মহাবিশ্বের অন্য গ্রহে বুদ্ধিমান প্রাণী থাকার সম্ভাবনা আছে
Published: 19th, February 2025 GMT
পৃথিবীর বাইরে মানুষের মতো প্রাণ আছে কি না, তা নিয়ে অনেকেরই অনেক রকমের জিজ্ঞাসা আছে। নতুন এক গবেষণায় বলা হয়েছে, এমন প্রাণের অস্তিত্ব আমাদের ধারণার চেয়ে বেশি সম্ভাবনাময়। যদিও পুরোনো অনেক তত্ত্ব অনুসারে বুদ্ধিমান জীবনের বিবর্তন বেশ অসম্ভব প্রকৃতির এক ঘটনা।
নতুন একটি যুগান্তকারী গবেষণায় বলা হচ্ছে, বুদ্ধিমান প্রাণীর অস্তিত্ব বিরল ঘটনার পরিবর্তে অন্য সব গ্রহে সাধারণ ঘটনা হতে পারে। মহাবিশ্বের অন্য কোথাও মানবসদৃশ সভ্যতার সম্ভাবনা থাকতেই পারে। যুক্তরাষ্ট্রের পেন স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করে নতুন প্রস্তাব দিয়েছেন। তাঁরা মনে করছেন, মানুষের মতো অন্য কোনো বুদ্ধিমান প্রাণের উত্থান যেকোনো গ্রহের বিবর্তনের প্রাকৃতিক ঘটনা হতে পারে।
বিজ্ঞানীদের ভাষ্যে, নতুন তত্ত্ব অনুসারে বুদ্ধিমান জীবনের উত্থানের মতো দীর্ঘ সময় নাও লাগতে পারে। অসম্ভাব্য ঘটনার পরিবর্তে বিবর্তন একটি অনুমানযোগ্য প্রক্রিয়া হতে পারে। কেবল পৃথিবীতে নয়, অন্য সব গ্রহে প্রাণের সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে তুলছে। আমাদের মতো অন্য কোথাও জীবের অস্তিত্ব থাকতে পারে। সায়েন্স অ্যাডভান্সেস জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণা পুরোনো ধারণার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। ১৯৮৩ সালে পদার্থবিজ্ঞানী ব্র্যান্ডন কার্টার দীর্ঘস্থায়ী কঠিন পদক্ষেপ নামের একটি তত্ত্ব প্রকাশ করেন। সেই তত্ত্ব পরামর্শ দেয় জটিল ও বুদ্ধিমান জীবনের বিবর্তন একটি অত্যন্ত অসম্ভাব্য ঘটনা। এমন ঘটনা আসলে বিরল ঘটনার একটি সিরিজের ফলাফল বলা যায়। তার তত্ত্ব অনুসারে বুদ্ধিমান কোনো সভ্যতা মহাবিশ্বের অন্য কোথাও বিদ্যমান থাকার সম্ভাবনা নেই। ৪০ বছরের পুরোনো সেই ধারণার বিপরীতে নতুন তত্ত্ব দিচ্ছেন আরেক দল বিজ্ঞানী। নতুন মডেল বলছে, পৃথিবীতে মানুষের উত্থান অসম্ভব কোনো ঘটনা ছিল না। এমনভাবে অন্য গ্রহে সম্ভাব্যভাবে বুদ্ধিমান জীবনের সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে।
বিজ্ঞানী ড্যান মিল বলেন, ‘আমাদের যুক্তি হচ্ছে বুদ্ধিমান জীবনের অস্তিত্বের জন্য সৌভাগ্যময় কোনো ঘটনার প্রয়োজন না–ও হতে পারে। পৃথিবীর ইতিহাসে মানুষ প্রাথমিক বা দেরিতে বিবর্তিত হয়নি। সময় অনুযায়ী যখন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তখনই মানুষের আবির্ভাব হয়েছে। এটি আসলে সময়ের ব্যাপার। অন্যান্য অনেক গ্রহে পৃথিবীর চেয়ে আরও দ্রুত এই অবস্থা দেখা গেলে সেখানে এমন প্রাণ দেখা যেতে পারে।’
নতুন ধারণা অনুসারে বিবর্তনীয় মাইলফলক এলোমেলো কোনো ঘটনার বদলে অনুমানযোগ্য ও যৌক্তিক ঘটনার ফলাফল বলে মনে করা হচ্ছে। উদাহরণ হিসেবে উদ্ভিদের সালোকসংশ্লেষণের কারণে একটি অক্সিজেন-সমৃদ্ধ বায়ুমণ্ডলের কথা বলা হয়েছে। বায়ুমণ্ডলের কারণেই পৃথিবীতে প্রাণী জগতের আগমনের পথ তৈরি হয়েছিল।
১৯৮৩ সালের ব্র্যান্ডন কার্টারের তত্ত্ব বলে, জটিল প্রাণ অনুকূল অবস্থা আসার পরে কোনো একটি অনন্য সমন্বয় থেকে উদ্ভূত হয়। আর নতুন গবেষণা বলছে, পৃথিবীতে জীবনের বিকাশ গ্রহের বিবর্তনের একটি প্রাকৃতিক ফলাফল। নতুন গবেষণার মাধ্যমে আবাসযোগ্যতার সুযোগ ধারণাটি প্রবর্তন করছেন বিজ্ঞানীরা। মহাবিশ্বের যেকোনো জায়গায় পৃথিবীর মতো গ্রহ সহজাতভাবে এমন পর্যায়ে যেতে পারে, যা জটিল জীবনের উত্থানকে সমর্থন করে।
সূত্র: এনডিটিভি
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব দ ধ ম ন জ বন র অন য ক অন স র তত ত ব অসম ভ ঘটন র
এছাড়াও পড়ুন:
মে মাসে এক থেকে দুটি ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস
চলতি মাসে ধেয়ে আসতে পারে এক থেকে দুটি ঘূর্ণিঝড়। সেই সঙ্গে এ মাসে শিলা ও বজ্রবৃষ্টিসহ তীব্র কালবৈশাখী ঝড় হতে পারে।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) বিকেলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের উপপরিচালক এস এম কামরুল হাসানের সই করা একমাসের দীর্ঘ মেয়াদি পূর্বাভাসে এই তথ্য জানা গেছে।
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, মে মাসে দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হতে পারে। এছাড়া এ মাসে বঙ্গোপসাগরে এক থেকে তিনটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে যার মধ্যে এক থেকে দুইটি নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। দেশে ২ থেকে ৩ দিন বজ্র ও শিলাবৃষ্টিসহ মাঝারি বা তীব্র কালবৈশাখী ঝড় এবং ৩ থেকে ৫ দিন বজ্র ও শিলাবৃষ্টিসহ হালকা কালবৈশাখী ঝড় হতে পারে।
আরো পড়ুন:
নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় ‘ফিনজালে’ পরিণত, বন্দরে ২ নম্বর সংকেত
উপকূল রক্ষা করছে বনাঞ্চল, কিন্তু বন বাঁচাতে নেই উদ্যোগ
তীব্র তাপপ্রবাহের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দেশের কোথাও কোথাও ১ থেকে ৩টি মৃদু (৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ডিগ্রি সেলসিয়াস) ও মাঝারি (৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস) এবং ১ থেকে ২টি তীব্র (৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি) তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এ সময় দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিক এবং রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিক অপেক্ষা বেশি থাকতে পারে।
এই আবহাওয়াবিদ বলেন, “মে মাসে দেশের প্রধান নদ-নদীসমূহে স্বাভাবিক প্রবাহ বিরাজমান থাকতে পারে। তবে বিচ্ছিন্ন ভারি বৃষ্টিপাতের প্রেক্ষিতে দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলের নদীসমূহের পানি সমতল সময় বিশেষে বাড়তে পারে।”
এদিকে, মে মাসে দেশের প্রধান নদ-নদীগুলোয় স্বাভাবিক প্রবাহ বিরাজমান থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তবে বিচ্ছিন্ন ভারি বৃষ্টিপাতের প্রেক্ষিতে দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলের নদীগুলোর পানি সমতল সময় বৃদ্ধি পেতে পারে।
ঢাকাসহ ৮ জেলায় বজ্রপাতের সতর্কতা জারি
রাজধানী ঢাকাসহ দেশের আটটি জেলায় বজ্রপাতের সতর্কতা জারি করেছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। এতে বলা হয়েছে প্রায় বিকেল ৫টা পর্যন্ত এসব এলাকায় বজ্রপাতের ঝুঁকি রয়েছে। একইসঙ্গে দেশের কিছু কিছু জায়গায় দমকা হওয়া ও শিলাসহ বৃষ্টির সম্ভাবনার কথাও বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১ মে) দুপুরে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্র থেকে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে এসব জানানো হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ ড. মো. বজলুর রশিদের সই করা এই সতর্কবার্তায় জানানো হয়, ঢাকা, শেরপুর, নরসিংদী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইল, কুমিল্লা, সুনামগঞ্জ এবং সিলেট জেলার ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বা তার বেশি বেগে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। একইসঙ্গে পৌনে ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বজ্রপাতের সম্ভাবনাও রয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে আবহাওয়া অধিদপ্তর জনসাধারণকে কিছু জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শও বিজ্ঞপ্তিতে দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ঘরে অবস্থান করা, অপ্রয়োজনে যাত্রা এড়িয়ে চলা এবং নিরাপদ আশ্রয়ে থাকা। একইসঙ্গে গাছপালা ও বিদ্যুতের খুঁটি থেকে দূরে থাকার পাশাপাশি কংক্রিটের মেঝেতে শোয়া বা দেয়ালে হেলান দেওয়া থেকেও বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
এছাড়া, বজ্রপাতের সময় বৈদ্যুতিক ও ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলোর প্লাগ খুলে রাখার এবং জলাশয় থেকে দ্রুত সরে আসার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ পরিবাহী যে কোনো বস্তু থেকে দূরে থাকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে সতর্কবার্তায়। শিলাবৃষ্টির সময় সবাইকে ঘরে থাকারও আহ্বান জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
ঢাকা/হাসান/সাইফ