২০১৩ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আসরটি ছিল সপ্তম আসর। মিনি বিশ্বকাপ খ্যাত এই আসরটি ৬ থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসে এটি যৌথভাবে অনুষ্ঠিত হয়। ইংল্যান্ডই প্রথম ও একমাত্র দেশ হিসেবে ২০০৪ সালের পর ২০১৩ সালে দ্বিতীয়বারের মতো এই টুর্নামেন্ট আয়োজনের সুযোগ পায়।
লন্ডনের ওভাল, বার্মিংহামের এজবাস্টন এবং কার্ডিফের সলেক স্টেডিয়াম চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৩ সালের বিজয়ী দল ভারতকে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিসহ দুই মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রাইজমানি দেওয়ায় যা এই টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। সেবার শিরোপা নির্ধারণী ফাইনাল ম্যাচে মাত্র ৫ রানের ব্যবধানে স্বাগতিক ইংল্যান্ডকে কাঁদিয়ে শিরোপা জেতে ভারত।
আসরে মোট আটটি দল অংশ নেয়। প্রাথমিক পর্বে প্রত্যেক দল একে-অপরের বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। শীর্ষ দুই দল সেমি-ফাইনালে লড়াই করে। সেখানে প্রথম সেমিফাইনালে গ্রুপ ‘এ’ বিজয়ী, গ্রুপ ‘বি’ রানার-আপের এবং দ্বিতীয় সেমিফাইনালে গ্রুপ ‘বি’ এর চ্যাম্পিয়ন ও গ্রুপ ‘এ’ রানার-আপের মুখোমুখি হয়।
ওভালে প্রথম সেমিফাইনালে শক্তিশালী দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৭ উইকেটে হারায় ইংল্যান্ড। দ্বিতীয় সেমিফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৮ উইকেটে দাপুটে জয়ে ফাইনালে ইংল্যান্ডের সঙ্গী হয় মহেন্দ্র সিং ধোনির ভারত। ২০১৩ সালে বার্মিহামের এজবাস্টনে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়।
বৃষ্টির কারণে ফাইনাল ম্যাচটি ২০ ওভারে নির্ধারিত হয়। শিরোপা নির্ধারনী ম্যাচে টস জিতে শুরুতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন স্বাগতিক দলের অধিনায়ক অ্যালিস্টার কুক। শুরুতে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে মাত্র ১২৯ রান তুলতে সক্ষম হয় ভারত । জয়ের জন্য ১৩০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ইন্ডিয়ান বোলারদের কাছে হার মানতে হয় ইংল্যান্ডকে।
নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১২৪ রান তুলতেই থেমে যায় তাদের দৌড়। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ওই ম্যাচে ৫ রানে জিতে শিরোপা ঘরে তোলে ভারত।
এই শিরোপা দিয়ে মাহেন্দ্র সিং ধোনি প্রথম অধিনায়ক হিসেবে আইসিসির তিনটি ইভেন্ট জেতার রেকর্ড গড়েন। ২০০৭ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছিলেন ধোনি। পরবর্তীতে ওয়ানডে বিশ্বকাপ জেতে ২০১১ সালে। এরপর ২০১৩ সালে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। ধোনি পরবর্তীতে আইসিসি টেস্ট মেসও জেতেন। তাতে পূর্ণতা পায় তার আইসিসির ইভেন্টের শিরোপা।
২০১৩ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আসরে ব্যাট হাতে সর্বোচ্চ রান করেন ভারতের শিখর ধাওয়ান (৩৬৩)। আর সর্বোচ্চ ১২ উইকেট নিয়ে বোলিংয়েও শীর্ষে ভারতীয় বোলার রবীন্দ্র জাদেজা।
এক নজরে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি- ২০১৩ :
তারিখ: ৬ থেকে ২৩ জুন ২০১৩
আয়োজক: ইংল্যান্ড
ফরম্যাট: ওয়ানডে ইন্টারন্যাশনাল
টুর্নামেন্ট: রাউন্ড-রবিন
অংশগ্রহণকারী দেশ: ৮টি
মোট ম্যাচ: ১৫
চ্যাম্পিয়ন: ভারত
সবচেয়ে বেশি রান: ভারতের শিখর ধাওয়ান (৩৬৩)
সবচেয়ে বেশি উইকেট: ভারতের রবীন্দ্র জাদেজা (১২)।
ঢাকা/ইয়াসিন
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ম ফ ইন ল ২০১৩ স ল অন ষ ঠ ত প রথম আইস স উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের পরবর্তী শুনানি বুধবার
রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের (রিভিউ) ওপর পরবর্তী শুনানির জন্য আগামীকাল বুধবার দিন রেখেছেন আপিল বিভাগ। আজ মঙ্গলবার শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের বেঞ্চ পরবর্তী ওই দিন ধার্য করেন।
এর আগে গত ১৮ মে শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ শুনানির জন্য ১ জুলাই দিন ধার্য করেছিলেন। ধার্য তারিখে বিষয়টি শুনানির জন্য রিভিউ আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবীর সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ ১৫ জুলাই পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন। আজ বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকার ৭ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।
ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স সংশোধন করে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। পরে ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। রায়ে রাষ্ট্রের সাংবিধানিক পদধারীদের পদক্রম ওপরের দিকে রাখা ও অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়। পাশাপাশি জেলা জজদের পদক্রম আট ধাপ উন্নীত করে সচিবদের সমান করা হয়।
আপিল বিভাগের রায়ের পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতির পদক্রম এক ধাপ উন্নীত করে জাতীয় সংসদের স্পিকারের সমান এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের (স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদক ও মহান স্বাধীনতাসংগ্রামে অংশগ্রহণ করে যে মুক্তিযোদ্ধারা বীর উত্তম খেতাব পেয়েছেন) পদক্রমে যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত বলে উল্লেখ করা হয়।
ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) তৎকালীন চেয়ারম্যান ২০১৭ সালে পৃথক আবেদন করেন। রিভিউ আবেদনে রাষ্ট্রের ৯০ জন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল পক্ষভুক্ত হন। পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের ওপর গত ২৭ এপ্রিল শুনানি শুরু হয়।
আজ আদালতে রিভিউ আবেদনকারী মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন শুনানি করেন। রিট আবেদনকারী পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম শুনানিতে অংশ নেন।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী, ১৯৮৬ সালে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরি করে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর একই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর তা জারি করা হয়। পরে বিভিন্ন সময়ে তা সংশোধন করা হয়।
সর্বশেষ সংশোধন করা হয় ২০০৩ সালের ডিসেম্বরে। সংশোধিত এই ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরির ক্ষেত্রে সাংবিধানিক পদ, সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত ও সংজ্ঞায়িত পদগুলো প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিচের ক্রমিকে রাখা হয়েছে—এমন উল্লেখ করে এর বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের তৎকালীন মহাসচিব মো. আতাউর রহমান ২০০৬ সালে রিট করেন।
রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট আট দফা নির্দেশনাসহ ১৯৮৬ সালের ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স (সংশোধিত) অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ২০১১ সালে আপিল করে। এ আপিলের ওপর শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ২০১৭ সালে করা আবেদনের ওপর শুনানি চলছে।