙ্গীরনগরের শিক্ষার্থীরা সচেতন এবং কথা বলার ব্যাপারে উন্মুক্ত।”

তিনি বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, এই স্মৃতিস্তম্ভ উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে আবার স্মরণ করিয়ে দিলাম, আমরা যদি বাংলাদেশে কোনো অশান্তি দেখি, বৈষম্য দেখি, পরাজয়ের কালো মেঘ দেখি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অদম্য সংগ্রামীরা আবারো তাদের সেই কার্যক্রম শুরু করবে। গোটা বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিবে, আবার বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করবে।

অনুষ্ঠানে উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, উপ -উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুর রব, প্রক্টর অধ্যাপক রাশিদুল আলমসহ জাহাঙ্গীরনগরের সঙ্গে জুলাই আন্দোলনে অংশ নিয়ে শহীদ পরিবারের সদস্যরাও বক্তব্য দেন।

ঢাকা/আহসান/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘বিচার প্রক্রিয়া ও সংস্কারের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হবে’
  • তিতুমীর কলেজে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী
  • ভারতের কাছে তেল বিক্রি করতে পারে পাকিস্তান, খোঁচা দিলেন ট্রাম্প
  • হাসিনাকে ১০ বার ফাঁসিতে ঝোলালেও তার অপরাধ কমবে না: নাহিদ 
  • কেটি পেরি ও জাস্টিন ট্রুডোর ডিনার, গুঞ্জন
  • শিক্ষার্থী সাজিদ স্মরণে ইবিতে ব্যতিক্রমী আয়োজন
  • ৭ উপাচার্যের অংশগ্রহণে গোবিপ্রবিতে শিক্ষা সমাপনী
  • নরসিংদীতে আজ এনসিপির পদযাত্রা 
  • পাবিপ্রবিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে প্রজেক্ট শো
  • নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে পথে নেমেছি: নাহিদ ইসলাম