Risingbd:
2025-11-03@13:20:07 GMT

স্বাগতম মাহে রমজান!

Published: 2nd, March 2025 GMT

স্বাগতম মাহে রমজান!

রহমত, নাজাত ও মাগফিরাতের বার্তা নিয়ে আবারো এসেছে পবিত্র রমজান। মহান আল্লাহর কাছে মুমিনের যত প্রত্যাশা তার সবই ধারণ করে রমজান। কেননা রমজান দয়া ও অনুগ্রহের মাস, রমজান মুক্তি ও ক্ষমা লাভের মাস। রমজান আত্মিক পরিশুদ্ধির মাধ্যমে মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের মাস। রমজানের আগমনে খুশি হয় মুমিন। যেভাবে খুশি হতেন তাদের প্রিয় নবীজি (সা.

)। হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) রমজান মাসের আগমনে খুশি হতেন এবং রমজানের চাঁদকে অভিনন্দন জানাতেন। রমজানকে স্বাগত জানাতেন তার সাহাবিরাও। হজরত হাসান ইবনে আলী (রা.) চাঁদ দেখে বলতেন, ‘হে আল্লাহ! এ মাসকে প্রাচুর্য ও জ্যোতির্ময় করুন, পুণ্য ও ক্ষমার মাধ্যম করুন। হে আল্লাহ! আপনি (এ মাসে) আপনার বান্দাদের মাঝে কল্যাণ বিতরণ করবেন, সুতরাং আপনার পুণ্যবান বান্দাদের জন্য যা বণ্টন করবেন, তা আমাদেরও দান করুন।’ (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা)

রমজানের আগমনে রাসুলুল্লাহ (সা.) সুসংবাদ দিয়ে বলেন, ‘তোমাদের কাছে বরকতময় মাস রমজান আগমন করল। আল্লাহ তোমাদের ওপর এই মাসের রোজা ফরজ করেছেন, এই মাসে জান্নাতের দরজা খোলা হয় এবং জাহান্নামের দরজা বন্ধ করা হয়। শয়তানকে শৃঙ্খলিত করা হয়। এ মাসে এমন একটি রাত আছে যা হাজার রাতের চেয়ে উত্তম। যে এর কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হলো, সে সত্যিই বঞ্চিত হলো।’ (সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ২১০৮)

উল্লিখিত হাদিসটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। রাসুলুল্লাহ (সা.) এখানে রমজানের মাহাত্ম্য, মর্যাদা, করণীয় বর্ণনা করেছেন। পাশাপাশি রমজান মাসের ব্যাপারে উদাসীনতার পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করেছেন। যারা আল্লাহর ইবাদত, আনুগত্য, সংযম ও আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে রমজানের মহামূল্যবান সময়কে কাজে লাগাবে তারা মূলত নিজেদের জন্য জান্নাতের দ্বার উন্মুক্ত করল। আর যারা তা করতে সক্ষম হলো না তারা প্রকৃতপক্ষেই বঞ্চিত হয়ে গেল। 

আরো পড়ুন:

রাজধানীর মসজিদে মসজিদে তারাবির জামাতে মুসল্লিদের ঢল

ধৈর্য ও সংযমের মাধ্যমে রমজানের পবিত্রতা রক্ষার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি ও তাঁর পুরস্কার একজন মুমিনের জীবনে পরম আরাধ্য। হাদিসে এসেছে, রমজানে মুমিনের আমলের প্রতিদান বৃদ্ধি করেন। এটা তো সন্তুষ্টির সাক্ষ্য বহন করে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘মানব সন্তানের প্রতিটি আমলের প্রতিদান ১০ গুণ থেকে সাত শ গুণ পর্যন্ত বর্ধিত হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, তবে রোজা ছাড়া। কেননা তা শুধু আমার জন্য এবং আমিই তার পুরষ্কার দেবো।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩৮২৩)

পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই ধৈর্যশীলদের প্রতিদান দেওয়া হয় অগণিত।’ (সুরা ঝুমার, আয়াত : ১০)

জীবনযুদ্ধে বিধ্বস্ত ও হতাশ ব্যক্তি রমজানের আগমনে খুশি হয়। কেননা রমজানে আল্লাহ তাঁর দোয়া প্রার্থনার ঘোষণা দিয়েছেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তিন ধরনের লোকের দোয়া কখনো ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। রোজাদার যতক্ষণ সে ইফতার না করে, ন্যায়পরায়ণ শাসকের দোয়া এবং মজলুমের দোয়া। আল্লাহ তাআলা এসব দোয়াগুলো মেঘমালার ওপরে তুলে নেন এবং এর জন্য আকাশের দ্বারগুলো খুলে দেওয়া হয়। আল্লাহ বলেন, আমার মর্যাদার শপথ! আমি নিশ্চয়ই তোমার সাহায্য করব কিছু বিলম্বে হলেও। (জামে তিরমিজি, হাদিস : ৩৫৯৮)

কল্যাণকামী মুমিনের প্রতি মহিমান্বিত রমজানেরও একটি আহবান আছে। কোরআনের ভাষায় তা হলো, ‘তোমরা সৎকাজে প্রতিযোগিতা ক।’ (সুরা মায়িদা, আয়াত : ৪৮)

রমজান আরো আহবান জানাচ্ছে, ‘তোমরা ধাবিত হও স্বীয় প্রতিপালকের ক্ষমা ও সেই জান্নাতের দিকে যার বিস্তৃতি আসমান ও জমিনের ন্যায়, যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে মুত্তাকিদের জন্য।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৩৩)

আর যারা নেক কাজে অগ্রবর্তী হয় তাদের ব্যাপারে মহান আল্লাহর অঙ্গীকার হলো, ‘অগ্রবর্তীরা তো অগ্রবর্তীই। তারাই নৈকট্যপ্রাপ্ত নিয়ামতপূর্ণ জান্নাতে।’ (সুরা ওয়াকিয়া, আয়াত : ১০-১২) 

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, (এ মাসে) একজন ঘোষণাকারী ঘোষণা দিতে থাকে হে কল্যাণ অন্বেষণকারী! অগ্রসর হও। হে পাপাসক্ত! বিরত হও। (জামে তিরমিজি, হাদিস : ৬৮২)

আল্লাহ সবাইকে পবিত্র এই মাসের আহবানে সাড়া দেওয়ার এবং ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে তাঁর নৈকট্য অর্জনের তাওফিক দিন। আমিন।

লেখক: মুহাদ্দিস, সাঈদিয়া উম্মেহানী মহিলা মাদরাসা, ঢাকা।

ঢাকা/লিপি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর রমজ ন আল ল হ ত রমজ ন র র আগমন কল য ণ র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

মঙ্গলবার কুয়াকাটায় রাস উৎসব, গঙ্গা স্নান বুধবার

প্রায় ২০০ বছর ধরে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মদনমোহন সেবাশ্রম মন্দির ও কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরে পৃথক আয়োজনে রাস উৎসব পালন করে আসছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এবছরও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে হবে এ উৎসব। রাস উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ায় বসছে ৫ দিনব্যাপী মেলা। 

কলাপাড়ায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শেষ সময়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে মন্দিরের আঙ্গিনাসহ রাধা ও কৃষ্ণের ১৭ জোড়া প্রতিমা।

মঙ্গলবার পূর্ণিমা তিথিতে রাত ৯টা ২২ মিনিটে অধিবাসের মধ্যে দিয়ে শুরু হবে রাস পূজার আনুষ্ঠানিকতা। পরের দিন বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ৬ মিনিটে এ তিথি শেষ হবে। সেদিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে কুয়াকাটা সৈকতে গঙ্গা স্নান করবেন পুণ্যার্থীরা। এর পর মন্দিরের আঙ্গিনায় রাধা-কৃষ্ণের যুগল প্রতিমা দর্শন করবেন তারা। তাই, দুই মন্দিরেই ১৭ জোড়া প্রতিমা বানানো হয়েছে। প্যান্ডেল সাজানোর কাজ শেষ। চলছে লাইটিং ও সাজসজ্জার কাজ। 

এ উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ার মন্দির প্রাঙ্গণ, কুয়াকাটার মন্দির প্রাঙ্গণ ও সৈকতে অস্থায়ীভাবে বসছে শতাধিক পোশাক, প্রসাধনী, খেলনা ও গৃহস্থালী সামগ্রীর দোকান। কুয়াকাটায় তিন দিনব্যাপী উৎসব হলেও কলাপাড়ায় এ উৎসব চলবে পাঁচ দিন। এসব দোকানে অন্তত ৩০ লাখ টাকার পণ্য বিক্রির আশা করছেন আয়োজকরা। 

কলাপাড়ার শ্রী শ্রী মদনমোহন সেবাশ্রমের রাস উদযাপন কমিটির সভাপতি দিলীপ কুমার হাওলাদার বলেছেন, আজকের মধ্যেই আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। হিন্দু ধর্মালম্বীদের এ উৎসব হলেও এখানে ৫ দিনব্যাপী মেলায় সব ধর্মের মানুষের আগমন ঘটে। আমাদের মন্দির প্রাঙ্গণে অন্তত ৭০টি দোকান বসেছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে রাস উৎসব সম্পন্ন হবে। 

কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নীহার রঞ্জন মন্ডল বলেছেন, আগামীকাল রাতভর মন্দির প্রাঙ্গণে ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলবে। পরদিন সকালে গঙ্গা স্নান হবে। লাখো পুণ্যার্থীর আগমনের আশা করছি আমরা। বুধবারও গঙ্গা স্নান হবে। উৎসব উপলক্ষে আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

কলাপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউসার হামিদ বলেছেন, রাস উৎসব উপলক্ষে কুয়াকাটায় ১ লাখ পুণ্যার্থী সমাগমের আশা করছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে এ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে। 

ঢাকা/ইমরান/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মঙ্গলবার কুয়াকাটায় রাস উৎসব, গঙ্গা স্নান বুধবার