বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘শেখ হাসিনা চলে গেছে, শেখ হাসিনা পালিয়েছে, সংস্কারের অর্ধেক তো হয়েই গেছে। বাকি যেসব সংস্কার নির্বাচন করতে প্রয়োজন, সেগুলো দু-তিন মাসের মধ্যেই করা যায়। আর যেসব দীর্ঘমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে, সেগুলো করার প্রকৃত অধিকার রয়েছে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের।’

খুলনার শহীদ হাদিস পার্কে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাফিজ উদ্দিন আহমদ এ কথা বলেন। নিত্যপণ্যের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, দ্রুত নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণাসহ বিভিন্ন দাবিতে এ সমাবেশের আয়োজন করে জেলা বিএনপি। বিকেল ৫টা ২৮ মিনিটে তিনি বক্তব্য দেওয়া শুরু করেন।

হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘সংবিধান সংস্কারের অধিকার নির্বাচিত প্রতিনিধি ছাড়া আর কারও নেই। বিএনপির পক্ষ থেকে আমরা দাবি করেছি, স্বল্পতম সময়ের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে। যেসব সংস্কারের কথা আকাশে–বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে, বুদ্ধিজীবীরা ছড়াচ্ছেন, ছাত্রদের মুখ দিয়ে বলাচ্ছেন, সেসব সংস্কার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা করবে। বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান দায়িত্ব হলো একটি সুষ্ঠু–নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের কাছে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব হস্তান্তর করা।’

বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ‘রাষ্ট্র পরিচালনা অত্যন্ত দুরূহ কাজ। একে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে হলে, জনজীবনে শান্তিশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত করতে হলে অবশ্যই একটি নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু নির্বাচন প্রয়োজন। দ্রুত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন করুন। যে পুলিশ বাহিনী ১৭টি বছর আওয়ামী বাহিনীতে পরিণত হয়েছিল। অনেক মায়ের বুক তারা খালি করেছে। অনেক বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড আমরা দেখেছি। অপরাধীরা এখনো ঘুরে বেড়াচ্ছে। শীর্ষ পদে দু-একজনকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে কিংবা সম্মানের সঙ্গে অবসর দেওয়া হয়েছে বা বদলি করা হয়েছে। কিন্তু তাদের দুষ্কর্মের বিচার তো হয়নি। এদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে।’

উপদেষ্টা পরিষদ নিয়ে হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘যে উপদেষ্টা পরিষদ তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) গঠন করেছেন, তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজন শেখ হাসিনার দোসর ছিলেন। এর মধ্যে অনেকেই রাষ্ট্র পরিচালনায় একবারেই অনভিজ্ঞ। বাংলাদেশের জনগণ গিনিপিগ নয়। বাংলাদেশ ১৮ কোটি মানুষের দেশ। যুদ্ধ করে আমরা এ দেশ স্বাধীন করেছি, নানা ধরনের এক্সপেরিমেন্ট করার জন্য নয়। জনগণের বাস্তব দুঃখ-দুর্দশা ফেস করার অভিজ্ঞতা যাদের নেই, তারাই আজ বাংলাদেশের ভাগ্য–নিয়ন্ত্রক হয়ে বসে আছে।’

সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী। তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনতে অপারেশন ডেভিল হান্ট শুরু করেছে। ডেভিল বলতে আমরা ফ্যাসিস্ট সরকারকেই বুঝি। কালবিলম্ব না করে যৌক্তিক সময়ে নির্বাচন দিন, সবাই সাধুবাদ জানাবে। জনগণ অদৃশ্য শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করছে। এই শক্তিকে দৃশ্যমান করতে হবে। একজন (শেখ হাসিনা) ষড়যন্ত্র করে কাপড় নিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। এখন যাঁরা নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র করছেন, তাঁরা আগামী দিনে পালানোর পথ পাবেন না।’

বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে হবে। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার ছয় মাস গত হলেও সার্বিক পরিস্থিতির তেমন কোনো উন্নতি ঘটেনি। আজও শাসনযন্ত্রে ফ্যাসিবাদের দোসররা বর্তমান। প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ফ্যাসিবাদের দোসরদের বসিয়ে আপনারা (অন্তর্বর্তীকালীন সরকার) ফ্যাসিস্টমুক্ত বাংলাদেশ কায়েম করতে চাইবেন, আবার জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের স্পিরিটের কথা বলবেন; এটি দ্বিচারিতা ছাড়া আর কিছুই নয়।’

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো.

মনিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু, খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম, জেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক মোমরেজুল ইসলাম, মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব শফিকুল আলম (তুহিন) প্রমুখ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর স থ ত র ব এনপ র

এছাড়াও পড়ুন:

পনেরো বছরে থেমে গেল শিশুশিল্পীর জীবন

পাকিস্তানি শিশুশিল্পী উমর শাহ মারা গেছে। সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। ‘জিতো পাকিস্তান’খ্যাত এই তারকার বয়স হয়েছিল ১৫ বছর। পাকিস্তানি গণমাধ্যম ডন এ খবর প্রকাশ করেছে।

উমরের চাচা ও মেন্টর দানিয়াল শাহ জানান, রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাতে হঠাৎ করে উমরের শরীর খারাপ হয়ে পড়ে। দ্রুত তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে বমি করার সময় তার ফুসফুসে তরল ঢুকে পড়ে, যা মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়।  

আরো পড়ুন:

সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছে ‘সহযাত্রী’

ফারুকীর রহস্যঘেরা ওয়েব সিরিজ ‘৮৪০’ ওটিটিতে

পাকিস্তানি উপস্থাপক ওয়াসিম বাদামি একটি ছবি শেয়ার করে উমরের জন্য দোয়া চেয়েছেন। অনুসারীদের কাছে উমর ও তার পরিবারের জন্য দোয়া চেয়ে তিনি বলেন, “চিকিৎসকদের মতে সোমবার ভোরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে উমরের মৃত্যু হয়েছে।” 

উমরের বড় ভাই আহমদ শাহ তার অফিসিয়াল অ্যাকাউন্টে লেখেন, “আমাদের পরিবারের ছোট্ট জোনাকি উমর শাহ তার স্রষ্টার কাছে ফিরে গেছে। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।” তিনি তার ছোট ভাইয়ের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং পরিবারের ধৈর্যের জন্য দোয়া চান। 

উমরের হঠাৎ মৃত্যু শুধু তার পরিবার নয়, বরং তার লাখো ভক্তকে শোকাহত করেছে। তার নিষ্পাপ হাসি ও শিশুসুলভ আচরণ তাকে জনপ্রিয় করে তোলে, বিশেষ করে তার বড় দুই ভাই আহমদ ও আবু বকরের সঙ্গে একাধিকবার এআরওয়াই ডিজিটালের জনপ্রিয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের মাধ্যমে নজর কাড়ে উমর।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • খাজা শরফুদ্দীন চিশতির মাজারে হাত দিলে পরিণাম হবে ভয়াবহ: আহলে সুন্
  • জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
  • ‎পূজাকে  ঘিরে আইনশৃঙ্খলায় বাহিনী তৎপর : ডিসি
  • প্রাথমিকে গানের শিক্ষক বাদ দিয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে
  • মাঠের জবাব মাঠে দেওয়া হবে: সালাহউদ্দিন 
  • নুরুল হকের ওপর হামলার ঘটনায় জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন
  • ১৭ কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ, নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দুই হাজার সদস্য
  • পনেরো বছরে থেমে গেল শিশুশিল্পীর জীবন
  • ফরিদপুরে অবরোধ শনিবার পর্যন্ত স্থগিত
  • আসন্ন নির্বাচনে নিরপেক্ষতা বজায় রাখার নির্দেশ ডিএমপি কমিশনারের