জিম্মি শিরির মরদেহ কোথায় ছিল, কেন ভুল হয়েছিল, জানাল হামাস
Published: 23rd, February 2025 GMT
ফিলিস্তিনের গাজায় হামাসের হাতে থাকা একজন জিম্মির মরদেহ ঘিরে সংগঠনটি ও ইসরায়েলের মধ্যকার উত্তেজনা বেড়েছিল। এ নিয়ে হামাস দুঃখ প্রকাশ করেছে। ইসরায়েলের কাছে সঠিক জিম্মির মরদেহ ফেরত দেওয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে এবং কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় গত মাসে সই হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত মেনে কয়েক দফায় জিম্মি ও জিম্মি ব্যক্তিদের মরদেহ ইসরায়েলে ফেরত পাঠাচ্ছে হামাস। এর বিপরীতে ইসরায়েলের কারাগারগুলোয় আটক থাকা ফিলিস্তিনিদের মুক্তি দেওয়া হচ্ছে।
এর মধ্যেই অঘটন ঘটে গত বৃহম্পতিবার। ওই দিন প্রথমবারের মতো চার জিম্মির মরদেহ ইসরায়েলে ফেরত পাঠানো হয়। এই চার জিম্মি হলো দুই শিশু কেফির বিবাস ও অ্যারিয়েল বিবাস (৪)। শিশু দুটির মা শিরি বিবাস (৩২)। চতুর্থ যে জিম্মির মরদেহ ফেরত দেওয়া হয়েছে, তিনি ওদেদ লিফশিৎজ (৮৩)।
গাজার দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিস শহরে এক আয়োজনে আন্তর্জাতিক রেডক্রসের কাছে এই চারজনের মরদেহ তুলে দেয় হামাস। পরে চারটি মরদেহ ইসরায়েলে নেওয়া হয়।
এ পর্যন্ত সব ঠিকঠাক ছিল, কিন্তু মরদেহ দেশে ফেরানোর পর ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ দাবি করে, কফিনে শিরি বিবাসের মরদেহ ছিল না। বরং অজ্ঞাতপরিচয় এক নারীর মরদেহ কফিনে করে পাঠিয়েছে হামাস।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ দাবি করে, দেশে ফেরানোর পর চারটি মরদেহ পরীক্ষা করে দেখেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা। পরে তাঁরা জানান, তিনটি কফিনে কেফির, অ্যারিয়েল ও লিফশিৎজের মরদেহ ঠিকঠাক আছে। তবে শিরির কফিনে যে মরদেহ এসেছে, সেটা ওই ইসরায়েলি নারীর নয় বলে পরীক্ষায় দেখা গেছে।
এ নিয়ে দুই পক্ষের বিরোধ চরমে পৌঁছায়। ঘটনাটিকে যুদ্ধবিরতি চুক্তির ‘নিষ্ঠুর ও অসৎ’ লঙ্ঘন হিসেবে চিহ্নিত করে ইসরায়েল। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সতর্ক করে দিয়ে বলেন, এ কাজের জন্য হামাসকে ‘পুরো মূল্য’ চোকাতে হবে।
একদিন পর, অর্থাৎ গত শুক্রবার হামাসের পক্ষ থেকে এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করা হয়। হামাস জানায়, ভুলবশত অন্য কারও মরদেহ পাঠানো হয়ে থাকতে পারে। এ–সংক্রান্ত তদন্তের ফলাফল ‘স্পষ্টভাবে’ ঘোষণা করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে হামাস।
তবে এই ভুলের জন্য ইসরায়েলের সেনাবাহিনীকেই দুষেছে হামাস। সংগঠনটি বলেছে, ওই পরিবারকে (বিবাস পরিবার) গাজায় যেখানে রাখা হয়েছিল, সেখানে আরও ফিলিস্তিনি ছিলেন। ইসরায়েলি বাহিনী সেখানে বোমা হামলা চালিয়ে অনেককে হত্যা করেছে। তাই মরদেহ নিয়ে এই ভুল হয়ে থাকতে পারে।
রেডক্রস জানিয়েছে, শুক্রবার হামাসের কাছ থেকে তারা আরও একটি মরদেহ বুঝে পেয়েছে। হামাস নিশ্চিত করেছে যে এবার আর ভুল হয়নি। এটা শিরি বিবাসের মরদেহ।
গতকাল শনিবার আল-জাজিরার লাইভ সংবাদে বলা হয়েছে, ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত করেছেন, নতুন মরদেহটি শিরি বিবাসের। ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক বিবৃতিতে বিবাস পরিবারের পক্ষ থেকে এ কথা জানানো হয়েছে।
বিবাস পরিবারের চার সদস্য ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের কিবুতজ নির ওজ এলাকা থেকে হামাসের হাতে জিম্মি হন। তখন কেফিরের বয়স ছিল ৯ মাস। জিম্মি করা হয় কেফির ও অ্যারিয়েলের বাবা ইয়ারদেন বিবাসকেও।
আরও পড়ুনইসরায়েলি আগ্রাসনে পশ্চিম তীরে ৫৮ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বাস্তুচ্যুতি১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫আরও পড়ুনহামাসের হস্তান্তর করা চার মরদেহের একটি কোনো জিম্মির নয়, দাবি ইসরায়েলের২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫গত বছরের নভেম্বরে হামাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ইসরায়েলি বিমান হামলায় জিম্মি ওই মা ও দুই শিশু নিহত হয়েছে। তবে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ কখনোই তাঁদের নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেনি। এমনকি শেষ মুহূর্তেও ইসরায়েলের কেউ কেউ তাঁদের মৃত বলে মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানান।
এর আগে চলতি মাসে যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় গাজা থেকে মুক্তি পান ইয়ারদেন বিবাস। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দুই শিশু ও মায়ের ভাগ্যে কী ঘটেছে, সেটি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তাদের অপেক্ষা শেষ হচ্ছে না। অবশেষে গত বৃহস্পতিবার তাদের অপেক্ষার প্রহর ঘুচলেও শিরির মরদেহ নিয়ে নতুন করে জটিলতা দেখা দেয়।
আরও পড়ুনগাজায় দ্বিতীয় ধাপে যুদ্ধবিরতি নিয়ে চলতি সপ্তাহে আলোচনা শুরু করবে ইসরায়েল১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫আরও পড়ুনমা ও দুই শিশুসহ চার জিম্মির মরদেহ গাজা থেকে ইসরায়েলে ফিরল ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ ম ম র মরদ হ ইসর য় ল র ক পর ব র
এছাড়াও পড়ুন:
বাজুসের নতুন সভাপতি এনামুল হক খান
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনে (বাজুস) বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন ডায়মন্ড অ্যান্ড ডিভাস’র এনামুল হক খান। সংগঠনটির ২০২৫-২৬ এবং ২০২৬-২৭ মেয়াদের জন্য তিনি দায়িত্ব পালন করবেন ।
সোমবার (৩ নভেম্বর) রাজধানীর মগবাজারে বাজুস কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বাজুস নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান নাসরিন ফাতেমা আউয়াল ফলাফল ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, বৈধ প্রার্থীদের মধ্য থেকে কোনো প্রার্থী তাদের মনোনয়পত্র প্রত্যাহার না করায় বাণিজ্য সংগঠনের বিধিমালা-২০২৫ এর ২৪(১) ধারা মোতাবেক বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা নির্বাচনযোগ্য পদের সমান হওয়ায় ৩৫ জন প্রার্থীকে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে।
বাজুসের ২০২৫-২৬ এবং ২০২৬-২৭ মেয়াদের একজন সিনিয়র সহ-সহভাপতি, ৩ জন সহ-সভাপতি, একজন কোষাধ্যক্ষ এবং ২৯ জন পরিচালক নির্বাচিত হয়েছে। এদের সবাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক এখন থেকে আর কেউ থাকবেন না। ফলে সাধারণ সম্পদ পদে কেউ নির্বাচিত হননি। বাজুস প্রতিষ্ঠার পর এই প্রথম সাধারণ সম্পদ পদ বিলুপ্ত করা হলো।
বাজুসের নবনির্বাচিত সভাপতি এনামুল হক খান বলেন, আমরা সোনার ব্যবসা করি। মানুষকে বোঝাতে হবে ব্যবসায়ীরা কিন্তু চোরাকারবারী না। একটি আলোর পথ অন্যটি অন্ধকার পথ। আমরা আলোর পথে আছি। যারা চোরাকারবারী করে তারা কোনোদিন সোনা ব্যবসায় আসবে না। আর যারা সোনা ব্যবসা করে তারা কোনোদিন চোরাকারবারীতে জড়াবে না।
তিনি বলেন, আমাদের সোনা আমদানির প্রক্রিয়া সহজ করতে হবে। সোনা আমদানির ব্যবস্থা আছে, কিন্তু এতো কঠিন প্রক্রিয়া যে, এই কঠিন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সোনা আমদানি করতে গেলে যেই দাম দাঁড়ায়, সেই দাম দিয়ে কেউ সোনা কিনতে আগ্রহী না। আর এজন্য যতদিন সোনা আমদানি সহজ না হয়, ততোদিন পর্যন্ত ব্যাগেজ রুলসের মাধ্যমে সোনা যে সহজে আসতো, সেটা চালু করার জন্য আমরা উদ্যোগ গ্রহণ করবো।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশে ভ্যাট ৫ শতাংশ অথচ আমাদের পাশের দেশে ভ্যাট অনেক কম। আমরা ভ্যাট কমানোর জন্য কাজ করবো।
বাজুসের সিনিয়র সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন সানন্দা জুয়েলার্স (প্রা.) এর রনজিৎ ঘোষ, সহ-সভাপতি পদে আপন ডায়মন্ড হাউজের আজাদ আহমেদ, জড়োয়া হাউজ (প্রা.) লিমিটেডের অভি রায় এবং জেসিএক্স গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডের ইকবাল হোসেন চৌধুরী নির্বাচিত হয়েছেন। কোষাধ্যক্ষ পদে নির্বাচিত হয়েছেন নিউ ফেন্সী জুয়েলার্স’র অমিত ঘোষ।
বাজুসের পরিচালক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন মো. মিলন মিয়া, পবন কুমার আগোওরালা, তানভীর রহমান, মো. লিটন হাওলাদার, বাবুল দত্ত, গনেশ দেবনাথ, আশিস কুমার মন্ডল, মিনাজুর রহমান, বিকাশ ঘোষ, সুমন চন্দ্র দে, মোস্তাফা কামাল, ধনঞ্জয় সাহা (বিপুল), শ্রীবাস রায়, মো. আলী হোসেন, মো. রুবেল, মো. নয়ন চৌধুরী, মো. ছালাম, ফাহাদ কামাল লিংকন, গৌতম ঘোষ, মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম, মো. তারেকুল ইসলাম চৌধুরী, আবু নাসের মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, মো. রফিকুল ইসলাম, সৌমেন সাহা, আককাছ আলী, মোহাম্মদ মোরশেদ আলম, শাওন আহমেদ চৌধুরী, মো. নাজমুল হুদা লতিফ এবং পলাশ কুমার সাহা।
ঢাকা/নাজমুল/ফিরোজ