রাইজিংবিডির বনভোজন ও প্রতিনিধি সম্মেলন বৃহস্পতিবার
Published: 5th, February 2025 GMT
‘সব প্রাণ বলে আজ সদলবলে শিহরিত তনু-মন
দেখ খুশি চারিদিক-আলো ঝিকমিক, হচ্ছে বনভোজন।’
প্রাণের উচ্ছ্বাসে সদলবলে দেশের জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল রাইজিংবিডি ডটকমের কর্মীরা মিলিত হচ্ছেন বনভোজনে।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাজধানী থেকে মাত্র ১৫ কিলোমিটার দূরে সাভারে নীলাবর্ষা রিসোর্টে এই আয়োজন করা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
লক্ষ্মীপুরে ৪ সাংবাদিককে আটকে মারধর, ‘গুলি’
শরীয়তপুরে হাতুড়ি নিয়ে সাংবাদিকের ওপর হামলা, আহত ৪
পিকনিক ও প্রতিনিধি সম্মেলনে অংশ নেবেন রাইজিংবিডি ও ওয়ালটনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
সবার আনন্দঘন অংশগ্রহণে সকালের নাস্তা সেরে সাড়ে ৯টা থেকে শুরু হবে প্রথম পর্ব। এ পর্বে থাকবে ক্রিকেট, ফুটবল, স্ট্যাম্পিং, গোলিং, টিটি ব্যাট-বল, বল থ্রো করে ঝুড়িতে ফেলাসহ বিভিন্ন খেলা। সবাই অংশ নিতে পারবেন প্রতিটি ইভেন্টে। দুপুরে সুইমিংয়েরও ব্যবস্থা থাকবে। খেলায় বিজয়ী ও বিজিত উভয় দলের জন্য থাকছে পুরস্কার।
এরপর দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে প্রতিনিধি সম্মেলন। সম্মেলনে রাইজিংবিডি ডটকমের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন।
এ বিষয়ে রাইজিংবিডির বার্তা সম্পাদক রাসেল পারভেজ বলেন, “রাইজিংবিডি ডটকমের প্রতিনিধি সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন বিভাগ, জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধিরা। প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে নেওয়ার স্বার্থে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাদের মতবিনিময়ের আয়োজন করা হয়েছে। রাইজিংবিডিকে নতুন লক্ষ্যে নিয়ে যেতে সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা নিয়ে সম্মেলনে আলোচনা হবে।”
দুপুরের খাবার ও বিরতির পর দ্বিতীয় পর্বে থাকবে বাউল গান, গল্পস্বল্প, কবিতা আবৃত্তি ও ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স। এরপর কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে পিঠামুখ। বিকেল ৪টায় হবে সবচেয়ে আকর্ষণীয় খেলা রাফেল ড্র। তারপর বিকেল ৫টায় পুরস্কার বিতরণ ও নাস্তা।
রাইজিংবিডির নির্বাহী সম্পাদক তাপস রায় বলেন, “এ ধরনের আয়োজন সব সময়ই উৎসবমুখর হয়ে থাকে। রাইজিংবিডির এ আয়োজনও তেমনি উৎসবমুখর এবং প্রাণবন্ত হবে বলে আমি আশা করছি।”
ঢাকা/সাইফ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রেন থেকে পড়ে ৮ দিন ধরে হাসপাতালে ছেলে, ফেসবুকে ছবি দেখে ছুটে এলেন মা
প্রতিদিনের মতো কাজ শেষে গতকাল সোমবার বাসায় ফিরছিলেন নাজমা বেগম। ঢাকার টঙ্গী এলাকায় থাকেন তিনি। পরিচিত এক ব্যক্তি তাঁকে হঠাৎ ফোন করে জানান, তাঁর নিখোঁজ ছেলের সন্ধান পাওয়া গেছে। দ্রুত ওই ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করেন নাজমা। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা একটি ভিডিও দেখান নাজমাকে। সে ভিডিওতে দেখতে পান, তাঁর ১০ দিন ধরে নিখোঁজ ছেলে আবদুল্লাহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি।
ছেলের খোঁজ পেয়ে আজ মঙ্গলবার সকালে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে ছুটে আসেন তিনি। রেলস্টেশন থেকে সরাসরি চলে আসেন চমেক হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগে। এখানেই ৮ দিন ধরে ভর্তি আবদুল্লাহ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ৮ সেপ্টেম্বর আহত অবস্থায় আবদুল্লাহকে হাসপাতালে আনা হয়। সে সময় তার নাম-ঠিকানা কিছুই জানা যায়নি। অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবেই হাসপাতালের নিউরোসার্জারি ওয়ার্ডে নেওয়া হয় তাকে। পরদিন তার অস্ত্রোপচার হয়। গত শনিবার আবদুল্লাহর জ্ঞান ফেরে। এরপর নিজের ও বাবা-মায়ের নাম আর বাসার ঠিকানা জানায় সে।
চিকিৎসকেরা সেই সূত্রে ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ নানাভাবে খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করেন। ফেসবুকে আবদুল্লাহর ছবি দিয়ে খোঁজ চাওয়া হয় বাবা-মায়ের। সেই ছবি পরিচিতদের মাধ্যমে দেখেন নাজমা বেগম। এরপর ছুটে আসেন চট্টগ্রামে। হাসপাতালে এসেই নার্সদের সহায়তায় যান নিউরোসার্জারি বিভাগে। সেখানে হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ)চিকিৎসাধীন আবদুল্লাহকে দেখেন।
আজ বিকেলে হাসপাতালের নিউরোসার্জারি ওয়ার্ডের সামনে কথা হয় আবদুল্লাহর মা নাজমা বেগমের সঙ্গে। সকালেই চট্টগ্রাম পৌঁছেছেন তিনি। জানালেন, তিন ছেলেমেয়ের মধ্যে ১০ বছর বয়সী আবদুল্লাহ সবার বড়। ছোট মেয়ের বয়স পাঁচ ও আরেক ছেলের বয়স দুই। আবদুল্লাহ সুস্থ আছে জেনে স্বস্তি পেলেও দুশ্চিন্তায় আছেন তিনি। কারণ, এটিই প্রথমবার নয়, এর আগেও কয়েকবার ঘর থেকে কিছু না বলে বেরিয়ে যায় সে।
নাজমা বেগম বলেন, প্রায়ই আবদুল্লাহ ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। এদিক–সেদিক চলে যায়। পরে আবার ফিরে আসে। এর আগেও ঢাকার আশপাশে এদিক-সেদিক চলে গিয়েছিল সে। ৬ সেপ্টেম্বর সে ভাত খাওয়া থেকে উঠে হঠাৎ চলে যায়। সে ফিরে আসবে এই আশায় থানায় যাননি। কিন্তু ১০ দিন হয়ে যাওয়ায় এদিক–সেদিক খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। ঢাকায় বিভিন্ন স্টেশনে ছেলের খোঁজে গেছেন বলে জানান নাজমা।
চমেক হাসপাতালে চিকিৎসকেরা আবদুল্লাহর বরাত দিয়ে জানান, বাসা থেকে বেরিয়ে সে কক্সবাজার যাচ্ছিল। পথে চট্টগ্রামে ট্রেন থামলে সে ট্রেন থেকে পড়ে যায়। চিকিৎসার পর এখন সুস্থ হয়ে উঠছে সে।
চিকিৎসকেরা জানান, আবদুল্লাহকে যখন আনা হয় তার মাথায় গুরুতর আঘাত ছিল। তার মাথার এক পাশের হাড় ভেঙে গিয়েছিল। ট্রেন থেকে পড়ার কারণে মাথায় আঘাত লাগে। হাড়ের কিছু অংশ মস্তিষ্কের ভেতরে গেঁথে যায়। অস্ত্রোপচারও সফল হয়েছে। তবে জ্ঞান না ফেরায় তার পরিচয় জানা যায়নি। জ্ঞান ফেরার পর তার তথ্য নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করা হয়।
শুরু থেকে আবদুল্লাহর অস্ত্রোপচার ও চিকিৎসা করেছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিউরোসার্জারি বিভাগে সহকারী অধ্যাপক মু. ইসমাইল হোসেন। তিনি বলেন, ‘তার হাড় ভেঙে মস্তিষ্কের ভেতরে চলে গিয়েছিল। অস্ত্রোপচারের পর স্বাভাবিকভাবে সেটি জোড়া দেওয়া হয়েছে। এখন সে পুরোপুরি সুস্থ। তাকে আমরা আজ-কালের মধ্যে ডিসচার্জ করে দেব। শিশুকে পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দিতে পেরে আমরাও আনন্দিত।’