সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীলীগপন্থি অধ্যাপক এএফএম সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে এবার শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা। এতে তারা যবিপ্রবির উপ-উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ না দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ৩টায় যশোরের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক রফিকুল হাসানের কাছে এ স্মারকলিপি হস্তান্তর করেন শিক্ষার্থীরা। স্মারকলিপি প্রদান শেষে প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধনও করেন তারা।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ফ্যাসিস্ট আমলে রাতের ভোটের কারিগরের স্বামী ড.

সাইফুল ইসলামকে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য নিয়োগের পায়তারা চালানো হচ্ছে। আমরা প্রায় ১ হাজার শিক্ষার্থীর গণস্বাক্ষর নিয়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে শিক্ষা উপদেষ্টার নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেছি। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তার নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল নিশ্চিত না করা হলে আমরা ক্যাম্পাস অবরুদ্ধসহ দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

এ কথা ভুলে গেলে চলবে না, যশোরে ফ্যাসিবাদী আন্দোলন যবিপ্রবি থেকে শুরু হয়েছে। আর আমাদেরই ক্যাম্পাসে কি না স্বৈরাচারের দোসরকে উপ-উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দিচ্ছে। যবিপ্রবি কি ডাস্টবিন? এ ক্যাম্পাস দেশের টপ র‍্যাংকিং স্থান নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়। স্বৈরাচারের দোসর নিয়োগের মাধ্যমে ক্যাম্পাসে কেউ অস্থিতিশীল করে তুললে তাকেও ফ্যাসিবাদের মতো তাড়িয়ে দেওয়া হবে।

তারা আরো বলেন, এ স্বৈরাচারকে নিয়োগ দেওয়া মানে ২ হাজার শহীদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা। যারা এই আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের পুর্ণবাসন করতে চায়, তারা যেই হোক না কেন, শিক্ষার্থীরা সম্মিলিতভাবে তাদের রুখে দিবে। দ্রুতই ড. সাইফুল ইসলামের নিয়োগ বাতিল করুন নয়তো সুষ্ঠু আন্দোলনকে উচ্ছৃঙ্খল করে তুললে এর দায়ভার সম্পূর্ণ প্রশাসনকে নিতে হবে।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পিইএসএস বিভাগের শিক্ষার্থী হাবিবুর রহমান ইমরান, মো. ইসমাইল, ইএসটি বিভাগের মোহাম্মদ উসামাহ, হাবিব আহমেদ শান, কেমিকৌশল বিভাগের মেহেদী হাসান সাব্বির, গণিত বিভাগের সুমন আলি প্রমুখ।

শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর লিখিত স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, দেশের বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে আমরা জেনেছি যে, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন গণতান্ত্রিক শিক্ষক পরিষদের নেতা ও ক্রপ বোটানি অ্যান্ড টি প্রোডাকশন টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক এএফএম সাইফুল ইসলামকে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার পায়তারা চলছে। আওয়ামী শাসন আমলে ২০১২ সালে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার দোসর হিসেবে পরিচিত সচিব ড. নাজমানারা খানুমের লবিংয়ে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগপান ড. সাইফুল।

আওয়ামী পন্থী শিক্ষকদের প্যানেল থেকে তিনি দুইবার সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন এই অধ্যাপক। এছাড়া ড. সাইফুল ইসলামের স্ত্রী ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম ২০১৮ সালের নির্বাচনের সময় সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার হিসেবে রাতের ভোটের মূল কারিগর ছিলেন। যার পুরস্কার স্বরূপ পরবর্তীতে তাকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

চাকরি শেষে আবারো পুরস্কার হিসেবে শেখ হাসিনা তাকে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) সদস্য হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেন। জুলাই বিপ্লবে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করেই গত বছরের ৮ অক্টোবর ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর হিসেবে ড. নাজমানারা খানুমকে পিএসসির সদস্য থেকে বরখাস্ত করে। সুতরাং এমন একজন স্বৈরাচার ও আওয়ামীপন্থিকে আমরা যবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা উপ-উপাচার্য হিসেবে চায় না।

অধ্যাপক এএফএম সাইফুল ইসলামকে যবিপ্রবির উপ-উপাচার্য বানানোর চেষ্টার খবর জানার পর থেকেই শিক্ষার্থীরা  বিভিন্ন ধরনের প্রতিবাদী কর্মসূচি পালন করছেন।

ঢাকা/ইমদাদুল/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপ উপ চ র য হ স ব স ম রকল প আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

চামড়াশিল্প ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে

কোরবানির পশুর চামড়া নিয়ে পতিত ফ্যাসিস্ট আমলের পুরোনো চক্র ও সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার রক্ষা আন্দোলন। এই সিন্ডিকেট ও চামড়াশিল্প ধ্বংসের দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সংগঠনটি আয়োজিত ‘চামড়া শিল্পের নৈরাজ্য ও সিন্ডিকেট রুখো’ শীর্ষক মানববন্ধনে এসব কথা বলা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহ্বায়ক মির্জা শরিফুল আলম। সভায় বক্তব্য দেন সংগঠনটির চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খান, কলামিস্ট মীর আবদুল আলীম, রাজনীতিবিদ নুরুজ্জামান হীরা, মানবাধিকারকর্মী আব্দুল্লাহ আল-মামুন প্রমুখ।
কয়েক বছর ধরে কাঁচাচামড়ার দাম কমছে। দাম না পেয়ে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা চামড়া নদী বা খালে ফেলে দিয়েছেন কিংবা মাটিতে পুঁতে ফেলেছেন– এমন ঘটনাও ঘটছে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। চলতি বছর ৮৫ থেকে ৯০ লাখ পশুর চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ট্যানারি মালিকদের। এর ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ সংগ্রহ হয় কোরবানির সময়। 

জাতীয় ভোক্তা অধিকার রক্ষা আন্দোলনের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খান বলেন, এবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম ৬০ থেকে ৬৫ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও বিক্রি হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। কিছু ক্ষেত্রে বর্গফুটের হিসাবে চামড়ার দাম আরও কম পড়েছে। কোরবানিদাতাদের থেকে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা ৪০০ থেকে ৬৫০ টাকায় গরুর চামড়া কিনেছেন। সেসব চামড়া আড়তদার ও ট্যানারি মালিকদের কাছে বিক্রি করেছেন ৫০০ থেকে ৮০০ টাকায়। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে চামড়া সংগ্রহ করলেও ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না। সিন্ডিকেটের কারণে চামড়ার দাম পড়ে গেছে তলানিতে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারও বেশির ভাগ ছাগলের চামড়া নষ্ট হয়েছে। বিদেশি চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রে পা দিয়ে অসাধু ট্যানারি মালিকদের ফ্যাসিস্ট সিন্ডিকেট কৌশলে চামড়ার দাম কমিয়ে লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের চামড়া শিল্প। দেশে ও বিশ্ববাজারে চামড়াজাত পণ্যের দাম আকাশচুম্বী। অথচ কোরবানির চামড়া শিল্প নিয়ে গভীর চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র চলছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে বিদেশি বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বাড়াতে হবে।
মানববন্ধনে বক্তারা আরও বলেন, বিদেশি চক্রান্তে দেশের সোনালি আঁশখ্যাত পাট শিল্পকে সুকৌশলে ধ্বংস করা হয়েছে। এবার আরেক সম্ভাবনাময় চামড়া শিল্পকে শেষ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। এ ষড়যন্ত্রে পা দিয়ে অসাধু ট্যানারি মালিকদের সিন্ডিকেট কৌশলে চামড়ার দাম কমিয়ে লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের চামড়া শিল্প। গত বছরের মতো এবারও কম দামে সব ধরনের চামড়া বিক্রি করতে হয়েছে। এতে করে গরিব-অসহায় মানুষ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সিন্ডিকেটকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান বক্তারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাগুরছড়া ট্র্যাজেডির ২৮তম বার্ষিকী পালিত
  • রূপগঞ্জে মামুন হত্যা : মাহবুবের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অভিযোগে মানববন্ধন
  • সাইক্লিস্ট হত্যার বিচার দাবিতে রাজধানীতে মানববন্ধন
  • ‘চট্টগ্রামে সাইক্লিস্ট ওসমানের মৃত্যু দুর্ঘটনা নয়, হত্যা’
  •  সোনারগাঁয়ে প্রাচীন স্থাপত্যকীর্তি কোম্পানিকা সেতু রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন
  • রাজশাহীতে বিএনপি নেতাকে বহিষ্কারের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল
  • সিরাজগঞ্জের রবীন্দ্র কাছারি বাড়ি দুদিন পর দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে
  • কাছারিবাড়িতে হামলা ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব থেকে, রবীন্দ্রস্মৃতিবিজড়িত  নিদর্শন নষ্ট হয়নি: সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়
  • চামড়াশিল্প ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে