Samakal:
2025-06-15@23:22:22 GMT

বাজার নিয়ন্ত্রণে যত্নবান হউন

Published: 1st, March 2025 GMT

বাজার নিয়ন্ত্রণে যত্নবান হউন

আরবি মাসগুলির মধ্যে অন্যতম বরকতময় ও মর্যাদাপূর্ণ মাস হইল রমজান, যাহা ইতোমধ্যে শুরু হইয়া গিয়াছে। এই মাসে বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশের মুসলমানেরাও সিয়াম সাধনা করিয়া থাকেন। তবে এই সাধনা এইবার কতটুকু নির্বিঘ্ন হইবে উহা লইয়া জনপরিসরে কিছুটা হইলেও উদ্বেগ সৃষ্টি হইয়াছে। বিশেষত নিত্যপণ্যের বাজার রমজান মাসে অস্থিতিশীল হইয়া উঠিবার প্রবণতা বরাবরই লক্ষ্য করা যায়। প্রায় প্রতিবৎসর রোজার পূর্বমুহূর্তে কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী সরবরাহ কমিয়া যাইবার অজুহাতে পণ্যের দাম বাড়াইয়া দিয়া থাকে। দুর্ভাগ্যবশত, অন্তত কতিপয় ক্ষেত্রে এইবারও উহার ব্যতিক্রম ঘটে নাই। রোজা শুরুর পূর্বেই বিভিন্ন পণ্যের সরবরাহে ঘাটতি ও দাম বাড়িয়া যাইবার বিষয়টা আঁচ করা গিয়াছে। বিশেষত বৃহস্পতিবারের সমকালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, রোজার পূর্বেই ভোজ্যতৈলের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হইয়াছে। অভিযোগ রহিয়াছে, বড় আকারে শুল্ককর ছাড় দিবার পরও ব্যবসায়ীদের দর বাড়াইবার আবদারে সরকারি সাড়া না মিলিবার কারণে বিলম্বে আমদানি দেখাইয়া বাজারে তৈলের সরবরাহ হ্রাস করা হইয়াছে। বস্তুত দুই মাসের বেশি সময় ধরিয়াই ভোজ্যতৈলের বাজারে চলিতেছে এক ধরনের অরাজকতা। বুধবারের সমকালের প্রতিবেদক রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরিয়া নিশ্চিত হইয়াছেন, পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তৈল পাওয়া মুশকিল। খোলা সয়াবিনের সরবরাহ স্বাভাবিক মনে হইলেও সরকার নির্ধারিত মূল্য অপেক্ষা অধিকতর দাম দিয়া ভোক্তাকে রন্ধন কার্যের প্রধান এই উপকরণটিকে ক্রয় করিতে হইতেছে। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর দাবি করিয়াছে, তৈলের সংকটের বিষয়টি সঠিক নহে; কিন্তু বলিলেও বাস্তবতা ভিন্ন। অস্বীকার করা যাইবে না, চিনি, সবজি, আলু ও পেঁয়াজের দামে কিছুটা হইলেও স্বস্তি রহিয়াছে। বেগুন, ছোলা ও খেজুরের বাজারও অতীতের ন্যায় চড়া নহে। রমজান মাস ও ঈদে চাহিদা বাড়ে এমন ৯টি ভোগ্যপণ্যের আমদানিও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বাড়িয়াছে বলিয়া সম্প্রতি সমকালের আরেকটি প্রতিবেদনে উঠিয়া আসিয়াছে। উক্ত পণ্যসমূহের বাজারে সহনীয় পরিস্থিতি সম্ভবত ইহার ফল। কিন্তু মাছ-মাংসের বাজার বরাবরের ন্যায় তাতিয়া রহিয়াছে। মানুষ যাহাতে সহজেই প্রাণিজ আমিষের চাহিদা মিটাইতে পারে সেইজন্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় হইতে সুলভ মূল্যে দুধ, ডিম ও মাংস বিক্রি করিবার ব্যবস্থা নিয়াছে সরকার। তবে চাহিদা-সরবরাহের বৃহৎ ফারাক এহেন উদ্যোগে কতটা ভরাট করা যাইবে সেই সন্দেহ বহাল আছে। ব্রয়লার মুরগি, লেবু, শসা ও বিদেশি ফলের দাম বাড়িতেছে। রমজানে সাহ্‌রি ও ইফতারের অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ হিসেবে এই সকল পণ্যের গুরুত্ব সর্বজনবিদিত।  

আমরা প্রত্যাশা করি, সরকার নিত্যপণ্যের বাজারে তদারকি জোরদার করিবে এবং ব্যবসায়ীরা যাহাতে সরবরাহ ঘাটতি দেখাইয়া কোনো পণ্যের দাম বাড়াইতে না পারে সেই বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করিবে। রমজানের বাজার স্থিতিশীল রাখিবার বিষয়টি সম্মিলিত দায়িত্বও বটে। অধিক মুনাফার জন্য কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হইতে ব্যবসায়ীদের বিরত থাকা কাম্য। ভোক্তাদেরও অনুধাবন করিতে হইবে যে, সম্পূর্ণ মাসের বাজার একত্রে করিয়া নিত্যপণ্যের বাজারে সংকট বাড়াইবার দরকার নাই। আমরা জানি, রমজান সংযমেরও মাস। এই মাসে সব দিক হইতে যতই সংযম প্রদর্শন সম্ভব হইবে সংকটও ততটাই কমিবে। রমজান যেই পরিমিতিবোধের শিক্ষা দেয় তাহার আলোকে আচরণের পরিবর্তনও জরুরি। এইভাবে সকলে তাহার কর্মকাণ্ডে দায়িত্বশীল হইলে রমজানকে কেন্দ্র করিয়া বাজার অস্থিতিশীল হইবে না। দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীলতার পাশাপাশি রমজানে স্বস্তি দিতে বিদ্যুৎ সরবরাহও স্বাভাবিক রাখিতে হইবে। রমজান একই সঙ্গে মানবতারও শিক্ষা দেয়। সেই শিক্ষা গ্রহণ করিলেও কাহারও পক্ষে আতিশয্যমূলক কোনো আচরণ করা সম্ভব নহে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: রমজ ন ব যবস য় যপণ য র সরবর হ সরক র রমজ ন হইয় ছ

এছাড়াও পড়ুন:

বাজারে সবজির সরবরাহ বেড়েছে, নিম্নমুখী চালের দাম

ঈদের বন্ধের আমেজ কাটতেই ব্যস্ত হয়ে পড়েছে চট্টগ্রামের পাইকারি ও খুচরা বাজারগুলো। ক্রেতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাজারগুলোতে বেড়েছে সবজিসহ বিভিন্ন পণ্যের সরবরাহ। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কয়েক দিনের ব্যবধানে কিছুটা কমেছে সবজির দাম। পেঁয়াজ, রসুন ও চালের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামও নিম্নমুখী।

বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঈদের ছুটি শুরু হওয়ার পর নগরের কাঁচাবাজারে সবজির সরবরাহ কমে যায়। ফলে দাম ছিল কিছুটা বাড়তি। গত রোববার ও সোমবারের দিকে নগরের আড়তগুলোতে কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৬০ টাকা দরে। অধিকাংশ সবজির দামও ৪০ টাকার আশপাশে ছিল। তবে গত মঙ্গলবার থেকে আবারও বাজারে পুরোদমে সবজির সরবরাহ শুরু হয়েছে। যার কারণে দাম কমতে শুরু করেছে।

আজ শুক্রবার নগরের রিয়াজউদ্দিন বাজারের পাইকারি আড়তে কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ২০ থেকে ৪০ টাকা দরে। বেশির ভাগ সবজির দাম প্রতি কেজি ১০ থেকে ৩৫ টাকা। তবে খুচরা বাজারগুলোতে প্রায় দ্বিগুণ দামে সবজি বিক্রি হতে দেখা যায়। নগরের বহদ্দারহাট, চকবাজার, সাব এরিয়া ও কাজির দেউড়ি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব বাজারে অধিকাংশ সবজির দাম ৬০ টাকার বেশি। লাউ, মিষ্টিকুমড়া ও ফুলকপির দাম কিছুটা কম। এসব সবজির দাম ৫০ টাকার আশপাশে। খুচরা বাজারগুলোতে কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা কেজি দরে। পরিবহন খরচ ও আগে কেনার অজুহাতে বাড়তি দাম নিচ্ছেন বিক্রেতারা। রিয়াজউদ্দিন বাজারের আড়তদার নুরুল ইসলাম বলেন, বাজারে সব সবজির দাম কম। কিন্তু খুচরা ব্যবসায়ীদের কারণে ভোক্তাদের ভোগান্তি হচ্ছে। আড়তের দামের দ্বিগুণ দামে তাঁরা সবজি বিক্রি করছেন।

সবজির বাজারের পাশাপাশি পেঁয়াজ, রসুন ও চালের দামও নিম্নমুখী। খাতুনগঞ্জের পাইকারি আড়তে আজ পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৪৫ থেকে ৫২ টাকা দরে। খুচরা পর্যায়ে দাম ছিল ৬৫ থেকে ৭০ টাকা কেজি। অন্যদিকে রসুনের কেজি আড়তে ছিল ৮৫ থেকে ১১০ টাকা। খুচরায় সেটি ১০০ থেকে ১৩০ টাকা।

পাহাড়তলী চালের আড়তে মোটা চাল (গুটি, স্বর্ণা) কেজিপ্রতি ৪৮ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে জিরাশাইল ৭২ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গত তিন দিন আগ থেকে চালের বাজার কিছুটা নিম্নমুখী বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) চালের দাম কমেছে ৩০০ টাকা পর্যন্ত। পাহাড়তলী বণিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন বলেন, চালের সরবরাহ যথেষ্ট আছে। চালের দাম বাড়ার আশঙ্কা নেই এখন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুপেয় পানির সংকট, কাজে আসছে না কোটি টাকার প্রকল্প
  • নেপাল থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু
  • সুপারম্যানের কাছে আছে পৃথিবীর শক্তি সংকটের সমাধান
  • ইরান হরমুজ প্রণালি বন্ধ করলে কী কী ঘটতে পারে?
  • ইরান–ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি হামলা রূপ নিতে পারে দীর্ঘমেয়াদি সংঘাতে
  • ইরানে হামলার আগে গোপনে ইসরায়েলে হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্র পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র
  • ভারত থেকে আইফোন রপ্তানি কেন বাড়ছে
  • সুনামগঞ্জে তাজা গ্রেনেড উদ্ধারের পর নিষ্ক্রিয় করল সেনাবাহিনী
  • কমেছে সবজির দাম
  • বাজারে সবজির সরবরাহ বেড়েছে, নিম্নমুখী চালের দাম