পা ছুঁয়ে প্রণাম শ্রাবন্তীর, ‘মেয়ে’ সম্বোধন করলেন প্রসেনজিৎ
Published: 25th, February 2025 GMT
১৯৯৭ সালে মুক্তি পাওয়া ‘মায়ার বাঁধন’ ছবিতে নায়ক প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের মেয়ের ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়কে। পরে সেই শ্রাবন্তী হয়ে ওঠেন ঢালিউডের জনপ্রিয় নায়িকা। ২০২৩ সালে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘কাবেরী অন্তর্ধান’ ছবিতে শ্রাবন্তী হন প্রসেনজিতের নায়িকা।
আবারও ‘দেবী চৌধুরানী’ ছবিতে একসঙ্গে জুটি বেঁধেছেন প্রসেনজিৎ-শ্রাবন্তী। যদিও এখানে তাঁরা ঠিক নায়ক-নায়িকা নন। এই ছবিতে ‘ভবানী পাঠক’-এর ভূমিকায় দেখা যাবে বুম্বাদাকে। আর শ্রাবন্তী হচ্ছেন ‘দেবী চৌধুরানী’। সম্প্রতি একটি পাবলিক স্টেজ শোয়ে সেই কথাই উঠে এসে টালিপাড়ার ‘বুম্বাদা’র মুখে। শ্রাবন্তীকে এদিন জনসমক্ষে মেয়ে বলেই সম্বোধন করেন তিনি।
শ্রাবন্তীর কাঁধ ধরে দাঁড়িয়ে প্রসেনজিৎ বলেন, ‘অনেকদিন আগে মায়ার বাঁধন বলে একটা ছবি হয়েছিল, তাতে ও আমার মেয়ে হয়েছিল। আপনাদের আশীর্বাদে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের একটি ছবি কাবেরী অন্তর্ধান-এ ও আমার নায়িকা হয়েছিল।’
প্রসেনজিৎ বলেন, ‘আগামী মে মাসে আমাদের একটা ছবি রিলিজ হচ্ছে। সেই ছবিটা বঙ্কিমবাবুর লেখা দেবী চৌধুরানী-র কথা আপনারা নিশ্চয় জানেন। তাতে দেবী চৌধুরানী সেজেছে আমার মেয়ে। আর আমি ভবানী পাঠক।’
এদিন স্টেজে উঠেই প্রসেনজিতের পা ছুঁয়ে প্রণাম করেন শ্রাবন্তী। পাল্টা তাঁকে কাছে টেনে নিয়ে স্নেহের আদরে ভরিয়ে দেন প্রসেনজিৎ।
শ্রাবন্তীর প্রশংসা করে প্রসেনজিৎ বলেন, ‘আরও একটা কথা বলব, ও সামনে আছে বলে নয়। আমি মনে করি ওদের যে প্রজন্ম, তাতে শ্রাবন্তী একজন শুধু ভালো নায়িকই নয়, ও একজন অসাধরণ অভিনেত্রী।’
ছবিতে শ্রাবন্তী-প্রসেনজিৎ ছাড়াও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে হরবল্লভ রায়ের ভূমিকায় দেখা যাবে সব্যসাচী চক্রবর্তীকে। অর্জুন চক্রবর্তীকে দেখা যাবে রঙ্গরাজের ভূমিকায়। বিবৃতি চট্টোপাধ্যায়কে দেখা যাবে নিশির ভূমিকায়। দর্শনা বণিক অভিনয় করবেন সাগরের চরিত্রে। কিঞ্জল নন্দকে দেখা যাবে ব্রজেশ্বরের ভূমিকায়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শ র বন ত
এছাড়াও পড়ুন:
সব্যসাচী কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন
প্রথিতযশা অধ্যাপক ও পরিসংখ্যানবিদ কাজী মোতাহার হোসেন ছিলেন একজন সব্যসাচী মানুষ। তিনি নিজের কাজের মাধ্যমে বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। তাঁর ঐতিহ্য শিক্ষার্থীদের ধারণ করতে হবে।
জ্ঞানতাপস কাজী মোতাহার হোসেনের ১২৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।
অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তৃতা, বৃত্তি, পদক, পুরস্কার ও সনদ দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের যৌথ আয়োজক কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ এবং পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউট।
অনুষ্ঠানে ‘যুগলের বন্ধন: কাজী নজরুল ইসলাম-কাজী মোতাহার হোসেন’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা দেন অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরী। তিনি দুই বন্ধুর সম্পর্কের রসায়নের নানা দিক তুলে ধরেন।
প্রধান অতিথি বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, এই অনুষ্ঠানের দুটো প্রাপ্তি আছে। প্রথমত, মানুষের অবদান ও মেধাকে স্বীকার করা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, এই উপমহাদেশের একজন প্রথিতযশা সব্যসাচী মানুষের ঋণ স্বীকার করা হচ্ছে।
কাজী মোতাহার হোসেন যেকোনো বিবেচনায় একজন দার্শনিক বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। প্রথম সারির পরিসংখ্যানবিদ, বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা ছাড়াও তিনি অনেকগুলো সামাজিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, প্রভাব বিস্তার করেছেন। একজন মানুষের ছোট জীবদ্দশায় এত গুণ সন্নিবেশিত করা কঠিন। কিন্তু তিনি তা করে দেখিয়েছেন।
সবাইকে নিয়ে চলা, প্রতিষ্ঠান তৈরি করা, নিজের জগতের বাইরে নানা কিছুতে হাত বাড়িয়ে দেওয়ার মতো ঐতিহ্য কাজী মোতাহার হোসেন করে গেছেন বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, তাঁর সম্মানে যাঁরা আজ স্বীকৃতি পেলেন, তাঁরা এই ঐতিহ্যকে ধারণ করবেন। এটা (বিশ্ববিদ্যালয়) যে সামাজিক প্রতিষ্ঠান, সে বার্তা দেবেন। যেসব শিক্ষার্থী সম্মাননা পাচ্ছেন, তাঁদের ছোট প্রোফাইল তৈরি করে ওয়েবসাইটে তুলে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল মাজেদ বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন একজন সব্যসাচী মানুষ ছিলেন। বিজ্ঞানের এমন কোনো দিক নেই, যেখানে তাঁর পদচারণা ছিল না। তিনি দাবা খুব পছন্দ করতেন। দাবা খেলার কথা শুনলে তিনি ছুটে যেতেন। কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে তাঁর শোনা নানা গল্প তিনি স্মৃতিচারণা করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জাফর আহমেদ খান বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন পরিসংখ্যান চর্চার পথিকৃৎ ছিলেন। বিজ্ঞান, দাবাচর্চারও পথিকৃৎ ছিলেন। এমন কোনো পুরস্কার নেই যে, তিনি পাননি। তাঁর দেখানো পথে যেন শিক্ষার্থীরা নিজেদের আলোকিত করতে পারেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রওনাক হোসেন। এই আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের সেরা শিক্ষার্থীদের বই, নগদ অর্থ ও সনদ তুলে দেওয়া হয়। এ ছাড়া কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।