বিভিন্ন এজেন্সির বিরুদ্ধে ওমরা পালন করতে মক্কা ও মদিনায় নিয়ে গিয়ে আবাসন, পরিবহণ ও আর্থিকসহ নানা ধরনের হেনস্তা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক কর্মকর্তা।

রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ঢাবি সাংবাদিক সমিতির (ডুজা) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এসব অভিযোগ করেন। এ সময় এর বিরুদ্ধে কার্যকরি ব্যবস্থা নিতে হজ্জ ও ওমরার সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্ট সব সরকারি প্রতিষ্ঠানকে আহ্বান জানান তিনি।

ভুক্তভোগী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রিন্সিপ্যাল অ্যাডমিনিস্ট্রেট অফিসার সৈয়দা খাদিজা বেগম। তিনি প্রথমে ‘মুজদালিফা’ নামের একটি হজ্জ এজেন্সির মাধ্যমে ১ লাখ ৩৬ হাজার টাকা জমা দিয়ে ওমরা করার সমস্ত প্রস্তুতি নেন। তবে বাংলাদেশের হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাওয়ার পরে ওই এজেন্সি ‘মা আম্বিয়া ট্যুরস্ অ্যান্ড ট্রাভেলস’ নামে অন্য আরেকটি এজেন্সির কাছে তাদের বুঝিয়ে দেয়। পরবর্তীতে ভিন্ন ভিন্ন এজেন্সির সঙ্গে থাকতে বাধ্য করা হয়৷ 

সংবাদ সম্মেলনে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ভুক্তভোগী বলেন, “গত ৯ জানুয়ারি দুপুরে ওমরা পালনের উদ্দেশ্যে আমি সৌদি এয়ারে ঢাকা ত্যাগ করি। জেদ্দায় পৌঁছাতে রাত হয়ে যায়। তখন এক মোয়াল্লেম আমাদের একটি বাসে নিয়ে উঠান। সেখান থেকে ভোগান্তির শুরু হয়। বাসে উঠা মাত্রই পাসপোর্ট নিয়ে রেখে দিয়ে বাসভাড়া দাবি করেন। পরে জোর করে বাসভাড়া নেন এবং পাসপোর্ট আটকে রাখেন।”

তিনি বলেন, “খাবার খাওয়ানোর ক্ষেত্রে টাকা বাঁচানোর চেষ্টায় একেবারে নিম্নমানের খাবার দেয় এজেন্সিগুলো। মক্কায় তুলনামূলক ভালো খাবার দিলেও মদিনায় অধিক লাভের আশায় খারাপ খাবার দেয়। এছাড়াও ওমরায় গাইড হিসেবে থাকা মুয়াল্লিম নিজের মর্জিমতো আমাদের প্রয়োজনীয় জায়গাগুলোতে নিয়ে যায়। এমনও হয়েছে, প্রচণ্ড রোদের মধ্যে আমাদের বাইরে নিয়ে যান তিনি। অথচ সেখানে তুলনামূলক কম রোদের সময়ও নিতে পারতেন।

এজেন্সির সহায়তায় ওমরা করতে গিয়ে ইবাদতের পরিবর্তে অতিরিক্ত চিন্তা করতে হয় জানিয়ে ভুক্তভোগী খাদিজা বলেন, “আমাদের বলা হয় হেরেম শরীফের একদম পাশে বাসা দেবে। কিন্তু গিয়ে দেখি অনেক দূরে একটি গলির ভেতরে বাসা দেয়। এছাড়াও এমন বাসায় দেয়, যেখানে তিনজনের থাকার কথা থাকলেও আমাদের পাঁচজনকে এক রুমে রাখে। মহিলাদের ওয়াশরুম বিড়ম্বনাতেও পড়তে হয় এজেন্সিগুলোর অব্যবস্থাপনার কারণে।”

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে হজ্জ এজেন্সিগুলোর প্রতারণার প্রতিকার দাবি জানিয়ে খাদিজা আরো বলেন, “হজ্জ এজেন্সিগুলোর ভুয়া লাইসেন্স বাতিল করতে হবে। এক এজেন্সির মানুষ অন্য এজেন্সি নিতে পারবে না মর্মে কঠোর নিয়ম প্রণয়ন করতে হবে।”

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে অভিযুক্ত হজ্জ এসেন্সি ‘মুজদালিফা’র পরিচালক হাবিবুর রহমানের মুঠোফোন নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়। 

তবে ‘মা আম্বিয়া ট্যুরস্ অ্যান্ড ট্রাভেলস’ এর পরিচালক মো.

তোফায়েল ইসলাম বলেন, “একজন বা একটি প্রতিষ্ঠানের অধীনে একাধিক এজেন্সি পারিচালনা করা যায়।”

যাত্রীদের ভোগান্তির বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে মিটিংয়ে আছেন জানিয়ে বিষয়টি এড়িয়ে যান এবং মোবাইলের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য গ কর আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

বিতর্কিত তিন নির্বাচনে জড়িতদের ভূমিকা তদন্তে কমিটি গঠনের নির্দেশ

বিতর্কিত তিন জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে জড়িত সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনারগণ ও নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিবদের ভূমিকা তদন্তে অবিলম্বে একটি কমিটি গঠনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

সোমবার (১৬ জুন) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক বৈঠকে আলোচনা শেষে এ নির্দেশ দেন তিনি। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রধান।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন ও ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

আরো পড়ুন:

প্রধান উপদেষ্টা অনেক বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন: ফখরুল

ইউনূস-তারেক বৈঠক
রমজান শুরুর আগের সপ্তাহেও নির্বাচন হতে পারে: যৌথ বিবৃতি

বৈঠকে কমিশন সদস্যগণ জুলাই সনদ তৈরির কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন। 

কমিশনের সহ-সভাপতি প্রফেসর আলী রীয়াজ বলেন, ‍“বেশকিছু বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। খুব শিগগিরই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সনদ চূড়ান্ত করে ফেলা সম্ভব হবে।”

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “সবাই জুলাই সনদের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। আমি আশা করি, আগামী জুলাই মাসের মধ্যে আমরা এটি জাতির সামনে উপস্থাপন করতে পারব।”

বৈঠকে লন্ডন সফরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে তিনি বলেন, “লন্ডনে বাংলাদেশি কমিউনিটির যাদের সঙ্গেই দেখা হয়েছে, তারা সংস্কার নিয়ে জানতে চেয়েছে। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা খুব আগ্রহী। তারা বিস্তারিতভাবে ঐকমত্য কমিশনের কাজ নিয়ে আমার সঙ্গে আলোচনা করেছে, মতামত দিয়েছে। যেখানেই গেছি, সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিরা আমাকে জিজ্ঞেস করছেন, ‘আমরা আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে পারব তো?’ আমাদের প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিতের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। পোস্টাল ব্যালট এবং আর কী কী অপশন আছে সেগুলো নিয়ে ভাবতে হবে, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে।”

বৈঠকে নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশন প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, “সব রাজনৈতিক একমত হয়েছে যে, অতীতের তিনটি বিতর্কিত নির্বাচন আয়োজনে কর্মকর্তাদের ভূমিকা তদন্ত ও জবাবদিহিতার আওতায় আনা প্রয়োজন।”

ঢাকা/হাসান/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ