পৃথিবীর বাইরে মানুষের মতো প্রাণ আছে কি না, তা নিয়ে অনেকেরই অনেক রকমের জিজ্ঞাসা আছে। নতুন এক গবেষণায় বলা হয়েছে, এমন প্রাণের অস্তিত্ব আমাদের ধারণার চেয়ে বেশি সম্ভাবনাময়। যদিও পুরোনো অনেক তত্ত্ব অনুসারে বুদ্ধিমান জীবনের বিবর্তন বেশ অসম্ভব প্রকৃতির এক ঘটনা।

নতুন একটি যুগান্তকারী গবেষণায় বলা হচ্ছে, বুদ্ধিমান প্রাণীর অস্তিত্ব বিরল ঘটনার পরিবর্তে অন্য সব গ্রহে সাধারণ ঘটনা হতে পারে। মহাবিশ্বের অন্য কোথাও মানবসদৃশ সভ্যতার সম্ভাবনা থাকতেই পারে। যুক্তরাষ্ট্রের পেন স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করে নতুন প্রস্তাব দিয়েছেন। তাঁরা মনে করছেন, মানুষের মতো অন্য কোনো বুদ্ধিমান প্রাণের উত্থান যেকোনো গ্রহের বিবর্তনের প্রাকৃতিক ঘটনা হতে পারে।

বিজ্ঞানীদের ভাষ্যে, নতুন তত্ত্ব অনুসারে বুদ্ধিমান জীবনের উত্থানের মতো দীর্ঘ সময় নাও লাগতে পারে। অসম্ভাব্য ঘটনার পরিবর্তে বিবর্তন একটি অনুমানযোগ্য প্রক্রিয়া হতে পারে। কেবল পৃথিবীতে নয়, অন্য সব গ্রহে প্রাণের সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে তুলছে। আমাদের মতো অন্য কোথাও জীবের অস্তিত্ব থাকতে পারে। সায়েন্স অ্যাডভান্সেস জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণা পুরোনো ধারণার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। ১৯৮৩ সালে পদার্থবিজ্ঞানী ব্র্যান্ডন কার্টার দীর্ঘস্থায়ী কঠিন পদক্ষেপ নামের একটি তত্ত্ব প্রকাশ করেন। সেই তত্ত্ব পরামর্শ দেয় জটিল ও বুদ্ধিমান জীবনের বিবর্তন একটি অত্যন্ত অসম্ভাব্য ঘটনা। এমন ঘটনা আসলে বিরল ঘটনার একটি সিরিজের ফলাফল বলা যায়। তার তত্ত্ব অনুসারে বুদ্ধিমান কোনো সভ্যতা মহাবিশ্বের অন্য কোথাও বিদ্যমান থাকার সম্ভাবনা নেই। ৪০ বছরের পুরোনো সেই ধারণার বিপরীতে নতুন তত্ত্ব দিচ্ছেন আরেক দল বিজ্ঞানী। নতুন মডেল বলছে, পৃথিবীতে মানুষের উত্থান অসম্ভব কোনো ঘটনা ছিল না। এমনভাবে অন্য গ্রহে সম্ভাব্যভাবে বুদ্ধিমান জীবনের সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে।

বিজ্ঞানী ড্যান মিল বলেন, ‘আমাদের যুক্তি হচ্ছে বুদ্ধিমান জীবনের অস্তিত্বের জন্য সৌভাগ্যময় কোনো ঘটনার প্রয়োজন না–ও হতে পারে। পৃথিবীর ইতিহাসে মানুষ প্রাথমিক বা দেরিতে বিবর্তিত হয়নি। সময় অনুযায়ী যখন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তখনই মানুষের আবির্ভাব হয়েছে। এটি আসলে সময়ের ব্যাপার। অন্যান্য অনেক গ্রহে পৃথিবীর চেয়ে আরও দ্রুত এই অবস্থা দেখা গেলে সেখানে এমন প্রাণ দেখা যেতে পারে।’

নতুন ধারণা অনুসারে বিবর্তনীয় মাইলফলক এলোমেলো কোনো ঘটনার বদলে অনুমানযোগ্য ও যৌক্তিক ঘটনার ফলাফল বলে মনে করা হচ্ছে। উদাহরণ হিসেবে উদ্ভিদের সালোকসংশ্লেষণের কারণে একটি অক্সিজেন-সমৃদ্ধ বায়ুমণ্ডলের কথা বলা হয়েছে। বায়ুমণ্ডলের কারণেই পৃথিবীতে প্রাণী জগতের আগমনের পথ তৈরি হয়েছিল।

১৯৮৩ সালের ব্র্যান্ডন কার্টারের তত্ত্ব বলে, জটিল প্রাণ অনুকূল অবস্থা আসার পরে কোনো একটি অনন্য সমন্বয় থেকে উদ্ভূত হয়। আর নতুন গবেষণা বলছে, পৃথিবীতে জীবনের বিকাশ গ্রহের বিবর্তনের একটি প্রাকৃতিক ফলাফল। নতুন গবেষণার মাধ্যমে আবাসযোগ্যতার সুযোগ ধারণাটি প্রবর্তন করছেন বিজ্ঞানীরা। মহাবিশ্বের যেকোনো জায়গায় পৃথিবীর মতো গ্রহ সহজাতভাবে এমন পর্যায়ে যেতে পারে, যা জটিল জীবনের উত্থানকে সমর্থন করে।

সূত্র: এনডিটিভি

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব দ ধ ম ন জ বন র অন য ক অন স র তত ত ব অসম ভ ঘটন র

এছাড়াও পড়ুন:

৪২ বছর পর নিউ জিল‌্যান্ডের কাছে হোয়াইটওয়াশ ইংল‌্যান্ড

১৯৮৩ সাল আবার মনে করাল ইংল‌্যান্ড। নিউ জিল‌্যান্ডে গিয়ে সেবার ইংল‌্যান্ড ৩-০ ব‌্যবধানে ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল। ৪২ বছর পর একই অভিজ্ঞতা হলো এবার তাদের।

আগেই সিরিজ নিশ্চিত করা নিউ জিল‌্যান্ড এবার আরো চেপে ধরেছিল ইংল‌্যান্ডকে। তবুও লড়াই করে ওয়েলিংটনে অতিথিরা ২২২ রানের পুঁজি পায়। হোয়াইটওয়াশের মিশনে থাকা নিউ জিল‌্যান্ডের ব‌্যাটিং তেমন ভালো হয়নি। লো স্কোরিং ম‌্যাচ জমে উঠে। শেষ পর্যন্ত ৪৪.৪ ওভারে হাতে ২ উইকেট রেখে লক্ষ‌্যে পৌঁছে যায় কিউইরা। ১৯৮৩ সালের পর প্রথম নিউ জিল‌্যান্ড ইংল‌্যান্ডকে ওয়ানডেতে হোয়াইটওয়াশ করল।

টস হেরে ব‌্যাটিং করতে নেমে ইংল‌্যান্ড চরম বিপর্যয়ে পড়ে। ৯৭ রানে ৬ উইকেট হারায় তারা। ১০২ রানে তাদের শেষ স্বীকৃত ব‌্যাটসম‌্যান জস বাটলার (৩৮) আউট হন। তখন ধারণা করা হচ্ছিল অল্পতেই গুটিয়ে যাবে সাবেক বিশ্ব চ‌্যাম্পিয়নরা।

কিন্তু সেখানে ঢাল হয়ে দাঁড়ান ব্রাইডন চার্স ও জেমি ওভারটন। দুজন ৫৮ রানের জুটি গড়েন। যেখানে ব্রাইডন আক্রমণাত্মক ক্রিকেট উপহার দিয়ে ৪ ছক্কা ও ১ চারে ৩০ বলে ৩৬ রান করেন। ইংল‌্যান্ডের সর্বোচ্চ রানের জুটি আসে তাদের ব‌্যাটেই।

শেষ ব‌্যাটসম‌্যান হিসেবে ওভারটন আউট হন ৪১তম ওভারে। ৬২ বলে ১০ চার ও ২ ছক্কায় ৬৮ রান করেন ডানহাতি ব‌্যাটসম‌্যান। এর আগে জেমি স্মিথ (৫), বেন ডাকেট (৮), জো রুট (২) ও হ‌্যারি ব্রুক (৬) দ্রুত আউট হন। দলের প্রথম ব‌্যাটসম‌্যান হিসেবে দুই অঙ্কের ঘরে যেতে পারেন পাঁচ নম্বরে নামা জ‌্যাকব মিচেল। তবুও ১১ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি।

নিউ জিল‌্যান্ডের বোলিং ছিল নিয়ন্ত্রিত। ৬৪ রানে ৪ উইকেট নিয়ে সেরা ছিলেন ব্লায়ার টিকনার। ৩ উইকেট পেয়েছেন জ‌্যাকব টাফি। ২টি পেয়েছেন জ‌্যাক ফলকস।

জবাব দিতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে ৭৮ রান পায় কিউইরা। ডেভন কনওয়ে ৩৪ ও রাচীন রাভিন্দ্রা ৪৬ রান করেন। এরপর ছন্দ হারিয়ে ব‌্যাকফুটে চলে যায় স্বাগতিকরা। কিন্তু ডার্ল মিচেলের অনবদ‌্য ৪৪ ও শেষ দিকে মিচেল স্টানারের ২৭ রানে নিউ জিল‌্যান্ড লড়াইয়ে ফেরে। শেষ দিকে জ‌্যাক ফলকসের ১৪ ও ব্লায়ার টিকনারের ১৮ রানে নিউ জিল‌্যান্ডের জয় নিশ্চিত হয়।

ইংলিশদের হয়ে ২টি করে উইকেট নেন ওভারটন ও স‌্যাম কারান।

এই সিরিজে ইংল‌্যান্ডের ব‌্যাটিং একটুও ভালো হয়নি। প্রথম ম‌্যাচে ২২৩ ও দ্বিতীয়টিতে ১৭৫ রানে গুটিয়ে যায়। নিউ জিল‌্যান্ড জয় পায় যথাক্রমে ৪ ও ৫ উইকেটে। শেষ ম‌্যাচে খানিকটা প্রতিদ্বন্দ্বীতা গড়লেও হোয়াইটওয়াশ এড়াতে পারেনি ইংল‌্যান্ড।

বল হাতে ৪ উইকেট ও ব‌্যাটিংয়ে ১৮ রান করে ম‌্যাচ সেরা নির্বাচিত হন টিকনার। ১৭৮ রান করে সিরিজ সেরা ডার্ল মিচেল।

ঢাকা/ইয়াসিন 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৪২ বছর পর নিউ জিল‌্যান্ডের কাছে হোয়াইটওয়াশ ইংল‌্যান্ড