শিল্পগ্রুপ সাদ-মুসা গ্রুপের এমডি মহসিন কারাগারে
Published: 25th, February 2025 GMT
প্রায় ৫৬ কোটি টাকার চেক প্রত্যাখ্যান (ডিজঅনার) মামলায় শিল্প গ্রুপ সাদ-মুসা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মহসিনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রামের দ্বিতীয় যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ তাঁর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এর আগে এদিন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন মোহাম্মদ মহসিন।
আদালত সূত্র জানায়, ন্যাশনাল ব্যাংকের (এনবিএল) আগ্রাবাদ শাখার পক্ষ থেকে পাঁচটি চেক প্রত্যাখ্যান মামলা করা হয় ২০২০ ও ২০২২ সালে। পাঁচটি মামলায় মোট টাকার পাওনা দাবির পরিমাণ ছিল ৫৫ কোটি ৯৪ লাখ ৭৫ হাজার ৮০০ টাকা। মামলায় মহসিনের স্ত্রী ও গ্রুপের চেয়ারম্যান শামীমা নারগিছকেও আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া তাঁদের বিরুদ্ধে আদালতের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞাও রয়েছে। আজ মঙ্গলবার মোহাম্মদ মহসিন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠিয়েছেন।
ন্যাশনাল ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, সাদ-মুসা গ্রুপের কাছে ন্যাশনাল ব্যাংকের ১ হাজার ১৮০ কোটি টাকার বেশি পাওনা রয়েছে। এগুলো আদায়ে বেশ কয়েকবার তাঁকে তাগাদা দেওয়া হয়েছে। ঋণ আদায়ে গত ৫ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের বায়েজিদ কুলগাঁও এলাকায় সাদ-মুসা গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন ব্যাংকটির কর্মকর্তারা। সেখানে ‘ঋণ আদায়ে অবস্থান কর্মসূচি’ ব্যানার নিয়ে অবস্থান নেন তাঁরা।
এর আগে গত বছরের ২৪ এপ্রিল সাদ-মুসা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মহসিন ও তাঁর স্ত্রী শামিমা নারগিছের বিরুদ্ধে ঋণখেলাপির মামলায় দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয় চট্টগ্রামের অর্থঋণ আদালত। জানা গেছে, বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সাদ-মুসা গ্রুপের তিন হাজার কোটি টাকা ঋণখেলাপি রয়েছে। এগুলো পরিশোধের জন্য সুদ মওকুফ ও দুই দফা পুনঃ তফসিলের সুযোগ দেওয়া হয়; কিন্তু তাঁরা সে সুযোগ গ্রহণ করেননি।
চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, চেক প্রত্যাখ্যান (ডিজঅনার) মামলায় মোহাম্মদ মহসিন আত্মসমর্পণ করেন। জামিন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
জানা যায়, ১৯৯৪ সালে বাবা ও চাচার নামের অংশ নিয়ে মোহাম্মদ মহসিন গড়ে তোলেন ‘সাদ মুসা গ্রুপ’। তিনি সাউথ বাংলা অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের উদ্যোক্তা পরিচালকদের একজন। যদিও বর্তমানে এই পদে নেই তিনি। মোহাম্মদ মহসিন বিভিন্ন সময় ভুয়া কাগজ পত্র তৈরি করে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছেন। এর মধ্যে ন্যাশনাল ব্যাংক থেকেই ১ হাজার ১৮০ কোটি টাকার ঋণ নিয়েছেন তিনি। ২০২১ সালে তাঁর বিভিন্ন অনিয়ম তুলে ধরে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) প্রতিবেদন দেয় বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। এর পরও তিনি কৌশলে ঋণ নেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে তাঁকে ঋণ দেয়নি ব্যাংকগুলো। পরে বিভিন্ন ব্যাংক তাঁর নামে অর্থঋণ আদালতে মামলা করে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মৌলভীবাজারে পিবিআইর হাজতখানা থেকে আসামির লাশ উদ্ধার
মৌলভীবাজারে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) হাজতখানার ভেতর থেকে মোকাদ্দুস (৩২) নামে আসামির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করেছে পিবিআই।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ভোরে মৌলভীবাজার জেলা শহরের টিভি হাসপাতাল সড়কে পিবিআইর হাজতখানা থেকে এ লাশ উদ্ধার করা হয়।
মোকাদ্দুস কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়নের কোনাগাঁও (বৃন্দাবনপুর) গ্রামের মৃত লাল মিয়ার ছেলে। তিনি আলোচিত লিটন হত্যা মামলার আসামি ছিলেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গত ৯ আগস্ট কমলগঞ্জ উপজেলার ২ নম্বর পতনঊষার ইউনিয়নের কোনাগাঁও (বৃন্দাবনপুর) গ্রামের ধানক্ষেত থেকে লিটন নামের এক যুবকের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর থেকে মোকাদ্দুস পলাতক ছিলেন। রবিবার রাত ৮টার দিকে কমলগঞ্জ থানায় আত্মসমর্পণ করেন মোকাদ্দুস। পরে তাকে লিটন হত্যার মামলার তদন্ত সংস্থা পিবিআইর কাছে হস্তান্তর করে থানা পুলিশ।
পিবিআই জানিয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর খাওয়া-দাওয়া শেষে মোকাদ্দুসকে ৭-৮ জন আসামির সঙ্গে হাজতখানায় রাখা হয়। সোমবার ভোর ৬টার দিকে ডিউটি অফিসার গিয়ে দেখেন, মোকাদ্দুস নিজের লুঙ্গি দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়েছেন। পরে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও মোকাদ্দুসের পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়।
১১ সেপ্টেম্বর লিটনের বাবা সাত্তার মিয়া অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে কমলগঞ্জ থানায় মামলা করেন। এ মামলায় শামিম নামের আরেকজনকেও গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই।
এ বিষয়ে মৌলভীবাজার পিবিআইর পুলিশ সুপার মো. জাফর হুসাইন বলেছেন, লিটন হত্যা মামলার তদন্ত আমাদের হাতে। মোকাদ্দুস রবিবার রাতে কমলগঞ্জ থানায় আত্মসমর্পণ করেন। পরে তাকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সোমবার সকালে হাজতখানায় আত্মহত্যা করেন তিনি। বিষয়টি আমরা সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানিয়েছি।
ঢাকা/আজিজ/রফিক