‘নিখোঁজ’ সুবা, টিকটক প্রেম এবং শিশুর সুরক্ষা
Published: 11th, February 2025 GMT
রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে গত ২ ফেব্রুয়ারি ১১ বছর বয়সী কিশোরী আরাবি ইসলাম সুবা নিখোঁজ হলে দেশব্যাপী আলোড়ন তৈরি হয়। দুই দিন পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নওগাঁ থেকে তাকে উদ্ধার করে জানায়, প্রেমের সম্পর্কের কারণে সেখানকার এক কিশোরের সঙ্গে পালিয়েছিল সুবা।
প্রায় একইভাবে গত ১৬ ডিসেম্বর কক্সবাজার থেকে প্রেমিকের সন্ধানে মাগুরায় আসে ১৪ বছরের এক কিশোরী। ১১ জানুয়ারি সিলেটের বিশ্বনাথ থেকে নিখোঁজ হওয়া স্কুলপড়ুয়া কিশোরীকে (১৩) পাবনায় প্রেমিকের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। ২৯ ডিসেম্বর সকালে পরীক্ষার ফল জানার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়েছিল সে। ৩০ জানুয়ারি সিলেটের মোগলাবাজার থেকে নিখোঁজ কিশোরী নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে প্রেমিকের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়।
দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে মাদ্রাসাপড়ুয়া এক কিশোরীর (১৭) সঙ্গে রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার শিবপুরের মতিউর রহমান নামে এক তরুণের পরিচয় হয়। গত ১৯ জানুয়ারি ওই তরুণের বিরুদ্ধে শিশু অপহরণের মামলা করেন কিশোরীর বাবা।
আরাবি ইসলাম সুবার ঘটনায় দেশজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন উঠলেও অন্য ঘটনাগুলো তেমন আলোচনায় আসেনি। কিন্তু পাঁচটি ঘটনারই যোগসূত্র ‘টিকটক’। ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মে দীর্ঘদিনের পরিচয়, পরিচয় থেকে ঘনিষ্ঠতা-প্রেম। প্রেমের সম্পর্কের পরিণতি দিতেই অপরিণত বয়সে ঘর ছাড়ছে শিশু-কিশোররা! বাস্তবতা হচ্ছে, সব ঘটনা সংবাদমাধ্যমে আসে না। কাজেই ধরে নেওয়া যায়, প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি। শুধু ঘরছাড়া কিংবা অপহরণেই সীমাবদ্ধ নেই; টিকটকে পরিচয় থেকে প্রেম এবং এ সম্পর্কের জটিলতায় গত দুই মাসে অন্তত চারজন নারী হত্যার শিকার হয়েছেন।
টিকটকসহ অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমে পরিচয়ের সূত্রে অপরিণত বয়সে প্রেম সত্যিকার অর্থে মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে। শিশু-কিশোরদের বয়ঃসন্ধিকালে তাদের যে মনোসামাজিক পরিবর্তন ঘটে; টিকটক, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামের মতো ডিজিটাল মাধ্যম এই পরিবর্তন ত্বরান্বিত করছে।
সুবা উদ্ধার হওয়ার পর অনেকেই তার চরিত্রের পোস্টমর্টেম করতে বসেছি। কিন্তু ক্যান্সার আক্রান্ত মাকে ছেড়ে শিশুটির প্রেমিকের হাত ধরে চলে যাওয়া যে ক্যান্সারের চেয়েও ভয়াবহ! এ রোগে যে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ভয়ংকরভাবে আক্রান্ত, তা কি আমরা বুঝতে পারছি? এ রোগের দাওয়াই কোথায়?
দেশে ইন্টারনেট গ্রাহক ১৩ কোটিরও বেশি, যার বড় অংশ তরুণ-কিশোর। তাদের আবার বড় অংশ ফেসবুক, টিকটক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রামের মতো সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে। বর্তমানে দেশের চার কোটিরও বেশি মানুষ টিকটক ব্যবহার করছে। ফেসবুক ব্যবহারকারী প্রায় সাত কোটি। সামাজিক মাধ্যম যেমন নতুন প্রজন্মকে স্মার্ট ও যুগোপযোগী করে তুলছে, তেমনি ঝুঁকিও তৈরি করছে। বিশেষ করে ভিডিওনির্ভর সামাজিক মাধ্যমের প্রতি বর্তমান প্রজন্ম বেশি আগ্রহী। শিশু-কিশোরের জন্য যে ধরনের ভিডিও প্রযোজ্য নয়, তেমন ভিডিও টিকটকের মতো প্ল্যাটফর্মে সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটক, ইনস্টাগ্রাম রিলসে অশ্লীল, কুরুচিপূর্ণ ভিডিও কনটেন্টের ছড়াছড়ি।
অশ্লীলতাসহ কমিউনিটি গাইডলাইন না মানায় টিকটক গত বছর বাংলাদেশি ব্যবহারকারীদের ১ কোটি ২১ লাখ ৫৮ হাজার ৭৪৫টি ভিডিও ডিলিট করেছে। এই প্ল্যাটফর্মে কী সংখ্যক অশোভন কনটেন্ট আপলোড হয়, এ পরিসংখ্যানই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে।
সমস্যা কিংবা ঝুঁকি আছে– এটি বলে টিকটক, ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম বন্ধ করে ডিজিটাল বিশ্ব থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন করার সুযোগ নেই। রোগ সারাতে মাথা না কেটে সামাজিক মাধ্যম, সামগ্রিক অর্থে ইন্টারনেটকে শিশুবান্ধব ও নিরাপদ করতে হবে। শিশুর সুরক্ষা নিশ্চিত করে ইন্টারনেটের যে অপার সম্ভাবনা, সেটিকে কীভাবে কাজে লাগানো যায়, সেদিকে নজর দিতে হবে।
সাধারণত ফেসবুক-টিকটকের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারের ন্যূনতম বয়স ১৩ বছর। কিন্তু প্রায় সব সামাজিক মাধ্যমেই বয়স লুকিয়ে যে কেউ এতে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারে। কেননা, বয়স কিংবা লিঙ্গ যাচাইয়ের কোনো সিস্টেম এতে নেই। টিকটক-ফেসবুকে ন্যূনতম কত বছর বয়স হলে অ্যাকাউন্ট খোলা যাবে, সেটি অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করে সরকার ঠিক করে দিতে পারে। সেটি যদি ১৩ বছরও হয়, সে নিয়ম যেন মানা হয়, তা মনিটর করতে হবে।
শিশু-কিশোরদের সহজাত বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, সাধারণত তারা যা দেখে কিংবা শোনে, যাচাই-বাছাই ছাড়া সহজেই তা বিশ্বাস করে। ফলে বিশাল এ সামাজিক মাধ্যমনির্ভর ইন্টারনেট-সমুদ্রে সমাজের নানা স্তরের দুর্বৃত্ত ওত পেতে থাকে। এরা নানাভাবে শিশু-কিশোর এমনকি সামাজিক মাধ্যম সম্পর্কে গভীর জানাশোনা নেই এমন ব্যক্তিদের প্রলুব্ধ করে আর্থিক, মানসিক ও শারীরিক ক্ষতি করে থাকে। সহজেই প্রতারকদের ফাঁদে পড়ে শিকারে পরিণত হয়। অনলাইনে গেমস খেলার মাধ্যমে ডিভাইসসহ শিশুর মানসিক নিয়ন্ত্রণও নিতে পারে পৃথিবীর নানা প্রান্তে থাকা অপরিচিত ব্যক্তি। গেমিংয়ের ছলে শিশুদের পর্নোগ্রাফিতে যুক্ত করারও ভূরি ভূরি নজির রয়েছে।
সামাজিক মাধ্যমসহ ইন্টারনেট সেবা কোনোভাবেই বন্ধ করা যাবে না; সেটা সমাধানও নয়। আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুরক্ষা দিতে ইন্টারনেটে বিচরণ যতদূর সম্ভব নিরাপদ করা। এ ক্ষেত্রে নীতিমালাসহ সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা জরুরি। অভিভাবক, শিক্ষকসহ সমাজের অংশীজনকে সচেতনতামূলক কার্যক্রমের আওতায় আনতে হবে। প্রায় সব স্মার্টফোন ও কম্পিউটার ডিভাইসে সুলভ ‘প্যারেন্টাল কন্ট্রোল’ ফিচার চালু করলে শিশু কী দেখছে, কী ডাউনলোড করছে, তা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। শিশু দিনে ডিভাইসটি কতক্ষণ দেখতে পারবে, সেটিও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। ইন্টারনেট সেবাদাতা কোম্পানিরও ‘প্যারেন্টাল কন্ট্রোল’ সেবা রয়েছে। তবে এ ধরনের ফিচারের ব্যবহার অভিভাবকদের আগে শেখানো দরকার। এ ক্ষেত্রে উচ্চশিক্ষিত বাবা-মাকেই হিমশিম খেতে দেখছি। অপেক্ষাকৃত কম শিক্ষিত কিংবা অশিক্ষিত বাবা-মায়ের জন্য তো তা দুরূহ! ফলে এটি নিয়ে জনসচেতনতা তৈরি জরুরি।
সবচেয়ে জরুরি ইন্টারনেট সেবাদাতা (ব্রডব্যান্ড ও মোবাইল ইন্টারনেট), ইন্টারনেটচালিত ডিভাইস স্মার্টফোন, কম্পিউটার, ল্যাপটপ নির্মাতা ও পরিবেশক এবং টিকটক, ফেসবুকের মতো সামাজিক মাধ্যমকে শিশুর সুরক্ষায় সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনায় বাধ্য করা। এসব কোম্পানি এমনিতেই কিন্তু বড় অঙ্কের ভ্যাট-ট্যাক্সে ছাড় পায়। এই ছাড় পেতে হলে করপোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটির (সিএসআর) বাজেটসহ আয়ের একটা অংশ সচেতনতামূলক কর্মসূচিতে খরচ করার বাধ্যবাধকতা দেওয়া যেতে পারে। এ কর্মসূচির আওতায় তৈরি হবে শিশু-কিশোরবান্ধব মজার ও শিক্ষণীয় কনটেন্ট। সরকারের আইসিটি ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং টেলিকম নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বিটিআরসি এ ক্ষেত্রে কিছু উদ্যোগ নিয়েছে, তবে তা যথেষ্ট নয়। ইন্টারনেট বা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করতে গিয়ে আমাদের আগামী প্রজন্ম যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়; বিপথগামী না হয়; খড়কুটোর মতো ভেসে না যায়; সেটি নিশ্চিত করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। অবারিত ইন্টারনেট-সমুদ্রে শিশুর সুরক্ষা সবার আগে– এই বাস্তবতা রাষ্ট্র যত দ্রুত বুঝবে ততই মঙ্গল।
হাসান জাকির: সহকারী সম্পাদক, সমকাল
prantojakir@gmail.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইনস ট গ র ম প ল য টফর ম প রজন ম ব যবহ র ফ সব ক ট কটক
এছাড়াও পড়ুন:
লরা উলভার্ট: হিমালয়ের চূড়ায় এক নিঃসঙ্গ শেরপা
লরা উলভার্ট- দক্ষিণ আফ্রিকা নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক। বয়স মাত্র ছাব্বিশ, কিন্তু মনের দৃঢ়তায় যেন পাহাড়। এবারের ২০২৫ নারীদের ওয়ানডে বিশ্বকাপে তিনি ছিলেন প্রোটিয়া আশার একমাত্র আলোকবর্তিকা। নিজের একক নৈপুণ্যে, এক অসম্ভব সাহসিকতায় দলকে টেনে তুলেছিলেন ফাইনালের মঞ্চে।
সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলে ফেলেছিলেন ১৬৯ রানের অনবদ্য ইনিংস। যেন একক নাটকের একমাত্র নায়িকা তিনি। আর ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন হিমালয়ের মতো দৃঢ় হয়ে। একপ্রান্ত আগলে রেখেছিলেন অনবদ্যভাবে। শতরান ছুঁয়ে যখন আকাশে ছুড়লেন ব্যাট, তখন মনে হচ্ছিল, স্বপ্নের ট্রফি যেন হাতের নাগালেই। কিন্তু ক্রিকেটের নির্মম বাস্তবতা! উলভার্ট যখন সাজঘরে ফিরলেন, ঠিক তখনই প্রোটিয়া শিবিরে নেমে এল নীরবতা। জয় হাতছাড়া হলো নিঃশ্বাস দূরত্বে।
আরো পড়ুন:
আরব আমিরাতকে ৪৯ রানে গুঁড়িয়ে ইতিহাস গড়ল যুক্তরাষ্ট্র
মিতালিকে ছাড়িয়ে ইতিহাস গড়লেন মান্ধানা
চোখের কোণে জলের কণা তখনও ঝলমল করছিল। সেটা ঘামের ছিল, নাকি অপূর্ণতার অশ্রু, তা কেউ জানে না। কিন্তু বোঝা যাচ্ছিল, হৃদয়ের গভীরে আগুন জ্বলছে। একটা স্বপ্নের দগ্ধ ছাই হয়ে যাওয়ার যন্ত্রণা।
তবুও এই ব্যর্থতার মাঝেই উলভার্টের জয় আছে। বিশ্বকাপে তিন ফাইনাল, টানা তিনবার! এবং প্রতিবারই দলের একমাত্র ভরসা ছিলেন তিনি। এবারের বিশ্বকাপে করেছেন ৯ ম্যাচে ৫৭১ রান, গড়ে ৭১.৩৭। যা নারীদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ ইতিহাসে এক আসরে সর্বোচ্চ। এর আগে অ্যালিসা হিলির ৫০৯ রান ছিল শীর্ষে।
শুরুটা ছিল নিস্তরঙ্গ- প্রথম ম্যাচে মাত্র ৫, পরেরটিতে ১৪। কিন্তু ধীরে ধীরে আগুন জ্বলে উঠল তার ব্যাটে। ভারতের বিপক্ষে ৭০, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অপরাজিত ৬০, পাকিস্তানের বিপক্ষে ৯০, আর সেমিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৬৯। প্রতিটি ইনিংস যেন নিজের সীমাকে ছাপিয়ে যাওয়া একেকটি যাত্রা।
তবে উলভার্টের কীর্তি শুধু এই বিশ্বকাপেই নয়। ২০২৩ ও ২০২৪ দুই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেই ছিলেন সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। প্রতিবারই দলকে তুলেছিলেন ফাইনালে। কিন্তু ভাগ্য যেন নিষ্ঠুরভাবে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে তার দিক থেকে। তিনটি ফাইনাল, তিনটি পরাজয়।
তবু লরার গল্পটা হারের নয়- এ এক অনমনীয়তার গল্প, এক নিঃসঙ্গ অভিযাত্রার গল্প। যেমন শেরপা অক্সিজেনহীন উচ্চতায় পৌঁছে দেয় অন্যদের। কিন্তু নিজে ফিরে আসে নীরবে, তেমনি উলভার্টও দলের স্বপ্নগুলো কাঁধে তুলে বয়ে নিয়েছেন, একা।
ফাইনাল শেষে ভারতীয় খেলোয়াড়রাও যখন এগিয়ে এসে তাকে জড়িয়ে ধরলেন, তখন বোঝা গেল; এই হার, এই অশ্রু, এই নীরবতা- সবই সম্মানের প্রতীক।
রবিবার ফাইনাল শেষে লরা বলেছেন অনেক কথা। সেখানে হাতাশার কিছু পাওয়া যায়নি। পাওয়া গেছে প্রেরণা ও সামনে এগিয়ে যাওয়ার সাহস।
“আমি মনে করি, ২০২৩ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের (নিউল্যান্ডসে অনুষ্ঠিত) পর থেকেই আমাদের জন্য অনেক পরিবর্তনের সূচনা হয়েছিল। সেই সময় থেকেই ঘরোয়া পর্যায়ে কেন্দ্রীয় চুক্তির ব্যবস্থা চালু হয়। আমাদের দলের গভীরতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে এটা ছিল এক বিশাল পদক্ষেপ।”
“এরপরের (২০২৪ সালের) বিশ্বকাপটা আমাদের দলের নামটা বিশ্ব ক্রিকেটে আরও বড় করে তুলেছে, আমার তাই মনে হয়। এখন আমরা এমন একটি দল, যারা নিয়মিত ফাইনালে পৌঁছাচ্ছে। যেখানে আগে এটা একবারের সাফল্য বলেই ধরা হতো।”
“টানা তিনবার ফাইনালে উঠতে পারাটা সত্যিই গর্বের বিষয়। এটা প্রমাণ করে আমরা ঘরোয়া ক্রিকেটে এবং দলীয় কাঠামোয় সঠিক দিকেই এগোচ্ছি। ধারাবাহিক পারফরম্যান্সের এই ফলেই আমরা এখানে পৌঁছেছি। আশা করি, আমরা এমন আরও ফাইনাল খেলতে থাকব… আর একদিন, হ্যাঁ, একদিন আমরা অবশ্যই একটা জিতব।”
টুর্নামেন্টের পারফরম্যান্স নিয়ে উলভার্ট বলেন, “আমার মনে হয়, আমাদের এই আসরটা অসাধারণ কেটেছে। ফাইনাল পর্যন্ত পৌঁছানোই একটা বড় সাফল্য। আমরা পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে দারুণ ক্রিকেট খেলেছি। এই বিষয়টা নিয়েই আমি সবচেয়ে বেশি গর্বিত।”
“একপর্যায়ে আমরা টানা পাঁচটা ম্যাচ জিতেছিলাম। যা আমাদের দলের জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি। দুই দলের মধ্যকার সিরিজগুলোতে আমরা সবসময় এই ধারাবাহিকতা পাই না। তাই বড় মঞ্চে, বড় টুর্নামেন্টে এমন পারফরম্যান্স দিতে পারাটা সত্যিই গর্বের। আমরা প্রমাণ করেছি, বড় আসরে দক্ষিণ আফ্রিকাও এখন বড় দল।”
সত্যিই তাই। লরার নেতৃত্বে দক্ষিণ আফ্রিকা এখন বড় দল। হয়তো একদিন, কোনো এক প্রভাতে, লরা উলভার্ট সেই অধরা ট্রফিটা ছুঁয়ে দেখবেন। কিন্তু আজকের দিনে, তিনি রয়েছেন বিশ্বকাপের হিমালয়ের চূড়ায়, এক নিঃসঙ্গ শেরপা হয়ে। যিনি নিজের কীর্তিতে চূড়ায় উঠেছেন।
ঢাকা/আমিনুল