বাংলাদেশের আফগানিস্তানের দিকে তাকানো উচিৎ: নাসের হুসেইন
Published: 27th, February 2025 GMT
আফগানিস্তানের গুনগান গাচ্ছিলেন ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক নাসের হুসেইন। কথা প্রসঙ্গে বাংলাদেশকে টেনে আনলেন। এরপর স্রেফ সমালোচনা করলেন। শুধু বাংলাদেশই নয়, নাসের হুসেইন পাকিস্তানকেও মাপছেন বাংলাদেশের পাল্লায়। আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের একই হাল। কোনো ম্যাচ না জিতে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিয়েছে। নিজেদের শেষ ম্যাচটিতে অন্তত এক দলের মুখ রক্ষা হতো। আজ বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) সেটাও সম্ভব হয়নি বেরসিক বৃষ্টির কারণে। পয়েন্ট ভাগাভাগিতে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ হয়েছে।
আগের দিন আফগানিস্তান যেভাবে সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে হারিয়েছে তাতে ক্রিকেট বিশ্বের নজর এখন তাদের দিকেই। ইব্রাহিম জাদরান, আজমতউল্লাহ উমারজাই, মোহাম্মদ নবী, রশিদ খানের মতো পারফর্মাররা দারুণ ক্রিকেট খেলে ইংলিশদের হারিয়েছে। শুধু তা-ই নয়, ২০২৩ বিশ্বকাপেও ইংলিশদের বধ করেছিল আফগানিস্তান। যুদ্ধবিধস্ত একটি দেশের ক্রিকেটাররা যেভাবে অজুত-নিজুত কষ্ট করে, ঘামবিন্দু ঝরিয়ে শীর্ষ পর্যায়ে পারফর্ম করছে তা মুগ্ধ করেছে সবাইকে।
নাসের হুসেইনেরও তাদের উন্নতি, একনিষ্ঠ মনোভাব, লড়াইয়ের তাড়না চোখে পড়েছে, ‘‘আফগানিস্তান দল এমন হয়েছে যারা যেকোন প্রতিপক্ষের সঙ্গে লড়াই করতে পারে। ডিভিশন-৫ থেকে সাদা বলে যেকোন দলের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে সক্ষম- এটিই উন্নতি।'’
আরো পড়ুন:
নিয়ম রক্ষার ম্যাচে বাংলাদেশ যেখানে এগিয়ে!
চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আগে পাকিস্তান ‘এ’ দলের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানকে নিয়ে কড়া সমালোচনা করে বলেছেন, ‘‘আমি পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মতো দলের দিকে তাকিয়ে ভাবি, তাদের আফগানিস্তানের দিকে তাকানো উচিত এবং বলা উচিত, কেন আমরা স্থবির হয়ে পড়েছি? বাংলাদেশ পনেরো বছর আগে যেমন ছিল, সহজভাবে বললে একই ধরনের ক্রিকেট খেলছে এখনো। আর এই পনেরো বছরে আফগানিস্তান এগিয়েছে তরতরিয়ে।’’
আইসিসি ইভেন্টে বাংলাদেশ ধারাবাহিক ভালো না করলেও বলার মতো পারফর্ম করতো। কিন্তু শেষ কয়েকটি ইভেন্টেই বাংলাদেশ সাফল্য পাচ্ছে কেবল নিজেদের থেকে পিছিয়ে থাকা দলের বিপক্ষে। পাকিস্তানের অবস্থাও একই রকম। সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা আধুনিক ক্রিকেটে চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। অন্যদিকে আফগানিস্তান আইসিসি ইভেন্টে অনবদ্য পারফর্ম করে যাচ্ছে।
২০২৩ বিশ্বকাপ থেকে শুরু। ভারতে সেবার ইংল্যান্ড, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে তারা চমক দেখিয়েছিল। অস্ট্রেলিয়াকেও প্রায় তারা মাটিতে নামিয়ে এনেছিল। সেমিফাইনাল খেলার সম্ভাবনাও জাগিয়ে তুলেছিল। ২০২৪ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তারা সেমিফাইনাল খেলেছিল। তারা অস্ট্রেলিয়াকেও হারিয়েছিল। এবার ইংল্যান্ডকে হারিয়েছে। আগামীকাল পাকিস্তানকে হারাতে পারলে তারা চলে যাবে সেমিফাইনালে।
ঢাকা/ইয়াসিন/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন স র হ স ইন আফগ ন স ত ন প রফর ম
এছাড়াও পড়ুন:
আসামি না হয়েও স্বেচ্ছায় কারাগারে যাওয়া সেই যুবক প্রতারণা মামলায় গ্রেপ্তার
চট্টগ্রামে মাদকের একটি মামলায় আসামি সেজে আদালতে আত্মসমর্পণের পর কারাগারে যাওয়া এক যুবককে জালিয়াতি ও প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তার (শ্যোন অ্যারেস্ট) দেখিয়েছেন আদালত। তাঁর নাম মো. রাকিব। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আলাউদ্দিন মাহমুদ শুনানি শেষে এই আদেশ দেন। কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে প্রকৃত আসামি মো. সুমনের হয়ে আদালতে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেন রাকিব। আদালতের আদেশে ১ জুলাই থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, কারাগারে আটক রাকিবকে জালিয়াতি ও প্রতারণা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করে কোতোয়ালি থানা-পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত তা মঞ্জুর করেন। আসামিকে রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে।
আদালত সূত্র জানায়, ২০২৪ সালের ৩১ আগস্ট নগরের আকবর শাহ থানার কৈবল্যধাম এলাকায় একটি পিকআপ ভ্যানে অভিযান চালিয়ে ৪০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করে র্যাব, যার মূল্য ৪ লাখ টাকা। ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার করা হয় গাড়িচালক রাহাত ইসলামকে। পালিয়ে যান চালকের সহকারী (হেলপার) মো. সুমন। এ ঘটনায় র্যাব কর্মকর্তা বাদী হয়ে আকবর শাহ থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন। তদন্ত শেষে চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। এতে রাহাত ইসলাম ও মো. সুমনকে আসামি করা হয়।
আদালত পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করে পলাতক আসামি সুমনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এরই মধ্যে সুমনের গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনার পূর্বধলা এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ। বিষয়টি জানতে পেরে সুমন নিজেকে কারামুক্ত রাখতে তাঁর পরিবর্তে নোয়াখালীর রাকিবকে আদালতে আত্মসমর্পণ করায় ১ জুলাই। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোস্তফা শুনানি শেষে আসামির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান। সুমনের হয়ে রাকিব আত্মসমর্পণের সময় তাঁর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ওয়াহিদ মুরাদ।
আদালতে একজনের পরিবর্তে আরেকজন আত্মসমর্পণের বিষয়টি ধরা না পড়লেও কারাগারে গিয়ে ধরা পড়ে। জাতীয় পরিচয়পত্রের ডেটাবেজে (তথ্যভান্ডার) ভোটারদের আঙুলের ছাপ সংরক্ষিত আছে। এ পদ্ধতিকে বলা হয় ফিঙ্গারপ্রিন্ট আইডেনটিফিকেশন অ্যান্ড ভেরিফিকেশন সিস্টেম। ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ পদ্ধতি ব্যবহার শুরু করে চট্টগ্রাম কারা কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে আঙুলের ছাপে ধরা পড়েছে অনেক বন্দীর আসল পরিচয়। এসব ঘটনায় মামলাও হয়েছে। ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি মাসের জুলাই পর্যন্ত আত্মসমর্পণ করে জালিয়াতির মাধ্যমে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে আসা ১৬ জনের আঙুলের ছাপে শনাক্ত করা হয়।
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ তত্ত্বাবধায়ক মো. ইকবাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, আদালত থেকে কারাগারে আসা প্রত্যেক নতুন আসামির আঙুলের ছাপ নেওয়া হয়। সেখানে আসামির জাতীয় পরিচয়পত্রে থাকা আসল পরিচয় উঠে আসে। ইকবাল হোসেন আরও বলেন, ‘সুমনের হয়ে কারাগারে আসা রাকিব স্বীকার করেছেন তিনি মাদক মামলার প্রকৃত আসামি নন। ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে তিনি সুমন সেজেছেন। তাঁকে বলা হয়েছে, দ্রুত কারাগার থেকে ছাড়িয়ে নেওয়া হবে। তাই তিনি রাজি হয়েছেন। বিষয়টি চিঠি দিয়ে আদালতকে জানানো হয়েছে।’
আরও পড়ুনচট্টগ্রামে ‘আয়নাবাজি’, ধরা পড়েছে আঙুলের ছাপে০৮ নভেম্বর ২০২৩কারাগার থেকে চিঠি পাওয়ার পর মামলা করার নির্দেশ দেন চট্টগ্রাম চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মিজানুর রহমান। একই সঙ্গে আসামিকে আত্মসমর্পণকারী আইনজীবী ওয়াহিদ মুরাদের কাছে কারণ ব্যাখ্যা চেয়েছেন আদালত। আদালতের প্রসিকিউশন শাখার আকবর শাহ থানার জিআরও সাইদুর রহমান বাদী হয়ে গত রোববার রাতে নগরের কোতোয়ালি থানায় প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে মামলা করেন। মামলায় মো. রাকিব ও মো. সুমনকে আসামি করা হয়। সুমন এখনো পলাতক।