জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা এ বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে দ্রুত বিচার দাবি করেন।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা হলেন, জবির রসায়ন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আকাশ আলী, তামান্না তাবাসসুম ও আবুল বাসার। অপরদিকে, হামলার নেতৃত্ব দেওয়া অভিযুক্ত ছাত্রদল কর্মী অনিক কুমার দাশ মার্কেটিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ।

এর আগে, গতকাল বুধবার (২৯ জানুয়ারি) জবির কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মার্কেটিং বিভাগের দুই শিক্ষার্থী জুতা পায়ে উঠলে রসায়ন বিভাগের দুই শিক্ষার্থী তার প্রতিবাদ করে। এতে তাদের ওপর হামলা চালায় মার্কেটিং বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী।

এ হামলার নেতৃত্ব দেন জবি ছাত্রদল কর্মী ও মার্কেটিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী অনিক কুমার দাশ। এতে আরো যুক্ত ছিলেন, মাহফুজুর রহমান চৌধুরী মাহী, আয়ান, আরিফ, রাতুল, আসিফসহ আরো ১৫ জন।

এ হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, গত ৫ আগস্ট পরবর্তী বাংলাদেশে আমরা আর কোন দমন-পীড়ন বরদাস্ত করব না। আর কাউকে ফ্যাসিস্ট হয়ে ওঠার সুযোগ দেওয়া হবে না। এর আগের হামলাগুলোর ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে আজ আমাদের এখানে দাঁড়াতে হত না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এসব ঘটনার দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করুক। আমরা এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

রসায়ন বিভাগের ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থী ২০২০ -২০২১ সেশনের তামান্না তাবাসসুম বলেন, “আমরা প্রক্টরের কাছে গিয়েছিলাম। তারা আমাদের কোন সহযোগিতা করেনি। আমরা তাহলে কার কাছে যাব? আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।”

একই বিভাগের শিক্ষার্থী আকরাম হোসেন বলেন, “গতকালের ঘটনার পর আমরা প্রক্টরের কাছে যাওয়ার পর তিনি আমাদের বলেন, ২০০৫ সালের নীতিমালা পড়ার জন্য। এ বিষয়ে তারা কি পদক্ষেপ নেবে, সে ব্যাপারে তিনি আমাদের কিছু জানাতে পারেননি। বরং আমাদের বিভাগের শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। যদি এ ঘটনায় প্রশাসন কোন ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে আমরা প্রশাসন ও যে দলের  প্রশ্রয়ে এ ঘটনা ঘটেছে, তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন গড়ে তুলবে। সেই সঙ্গে আমরা ক্লাস বর্জনের ডাক দেব।”

আব্দুল কাহহার জামিল বলেন, “গতকালের ঘটনায় প্রক্টর স্যার আমাদের কোন খোঁজ নেননি। রাত ১০টার পর একজন সহকারী প্রক্টরকে পাঠান। তিনি চিকিৎসার জন্য কিছু টাকা দেন। কিন্তু প্রক্টর স্যারের সঙ্গে আমরা কথা বলতে গেলে তিনি দুর্ব্যবহার করেন। গত ১ বছরে আামদের বিভাগের শিক্ষার্থীরা তিনটি হামলার অভিযোগ করলেও সুষ্ঠু বিচার পাননি। যদি ওই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হত, তাহলে আজ আমাদের এখানে দাঁড়াতে হত না। আমরা এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”

তিনি বলেন, “বিচারের নামে টালবাহানা করা হয়। আমাদের প্রক্টর অফিস থেকে ভয় দেখিয়ে অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়। এছাড়া আমাদের নানা হুমকি দিয়ে ভয় দেখনো হয়। বলা হয়, যদি ক্যাম্পাসের বাইরে কেউ হামলা করে, তাহলে সে দায় প্রক্টর অফিস নেবে না।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড.

মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, “সবকিছুর জন্য সময় দরকার। রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা যেভাবে বিচার চাচ্ছে, সেটা এত দ্রুত সম্ভব না। আগের একটা কমিটি আছে, সে কমিটির কাছেই আমি এটার তদন্ত হস্তান্তর করেছি।”

তিনি বলেন, “হ্যাঁ, আমি তাদের ২০০৫ সালের নীতিমালা পড়তে বলেছি। আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামীকাল ভর্তি পরীক্ষা আছে। সব মিলিয়ে ব্যস্ততার মধ্যে আছি।”

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য এ ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

নির্দোষ দাবি প্রতিপক্ষের, হয়নি মামলা

নড়াইলের কালিয়ায় মোটরসাইকেল চালক রফিকুল মোল্যার (৪০) লাশ উদ্ধারের ঘটনায় মামলা হয়নি। এ ঘটনায় নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছে প্রতিপক্ষ। গতকাল বুধবার সকালে আয়োজিত মানববন্ধনে তারা অভিযোগ করেন, তাদের পক্ষের ফরিদ হত্যা মামলা দুর্বল করতে ও ফাঁসাতে পরিকল্পিতভাবে রফিকুলকে হত্যা করা হয়েছে। 

নিহত রফিকুল মোল্যা উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের বাসিন্দা। মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে একই গ্রামের প্রতিপক্ষ রিকাইল শেখের বাড়ির পেছনে তাঁর লাশ পাওয়া যায়। নড়াইল সদর হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে রাতেই রফিকুলের দাফন হয়েছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে একই গ্রামের মিলন মোল্যার লোকজনের সঙ্গে আফতাব মোল্যার পক্ষের বিরোধ দীর্ঘদিনের। এর জেরে ১১ এপ্রিল দু’পক্ষের সংঘর্ষে খুন হন ফরিদ মোল্যা (৫৭)। এ ঘটনায় বাবলা-হাসলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক পিকুলকে প্রধান আসামি করে ৪৫ জনের বিরুদ্ধে কালিয়া থানায় হত্যা মামলা হয়। নিহত রফিকুল মামলাটির ১৮ নম্বর আসামি। এই দু’পক্ষের মধ্যে ২০২৪ সালের ১ ও ৪ সেপ্টেম্বর দুই দফায় সংঘর্ষ হয়। 

বাবলা-হাসলা ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হকের লোকজনের বিরুদ্ধে এ হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এর পরই চলতি মাসে দুটি হত্যাকাণ্ড ঘটল। স্থানীয় বাসিন্দাদের দেওয়া তথ্যমতে, ফরিদ মোল্যা হত্যার জেরে আসামি পক্ষের ২৫টি পরিবারের প্রায় ৫০টি বাড়িতে আগুন, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ২৭ এপ্রিল রফিকুলের মা ফাতেমা বেগম কালিয়া থানায় মামলা করেন। এতে আসামি করা হয় প্রতিপক্ষ আফতাব মোল্যা পক্ষের লোকজনকে। এর এক দিন পরই তাঁর ছেলের লাশ পাওয়া যায়। 

রিকাইল শেখের বাড়ির সামনে তাঁর পরিবার ও এলাকাবাসীর ব্যানারে বুধবার সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এতে বক্তব্য দেন মুস্তারি বিল্লাহ, রিকাইল শেখের মেয়ে ইভা খানম, ফিরোজ মোল্যা, হানেফ মোল্যা, আব্দুল গফুর ও জামিলা বেগম। তারা অভিযোগ করেন, প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ও ফরিদ হত্যা মামলা দুর্বল করতে পরিকল্পিতভাবে রফিকুলকে হত্যা করা হয়েছে। উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে তদন্ত করলে ঘটনার প্রকৃত রহস্য বেরিয়ে আসবে। 

এ সময় বক্তারা দাবি করেন, রফিকুল হত্যার জেরে মঙ্গলবার রাতে ওই গ্রামের পূর্বপাড়া হামলা হয়। এতে বেশ কয়েকটি বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে ২০০ মণ ধান ও ১৫টি গরু লুট করা হয়েছে। 

রফিকুলের শ্যালক শামিম আহমেদ প্রতিপক্ষের অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা শোকাহত পরিবার নিয়ে ব্যস্ত। কারা কোথায় কী করছে (ভাঙচুর), তা আমাদের জানা নেই।’ রফিকুল হত্যায় তারা এখনও মামলা করেননি বলেও জানান।

রফিকুলের স্ত্রী অজুহা বেগমের ভাষ্য, সোমবার মাগরিবের আজানের পর স্বামীর সঙ্গে ফোনে সর্বশেষ কথা হয় তাঁর। রাত ৩টার দিকে কল দিলে ফোন নম্বরে সংযোগ পাননি। মঙ্গলবার সকালে স্বামীর লাশ উদ্ধারের খবর পান। 

কালিয়া থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, রফিকুল হত্যার বিষয়টি রহস্যজনক। এ ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওই এলাকায় কোনো বাড়ি ভাঙচুর বা লুটপাটের ঘটনা ঘটেনি। কিছু লোক গবাদি পশু ও বাড়ির মালপত্র সরিয়ে নিয়েছেন বলে জেনেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনবার দায়িত্ব পালনের দাবি ট্রাম্পের
  • অকার্যকর সিসি ক্যামেরা, পানি নেই ছয় মাস
  • নির্দোষ দাবি প্রতিপক্ষের, হয়নি মামলা
  • বাধ্যবাধকতা থাকায় ইশরাকের গেজেট প্রকাশ: ইসি
  • প্রাণের গানে সালাহর উৎসব
  • ‎আবু সাঈদ হত্যায় অভিযুক্তদের হলের সিট বাতিল
  • আবু সাঈদ হত্যায় অভিযুক্ত ৪ শিক্ষার্থীর আবাসিকতা বাতিল
  • ক্রিকেটার নাসির ও তামিমার মামলায় শুনানিতে আদালত বিব্রত
  • নাসির-তামিমার মামলায় বিব্রত আদালত, অন্য আদালতে বদলি
  • নাসির-তামিমার মামলার শুনানি বিব্রত আদালত, বদলির আদেশ