মাঘের শীতে বাঘ পালায়—এ প্রবাদ এই শীতে পাত্তাই পাচ্ছে না। বিশেষ করে রাজধানীতে। অথচ মঙ্গলবার ছিল ১৪ মাঘ—ভরা শীত মৌসুম। এ দিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গেছে।
আজ কক্সবাজারের টেকনাফে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গরমের রেশ বাড়তে থাকায় শৈত্যপ্রবাহ নেই। দেশের বেশির ভাগ এলাকায় আজ সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে ছিল। কেবল দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এমন পরিস্থিতিতে দেশের তিন বিভাগে বৃষ্টির আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ সময় তাপমাত্রা বাড়তে পারে, ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে আবার কমবে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ বজলুর বলেন, শুক্র-শনিবার সিলেট, ময়মনসিংহ ও ঢাকা বিভাগে হালকা বা গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হতে পারে। এটা এক-দুইদিন থাকবে। এ সময় তাপমাত্রা বাড়তে পারে, ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে আবার কমবে।
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের মতে, মাঘের বাকি দিনগুলোয় আর হয়তো শীত নাও পড়তে পারে। মাঘ মাসে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ থেকে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করে থাকে। আর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২২ থেকে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাই দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়। কিন্তু এবার মাঘ মাসে শীতের এমন আচরণ আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের কপালে ভাঁজ ফেলে দিয়েছে। তাঁদের মতে, এ সময়ে আবহাওয়া এমনটি থাকার কথা নয়। পুরো শীত মৌসুমে প্রকৃতির বিপরীত আচরণ লক্ষ করা গেছে। বায়ুর আচরণে পরিবর্তন ঘটেছে।
আবহাওয়াবিদ আবদুল মান্নান বলেন, উচ্চ চাপবলয়ের কারণে এ দেশে পৌষ ও মাঘ মাসে শীত পড়ে থাকে। বিশেষ করে মাঘ মাস বা জানুয়ারি মাসে শীতের তীব্রতা বেশি থাকে। কিন্তু এবার তেমনটি ঘটেনি। শীত না পড়ার আরেকটি কারণ হলো পুরো শীত মৌসুমে পশ্চিমা লঘুচাপের প্রভাব পড়েনি।
চলতি মাসে দেশে একবারই মাত্র মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়। মৃদু শৈত্যপ্রবাহও খুব বিস্তৃত ছিল না। এ বছর শীত মৌসুমের গোড়াতেই বারবার হোঁচট খেয়েছে উত্তুরী হাওয়া। ডিসেম্বরেও শীত-শীত ভাবটা উধাও হওয়ার অবস্থা হয়েছিল। জানুয়ারির শুরুতে ঠাণ্ডার মাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পেলেও শীতকাল পুরোপুরি বৈশিষ্ট্য ফুটিয়ে তুলতে পারেনি। এভাবে তীব্র শীত ছাড়াই মাঘ মাসের বিদায় ঘটবে বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স লস য় স
এছাড়াও পড়ুন:
সে শুধু নিজের রেকর্ডের জন্য খেলে, দলের জন্য নয়—সমর্থকদের বিদ্রুপ
এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছে আল-নাসর। তবে মাঠের ফলাফলের চেয়েও এখন আলোচনায় ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর প্রতিক্রিয়া। ম্যাচ শেষে তার ‘বিষণ্ণ ও নাটকীয়’ আচরণ উপহাস হিসেবে দেখছেন ফুটবলপ্রেমীরা।
বুধবার রাতে জেদ্দার আলিনমা স্টেডিয়ামে জাপানি ক্লাব কাওয়াসাকি ফ্রন্টেলের বিপক্ষে ৩-২ গোলে হারে সৌদি ক্লাব আল-নাসর। এই পরাজয়ে রোনালদোর দলের সামনে চলতি মৌসুমে আর কোনো ট্রফি জয়ের সুযোগ থাকল না। সেমিফাইনালের ম্যাচটিতে রোনালদো একটি সুবর্ণ সুযোগও নষ্ট করে। প্রতিপক্ষ দলের গোলরক্ষককে কাটিয়ে গেলেও শেষ মুহূর্তে বল জালে পাঠাতে ব্যর্থ হন পর্তুগিজ মহাতারকা। সমর্থকদের মতে, রোনালদোর গোল মিস করাটাই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট।
ম্যাচ শেষে হতাশ রোনালদোকে দেখা যায় মাঠের কেন্দ্রবিন্দুতে দাঁড়িয়ে নিজে নিজে কথা বলতে ও আকাশের দিকে তাকিয়ে কিছুটা নাটকীয় ভঙ্গিতে হাত নেড়েছেন। তার এই অদ্ভুত আচরণ নিয়েই এখন সরগরম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম।
একজন টুইটারে লিখেছেন, ‘রোনালদোর জন্য ‘ফুটবলকে ছেড়ে দাও, তার আগেই যে ফুটবল তোমাকে ছাড়বে’—এই কথাটা একেবারে যথার্থ।’ আরেকজন লিখেছেন, ‘এই লোকটা এখন আর মজার না… শুধু অহঙ্কারে ভরা।’
তৃতীয় একজন মন্তব্য করেছেন, ‘মেসির বিশ্বকাপ জয় মানসিকভাবে শেষ করে দিয়েছে রোনালদোকে।’ অন্য একজন কটাক্ষ করে বলেন, ‘ক্যামেরার জন্য এমন মরিয়া চেষ্টাও এক রকম প্রশংসার দাবি রাখে—যদি না সেটা এত করুণ হতো।’
অনেকে আবার রোনালদোর স্বার্থপরতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন, ‘সে শুধু নিজের রেকর্ডের জন্য খেলে, দলের জন্য নয়।’
তবে এত সমালোচনার পরও অবসরের কোনো ইঙ্গিত দেননি রোনালদো। বরং সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট দিয়ে সমর্থকদের ধন্যবাদ জানিয়ে দলের প্রতি নিজের গর্বের কথা জানান তিনি। রোনালদো লেখেন, ‘সবসময় স্বপ্ন পূরণ হয় না। তবে আমি গর্বিত আমাদের পারফরম্যান্স নিয়ে। যারা আমাদের পাশে থেকেছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। আপনাদের সমর্থন আমাদের অনেক কিছু বলে।’
এদিকে ম্যাচ শেষে আল-নাসরের কোচ স্তেফানো পিওলি দলের পারফরম্যান্সে ক্ষোভ ঝাড়েন। তিনি বলেন, ‘আমাদের কৌশলে সমস্যা ছিল, দ্বিতীয়ার্ধে ঝুঁকি নিয়েছিলাম। তবে যে পারফরম্যান্স হয়েছে, তা হতাশাজনক। প্রতিপক্ষ আমাদের চমকে দেয়নি, বরং নিজেদের দুর্বলতাই বড় ধাক্কা দিয়েছে।’
এই হারে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে ছিটকে পড়েছে আল-নাসর, আর প্রশ্নটা থেকে গেছে—রোনালদো আসলে কোথায় গিয়ে থামবেন?