২১ পেরিয়ে ২২ বছরে পড়েছে ফেসবুক। ৪ ফেব্রুয়ারি ২১ বছর পূর্ণ হয়েছে বিশ্বের জনপ্রিয় এ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটির। দুই দশকের বেশি সময় আগে মার্ক জাকারবার্গ হার্ভার্ডের ছোট্ট ডরমিটরিতে তৈরি করেছিলেন দ্য ফেসবুক। ডিজিটাল জগতের জন্য এক যুগান্তকারী মুহূর্ত ছিল সেটি। মানুষের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগের প্রথম ঢেউ তুলেছিল এটি। এরপর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অনলাইন দুনিয়ায় পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগের বিকাশ ঘটিয়ে পরস্পরের মিথস্ক্রিয়া চিরতরে বদলে দিয়েছে ফেসবুক।

২০০৪ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন জাকারবার্গ। ওই সময় তিনি কয়েকজন সহপাঠীকে নিয়ে এমন একটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম চালু করেন, যা সর্বকালের সবচেয়ে প্রভাবশালী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হয়ে ওঠে। জাকারবার্গ ও তাঁর বন্ধুদের হাতে তৈরি ওই ফেসবুক এখন এক মহাবিস্ময়।

হার্ভার্ডে জাকারবার্গের ঘনিষ্ঠদের মধ্যে ছিলেন কম্পিউটারবিজ্ঞান বিষয়ের ছাত্র অ্যাডওয়ার্ডো সেভারিন, ডাস্টিন মস্কোভিজ ও ক্রিস হিউজ। তাঁরা মিলে শুরু করেন প্রাথমিক কাজ। শুরুতে জাকারবার্গ ও সেভারিন এক হাজার ডলার করে এতে বিনিয়োগ করেছিলেন। এ সময় তাঁদের পরীক্ষামূলক সাইটের নাম ছিল দ্য ফেসবুক। ফেসবুকের সদস্য প্রাথমিকভাবে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল, কিন্তু পরে সেটা বোস্টন শহরের অন্যান্য কলেজ, আইভি লিগ এবং স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয়।

এরপর ধীরে ধীরে বৈধ ই–মেইল থাকা বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, হাইস্কুল এবং ১৩ বছর বা ততোধিক বয়স্কদের জন্য দ্য ফেসবুক উন্মুক্ত করা হয়। ২০০৫ সাল ছিল মূলত দ্য ফেসবুকের মূল ফেসবুক হয়ে ওঠা। এর ব্যবহারকারীর সংখ্যা দ্রুতগতিতে বাড়তে থাকে। ২০০৫ সালের মধ্যে ফেসবুকের সদস্যসংখ্যা ৬০ লাখ অতিক্রম করে এবং দশকের শেষের দিকে ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৩০ কোটির বেশি।

সামাজিক যোগাযোগের ক্ষেত্র হিসেবে তরুণদের মধ্যে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে শুরু করে ফেসবুক। এরপর মিসর, সিরিয়া ও তিউনিসিয়ার মতো মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে ফেসবুক ‘আরব বসন্ত’খ্যাত গণজোয়ার তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। যা সরকার উত্খাতের মতো বিপ্লব তৈরি করতে যোগাযোগে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছিল।

ফেসবুকের বিবর্তন

ফেসবুক চালু হওয়ার পর থেকে প্রথম এক দশকে ব্যবহারকারীর আধেয় ব্যক্তিগত করার সুযোগ দিয়ে ডিজিটাল ও সামাজিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে আধিপত্য ধরে রাখে। ফেসবুকে ২০০৬ সালে নিউজ ফিডের মতো ফিচার যুক্ত হয়। এতে ব্যবহারকারী তাঁর ব্যক্তিগত পছন্দের আধেয় দেখার সুযোগ পেতেন। ফেসবুকে যুক্ত হয় লাইক বাটন। এটিই পরে এ প্ল্যাটফর্মের যোগাযোগে মডেলের একটি মৌলিক দিক হয়ে ওঠে।

২০০৭ সালে ফেসবুকে আরও বেশি বিবর্তন আসে। এ সময় ফেসবুক প্ল্যাটফর্ম থেকে আয় করার সুযোগ তৈরি হয়। এ সময় ফেসবুকে তৃতীয় পক্ষ বা থার্ড পার্টি অ্যাপ্লিকেশন নির্মাতারা যুক্ত হন। এতে ফেসবুক ইকোসিস্টেম দ্রুত বিস্তৃত হয়। হাজারো অ্যাপ ফেসবুক প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হয় ও এতে শেয়ার করা হয়।

এরপর ধীরে ধীরে ফেসবুক তাদের প্ল্যাটফর্মে বিজ্ঞাপন ও আর্থিক কৌশলগুলো চালু করতে শুরু করে। এতে ব্যবহারকারীর তথ্য ও আচরণ লক্ষ করে বিজ্ঞাপন দেওয়া শুরু হয়। ২০০৭ সালে ফেসবুক অ্যাডস চালু হওয়ার থেকে ডিজিটাল বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে ফেসবুকের বড় খেলোয়াড় হওয়ার যাত্রা শুরু হয়।

ফেসবুক অনেকটাই কৌশলগতভাবে বিকশিত হয়েছে। বিশ্বব্যাপী ব্যবহারকারীরা ফেসবুকের এই পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তিত হয়েছে। ফেসবুক কৌশলগতভাবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে অধিগ্রহণ করেছে এবং ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা ও প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখে নতুন নতুন ফিচার চালু করেছে। ফেসবুকের গুরুত্বপূর্ণ অধিগ্রহণের মধ্যে ছিল ২০১২ সালে ছবি শেয়ার করার প্ল্যাটফর্ম ইনস্টাগ্রাম ও ২০১৪ সালে বার্তা আদান–প্রদানের প্ল্যাটফর্ম হোয়াটসঅ্যাপ।

মার্ক জাকারবার্গ.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প ল য টফর ম দ য ফ সব ক ফ সব ক র

এছাড়াও পড়ুন:

মেয়েকে নিয়ে টিকে থাকতে না পেরে বিদেশ চলে যান পিয়া বিপাশা

লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বিনোদন অঙ্গনে পা রাখেন পিয়া বিপাশা। এরপর অভিনয় করেছেন মিউজিক ভিডিও, নাটক ও সিনেমায়। কিন্তু হুট করেই নাই হয়ে গেলেন। পরে জানা গেল অভিনেত্রী আমেরিকায়। গেল পাঁচ বছর সেখানেই বাস করছেন তিনি। সম্প্রতি দেশের একটি গণমাধ্যমে প্রবাসজীবনসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।

পিয়া বিপাশা জানান, একমাত্র মেয়েকে নিয়ে নিউইয়র্কে বসবাস শুরু করেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের এক নাগরিকের সঙ্গে তাঁর প্রেম ও ভালোবাসা তৈরি হয়। তারপর তাঁরা বিয়ে করেন। দুজনে মিলে বিয়ে করলেও আনুষ্ঠানিকতা সারেননি। চলতি বছরের শেষ দিকে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সেরে নেওয়ার ইচ্ছা।

পিয়া বিপাশা বলেন, ‘বাংলাদেশে ভালো লাগত না। কারণ, লবিং ছাড়া কাজ হতো না। ভালো একটা সিনেমা করার কথা ছিল। কিন্তু সেটা আর হয়নি। এরপর আমার মিডিয়ায় কাজ করার ইচ্ছাই নষ্ট হয়ে যায়। আমি আসলে কাজ করতে চেয়েছিলাম টাকা কামানোর জন্য। কাজ না করতে পারলে টাকা কামাব কী করে। তাই সিদ্ধান্ত নিই অন্য কিছু করার।’

বিপাশার কথায়, ‘টাকা রোজগারের জন্য আমি বিনোদন অঙ্গনে কাজ করেছিলাম। কারণ, আমার একটা মেয়ে ছিল। মেয়েকে নিয়ে টিকে থাকার বিষয় ছিল। পরে দেখলাম, যেভাবে কাজ হয়, আমাকে দিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকা সম্ভব নয়। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম, আমেরিকায় চলে আসার। এখানে এসে বাংলাদেশের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দিই। অনেক টাকাও আয় করছি।’

পিয়া বিপাশা বলেন, ‘সত্যি বলতে এখন আমার এমন অবস্থা, টাকা ইনকাম না করলেও হয়। যতটুকুই করি, আমার মেয়ে ও হাজব্যান্ড ওরাই বলে। আমার এখন আর কোনো স্বপ্ন নেই। যা চেয়েছি, গত পাঁচ বছরে সবই পেয়েছি। টাকাপয়সা, সুন্দর জীবন, প্রতিষ্ঠিত হওয়া, ভালো স্বামী—সবই আমার হয়েছে। টাকা নিয়ে এখন কোনো চিন্তা নেই আমার—যা আয় করি, তা ব্যয় করার সময় পাই না।’ 

পিয়া বিপাশা জানান, ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুকে বিভিন্ন পণ্যের যেসব পোস্ট করেন, তার জন্য বেশ ভালো সম্মানী পান। তাঁর দাবি, এই সম্মানী কখনো দুই হাজার ডলার, আবার কখনো তিন হাজার ডলারের মধ্যে।

২০১৩ সালে ‘দ্বিতীয় মাত্র’ নাটকে তাহসান খানের বিপরীতে অভিনয় করেন। ছোটবেলায় রূপকথার বই পড়তে পছন্দ করতেন। বই পড়ার সময় গল্পের নায়িকার চরিত্রে নিজেকে কল্পনাও করতেন। বড় পর্দায়ও অভিনয় করেছিলেন। ‘রুদ্র: দ্য গ্যাংস্টার’ নামের সেই ছবি মুক্তি পায়। এরপর ‘রাজনীতি’ ছবিতে শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয়ের কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠেনি। পরে সেই ছবিতে পিয়া বিপাশার পরিবর্তে অপু বিশ্বাস অভিনয় করেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বৈষম্যবিরোধীদের তোপের মুখে যশোর মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদকের পদত্যাগ
  • শ্রীলঙ্কার মাটিতে ঘুরে দাঁড়িয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ
  • মিরাজ বীরত্বে দারুণ প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখলো বাংলাদেশ
  • সেঞ্চুরির পর ৫ উইকেট, মিরাজ ধন্যবাদ দিলেন ৬ জনকে
  • পেশায় বাসচালক, আড়ালে করেন ইয়াবার কারবার
  • ঢাকায় চালান পৌঁছে প্রতি মাসে পান ৬ লাখ টাকা
  • ১৭ মাস পর দেশের মাটিতে টেস্ট জয় বাংলাদেশের
  • নদীতে মিলল স্কুলছাত্রের লাশ, চার সহপাঠী আটক
  • টাকার জন্য দেশে ছেড়েছি, এখন টাকা খরচের সময় নেই: পিয়া বিপাশা
  • মেয়েকে নিয়ে টিকে থাকতে না পেরে বিদেশ চলে যান পিয়া বিপাশা