জবি শিক্ষার্থীদের উপর ছাত্রদল কর্মীর নেতৃত্বে হামলার অভিযোগ, প্রতিবাদে বিক্ষোভ
Published: 30th, January 2025 GMT
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা এ বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে দ্রুত বিচার দাবি করেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা হলেন, জবির রসায়ন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আকাশ আলী, তামান্না তাবাসসুম ও আবুল বাসার। অপরদিকে, হামলার নেতৃত্ব দেওয়া অভিযুক্ত ছাত্রদল কর্মী অনিক কুমার দাশ মার্কেটিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ।
এর আগে, গতকাল বুধবার (২৯ জানুয়ারি) জবির কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মার্কেটিং বিভাগের দুই শিক্ষার্থী জুতা পায়ে উঠলে রসায়ন বিভাগের দুই শিক্ষার্থী তার প্রতিবাদ করে। এতে তাদের ওপর হামলা চালায় মার্কেটিং বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী।
এ হামলার নেতৃত্ব দেন জবি ছাত্রদল কর্মী ও মার্কেটিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী অনিক কুমার দাশ। এতে আরো যুক্ত ছিলেন, মাহফুজুর রহমান চৌধুরী মাহী, আয়ান, আরিফ, রাতুল, আসিফসহ আরো ১৫ জন।
এ হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, গত ৫ আগস্ট পরবর্তী বাংলাদেশে আমরা আর কোন দমন-পীড়ন বরদাস্ত করব না। আর কাউকে ফ্যাসিস্ট হয়ে ওঠার সুযোগ দেওয়া হবে না। এর আগের হামলাগুলোর ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে আজ আমাদের এখানে দাঁড়াতে হত না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এসব ঘটনার দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করুক। আমরা এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
রসায়ন বিভাগের ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থী ২০২০ -২০২১ সেশনের তামান্না তাবাসসুম বলেন, “আমরা প্রক্টরের কাছে গিয়েছিলাম। তারা আমাদের কোন সহযোগিতা করেনি। আমরা তাহলে কার কাছে যাব? আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।”
একই বিভাগের শিক্ষার্থী আকরাম হোসেন বলেন, “গতকালের ঘটনার পর আমরা প্রক্টরের কাছে যাওয়ার পর তিনি আমাদের বলেন, ২০০৫ সালের নীতিমালা পড়ার জন্য। এ বিষয়ে তারা কি পদক্ষেপ নেবে, সে ব্যাপারে তিনি আমাদের কিছু জানাতে পারেননি। বরং আমাদের বিভাগের শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। যদি এ ঘটনায় প্রশাসন কোন ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে আমরা প্রশাসন ও যে দলের প্রশ্রয়ে এ ঘটনা ঘটেছে, তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন গড়ে তুলবে। সেই সঙ্গে আমরা ক্লাস বর্জনের ডাক দেব।”
আব্দুল কাহহার জামিল বলেন, “গতকালের ঘটনায় প্রক্টর স্যার আমাদের কোন খোঁজ নেননি। রাত ১০টার পর একজন সহকারী প্রক্টরকে পাঠান। তিনি চিকিৎসার জন্য কিছু টাকা দেন। কিন্তু প্রক্টর স্যারের সঙ্গে আমরা কথা বলতে গেলে তিনি দুর্ব্যবহার করেন। গত ১ বছরে আামদের বিভাগের শিক্ষার্থীরা তিনটি হামলার অভিযোগ করলেও সুষ্ঠু বিচার পাননি। যদি ওই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হত, তাহলে আজ আমাদের এখানে দাঁড়াতে হত না। আমরা এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”
তিনি বলেন, “বিচারের নামে টালবাহানা করা হয়। আমাদের প্রক্টর অফিস থেকে ভয় দেখিয়ে অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়। এছাড়া আমাদের নানা হুমকি দিয়ে ভয় দেখনো হয়। বলা হয়, যদি ক্যাম্পাসের বাইরে কেউ হামলা করে, তাহলে সে দায় প্রক্টর অফিস নেবে না।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড.
তিনি বলেন, “হ্যাঁ, আমি তাদের ২০০৫ সালের নীতিমালা পড়তে বলেছি। আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামীকাল ভর্তি পরীক্ষা আছে। সব মিলিয়ে ব্যস্ততার মধ্যে আছি।”
ঢাকা/লিমন/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য এ ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
জকসুর রোডম্যাপ ও সম্পূরক বৃত্তি দাবি শিক্ষার্থীদের
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা এবং সম্পূরক বৃত্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (৩০ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে জবি শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এ মানববন্ধন করা হয়।
এতে ছাত্রশিবির, ছাত্রফ্রন্ট, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, আপ বাংলাদেশসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। তারা দুই কার্যদিবসের মধ্যে জকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আলটিমেটাম দেন।
আরো পড়ুন:
৭ উপাচার্যের অংশগ্রহণে গোবিপ্রবিতে শিক্ষা সমাপনী
নতুনবাজারের সেই রনির বুলেটের যন্ত্রণা আজো থামেনি
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গত ১ বছরে শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। এই প্রশাসন আমরা এনেছি। কিন্তু যদি তারা আমাদের দাবি পূরণে ব্যর্থ হয়, আমরা তাদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিতে বাধ্য হবো। হচ্ছে, হবে, প্রসেসিংয়ে আছে—এ ধরনের কথা আর মেনে নেওয়া হবে না।
ইসলামি স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী বিএম আতিকুর রহমান তানজিল বলেন, “কোনো অছাত্র বা বয়োবৃদ্ধ দিয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হবে না। ছাত্রত্ব যাদের আছে, তারাই নির্বাচনে অংশ নেবে। পাশাপাশি দ্রুত আবাসন ভাতা প্রদানেরও ব্যবস্থা করতে হবে।”
দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী তৌহিদুল ইসলাম বলেন, “ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও একটি ক্যাফেটেরিয়া সম্পন্ন করতে পারেনি প্রশাসন। আমাদের এই প্রশাসন কাজ করতে না পারলে তাদের চলে যেতে হবে।”
আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য মাসুদ রানা বলেন, “৫ আগস্টের আন্দোলনের পর ভেবেছিলাম আলাদা করে কিছু চাইতে হবে না। কিন্তু সেই আদায় করা দাবি আজো বাস্তবায়িত হয়নি। ১ বছর পেরিয়েও শিক্ষার্থীরা হলে উঠতে পারেনি। দাবি পূরণে পদক্ষেপ না নিলে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলব।”
ছাত্র অধিকার শাখার সভাপতি একেএম রাকিব বলেন, “আমরা ভেবেছিলাম এই প্রশাসন দ্রুত জকসুসহ শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো বাস্তবায়ন করবে। কিন্তু গত ১ বছরে তারা কেবল জকসু নীতিমালাটি ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদ করতে পেরেছে। নীতিমালা অনুবাদ করতেই এক বছর লেগেছে; তাহলে নির্বাচনের আয়োজন করতে কত সময় লাগবে?”
শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মো. রিয়াজুল ইসলাম বলেন, “আগামী দুই কর্মদিবসের মধ্যে রোডম্যাপ ঘোষণার তারিখ জানাতে হবে। তা না হলে দ্বিতীয় দফা আন্দোলন শুরু হবে, যা মোকাবিলা করা প্রশাসনের পক্ষে কঠিন হবে।”
ছাত্র অধিকারের সাংগঠনিক সম্পাদক অপু মুন্সির সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরো বক্তব্য দেন ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের মুখ্য সংগঠক ফেরদৌস শেখ, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও আপ বাংলাদেশের নেতা মাসুদ রানা, আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি আব্দুল আলীম আরিফ প্রমুখ।
ঢাকা/লিমন/মেহেদী