শাওন ও সাবাকে পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দিল ডিবি
Published: 7th, February 2025 GMT
অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন ও সোহানা সাবাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার বিকেল ৪টায় নিজ নিজ পরিবারের জিম্মায় তাদের দেওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির মুখপাত্র মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।
তিনি জানান, রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগে দুজনকে ডিবি কার্যালয়ে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ডিবি কার্যালয় থেকে আফরোজ শাওন এবং সোহানা সাবাকে নিজ নিজ পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।
গত ১৫ জানুয়ারি কলকাতার হোটেল পার্কে অনুষ্ঠিত সভায় সরাসরি এবং ভার্চুয়ালি যারা উপস্থিত ছিলেন তাদের মধ্যে শাওনের নাম উঠে আসে। এরপর তাকে গোয়েন্দা নজরদারিতে রাখা হয়।
এরপরই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে এই অভিনেত্রীকে রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগে নিজেদের হেফাজতে নেয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
রাজধানীর ধানমন্ডির বাসা থেকে তাকে একটি মাইক্রোবাসে সরাসরি মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়।
এর আগে একইদিন সন্ধ্যায় এই অভিনেত্রীর জামালপুরে নরুন্দি রেলওয়ে সংলগ্ন বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে স্থানীয় ছাত্র-জনতা।
এরপর শুক্রবার সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে সোহানা সাবাকে আটক করে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়।
ডিবি সূত্রে জানা যায়, অভিনেত্রী শাওনের পর সোহানা সাবা নজরদারিতে ছিলেন। তার বিরুদ্ধে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগ রয়েছে।
আওয়ামী লীগপন্থি শিল্পীদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ‘আলো আসবেই’ এর সক্রিয় সদস্য ছিলেন অভিনেত্রী সোহানা সাবা।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কাশ্মীরের পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা নিয়ে ওমর আবদুল্লাহ-বিজেপি কাজিয়া তীব্র হচ্ছে
পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা ফেরত পাওয়া নিয়ে জম্মু-কাশ্মীরের শাসক দল ন্যাশনাল কনফারেন্সের (এনসি) সঙ্গে বিরোধী দল বিজেপি ও উপরাজ্যপাল মনোজ সিনহার কাজিয়া তীব্রতর হচ্ছে। দুই পক্ষের এই পাল্টাপাল্টি দাবির মধ্য দিয়ে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হলেও বিজেপি নেতৃত্ব এখনই পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা ফেরত দেওয়ার বিষয়টি আদৌ ভাবনাচিন্তার মধ্যে আনছে না।
কিছুদিন আগে মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ হতাশ হয়ে বলেছিলেন, রাজ্যের মর্যাদা পাওয়ার শর্ত হিসেবে যদি তাঁকে পদত্যাগ করতে হয়, তাহলে তিনি তা–ও করতে প্রস্তুত। উপরাজ্যপাল মনোজ সিনহা মন্তব্য করেছিলেন, নির্বাচিত সরকার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ। সেই ব্যর্থতার দায় এড়াতে তারা রাজ্যের মর্যাদা না পাওয়াকে অজুহাত হিসেবে খাড়া করতে পারে না।
ওই বিতর্কের পর নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভার বিরোধীদলীয় নেতা বিজেপির সুনীল শর্মা। গত রোববার তিনি বলেন, ওমর আবদুল্লাহ ২০১৪ সালেও বিজেপির হাত ধরতে প্রস্তুত ছিলেন। ২০২৪ সালের নির্বাচনের পরও দিল্লিতে গিয়ে তিনি বিজেপির শীর্ষ নেতাদের বলেছিলেন, পূর্ণাঙ্গ রাজ্যের মর্যাদা ফেরত দেওয়া হলে তিনি বিজেপির সঙ্গে সরকার গড়তে প্রস্তুত।
সুনীল শর্মা বলেন, ‘ওমর আবদুল্লাহ কোরআনের শপথ নিয়ে এ অভিযোগ অস্বীকার করতে পারবেন না। কিন্তু আমি বিষয়টি শপথ নিয়ে বলতে পারি।’
সুনীলকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ গতকাল রোববার বলেন, ‘পবিত্র কোরআনের শপথ নিয়ে বলছি, রাজ্যের মর্যাদা অথবা অন্য কোনো কারণে বিজেপির সঙ্গে সমঝোতার প্রস্তাব কখনো দিইনি।’ ‘এক্স’ হ্যান্ডলে এই পোস্টের সঙ্গে সুনীলের দাবিসংক্রান্ত ভিডিও জুড়ে দিয়ে ওমর বলেন, ‘বেঁচে থাকার জন্য সুনীলের মতো মিথ্যার আশ্রয় আমায় নিতে হয় না।’
মোদি সরকার ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ দ্বিখণ্ডিত করেছিল। সেই থেকে বিজেপি জানিয়ে আসছে, ঠিক সময়ে জম্মু-কাশ্মীরকে রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়া হবে। সংসদের পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টকেও বিজেপি সরকার এ প্রতিশ্রুতির কথা জানিয়েছে।
তবে ঘটনা হলো, ২০২৪ সালে বিধানসভা নির্বাচনের পরও কেন্দ্রীয় সরকার সেই প্রতিশ্রুতি পালন করেনি। এরপর পুলওয়ামা–কাণ্ড ঘটে গেছে। ‘অপারেশন সিঁদুর’ হয়েছে। তার পর থেকে কেন্দ্রীয় সরকার আজ পর্যন্ত ওই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। হতাশ ওমরকে তাই বলতে হয়েছিল, বিজেপি কথা রাখলে তিনি পদত্যাগ পর্যন্ত করতে প্রস্তুত।
বিজেপির বিরোধিতা করেই এনসি গত নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে ক্ষমতায় আসে। সম্প্রতি ওমর আবদুল্লাহ এমন কথাও বলেন, জম্মু-কাশ্মীরে একমাত্র তাঁদের দলই বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করছে। কেন্দ্রের প্রতিনিধি হিসেবে উপরাজ্যপাল পদে পদে নির্বাচিত সরকারকে বাধা দিচ্ছেন।
ওমর এ কথাও বলেন, পুলওয়ামা–কাণ্ডের দায় পুরোপুরি কেন্দ্রের। কেন্দ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি। এর ফল ভোগ করতে হচ্ছে কাশ্মীরি জনগণকে। ব্যবসা-বাণিজ্য থমকে গেছে। কর আদায় কমে গেছে। হোটেলগুলো খাঁ খাঁ করছে। হাউসবোট অচল। তিনি বলেন, নির্বাচিত সরকারকে কাজ করতে দিলে এসব হতো না।
বিজেপি নেতা সুনীল শর্মা বলেছিলেন, ওমরের প্রস্তাব তাঁর দল প্রত্যাখ্যান করেছিল। তাঁকে বলা হয়েছিল, বিজেপি নেতৃত্ব কোনো রকম সুবিধাবাদী পদক্ষেপ নেয় না। তারা নীতির সঙ্গে আপস করে না।
অবশ্য রাজ্য দ্বিখণ্ডিত করার আগে মেহবুবা মুফতির দল পিডিপির সঙ্গে জোট বেঁধে বিজেপি জম্মু-কাশ্মীরে সরকার গড়েছিল। পরে জোট ভেঙে বেরিয়ে এসে রাষ্ট্রপতির শাসন জারি করে। এরপর বিধানসভা জিইয়ে রেখে রাজ্যটাই ভেঙে দেওয়া হয়। গড়া হয় দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল।