নির্বাচনের আগে সংস্কারের সুপারিশ বাস্তবায়ন সম্ভব
Published: 10th, February 2025 GMT
সংস্কার কমিশনগুলোর সুপারিশ জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে। পাশাপাশি আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব বলে মনে করে মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’। সোমবার বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদনে ১০টি সুপারিশের মধ্যে এ কথা উল্লেখ করেছে।
এ ছাড়া গত বছর বিভিন্ন গণহত্যা, বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, নির্যাতন এবং অমানবিক ঘটনার সঙ্গে জড়িত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের বিচারের সম্মুখীন করতে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
অধিকারের পাঠানো ৫৪ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, গত বছর ২ আগস্ট থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজনৈতিক সহিংসতায় কমপক্ষে ২০ জন নিহত এবং ২ হাজার ৪৭৮ জন আহত হয়েছেন।
সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২ আগস্ট থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় ১৮ জন সাংবাদিক আহত, ৬ জন লাঞ্ছিত, ৬ জন হুমকি পেয়েছেন এবং তিনটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকা অফিসে হামলা করা হয়েছে।
জুলাই-আগস্ট গণহত্যার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৫২ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ করা হয়েছে। এর মধ্যে গণহত্যায় উস্কানি দেওয়ায় ৩২ সিনিয়র সাংবাদিক অভিযুক্ত।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, গত বছর সারাদেশের অধস্তন আদালতে ৩০৭ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ওই সময় গণপিটুনিতে হত্যা করা হয়েছে ১২১ জনকে। বিভিন্ন কারাগারে মারা গেছেন ৮৩ জন।
৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর ৩০২ হিন্দুর ওপর হামলা ও ভাঙচুরে ১ হাজার ৪১৫টি অভিযোগ পেয়েছে সংস্থাটি। এর মধ্যে ২৮ দশমিক ৪ শতাংশ হয়েছে রাজনৈতিক কারণে। ১ দশমিক ৫২ শতাংশ ঘটেছে সাম্প্রদায়িক কারণে।
এ ছাড়া ভারতীয় সীমান্তে বিএসএফ ২৪ জনকে হত্যা এবং ২১ জনকে আহত করেছে। নিহত ২৪ বাংলাদেশির মধ্যে ২১ জনকে গুলি করে হত্যা এবং তিনজনকে নির্যাতন করে হত্যা করেছে। অবিলম্বে এসব মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধ করতে হবে এবং প্রতিটি হত্যা ও নির্যাতনের বিচার করতে সুপারিশ করা হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আগস ট
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ