প্রায় ৫৬ কোটি টাকার চেক প্রত্যাখ্যান (ডিজঅনার) মামলায় শিল্প গ্রুপ সাদ-মুসা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মহসিনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রামের দ্বিতীয় যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ তাঁর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এর আগে এদিন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন মোহাম্মদ মহসিন।

আদালত সূত্র জানায়, ন্যাশনাল ব্যাংকের (এনবিএল) আগ্রাবাদ শাখার পক্ষ থেকে পাঁচটি চেক প্রত্যাখ্যান মামলা করা হয় ২০২০ ও ২০২২ সালে। পাঁচটি মামলায় মোট টাকার পাওনা দাবির পরিমাণ ছিল ৫৫ কোটি ৯৪ লাখ ৭৫ হাজার ৮০০ টাকা। মামলায় মহসিনের স্ত্রী ও গ্রুপের চেয়ারম্যান শামীমা নারগিছকেও আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া তাঁদের বিরুদ্ধে আদালতের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞাও রয়েছে। আজ মঙ্গলবার মোহাম্মদ মহসিন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠিয়েছেন।

ন্যাশনাল ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, সাদ-মুসা গ্রুপের কাছে ন্যাশনাল ব্যাংকের ১ হাজার ১৮০ কোটি টাকার বেশি পাওনা রয়েছে। এগুলো আদায়ে বেশ কয়েকবার তাঁকে তাগাদা দেওয়া হয়েছে। ঋণ আদায়ে গত ৫ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের বায়েজিদ কুলগাঁও এলাকায় সাদ-মুসা গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন ব্যাংকটির কর্মকর্তারা। সেখানে ‘ঋণ আদায়ে অবস্থান কর্মসূচি’ ব্যানার নিয়ে অবস্থান নেন তাঁরা।

এর আগে গত বছরের ২৪ এপ্রিল সাদ-মুসা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মহসিন ও তাঁর স্ত্রী শামিমা নারগিছের বিরুদ্ধে ঋণখেলাপির মামলায় দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয় চট্টগ্রামের অর্থঋণ আদালত। জানা গেছে, বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সাদ-মুসা গ্রুপের তিন হাজার কোটি টাকা ঋণখেলাপি রয়েছে। এগুলো পরিশোধের জন্য সুদ মওকুফ ও দুই দফা পুনঃ তফসিলের সুযোগ দেওয়া হয়; কিন্তু তাঁরা সে সুযোগ গ্রহণ করেননি।

চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, চেক প্রত্যাখ্যান (ডিজঅনার) মামলায় মোহাম্মদ মহসিন আত্মসমর্পণ করেন। জামিন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।

জানা যায়, ১৯৯৪ সালে বাবা ও চাচার নামের অংশ নিয়ে মোহাম্মদ মহসিন গড়ে তোলেন ‘সাদ মুসা গ্রুপ’। তিনি সাউথ বাংলা অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের উদ্যোক্তা পরিচালকদের একজন। যদিও বর্তমানে এই পদে নেই তিনি। মোহাম্মদ মহসিন বিভিন্ন সময় ভুয়া কাগজ পত্র তৈরি করে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছেন। এর মধ্যে ন্যাশনাল ব্যাংক থেকেই ১ হাজার ১৮০ কোটি টাকার ঋণ নিয়েছেন তিনি। ২০২১ সালে তাঁর বিভিন্ন অনিয়ম তুলে ধরে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) প্রতিবেদন দেয় বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। এর পরও তিনি কৌশলে ঋণ নেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে তাঁকে ঋণ দেয়নি ব্যাংকগুলো। পরে বিভিন্ন ব্যাংক তাঁর নামে অর্থঋণ আদালতে মামলা করে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

আয়কর ফাঁকির মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন খালেদা জিয়ার ভাগনে শাহরিন

আয়কর ফাঁকির মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ভাগনে শাহরিন ইসলাম। এই মামলায় ১৭ বছর আগে তাঁর জেল-জরিমানা হয়।

ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এ আজ মঙ্গলবার সকালে শাহরিন ইসলাম আত্মসমর্পণ করেন, জামিনের আবেদন জানান।

প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন শাহরিন ইসলামের আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন ও শেখ সাকিল আহমেদ রিপন।

আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন প্রথম আলোকে বলেন, শাহরিন ইসলাম অসুস্থ। তিনি নীলফামারী-১ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। ১৭ বছর আগে রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করার জন্য আয়কর অধ্যাদেশের মামলায় তাঁকে সাজা দেওয়া হয়েছিল। আজ তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন জানান।

আইনজীবীদের তথ্য অনুযায়ী, ৮১ লাখ টাকা আয়কর ফাঁকির মামলায় ২০০৮ সালে শাহরিন ইসলামকে আট বছর কারাদণ্ড দেন আদালত। এ ছাড়া তাঁকে ৯২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

জামিনের আবেদনে শাহরিন ইসলাম উল্লেখ করেছেন, তিনি ১৯৯৮-১৯৯৯ কর বছর থেকে ২০০৬-২০০৭ কর বছর পর্যন্ত আয়কর রিটার্ন দাখিল করেছেন। তিনি সেখানে তাঁর সব সম্পদের তথ্য উল্লেখ করেছেন। বিচারিক আদালত থেকে তিনি ন্যায়বিচার পাননি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চমেক শিক্ষার্থী আবিদ হত্যা: ১২ আসামিকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
  • চমেক শিক্ষার্থী আবিদ হত্যা ১২ আসামিকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
  • দুদকের দুই মামলায় তুহিনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ
  • তারেক রহমানের খালাতো ভাই তুহিনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ
  • চমেক শিক্ষার্থী আবিদুর হত্যা মামলায় খালাসপ্রাপ্ত ১২ জনকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
  • আত্মসমর্পণের পর কারাগারে খালেদা জিয়ার ভাগ্নে তুহিন
  • খালেদা জিয়ার ভাগনে শাহরিনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ
  • আয়কর ফাঁকির মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন খালেদা জিয়ার ভাগনে শাহরিন