২৪৮ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের অভিযোগে বেসিক ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু ও তার স্ত্রী সন্তান‌দের বিরুদ্ধে ৪টি পৃথক মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) এসব মামলা করা হ‌য়ে‌ছে। দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন বিষয়টি জানিয়েছেন।

মামলায় অবৈধ সম্পদ অর্জনের পাশাপাশি ৫৮ কোটি টাকা কানাডায় পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে। চার মামলার মধ্যে তিন মামলায় বাচ্চুকে সহযোগী আসামি করা হয়েছে।

আরো পড়ুন:

গাজীপুরে হামলার ঘটনায় ২৩৯ জনের নামে মামলা, গ্রেপ্তার ৩৪

কক্সবাজারের সাবেক ডিসি রুহুল আমিন কারাগারে

আসামিদের বিরুদ্ধে দুদক আইন, ২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারা; মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা এবং দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারা তৎসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় মামলাগুলো করা হয়েছে।

মামলার এজাহা‌রে বলা হয়, প্রথম মামলায় আসামি শেখ আব্দুল হাই বাচ্চুর বিরুদ্ধে ৬৮ কোটি ৭৬ লাখ ৪৬ হাজার ১৫ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন এবং ৫৬ কোটি ৫৭ লাখ ১০ হাজার ২০৭ টাকা কানাডায় পাচারসহ মোট ১২৪ কোটি ৯৩ লাখ ৬ হাজার ২৭৫ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে মিথ্যা তথ্য দেওয়া এবং অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ কানাডায় পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।

দ্বিতীয় মামলায় তার স্ত্রী মিসেস শিরিন আকতার ও শেখ আব্দুল হাই বাচ্চুকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় ৩৬ কোটি ৫১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৬ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করার অভিযোগ আনা হয়েছে।

তৃতীয় মামলায় ছেলে শেখ ছাবিদ হাই অনিক ও বাবা শেখ আব্দুল হাই বাচ্চুকে আসামি করা হয়েছে। ছেলে শেখ ছাবিদ হাই অনিকের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে ৪৩ কোটি ৬২ লাখ ৬০৬ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়া তার বাবার কাছ থেকে ২৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকার ২ কাঠা জমি হেবা দলিল থেকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে গোপন করেছেন। এছাড়া অবৈধভাবে উপার্জিত ৮৭ লাখ ৬২ হাজার ৭৮ টাকা কানাডায় পাচারের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

চতুর্থ মামলায় তার মেয়ে শেখ রাফা হাই ও তার বাবা শেখ আব্দুল হাই বাচ্চুকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় শেখ রাফা হাইয়ের বিরুদ্ধে ৪০ কোটি ৪১ লাখ ৪৫ হাজার ১৬৪ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়া অবৈধভাবে উপার্জিত ৭৪ লাখ ৮১ হাজার ৪৬৩ টাকা কানাডায় পাচার ও সম্পদ বিবরণীতে তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

অন্যদিকে, বাবার কাছ থেকে ৮৬ লাখ ২৫ হাজার টাকার ৬ কাঠা জমি হেবা দলিল থেকে প্রাপ্ত হয়েও গোপন করেছেন তিনি।

২০২৩ সালের ১২ জুন বেসিক ব্যাংকের আলোচিত সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাচ্চুসহ ১৪৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন দেয় দুদক।

সংস্থাটির দায়ের করা মোট ৫৯ মামলার চার্জশিটের মধ্যে ৫৮টি মামলার তদন্তে নতুন আসামি হিসাবে আবদুল হাই বাচ্চু ও কোম্পানি সচিব শাহ আলম ভূঁইয়াকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অথচ ২০১৫ সালে দায়ের করা কোনো মামলাতেই বাচ্চুকে আসামি করা হয়নি। যে কারণে দুদককে বারবার বিভিন্ন প্রশ্নের মুখেও পড়তে হয়েছে। মামলার দীর্ঘ ৮ বছর পর চার্জশিটে আবদুল হাই বাচ্চুকে আসামি করা হয়।

এছাড়া গত বছরের এপ্রিলে রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট বাজারের ৩০.

২৫ কাঠা জমি ক্রয় দেখিয়ে লুটপাট করা প্রায় ৯৫ কোটি টাকা গোপন করার চেষ্টা ও সাড়ে ৮ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগে বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু, তার স্ত্রী-সন্তান ও ভাই এবং হোটেল লা মেরিডিয়ানের মালিক আমিন আহমেদসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

সরকারের ভেতরে একটা অংশ নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা করছে: এনসিপি

সরকারের ভেতরের একটি পক্ষ ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশের বাইরে গিয়ে নিজেরাই ঐকমত্য কমিশন হওয়ার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন। তিনি বলেন, এই চেষ্টার কারণে নির্বাচন ঝুঁকিতে পড়বে।

আজ সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আখতার হোসেন এ কথা বলেন।

আখতার হোসেন বলেন, তাঁদের কাছে স্পষ্টতই প্রতীয়মান যে সরকারের ভেতরের কোনো একটা অংশ সংস্কারকে ভন্ডুল করে নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা করছে।

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ–আলোচনার ভিত্তিতেই কমিশন সুপারিশ উপস্থাপন করেছে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, সেই সুপারিশের ভিত্তিতেই সরকার আদেশ জারি করবে, সেটাই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু যখন সরকারের তরফ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে আরও এক সপ্তাহ রাজনৈতিক দলগুলোকে আলাপ–আলোচনার কথা বলা হয়, তখন মনে হয় যে সরকার আসলে এই সংস্কারের বিষয়গুলো নিয়ে সাপ-লুডো খেলছে। তিনি বলেন, ‘আমরা ৯৬-তে পৌঁছে গিয়েছিলাম, সেটাকে আবার তিনে নিয়ে আসা হয়েছে সাপ কেটে। এ অবস্থায় বাংলাদেশের বর্তমান যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি, তাতে সংকট আরও ঘনীভূত হচ্ছে।’

অতি দ্রুত সরকারকে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানিয়ে এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, সরকারকে নিজেকেই দায়িত্ব নিয়ে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করতে হবে। সামনের সংসদকে গাঠনিক ক্ষমতা প্রদান করার মধ্য দিয়ে সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। গণভোটের মাধ্যমে অর্জিত জনগণের অভিপ্রায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে যেন বাস্তবায়িত হয়, সেই সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ