Prothomalo:
2025-06-16@17:17:18 GMT

ঘুমের সঠিক আদবকেতা

Published: 8th, February 2025 GMT

ঘুমাতে যাওয়ার আগে ভালোভাবে পবিত্র হওয়া জরুরি। ডান কাত হয়ে শোয়ার অভ্যাস ভালো। বারা ইবনে আজিজ (রা.)-এর কাছ থেকে একটি হাদিসটি জানা যায়। তিনি বলেছেন, একদিন রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে বললেন, রাতে ঘুমানোর প্রস্তুতির সময় নামাজের অজুর মতো অজু করে ডান কাতে শুয়ে বলবে, ‘হে আল্লাহ! আমি নিজেকে আপনার কাছে সমর্পণ করলাম এবং অনুগত হলাম। আমার কাজ আপনার ওপর ন্যস্ত করলাম, আমার পিঠ আপনার কাছে সোপর্দ করলাম এবং আপনার প্রতি আগ্রহে ও ভয়ের সঙ্গে আপনার সাহায্যের প্রতি ভরসা করলাম। আপনি ছাড়া অন্য কোথাও মুক্তি ও নিরাপত্তার স্থান নেই। আমি আপনার সেই কিতাবে বিশ্বাস করি, যা আপনার প্রেরিত নবীর ওপর অবতীর্ণ করেছেন।’ এরপর নবী (সা.

) বলেন, ‘এভাবে (ওই রাতে) যদি তোমার মৃত্যু হয়, তাহলে তুমি ইসলামের ওপরেই মারা গেলে। এটাই হবে তোমার সর্বশেষ কথা।’ (বুখারি, হাদিস: ২৪৭, মুসলিম, হাদিস: ২,৭১০)

আরও পড়ুনফজরের নামাজ পড়লে ১০ পুরস্কার ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তাঁর আরও একটি নিদর্শন হলো রাত ও দিনে তোমাদের ঘুম এবং আল্লাহর অনুগ্রহ থেকে তোমাদের (জীবিকা) অন্বেষণ।’ (সুরা রুম, আয়াত: ২৩)

আল্লাহ আরও বলেন, ‘তোমাদের ঘুমকে করেছি ক্লান্তি দূরকারী, রাত্রিকে করেছি আবরণ।’ (সুরা নাবা, আয়াত: ৯-১০)

ঘুম মানুষের একটি সহজাত বৈশিষ্ট্য। কিন্তু ঘুমানোর ক্ষেত্রেও সুন্নত থেকে শিষ্টাচারের নির্দেশনা পাওয়া যায়। ঘুমাতে যাওয়ার আগে বেশ কিছু আমল আছে, যা নিয়মিত অনুশীলন করা উচিত।

বিছানায় শোয়ার আগে ভালোমতো গায়ের পোশাক এবং শোয়ার বিছানা দুটো ভালোভাবে ঝেড়ে নিতে হবে। আবু হুরায়রা (রা.)-র কাছ থেকে একটি হাদিস পাওয়া যায়। রাসুল (সা.) বলেছেন, যখন তোমাদের কেউ তার বিশ্রাম নেয় সে যেন তার পরিধেয় বস্ত্রের ভেতরের দিক দিয়ে বিছানা ঝেড়ে নেয়। কেননা, সে জানে না তার চলে যাওয়ার পর বিছানায় কী এসেছে। (মুসলিম, হাদিস: ২,৭১৪, আহমাদ, হাদিস: ৭,৭৫২)

আরও পড়ুনতাহাজ্জুদ নামাজের গুরুত্ব২৯ নভেম্বর ২০২৪

আমর ইবনে শোয়াইব (রহ.) তাঁর দাদার কাছ থেকে বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের সন্তানদের বয়স সাত বছর হলে তাদের নামাজের জন্য নির্দেশ দাও। যখন তাদের বয়স ১০ বছর হয়ে যাবে তখন (নামাজ না পড়লে) তাদেরকে শাসন করবে এবং তাদের বিছানা আলাদা করে দেবে।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ৪৯৫)

ক্লান্তি বা অন্য কারণে রাতের নামাজ পড়ার সময় কারও ঘুম আসতে পারে। সেই সময় অনেকে জোর করে জেগে থেকে নামাজ আদায় করেন, যা কাম্য নয়। এতে নামাজের হক নষ্ট হয়। বরং ঘুম এলে ঘুমিয়ে নেওয়াই উচিত। হজরত আয়িশা (রা.)-র কাছ থেকে একটি হাদিসে পাওয়া গেছে যে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যখন নামাজ পড়া অবস্থায় তোমাদের কারও ঘুম আসবে, তখন তার ঘুমিয়ে যাওয়া উচিত, যতক্ষণ না তার ঘুম চলে যাবে। কারণ, তোমাদের কেউ যদি তন্দ্রা অবস্থায় নামাজ পড়ে, তাহলে সে বুঝতে পারবে না যে সম্ভবত সে ক্ষমা প্রার্থনা করতে গিয়ে প্রকৃতপক্ষে নিজেকে যেন গালি দিয়ে দিচ্ছে।’ ( বুখারি, হাদিস: ২১২, মুসলিম, হাদিস: ৪৮৬)

আরও পড়ুনযে আমলে রিজিক বাড়ে ১৪ জানুয়ারি ২০২৫

জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.)-র কাছ থেকে পাওয়া এক হাদিসে পাওয়া যায় যে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা (রাতে ঘুমানোর আগে) ঘরের দরজাগুলো বন্ধ কোরো, পানির পাত্রের মুখ ঢেকে বা বেঁধে দাও, থালাগুলো উপুড় করে রেখো বা ঢেকে দিয়ো এবং আলো নিভিয়ে দিয়ো। কেননা, শয়তান বন্ধ দরজা খুলতে পারে না, পাত্রের বন্ধ মুখ খুলতে পারে না এবং উপুড় করা বা ঢেকে দেওয়া থালাও খুলতে পারে না। আর (বাতি না নেভালে) দুষ্ট ইঁদুর মানুষের ঘরে আগুন লাগিয়ে দিতে পারে।’ (বুখারি ও মুসলিম)

হুযাইফা (রা.) বলেছেন, ‘নবী (সা.) ঘুমানোর সময় বলতেন, হে আল্লাহ। আমি আপনার নামে মরি ও বাঁচি। তিনি যখন জাগতেন তখন বলতেন, সব প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি আমাদের মৃত্যুর পর পুনরায় জীবিত করবেন।’

আরও পড়ুনযেভাবে ৫ ওয়াক্ত নামাজ এল২৭ অক্টোবর ২০২৪

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বল ছ ন আল ল হ করল ম আপন র

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহীতে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমল ৭৫ পয়সা

রাজশাহীতে হিমাগারে আলু সংরক্ষণে নতুন ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ সোমবার আলুচাষি, ব্যবসায়ী ও হিমাগারমালিকদের উপস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত হয়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, হিমাগারে প্রতি কেজি আলু রাখার জন্য ভাড়া দিতে হবে ৫ টাকা ৫০ পয়সা। এর সঙ্গে যুক্ত হবে শ্রমিকের খরচ ৫০ পয়সা। সেই হিসাবে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমেছে ৭৫ পয়সা।

এর আগে গত মার্চে সরকার প্রতি কেজি আলু রাখার ভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এর পর থেকে এ নিয়ে রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা বাড়তি ভাড়ায় আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন। এ নিয়ে কয়েক দফা তাঁরা রাজপথে আন্দোলনও করেছেন। অন্যদিকে হিমাগারমালিকদের দাবি ছিল, প্রতি কেজি আলুর ভাড়া ৮ টাকা করা হোক।

রাজশাহী কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন এবং রাজশাহী জেলা আলুচাষি ও আলু ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজশাহীতে হিমাগার থেকে বাড়তি ভাড়া না দিলে আলু ছাড়া হবে না। এর প্রতিবাদে ঈদের পর নতুন করে আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা আন্দোলন করে আসছেন। তাঁদের দাবি, আলু রাখার খরচ আগের বছরের মতো চার টাকা করতে হবে। এ নিয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তাঁরা। হিমাগার মালিকপক্ষ এ নিয়ে আলোচনায় বসার তাগিদ দিয়ে আসছিল।

এরই মধ্যে আলুচাষিনেতারা ১৪ জুন সেনাবাহিনীর কাছে এ নিয়ে একটি অভিযোগ দেন। পরে বিষয়টি আমলে নিয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আজ দুপুরে সভা ডাকা হয়। সভায় সব পক্ষের সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয় যে এ বছর সরকার নির্ধারিত প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সার বদলে ৫ টাকা ৫০ পয়সা ও শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা রাখা হবে। আর পেইড বুকিংয়ের ক্ষেত্রে শুধু শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে আলু রাখা চাষি ও ব্যবসায়ীদের। পরে বিকেলে ক্যান্টনমেন্টে হওয়া এই সিদ্ধান্ত প্রশাসনিকভাবে পাস করার জন্য রাজশাহী জেলা প্রশাসকের দপ্তরে সভা হয়।

সভায় আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি, হিমাগার মালিক সমিতি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি, পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামীকাল মঙ্গলবার রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পক্ষ থেকে নতুন ভাড়ার বিজ্ঞপ্তি সব হিমাগারে প্রচার করা হবে।

এ ব্যাপারে সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, এবার আলুর দাম কম। আবার এ নিয়ে দুই পক্ষের সংঘাতের আশঙ্কা ছিল। এ নিয়ে একটি অভিযোগ পান তাঁরা। পরে দুই পক্ষকে নিয়ে সভা হয়। সভায় সবার সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্ত বিকেলে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে আরেকটি সভার মাধ্যমে পাস হয়েছে।

রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মিঠু আহমেদ বলেন, শুরু থেকেই তাঁরা বাড়তি ভাড়ার প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন। কয়েক দিন ধরে তাঁরা হিমাগার থেকে আলু নিতে পারছিলেন না। হিমাগারগুলোয় বাড়তি ভাড়া দিতে হচ্ছিল। এ নিয়ে আন্দোলনের পাশাপাশি সেনাবাহিনীকেও অবহিত করেন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত একটি ভালো সিদ্ধান্ত হয়েছে।

রহমান সিডস স্টোরেজের ব্যবস্থাপক আবদুল হালিম বলেন, সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতি কেজি আলু রাখতে খরচ পড়বে ৫ টাকা ৫০ পয়সা আর শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা। এ ছাড়া যাঁরা আগে থেকেই টাকা দিয়ে অগ্রিম বুকিং দিয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে আলুর কেজিপ্রতি শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে।

রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, নতুন সিদ্ধান্ত সব হিমাগারমালিকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জানানো হবে।

আরও পড়ুনরাজশাহীতে হিমাগারে ভাড়া বাড়ানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ-সমাবেশ১৫ জুন ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ