ক্রীড়াঙ্গনে ‘ম্যারাথন’ সংস্কারের শেষ কবে
Published: 2nd, March 2025 GMT
সার্চ কমিটি গঠনের ছয় মাস পূর্ণ হলো আজ। কিন্তু এই সময়ে কী সংস্কার হলো ক্রীড়াঙ্গনে?
দৃশ্যমান সংস্কার বলতে দুই ধাপে ১৬টি ফেডারেশনে অ্যাডহক কমিটি গঠন করেছে সরকার, যা মোট ফেডারেশন/অ্যাসোসিয়েশনের এক-তৃতীয়াংশও নয়। তাহলে ৫২টি ফেডারেশন/অ্যাসোসিয়েশনের কমিটি ঘোষণায় কত দিন লাগবে বলা কঠিন। শুটিংয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি ফেডারেশনে এখনো অ্যাডহক কমিটি না হওয়ায় খেলাটাই যেন হিমাগারে ঢুকে পড়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত জাতীয় পর্যায়ে সংস্কার কমিশনগুলো তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। কমিশনগুলোর নির্দিষ্ট মেয়াদ ছিল। পরে বাড়ানোও হয়। কিন্তু ক্রীড়াঙ্গনের সার্চ কমিটির কোনো মেয়াদ নেই। এ কারণে পুরো সংস্কারপ্রক্রিয়া গতি পাচ্ছে না মনে করেন অনেকে।
সেদিক থেকে আলাদা বলা যায় ১৬টি ফেডারেশনকে। ১৪ নভেম্বর প্রথম ধাপের ৯টি ফেডারেশনের অ্যাডহক কমিটি ঘোষণা হয়। এগুলো হলো—হকি, ব্রিজ, অ্যাথলেটিকস, স্কোয়াশ, টেনিস, কাবাডি, বিলিয়ার্ড ও স্নুকার, বাস্কেটবল ও দাবা ফেডারেশন। ২৮ জানুয়ারি আরও ৭টি—সাঁতার, টেবিল টেনিস, ভলিবল, কারাতে, ভারোত্তোলন, শরীরগঠন ও ফেন্সিং।
জানা গেছে, সার্চ কমিটি তৃতীয় ধাপে আরও আট-নয়টি ফেডারেশনের প্রস্তাবিত অ্যাডহক কমিটি জমা দিয়েছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের কাছে। এগুলো মন্ত্রণালয় থেকে ‘পাস’ হয়ে আসবে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) কাছে। কমিটি ঘোষণা নিয়ে এনএসসির সচিব মো.
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সার্চ কমিটির এক সদস্য হতাশা নিয়ে বলছেন, ‘দেখুন, আমাদের কী করার আছে। আমরা কমিটি জমা দিয়ে রেখেছি। সেগুলো ঘোষণা না হলে কাজের গতি ধীর হয়ে যাবে স্বাভাবিক। অথচ এটা ছিল সর্বোচ্চ দুই–তিন মাসের কাজ। একটা বিষয়ের গতি থাকতে থাকতেই সেটা শেষ হওয়া উচিত।’
সার্চ কমিটি সূত্র বলছে, বেশির ভাগ ফেডারেশনের প্রস্তাবিত কমিটি তারা তৈরি করে রেখেছে। তৃতীয় ধাপের ফেডারেশনগুলোর কমিটি ঘোষণা হলে পরেরগুলো জমা দেওয়া হবে। কিন্তু কমিটি ঘোষণায় এত দেরি কেন? জানতে চাইলে সার্চ কমিটির প্রধান জোবায়দুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘তাদের (মন্ত্রণালয়) অনেক ব্যস্ততা আছে। তবে তাঁরাও চেষ্টা করছেন। তারপরও কেন জানি হচ্ছে না। কিন্তু এটা (কমিটি ঘোষণা) দ্রুত হওয়া উচিত।’
এখন পর্যন্ত ক্রীড়াঙ্গনে দৃশ্যমান সংস্কার বলতে কিছু মুখ বদল হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ‘বঞ্চিত’ অনেকে ফিরেছেন। তখনকার অনেকে এখনো অবশ্য আছেন। কিছু সাবেক খেলোয়াড়, সংগঠককে সামনে আনা হয়েছে। নতুন এসেছেন অনেকে, বাদ পড়েছেন পুরোনো অনেক মুখ। ফেডারেশনগুলোর জন্য সভাপতি পেতে শুরুর দিকে একটু সমস্যা হলেও সেটা কেটেছে। তাহলে আর বাধা কোথায়? সার্চ কমিটি মনে করছে, সরকার দ্রুত কমিটিগুলো অনুমোদন করলে সংস্কার প্রস্তাবে সময় লাগবে না।
এখন পর্যন্ত সংস্কারের মোড়কে কোনো সুপারিশ বা প্রস্তাব জমা পড়েনি সরকারের কাছে। সার্চ কমিটির সূত্র বলছে, একটা গঠনতন্ত্র করার কাজ অনেক দূর এগিয়ে নিয়েছে তারা। কিন্তু সব জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার কমিটি এখনো না হওয়ায় গঠনতন্ত্র প্রণয়ন চূড়ান্ত করা যাচ্ছে না।
কবে চূড়ান্ত হবে সব? প্রশ্ন সেটাই।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স র চ কম ট র সরক র শনগ ল
এছাড়াও পড়ুন:
দলগুলো ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে ব্যর্থ হলে সরকার নিজের মতো সিদ্ধান্ত নেবে
জুলাই জাতীয় সনদ বা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছে, তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে সম্ভাব্য দ্রুততম সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিক-নির্দেশনা দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো যদি ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে না পারে, তাহলে সরকার তার মতো করে সিদ্ধান্ত নেবে।
আজ সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের ‘জরুরি সভায়’ এই সিদ্ধান্ত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। পরে সেখানে এক সংবাদ সম্মেলনে সরকারের সিদ্ধান্ত জানান আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, আদিলুর রহমান খান ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
গত মঙ্গলবার জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে সুপারিশ জমা দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এতে বলা হয়েছে, সনদের সংবিধান-সম্পর্কিত সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নে বিশেষ আদেশ জারি করে তার ভিত্তিতে গণভোট হবে। গণভোটে প্রস্তাব পাস হলে আগামী সংসদ সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ২৭০ দিনের মধ্যে সংবিধান সংস্কার করবে।
তবে গণভোট কবে হবে, সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার সরকারের ওপর ছেড়ে দিয়েছে ঐকমত্য কমিশন। সরকার সিদ্ধান্ত নেবে গণভোট কি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন একই সঙ্গে হবে, নাকি আগে হবে। এসব সুপারিশ জমা দেওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলো পরস্পরবিরোধী অবস্থান নিয়েছে। এ রকম পরিস্থিতিতে আজ জরুরি বৈঠকে বসে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ।
সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল