ইন্ডিয়ান ওশান কনফারেন্সের (আইওসি) ৮ম পর্বে যোগ দিতে ওমানের মাস্কাটে গিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। সম্মেলনের সাইডলাইনে তিনি বৈঠক করেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে। বৈঠকে অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি আলোচনায় স্থান পেয়েছে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উদ্বেগগুলো। রোববার রাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, ১৬–১৭ ফেব্রুয়ারি আইওসির ৮ম পর্বে যোগ দিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। সম্মেলনের যৌথ আয়োজক ইন্ডিয়ান ফাউন্ডেশন, ভারত ও ওমান সরকার। সম্মেলনের সাইডলাইনে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। বৈঠকে দুই পক্ষ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিভিন্ন বিষয়ের পাশাপাশি অভিন্ন উদ্বেগ ও স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ইস্যুতে আলোচনা করেছে। 

জাতিসংঘের গত সাধারণ অধিবেশনের সাইডলাইনে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠকের কথা মাস্কাটে স্মরণ করে দুই দেশ। সেই বৈঠকের পর থেকে দুই দেশের মধ্যে গত ৯ ডিসেম্বর পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) এবং ১০–১১ ফেব্রুয়ারিতে নয়াদিল্লিতে ভারতের জ্বালানি সপ্তাহে বাংলাদেশের জ্বালানি উপদেষ্টার অংশগ্রহণ নিয়ে আলোচনা করেছে।

এছাড়া ১৮–২০ ফেব্রুয়ারিতে নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ) সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর মধ্যে মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠকটিও আলোচনায় স্থান পায়। বৈঠকে সীমান্ত সংক্রান্ত বিষয়াদি আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তৌহিদ হোসেন ও এস জয়শঙ্কর।

মাস্কাটে বৈঠকে দুই পক্ষই প্রতিবেশী হিসেবে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের চ্যালেঞ্জগুলো চিহ্নিত করেন। আর এ চ্যালেঞ্জগুলো সমাধানে একত্রে কাজ করার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন।

বৈঠকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা গঙ্গা পানি চুক্তি নবায়নে প্রক্রিয়া শুরু করতে গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়া সার্কের স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠকের গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং এ বিষয়টিতে বিবেচনার জন্য ভারতকে অনুরোধ করেন।

সাইডলাইনে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক ছাড়াও ব্রুনাইয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ভিয়েতনামের উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং তাজনানিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে অভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি নিয়ে বৈঠক করেন। আজ সোমবার ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার বৈঠকের কথা রয়েছে।

এদিকে এক্স হ্যান্ডেলে তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠক নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বিষয়াদির পাশাপাশি বিমসটেক নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

আইওসি ৮ম পর্বের ‘সমুদ্র পথে সরবরাহ ব্যবস্থা শক্তিশালিকরণ’ শীর্ষক প্লানারি সেশনে অংশ নেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি সামুদ্র পথে সরবরাহ দক্ষতা, নির্ভরযোগ্যতা এবং স্থায়িত্বকে বিপন্ন করে এমন বহুমুখী চ্যালেঞ্জগুলো ব্যাখ্যা করেন। সেই সঙ্গে বাধাগুলি কাটিয়ে ও স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধি করে সমুদ্র পথে সরবরাহ ব্যবস্থার শৃঙ্খলকে শক্তিশালী করার জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রিক পদ্ধতি এবং সহযোগিতার কথা তুলে ধরেন। এছাড়া নাবিকদের জন্য ভিসা এবং অন্যান্য প্রশাসনিক প্রক্রিয়া সহজীকরণ এবং তাদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র পরর ষ ট রমন ত র র ন পরর ষ ট র উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

তুরস্কের সঙ্গে উত্তেজনা: সাইপ্রাসকে ‘এস–৩০০’–এর চেয়েও ভয়ংকর ‘বারাক এমএক্স’ দিল ইসরায়েল

সাইপ্রাসে গত সপ্তাহে উন্নতমানের বিমান প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সরবরাহ করেছে ইসরায়েল। গত ডিসেম্বর থেকে এ ধরনের প্রতিরক্ষাব্যবস্থার তৃতীয় চালান এটি। তুরস্কের সঙ্গে ক্রমে উত্তেজনা বেড়ে চলার মধ্যে সাইপ্রাসকে এ ব্যবস্থায় সজ্জিত করল ইসরায়েল। বিষয়টির সঙ্গে পরিচিত একাধিক সূত্র মিডল ইস্ট আইকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, লিমাসলের বন্দর দিয়ে একটি ট্রাক ‘বারাক এমএক্স’ ব্যবস্থার বিভিন্ন যন্ত্রাংশ নিয়ে যাচ্ছে। এ আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ১৫০ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।

সাইপ্রাসের সংবাদমাধ্যম রিপোর্টার জানিয়েছে, বারাক এমএক্স ব্যবস্থার সরবরাহ এখন সম্পন্ন হয়েছে। চলতি বছরই এটি আকাশ প্রতিরক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে।

এই সরবরাহের আগে গত জুলাইয়ে ইসরায়েল অ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজের (আইএআই) বহিঃসম্পর্ক বিভাগের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট শাই গাল একটি নিবন্ধে লিখেছিলেন, ইসরায়েলের উচিত সাইপ্রাস নীতি পুনর্বিবেচনা করা এবং সামরিক পরিকল্পনা তৈরি করা; যাতে এ দ্বীপের উত্তরাঞ্চলকে তুর্কি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ থেকে ‘মুক্ত’ করা যায়। বারাক এমএক্স তৈরি করেছে ইসরায়েলি সংস্থাটি।

আরও পড়ুনইসরায়েলের আগ্রাসন কীভাবে মোকাবিলা করবে তুরস্ক৩০ আগস্ট ২০২৫

গাল লিখেছিলেন, ‘ইসরায়েলকে গ্রিস ও সাইপ্রাসের সঙ্গে সমন্বয় করে এ দ্বীপের উত্তর অংশ মুক্ত করার বিকল্প পরিকল্পনা করতে হবে। এতে তুরস্কের পুনরায় সেনা পাঠানোর পথ বন্ধ হবে, উত্তর সাইপ্রাসের বিমান প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস হবে, গোয়েন্দা ও কমান্ড সেন্টারগুলো গুঁড়িয়ে যাবে এবং শেষ পর্যন্ত তুর্কি বাহিনী সরে যাবে। এর মাধ্যমে সাইপ্রাসের আন্তর্জাতিক স্বীকৃত সার্বভৌমত্ব ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।’

গ্রিসের সঙ্গে একীভূত করার লক্ষ্য নিয়ে সাইপ্রাসে এক অভ্যুত্থানচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর ১৯৭৪ সালে সেখানে আক্রমণ চালায় তুরস্ক। সেই থেকে দ্বীপটি দুই ভাগে বিভক্ত—দক্ষিণে আন্তর্জাতিক স্বীকৃত সাইপ্রাস প্রজাতন্ত্র ও উত্তরে তুরস্ক-সমর্থিত উত্তর সাইপ্রাস, যা শুধু আঙ্কারার স্বীকৃত।

এই সরবরাহের আগে গত জুলাইয়ে ইসরায়েল অ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজের (আইএআই) সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট শাই গাল একটি নিবন্ধে লিখেছিলেন, ইসরায়েলের উচিত সাইপ্রাস নীতি পুনর্বিবেচনা করা এবং সামরিক পরিকল্পনা তৈরি করা; যাতে এ দ্বীপের উত্তরাঞ্চলকে তুর্কি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ থেকে ‘মুক্ত’ করা যায়।

এখন পর্যন্ত আঙ্কারা নতুন প্রতিরক্ষাব্যবস্থা নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে বারাক এমএক্সে রয়েছে উন্নত নজরদারি ও গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের ক্ষমতা। এর থ্রিডি রাডার সর্বোচ্চ ৪৬০ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত কার্যকর, যা দক্ষিণ তুরস্কের একটি বড় অংশের আকাশসীমা আয়ত্তে আনতে পারে।

আরও পড়ুনইসরায়েল ও তুরস্ক কখন যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বে?২৪ জানুয়ারি ২০২৫

১৯৯৭ সালে দক্ষিণ সাইপ্রাস রাশিয়ার তৈরি দুটি এস–৩০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা কেনার চেষ্টা করলে তুরস্কের সঙ্গে তার যুদ্ধ বাধার উপক্রম হয়। সে সময় আঙ্কারা পুরোদমে সামরিক জবাব দেওয়ার হুমকি দেয়। পরে সে সংকট মেটে গ্রিস ওই ক্ষেপণাস্ত্র নিজেদের ভূখণ্ডে নিয়ে গেলে ও সাইপ্রাস বিকল্প ব্যবস্থা খুঁজতে শুরু করলে।

এ ব্যবস্থা এস-৩০০ থেকেও অনেক বেশি বিপজ্জনক। ১৯৯৭ সালে রাশিয়া থেকে সাইপ্রাস যে এস-৩০০ অর্ডার দিয়েছিল, তা কখনো মোতায়েন করা হয়নি। ইসরায়েল ও গ্রিসের সঙ্গে সাইপ্রাসের বর্তমান সামরিক ঘনিষ্ঠতার কারণে এ শক্তিশালী প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ও রাডার পূর্ব ভূমধ্যসাগরে ইসরায়েলের গোয়েন্দা নেটওয়ার্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠবে।আরদা মেভলুতোগলু, তুরস্কের প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক

তুরস্কের প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক আরদা মেভলুতোগলু বলেন, এই ব্যবস্থা এস–৩০০ থেকেও অনেক বেশি বিপজ্জনক। ১৯৯৭ সালে রাশিয়া থেকে সাইপ্রাস যে এস–৩০০ অর্ডার দিয়েছিল, তা কখনো মোতায়েন করা হয়নি। ইসরায়েল ও গ্রিসের সঙ্গে সাইপ্রাসের বর্তমান সামরিক ঘনিষ্ঠতার কারণে এ শক্তিশালী প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ও রাডার পূর্ব ভূমধ্যসাগরে ইসরায়েলের গোয়েন্দা নেটওয়ার্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠবে।

ইসরায়েলের আশদোদে আইএআই বারাক এমএক্স বিমান প্রতিরক্ষা লঞ্চার। ১২ জুন ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজীপুরে মুখ থুবড়ে পড়েছে ২৪ কোটি টাকার পানি প্রকল্প
  • প্রথম চালানে ৩৭ হাজার ৪৬০ কেজি ইলিশ গেল ভারতে
  • তুরস্কের সঙ্গে উত্তেজনা: সাইপ্রাসকে ‘এস–৩০০’–এর চেয়েও ভয়ংকর ‘বারাক এমএক্স’ দিল ইসরায়েল
  • গুদামে খাওয়ার অনুপযোগী চাল নিয়ে রাজশাহী খাদ্য বিভাগে তোলপাড়, ৮ তদন্ত কমিটি
  • ‘কেনতো পারমু না, হেইতে ইলশার সুরতটা দেইখ্যা যাই’
  • বাংলাদেশ ব্যাংক এক দিনে ২৬ ব্যাংক থেকে ৩৫ কোটি ডলার কিনল কেন
  • নিলামে ৩৫৩ মিলিয়ন ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক
  • যুক্তরাজ্য থেকে আসছে মাদক এমডিএমএ, গ্রেপ্তার ৫
  • চাপে পড়ে নয়, অনুরোধে ভারতে ইলিশ পাঠানোর অনুমোদন: ফরিদা আখতার
  • ভোটের সরঞ্জাম আসছে ইসিতে