প্রেমিকাকে হত্যা: রিমান্ড শেষে কারাগারে ফাহিম
Published: 7th, February 2025 GMT
রাজধানীর মিরপুরে ফারজানা ইয়াসমিন নামে ঢাকা সেন্ট্রাল ওমেনস কলেজের ডিগ্রি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা মামলায় প্রেমিক তানজিদ জোবায়ের ফাহিমকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মিনহাজুর রহমানের আদালত শুনানি শেষে জামিনের আবেদন নাকচ করে এ আদেশ দেন।
এদিন চার দিনের রিমান্ড শেষে ফাহিমকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক পলাশ খান। আসামিপক্ষের আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে গত ৩ ফেব্রুয়ারি ভুক্তভোগীর ভাই নওশেদ আহম্মেদ বাদী হয়ে মিরপুর মডেল থানায় ফাহিমকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত বছরের ২৮ মে ফারজানা ইয়াসমিন কাউকে কিছু না জানিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পরেও যখন সে বাসায় ফিরে আসে না, তখন পরিবারের সন্দেহ হয় সে কোনো সম্পর্কে জড়িয়েছে অথবা সম্পর্ক করে কাউকে বিয়ে করেছে। এরপর গত ২ ফেব্রুয়ারি বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে একজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি তার মেঝ বোন সাজিয়া সুলতানার ইমু নম্বরে ফোন করে জানান, তিনি ফারজানা নাসরিনকে ২/১ দিনের মধ্যে তাদের বাসায় নিয়ে যাবে। অজ্ঞাত ব্যক্তির পরিচয় জানতে চাইলে সে ফোন কেটে দেয়।
এরপর ওইদিনই সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে পুনরায় অজ্ঞাত ব্যক্তি সাজিয়া সুলতানার ইমুতে কল করে জানান, ফারজানা নাসরিন মৃত্যুবরণ করেছে। তখন সাজিয়া সুলতানা বিষয়টি নওশেদ আহম্মেদকে জানায়।
নওশেদ আহম্মেদ অজ্ঞাত ব্যক্তির মোবাইল নম্বরে ফোন করে নাম জিজ্ঞাসা করলে তার নাম ফাহিম বলে প্রকাশ করেন। এরপর মিরপুর ৬০ ফিট ছাপড়া মসজিদের কাছে গিয়ে তাকে ফোন করতে বলেন। নওশেদ আহম্মেদ মিরপুর মডেল থানা পুলিশকে বিষয়টি অবগত করেন। থানা পুলিশ এবং সিআইডি ক্রাইমসিন ইউনিট তাৎক্ষণিকভাবে তাকে নিয়ে মিরপুর মডেল থানার উত্তর পীরেরবাগে তানজিদ জোবায়ের ফাহিমের বাসায় গিয়ে ফারজানা নাসরিনের মৃতদেহ ঘরের মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন।
নওশেদ আহম্মেদ অভিযোগ করেন, গত ২ ফেব্রুয়ারি বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার মধ্যে যেকোনো সময় তানজিদ জোবায়ের ফাহিমসহ অজ্ঞাতনামারা পূর্বপরিকল্পিতভাবে ফারজানা নাসরিনকে দীর্ঘদিন ঘটনাস্থলে আটক রেখে অসামাজিক কার্যকলাপ করে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ গুম করার চেষ্টা করে।
ঢাকা/মামুন/এসবি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
১৭ মাস পর দেশের মাটিতে টেস্ট জয় বাংলাদেশের
প্রায় দেড় বছর পর দেশের মাটিতে টেস্ট জয়ের স্বাদ পেল বাংলাদেশ। চট্টগ্রামে দ্বিতীয় টেস্টে জিম্বাবুয়েকে ইনিংস ও ১০৬ রানে হারিয়ে সিরিজ ১-১ সমতায় শেষ করল টাইগাররা। ঘরের মাঠে ১৭ মাস ও টানা ছয়টি টেস্টে জয়বিহীন থাকার হতাশা ভুলিয়ে দিল এই দুর্দান্ত সাফল্য।
বাংলাদেশের জয়ে সবচেয়ে বড় অবদান মেহেদী হাসান মিরাজের। প্রথম ইনিংসে ব্যাট হাতে তুলে নেন সেঞ্চুরি, এরপর বল হাতে দ্বিতীয় ইনিংসে শিকার করেন ৫ উইকেট। টেস্ট ক্রিকেটে এটি তার ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা পারফরম্যান্স। মিরাজ ছাড়াও ৯ উইকেট শিকার করে ম্যাচে বড় অবদান রাখেন তাইজুল ইসলাম, আর ওপেনার সাদমান ইসলামও তুলে নেন দারুণ এক সেঞ্চুরি।
প্রথম ইনিংসে জিম্বাবুয়ে করে ২২৭ রান। জবাবে টাইগাররা তোলে ৪৪৪ রান, পায় ২১৭ রানের লিড। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ১১১ রানে গুটিয়ে যায় সফরকারীরা। ফলে মাত্র তিন দিনেই টেস্ট জয়ের উৎসবে মাতে স্বাগতিকরা।
বল হাতে টাইগারদের শুরুটা এনে দেন তাইজুল ইসলাম। ইনিংসের সপ্তম ওভারে ব্রায়ান বেনেটকে ফেরান স্লিপে সাদমানের হাতে ক্যাচ করিয়ে। একই ওভারে এলবিডব্লিউ করেন নিক ওয়েলচকে, রিভিউ নিয়ে পান উইকেটটি। এরপর উইলিয়ামসকেও বিদায় করেন অফ স্পিনার নাঈম ইসলাম, দ্বিতীয় স্লিপে সাদমানের হাতেই ধরা পড়েন এই অভিজ্ঞ ব্যাটার।
চতুর্থ উইকেটে আরভিন-কারেন জুটি কিছুটা প্রতিরোধ গড়লেও, মিরাজ এসে ভেঙে দেন সেই জুটি। এক ওভারেই ফেরান আরভিন ও মাদেভারেকে। এরপর তাফাদওয়া সিগা, মাসাকাদজা ও কারেনকে ফিরিয়ে ইনিংসে নিজের ফাইফার পূর্ণ করেন মিরাজ। তৃতীয় বাংলাদেশি হিসেবে এক টেস্টে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েন তিনি, সাকিব আল হাসান ও সোহাগ গাজীর পাশে নাম লেখান।
শেষ দিকে আবার বল হাতে ফিরে রিচার্ড এনগারাভাকে ফেরান তাইজুল। এরপর রানআউটের মাধ্যমে শেষ হয় জিম্বাবুয়ের ইনিংস। এই জয়ে শুধু সিরিজে সমতায়ই ফিরেনি বাংলাদেশ, বরং দেশের মাটিতে দীর্ঘ দিনের টেস্ট জয়ের অপেক্ষাও ঘুচিয়েছে।