ন্যূনতম সংস্কারের জন্য ধৈর্য ধরে সরকারকে সহযোগিতা করা উচিত
Published: 3rd, February 2025 GMT
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, “আমরা চাই নির্বাচনের জন্য একটি সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি হোক। পাশাপাশি নূন্যতম যে সংস্কারগুলো না হলে সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি হবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত ধৈর্য ধরে সরকারকে সহযোগিতা করা উচিত।”
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ফেনীর পরশুরামের বল্লামুখা বাঁধ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
ডা.
আরো পড়ুন:
ধোঁকাবাজ রাজনীতিকদের দিয়ে দেশের পরিবর্তন সম্ভব নয়: শফিকুর রহমান
নির্বাচনের আগেই বিচার করতে হবে: সাদ্দাম
সরকার পতনের আন্দোলনে প্রবাসীদের বড় অবদান রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এই আন্দোলনে ও দেশ গড়ায় প্রবাসী ভাইদের অবদান অস্বীকার করতে পারব না। তাদের বিশাল অবদান রয়েছে। এজন্য আন্দোলনে যারা জীবন দিয়েছেন বা পঙ্গু হয়েছেন তাদের ন্যায় আমরা প্রবাসীদের কাছেও ঋণী। সবমিলিয়ে পুরো জাতির কাছেই আমরা ঋণী।”
বিভিন্ন দাবিতে অভ্যুত্থানে আহতদের চলমান আন্দোলন প্রসঙ্গে জামায়াতের আমির বলেন, “যাদের ত্যাগ ও তিতিক্ষার জন্য আজকে আমরা এমন একটি পরিবেশ পেয়েছি, তাদের প্রতি সম্মান রেখে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করতে হবে। তার মধ্যে শহীদ পরিবারের পাশে দাঁড়ানো, আহতদের সুচিকিৎসার জন্য সরকার ও জনগণ মিলে সর্বাত্মক চেষ্টা করতে হবে।”
ফেনীর বন্যায় দলের কর্মতৎপরতা উল্লেখ করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “আমরা তখনও এসেছিলাম। একটি দল হিসেবে আমাদেরও সামর্থ্যের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তারপরও যতটুকু পেরেছি আমরা করেছি। এখনো নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি।”
তিনি বলেন, “শুধু এই বেড়িবাঁধ নয়, এখানে পুরো নদীজুড়ো যে ব্লকগুলো দেওয়া হয়েছিল সেগুলো পড়ে গেছে। সেখানে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়নি। যদি দুর্নীতি না হতো, বছর বছর যে বাজেট হয়েছে তা কাজে লাগতো তাহলে মানুষের দুঃখ দূর হয়ে যেতো। অতীতে যারা এ অপকর্ম করেছে তারাও ফল ভোগ করবে।”
জামায়াতের আমির বলেন, “ভবিষ্যতে আমরা এমন সরকার চাই, যাদের গ্রাম থেকে শুরু করে পার্লামেন্টে দায়বদ্ধতা থাকবে। তাদের হাতগুলো দুর্নীতি থেকে মুক্ত থাকবে এবং জনগণের আমানতের খেয়ানত হবে না। তাহলেই উন্নয়নের জন্য দেশের যে সম্পদ ব্যয় হবে, তা কাজে লাগবে। দেশের চেহারাও বদলে যাবে। দেশ মাথা উঁচু করে করে দাঁড়াবে।”
এর আগে ফুলগাজীর আনন্দপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ শ্রাবণের কবর জিয়ারত করেন জামায়াতের আমির। পরে ফেনী পৌরসভার সুলতানপুর এলাকার এক হিন্দু পরিবারকে বসতঘর উপহার দেন তিনি।
এ সময় জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম মাসুম, কুমিল্লা মহানগরীর আমির কাজী দীন মোহাম্মদ, কেন্দ্রীয় মজলিসের শুরা সদস্য ও সাবেক ফেনী জেলা আমির অধ্যাপক লিয়াকত আলী ভূঁইয়া, জেলা জামায়াতের আমির মুফতি আবদুল হান্নানসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/সাহাব/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
বাজেটের ত্রুটি সংশোধনের আহ্বান
২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ২২ জুন পাসের আগে বাজেটে যেসব ত্রুটি রয়েছে তা সংশোধন করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।
শনিবার (১৪ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি আয়োজিত ‘বাজেট: দেড় দশকের অভিজ্ঞতা ও অর্থনীতির গতিপথ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “আমরা চাই ২২ তারিখের আগে বাজেটে যেসব ত্রুটি রয়েছে তা সংশোধন করা হোক। আমাদের এখন যেসব সংস্কার কমিটিগুলো রয়েছে তারা যেসব সুপারিশ দিয়েছে, সেগুলো অল্প করেও যদি বাস্তবায়ন করা হতো, তাহলেও বাজেটে কিছুটা নতুনত্ব আসতো। সংস্কার কমিশনগুলো কি স্রেফ অলঙ্কার হিসেবে রয়েছে নাকি, আমার জানা নেই। আমি চাই, সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের উদ্যোগ সরকারের পক্ষ থেকে গ্রহণ করা হোক। এবারের বাজেটে দেখা যাচ্ছে যে সুদ সর্বোচ্চ পর্যায়ে আছে। এটা যদিও বর্তমান সরকারের দোষ না।এটার জন্য আগের সরকারই দায়ী।”
আরো পড়ুন:
নির্দেশনামূলক বাজেট দিতে অন্তর্বর্তী সরকার ব্যর্থ: এবি পার্টি
প্রস্তাবিত বাজেট নব্য ফ্যাসিবাদী রাজনৈতিক দর্শনের প্রতিফলন: জিএম কাদের
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, “সরকার মেগা প্রকল্প থেকে বের হতে চায়, এটা তাদের প্রত্যাশা। কিন্তু যেসব মেগা প্রকল্প এখন চলমান রয়েছে, সেগুলোরও একটি পর্যালোচনা করতে হবে। উন্নয়ন নাম দিয়ে যেসব প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে, যা বিলাসী ও জনগণের জন্য বিপজ্জনক। যেমন-রূপপুর, মাতারবাড়ি, রামপাল, এসব প্রকল্প থেকে সরকারের বের হয়ে আসার কোনো উদ্যোগ আমরা দেখিনি। এখন থেকে বের হওয়ার জন্য সরকার যে উদ্যোগ নিতে পারতো, তা হলো জাতীয় সক্ষমতার উন্নয়নের বিকাশ ঘটানো। আর এই বিকাশ ঘটানো হলে অনেক কম দামে আমরা গ্যাস পাব, বিদ্যুৎ খাতে যে বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি রয়েছে তা আর দিতে হবে না। পরিবেশ বিনাশী কোনো প্রকল্পেও যেতে হবে না সরকারের।”
অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, “তবে দুঃখজনক যে, বর্তমান সরকার যে বাজেট উপস্থাপন করেছে, তাতে এই ধরনের পরিকল্পনা নেই। বাজেটে আগের ধারাবাহিকতাই দেখা যাচ্ছে, ধারাবাহিকতায় উন্নয়ন শুধু শিরোনামে দেখা যায়, বাস্তবতায় তা হলো জনগণের জীবন বিপণ্নকারী।”
সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন লেখক কল্লোল মোস্তফা, গবেষক মাহা মির্জা প্রমুখ।
ঢাকা/রায়হান/সাইফ