‘উস্কানী দিলে সেই মামলা হোক, হত্যা মামলা কেন?’ আদালতে ফারজানা রুপ
Published: 17th, February 2025 GMT
৭১ টেলিভিশনের চাকরিচ্যুত সাংবাদিক ফারজানা রুপা আদালতে বলেছেন, ‘বলা হচ্ছে আমি উস্কানীমূলক বক্তব্য দিয়েছি। তাহলে কেন হত্যা মামলা দেয়া হচ্ছে?’
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিএম ফারহান ইশতিয়াকের আদালতে আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারী হত্যা মামলার রিমান্ড শুনানিতে তিনি এ কথা বলেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশের ইন্সপেক্টর নাসির উদ্দিন সরকার ফারজানা রুপা এবং তার স্বামী শাকিল আহমেদের ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। এদিন শুনানিকালে তাদের আদালতে হাজির করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। তিনি বলেন, ‘‘তারা (শাকিল-রুপা) আন্দোলনের সময় উস্কানী দিয়েছে। স্বৈরাচার হাসিনাকে স্বৈরাচার বানাতে সহযোগিতা করেছে। তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।’’
এরপর ফারজানা রুপা বলেন, ‘‘মাননীয় আদালত অনুমতি দিলে আমি কিছু বলতে চাই। রাষ্ট্রপক্ষ যেভাবে উস্কানি দেওয়ার কথা বলছে তাহলে আমাকে সেই উস্কানি দেওয়ার জন্য মামলা দেওয়া হোক। একের পর এক হত্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। হত্যা মামলা দিয়ে কেন হয়রানি করা হচ্ছে? ৬ মাস ধরে কারাগারে আছি। আগে ৯ দিনের রিমান্ডে ছিলাম। শাকিলও ছিল। আমরা শুনেছি, হত্যা মামলার আসামিকে ঘটনাস্থলে থাকতে হয়। আমি তো ঘটনাস্থলে ছিলাম না। কথা বলার জন্য হত্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। আমি এর বিচার চাই।’’
ফারজানা রুপা আরো বলেন, ‘‘বাংলাদেশে সুবিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলা হয়েছে। কথা বলার জন্য কেন হত্যা মামলা দেওয়া হবে? হত্যা মামলা দিয়ে সাংবাদিকদের কেন হয়রানি করা হচ্ছে? এই প্রশ্ন আমি আপনার (বিচারক) কাছে রেখে গেলাম।’’
এর উত্তরে ওমর ফারুক বলেন, ‘‘ছাত্র আন্দোলনে যারা গুলি করেছে তারা যেমন অপরাধী, আর যারা এই হত্যাকাণ্ডে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র করেছে তারাও সমান অপরাধী। তাদেরও একই শাস্তি হবে। গত ১৫ বছর শেখ হাসিনার ফ্যাসিজম কায়েম করার জন্য যা যা দরকার শাকিল-ফারজানা তা করেছে। গণভবনে সাংবাদিকের একটা মিটিং হয়েছিল সেখানে তারা ছিল। তারা হাসিনাকে বলেছে, গাড়ি পোড়ানো হচ্ছে, বিদেশে আপনার শত্রু আছে, দেশে শত্রু আছে (একটা দলের নাম দিয়ে বলছে) তাদের শক্ত হাতে দমন করতে হবে। এ ধরনের বক্তব্য দিয়েছে তারা। তিনি (ফারজানা রুপা) বলছেন কথার জন্য উনাকে মামলা দেওয়া হয়েছে।
তখন ফারজানা রুপাকে উদ্দ্যেশ্যে করে বলেন, ‘‘আপনারা ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে ফ্যাসিস্ট বানানোর জন্য যে সহযোগিতা করেছেন। সাংবাদিকদের মধ্যে শাকিল, ফারজানা রুপা, মোজাম্মেল হক, শ্যামল দত্তসহ আরো কয়েকজন আছে তারা সাংবাদিকদের নাম কলঙ্কিত করেছে। তারা হাজার হাজার কোটি টাকা সুবিধা নিয়েছে।’’
এরপর শাকিল কিছু বলতে চাইলে আদালত শুনানি শেষ করে তাদের ৫ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
আদালত থেকে কারাগারে নিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের শাকিল আহমেদ বলেন, ‘‘এটা সুবিচার না অবিচার আগে নির্ণয় করেন। বাংলাদেশে নানা ধরনের সাংবাদিক আছে। সাংবাদিকদের সুবিচার চাই।’’
মামুন//
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মেয়েকে নিয়ে টিকে থাকতে না পেরে বিদেশ চলে যান পিয়া বিপাশা
লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বিনোদন অঙ্গনে পা রাখেন পিয়া বিপাশা। এরপর অভিনয় করেছেন মিউজিক ভিডিও, নাটক ও সিনেমায়। কিন্তু হুট করেই নাই হয়ে গেলেন। পরে জানা গেল অভিনেত্রী আমেরিকায়। গেল পাঁচ বছর সেখানেই বাস করছেন তিনি। সম্প্রতি দেশের একটি গণমাধ্যমে প্রবাসজীবনসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।
পিয়া বিপাশা জানান, একমাত্র মেয়েকে নিয়ে নিউইয়র্কে বসবাস শুরু করেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের এক নাগরিকের সঙ্গে তাঁর প্রেম ও ভালোবাসা তৈরি হয়। তারপর তাঁরা বিয়ে করেন। দুজনে মিলে বিয়ে করলেও আনুষ্ঠানিকতা সারেননি। চলতি বছরের শেষ দিকে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সেরে নেওয়ার ইচ্ছা।
পিয়া বিপাশা বলেন, ‘বাংলাদেশে ভালো লাগত না। কারণ, লবিং ছাড়া কাজ হতো না। ভালো একটা সিনেমা করার কথা ছিল। কিন্তু সেটা আর হয়নি। এরপর আমার মিডিয়ায় কাজ করার ইচ্ছাই নষ্ট হয়ে যায়। আমি আসলে কাজ করতে চেয়েছিলাম টাকা কামানোর জন্য। কাজ না করতে পারলে টাকা কামাব কী করে। তাই সিদ্ধান্ত নিই অন্য কিছু করার।’
বিপাশার কথায়, ‘টাকা রোজগারের জন্য আমি বিনোদন অঙ্গনে কাজ করেছিলাম। কারণ, আমার একটা মেয়ে ছিল। মেয়েকে নিয়ে টিকে থাকার বিষয় ছিল। পরে দেখলাম, যেভাবে কাজ হয়, আমাকে দিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকা সম্ভব নয়। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম, আমেরিকায় চলে আসার। এখানে এসে বাংলাদেশের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দিই। অনেক টাকাও আয় করছি।’
পিয়া বিপাশা বলেন, ‘সত্যি বলতে এখন আমার এমন অবস্থা, টাকা ইনকাম না করলেও হয়। যতটুকুই করি, আমার মেয়ে ও হাজব্যান্ড ওরাই বলে। আমার এখন আর কোনো স্বপ্ন নেই। যা চেয়েছি, গত পাঁচ বছরে সবই পেয়েছি। টাকাপয়সা, সুন্দর জীবন, প্রতিষ্ঠিত হওয়া, ভালো স্বামী—সবই আমার হয়েছে। টাকা নিয়ে এখন কোনো চিন্তা নেই আমার—যা আয় করি, তা ব্যয় করার সময় পাই না।’
পিয়া বিপাশা জানান, ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুকে বিভিন্ন পণ্যের যেসব পোস্ট করেন, তার জন্য বেশ ভালো সম্মানী পান। তাঁর দাবি, এই সম্মানী কখনো দুই হাজার ডলার, আবার কখনো তিন হাজার ডলারের মধ্যে।
২০১৩ সালে ‘দ্বিতীয় মাত্র’ নাটকে তাহসান খানের বিপরীতে অভিনয় করেন। ছোটবেলায় রূপকথার বই পড়তে পছন্দ করতেন। বই পড়ার সময় গল্পের নায়িকার চরিত্রে নিজেকে কল্পনাও করতেন। বড় পর্দায়ও অভিনয় করেছিলেন। ‘রুদ্র: দ্য গ্যাংস্টার’ নামের সেই ছবি মুক্তি পায়। এরপর ‘রাজনীতি’ ছবিতে শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয়ের কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠেনি। পরে সেই ছবিতে পিয়া বিপাশার পরিবর্তে অপু বিশ্বাস অভিনয় করেন।