মাহমুদুল হাসান। স্কুলে পড়ার সময় থেকেই সমাজের পিছিয়ে পড়া অসহায় মানুষের কল্যাণে কাজ করছেন। উচ্চ মাধ্যমিকে ওঠার পর প্রথমে সচেতনতা ও শিক্ষা নিয়ে কাজ শুরু করেন এই তরুণ। পড়াশোনা করছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০১৯ সালের শুরুতে ১০ বন্ধুকে নিয়ে গড়ে তোলেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘ঐক্য-বন্ধন’। বর্তমানে সংগঠনের সদস্য সংখ্যা অর্ধশতাধিক। এ সদস্যের বেশির ভাগই নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ও সদ্য মাধ্যমিক পার হওয়া তরুণ-তরুণী। তারা কার্যক্রম পরিচালনা করে যশোরের ঝিকরগাছা, চৌগাছা, মণিরামপুর ও সদর উপজেলায়। বর্তমানে ঐক্য-বন্ধন অসহায় মানুষের আত্মকর্মসংস্থান, ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প, দরিদ্র শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ও ক্রীড়াসামগ্রী বিতরণ, বৃক্ষরোপণ করে যাচ্ছে। এ ছাড়া বিনামূল্যে রক্তদান কর্মসূচি, গরিব ও অসহায়দের পাশে দাঁড়ানো, ঈদে অসহায় পরিবারের মাঝে ঈদসামগ্রী বিতরণ, বাল্যবিয়ে, মাদক, দুর্নীতিবিরোধী প্রচারণা, ক্যারিয়ার বিষয়ক সেমিনার, নারীকে সচেতন করতে উঠান বৈঠকসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিভিন্ন ধরনের সৃজনশীল ও বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন মাহমুদুল হাসান। স্থানীয় পর্যায়ে খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, বেশ কয়েকটি স্কুল, মাদ্রাসা ও কলেজে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আসছেন এই সংগঠক। শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, অসহায় মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের আর্থিক সহযোগিতাসহ বিভিন্ন সহযোগিতামূলক কাজ করে আসছেন তিনি। শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল ও তাদের স্মার্ট করে গড়ে তুলতে শিশু বয়স থেকে নিজের মেধা ও সৃজনশীলতা প্রকাশের স্বাধীনতা দেওয়ার জন্য কাজ করছে সংগঠনটি।
সংগঠনটির কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাইলে মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘আমরা পৃথিবীতে এসেছি অল্প সময়ের জন্য। এই সময়টা যদি ভালো কাজে না লাগানো যায় তবে এর দায়ভার আমাদেরই নিতে হবে! চেষ্টা করি আমার অবসর সময়ে এবং উপার্জিত অর্থ থেকে কিছু টাকা ব্যয় করে এবং কখনও কখনও অন্য কোনো ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে এসব সৃজনশীল আয়োজনের মাধ্যমে আমরা মানুষের অন্তরে জায়গা করে নিতে চাই।’
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ছয় দফা দাবিতে ‘আমরা ভোলাবাসী’র আন্দোলন ‘সরকারি আশ্বাসে’ স্থগিত
ভোলায় গ্যাস ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের দাবিতে চলমান ছয় দফা আন্দোলন স্থগিত করেছে ‘আমরা ভোলাবাসী’। সরকারি আশ্বাসের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন নেতারা।
সংগঠনের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব ও আমরা ভোলাবাসীর জ্যেষ্ঠ নির্বাহী সদস্য রাইসুল আলম। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. এনামুল হক, বিজেপির সাধারণ সম্পাদক মোতাসিন বিল্লাহ, ভোলা জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মোবাশ্বির উল্লাহ চৌধুরী, ভোলা আলিয়া মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মোবাশ্বিরুল হক নাঈম, ইসলামী আন্দোলনের ভোলা উত্তর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা তরিকুল ইসলাম, ভোলা সদর উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মো. কামাল হোসেন ও আমরা ভোলাবাসীর সদস্যসচিব মীর মোশাররফ হোসেন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ভোলার গ্যাস স্থানীয়ভাবে ব্যবহারের দাবিসহ ছয় দফা দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চলছে। সরকারের সঙ্গে একাধিক বৈঠকের মাধ্যমে দাবি আদায়ে অগ্রগতি হয়েছে।
আমরা ভোলাবাসীর দাবির মধ্যে রয়েছে, ভোলায় মেডিকেল কলেজ স্থাপন, বিদ্যমান ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসার সুবিধা নিশ্চিত করা, ভোলা–বরিশাল সেতু নির্মাণ, ঘরে ঘরে গ্যাস সরবরাহ, গ্যাসভিত্তিক শিল্পকারখানা স্থাপন ও নদীভাঙন প্রতিরোধ।
সংগঠনটি জানায়, আন্দোলনের আগে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালটিতে মাত্র আট চিকিৎসক কর্মরত ছিলেন, বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ জন। আরও চিকিৎসক, নার্স ও যন্ত্রপাতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সরকার। মেডিকেল কলেজ স্থাপনের বিষয়ে বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে নতুন মেডিকেল কলেজ হলে, সেটি ভোলায় হবে। ভোলা–বরিশাল সেতু নির্মাণের ক্ষেত্রেও ফিজিবিলিটি স্টাডি ও নকশা সম্পন্ন হয়েছে এবং ২০২৬ সালের মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
সার কারখানা ও ইপিজেড স্থাপনের জন্য জমি নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে বলেও জানিয়েছেন নেতারা। গ্যাস–সংযোগের বিষয়ে জানানো হয়, সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানিকে ডিমান্ড নোট জমা দেওয়া ২ হাজার ১৪৫ গ্রাহককে গ্যাস–সংযোগ দেওয়া হবে এবং ন্যায্যমূল্যে ২০ হাজার সিলিন্ডার বিতরণ করা হবে।
সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আগামী দুই মাসের মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে আবার কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।