বহিরাগতদের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থীরা
Published: 26th, February 2025 GMT
রাজশাহী কলেজ ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের অবাধ বিচরণ দিনদিন বেড়েই চলেছে। এতে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, কলেজের নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে বহিরাগতরা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে বিভিন্ন অনাকাঙ্ক্ষিত কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছে। কলেজ মাঠ, পদ্ম পুকুর এলাকা ও বিভিন্ন ভবনের আশপাশে বহিরাগতদের অবাধ উপস্থিতি এখন নিত্যদিনের ঘটনা।
ধূমপান, উচ্চ শব্দে গান বাজানো, টিকটক ভিডিও তৈরি থেকে শুরু করে মোটরসাইকেলের বেপরোয়া মহড়া দিচ্ছে তারা। এতে শিক্ষার্থীরা ভোগান্তিতে পড়লেও ক্যাম্পাসের নিয়ম-শৃঙ্খলা রক্ষায় কলেজ প্রশাসনের তেমন কোনো ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়নি।
শিক্ষার্থীর আভিযোগ করে আরো জানান, ক্লাস চলাকালেও বহিরাগতদের উপস্থিতি আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। আগে দুপুর ২টার পর মাঠ উন্মুক্ত করা হতো। কিন্তু এখন কলেজ মাঠে সকাল থেকেই বহিরাগতদের খেলাধুলা এখন নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া পদ্ম পুকুরে বহিরাগতদের মাছ শিকার, শিক্ষার্থীদের হুমকি দেওয়া, রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারসহ নানা ঘটনা ঘটছে।
কলেজের শিক্ষার্থী বা কর্মচারীরা বহিরাগতদের কোন বিষয়ে বাধা দিতে গেলে নানা ধরনের হুমকির মুখে পড়তে হয়। ফলে তারাও বহিরাগতদের বাধা দিতে পারছেন না। এছাড়া বহিরাগতদের মোটরসাইকেল নিয়ে বেপরোয়া গতিতে ক্যাম্পাসে চলাফেরা করায় শিক্ষার্থীদের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকলেও বিষয়টি নিয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মচারী জানান, বহিরাগতদের মাছ ধরতে বাধা দিলে নানা সমস্যায় পড়তে হয়। অনেকে ব্যক্তিগত ক্ষতি করার হুমকি দেয়। ফলে বাধা দেওয়া সম্ভব হয় না।
রাজশাহী কলেজকে ধূমপানমুক্ত এলাকা ঘোষণা করা হলেও বাস্তবে তার চিত্র ভিন্ন। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় মসজিদের পেছন দিকটি ধূমপায়ীদের আড্ডাস্থলে পরিণত হয়েছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এখানে প্রকাশ্যে ধূমপান চলছে, অথচ প্রশাসনের তেমন কোন নজরদারি নেই।
আব্দুল হাকিম নামের মাস্টার্সের এক শিক্ষার্থী জানান, কলেজের গণিত ভবনের পেছনের অংশে ধূমপান করতে প্রায়ই কয়েকজনকে দেখা যায়, যা দীর্ঘদিন ধরে চলছে। এছাড়া কলেজের মসজিদের পেছনে অবাধে চলে মাদক ও ধূমপান। শুধু ধূমপানই নয়; কলেজের নিয়ম-শৃঙ্খলা কোন কিছুই দেখতে পাওয়া যায় না। প্রশাসন বারবার পদক্ষেপ নেয়ার আশ্বাস দিলেও বাস্তবে তা কার্যকর হয়নি।
তিনি জানান, প্রকাশ্যে বহিরাগতরা ক্যাম্পাসে ক্লাস চলাকালে ঘুরে বেড়ায় এবং শিক্ষার্থীদের হুমকি-ধামকি দেওয়া থেকে শুরু করে নানা ঝামেলা সৃষ্টি করে; যা আগে কখনো দেখা যায়নি। অবাধে চলে মোটরসাইকেল শোডাউন। ক্লাস চলাকালে মোটরসাইকেল নিয়ে কলেজের ভেতরে প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকলেও বর্তমানে তা অকার্যকর। এতে প্রশাসনের কোন পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।
তিনি আরো জানান, কলেজ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন নেই আগের মত। এর জন্য দায়ী কলেজ প্রশাসন। প্রশাসনের অবহেলা এবং দূরদর্শিতা কম থাকায় এক ধরনের অপরিচ্ছন্ন ক্যাম্পাসে পরিণত হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে সামনে কলেজ প্রশাসন হুমকির মুখে পড়বে। কলেজ প্রশাসনের কাছে দ্রুত বিষয়গুলো উপর নজর দিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান তিনি।
রাজশাহী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহা.
এ বিষয়ে রাজশাহী কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ অধ্যাপক মু. যুহুর আলী বলেন, “শৃঙ্খলা কমিটি কাজ করছে। কোথাও কোন সমস্যা থাকলে তা জানালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/ফারজানা/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক র যকর কল জ র
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবনের কার্যক্রমে ‘অনিয়ম ও হয়রানি’ বন্ধের দাবিতে স্মারকলিপি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবনের কার্যক্রমে ‘অনিয়ম ও হয়রানির’ বিরুদ্ধে আট দফা দাবি উত্থাপন করে স্মারকলিপি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। বুধবার বিকেলে সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) সায়মা হকের কাছে এই স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য বিভাগে সংস্কার কার্যক্রম চললেও রেজিস্ট্রার ভবন এখনো পুরোনো ত্রুটিপূর্ণ প্রশাসনিক ধাঁচে পরিচালিত হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিমা, সনদ উত্তোলন, ডিজিটাল কার্যক্রম, কর্মচারীদের ব্যবহারসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের হয়রানি, বিলম্ব ও দুর্নীতি অব্যাহত রয়েছে।
শিক্ষার্থীরা যে আট দফা দাবি তুলে ধরেছেন, সেগুলো হলো স্বাস্থ্যবিমা–সংক্রান্ত হয়রানি বন্ধ করতে হবে এবং সময়মতো অর্থ দেওয়া নিশ্চিত করতে হবে; মধ্যাহ্নভোজ ও বৈঠকের অজুহাতে সেবা বন্ধ না করে কার্যক্রম চালু রাখতে হবে; রেজিস্ট্রেশন ও অন্যান্য ফি পরিশোধসহ প্রশাসনিক কার্যক্রম ডিজিটাল করতে হবে; লালফিতার দৌরাত্ম৵ বন্ধ এবং অভিযোগ ব্যবস্থাপনা চালু করতে হবে; অবৈধ নিয়োগ তদন্ত করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে; ওয়েবসাইট হালনাগাদ এবং কেন্দ্রীয় অনলাইন সেবা পোর্টাল চালু করতে হবে; কর্মচারীদের আচরণ উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নিতে হবে; সনদ ও মার্কশিট উত্তোলনের প্রক্রিয়া সহজ করতে হবে এবং অতিরিক্ত ফি বাতিল করতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পক্ষে স্মারকলিপি দেন মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ, আবদুর রহমান আল-ফাহাদ, আশিক খান, রিয়াদুল ইসলাম, শামসুদ্দোহা শাকিল, শাহেদ ইমনসহ ১০ জন। এ সময় সহ–উপাচার্য সায়মা হক শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো শোনেন এবং দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন।