‘আমাকে কয়েক সপ্তাহ সময় দিন,’ বললেন ইংল্যান্ড কোচ ম্যাককালাম
Published: 2nd, March 2025 GMT
৫০ ওভারের ক্রিকেটে বাজে সময় যাচ্ছে ইংল্যান্ডের। সর্বশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ড থেকে বাদ পড়া দলটি এবার চ্যাম্পিয়নস ট্রফির প্রথম পর্ব থেকে বিদায় নিয়েছে জয়হীন থেকে। এই সংস্করণে সর্বশেষ ৭ ম্যাচেই হেরেছে ২০১৯ সালের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। টানা ব্যর্থতার পর অধিনায়ক জস বাটলারও দায়িত্ব ছেড়েছেন।
এখান থেকে ইংল্যান্ডকে টেনে তোলার দায়িত্ব এখন কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালামের। এই প্রক্রিয়ায় সবার আগে তাঁকে খুঁজে নিতে হবে একজন অধিনায়ককে। আর সেটা করতে কয়েক সপ্তাহ সময়ও চেয়েছেন ম্যাককালাম। কে হতে পারেন ইংল্যান্ডের পরবর্তী অধিনায়ক?
নতুন অধিনায়ক নির্বাচনের আগে প্রশ্ন উঠেছে, সাদা বলের দুই সংস্করণের জন্য আলাদা অধিনায়ক দেখা যাবে কি না। এই প্রশ্নের উত্তরে গতকাল ম্যাচ শেষে ম্যাককালাম চেয়েছেন সময়, ‘একজনই যদি অধিনায়ক হয়, ভালো। যদি দুজন হয়, তাহলেও ভালো। আমাকে কয়েক সপ্তাহ দিন বিষয়টি বুঝে নিতে এবং সবকিছু আবার ঠিক পথে ফেরানোর জন্য।’
সবকিছু বিশ্লেষণ করতে আমাদের কয়েক সপ্তাহ সময় দিন। গত দেড় মাসে কী হয়েছে তা বুঝতে হবে, এরপর ভবিষ্যতের পরিকল্পনা করতে হবেব্রেন্ডন ম্যাককালামইংল্যান্ডের পরের সাদা বলের সিরিজ শুরু হবে ২৯ মে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। পরবর্তী আইসিসি বৈশ্বিক আসর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, যা ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চে ভারত ও শ্রীলঙ্কায় হবে।
সাদা বলের অধিনায়ক হতে পারেন বর্তমানে সহ-অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করা হ্যারি ব্রুক। গত বছর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাটলারের অনুপস্থিতিতে দলকে তিনি নেতৃত্বও দিয়েছিলেন। তবে ব্রুককে অধিনায়ক করা হলে একটি সমস্যা দেখা দেবে। কারণ, তিনি টেস্ট দলে নিয়মিত সদস্য। ফলে তাঁকে কিছু সাদা বলের সিরিজে বিশ্রাম দিতে হতে পারে। ইংল্যান্ড আগে এমনটা অনেকবার করেছে। এই সমস্যার সমাধানই হতে পারে আলাদা সাদা বলের অধিনায়ক। তবে ২০১০ সালের পর ইংল্যান্ডের সাদা বলে আলাদা অধিনায়ক ছিল না।
ইংলিশ পেসার ক্রিস ওকস টেস্ট ম্যাচ স্পেশাল পডকাস্টে এ নিয়ে মত দিয়েছেন, ‘এটা (সাদা বলে দুই অধিনায়ক) কাজ করতে পারে। না করার কোনো কারণ দেখছি না। আমরা এমন একটি সময়ে আছি, যেখানে এটি ভবিষ্যতের পথ হতে পারে।’
ক্রিস ওকস আরও বলেছেন, ‘প্রতিটি সংস্করণ খুব আলাদা। ৫০ ওভারের ক্রিকেট শুধু একটি বড় টি-টোয়েন্টি ম্যাচ নয়। এখানে খেলার মধ্যে খেলা থাকে, যা টেস্ট ক্রিকেটের কাছাকাছি এবং দীর্ঘ সময় ধরে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হয়।’
সাদা বলের অধিনায়ক হতে পারেন হ্যারি ব্রুক.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দেশে বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের ধারণা দিয়েছিলেন এম এন লারমা
মানবেন্দ্র নারায়ণ (এম এন) লারমাই দেশে প্রথম আত্মপরিচয়ের রাজনীতিকে বৈজ্ঞানিকভাবে চিহ্নিত করেছিলেন। তিনি প্রথম দেশে কাঠামোগতভাবে আত্মপরিচয়ের রাজনীতিকে স্পষ্ট করেন। একটি বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের ধারণা দিয়েছিলেন তিনি।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য এম এন লারমার ৮৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সোমবার রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।
‘বিপ্লবী মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার ৮৬ম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন কমিটি’ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়।
আলোচনা সভায় লেখক ও গবেষক পাভেল পার্থ বলেন, ১৯৫৫-৬৫ সালের মধ্যে তৈরি হওয়া ‘বাইনারি বিভাজন’ পরবর্তীকালে প্রতিষ্ঠা করেছে বাংলাদেশে সরকার। ‘বাইনারি’ মনস্তত্ত্বকে এখনো এই দেশে টিকিয়ে রাখা হয়েছে। এম এন লারমা ‘বাঙালি হেজিমনি’র বিরুদ্ধে আত্মপরিচয়ের বয়ান বাঁচিয়ে রাখতে তৎকালে জোরালো প্রতিবাদ করেছিলেন।
জেএসএসের কেন্দ্রীয় সদস্য দীপায়ন খীসা বলেন, কাপ্তাই বাঁধ না করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়েই ছাত্র এম এন লারমার প্রতিবাদী জীবন শুরু হয়। চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানের পর যে বৈষম্যহীন, অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের কথা বলা হচ্ছে, এম এন লারমা ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নকালেই এসব বিষয় নিয়ে জোরালো বক্তব্য দিয়েছিলেন।
দীপায়ন খীসা বলেন, ‘সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশন বা জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কখনো ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের সঙ্গে সংলাপ করেনি। আমরাও এই দেশের অংশ। তাহলে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের কেন কোনো সংলাপে অংশগ্রহণ করার জন্য আহ্বান জানানো হলো না?’ তিনি বলেন, চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদেরও অংশীদারত্ব আছে। কিন্তু অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে তাদেরই ভুলে গেল এই সরকার।
সভাপতির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়কারী জাকির হোসেন বলেন, ‘বাঙালি হয়ে যাও’ কথাটার পেছনে বাঙালি মুসলিমদের জাত্যভিমানের ব্যাপারটি রয়েছে। এম এন লারমা বাংলাদেশের মধ্যে থেকে নিজেদের অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য আন্দোলন শুরু করেছিলেন। সেই আন্দোলনের প্রেক্ষিতে পরবর্তীকালে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি’ নামে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক শান্তিময় চাকমার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের অর্থ সম্পাদক মেইনথিন প্রমীলা, সাংবাদিক এহসান মাহমুদ, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অং শোয়ে সিং মারমা।
অনুষ্ঠানটি শুরু হয় এম এন লারমাকে সম্মান জানিয়ে কবিতা পাঠের মাধ্যমে। কবিতা পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রেই চাকমা ও লাল নিকিম বম। কবিতা আবৃত্তির পর এম এন লারমার জীবনবৃত্তান্ত পাঠ করেন হিল উইমেন্স ফেডারেশন ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক রিয়া চাকমা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের তথ্য প্রচার ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক হিরণ মিত্র চাকমা, জেএসএসের কেন্দ্রীয় স্টাফ সদস্য অনন্ত বিকাশ ধামাই, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি শান্তিদেবী তঞ্চঙ্গ্যা, পিসিপি ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি জগদীশ চাকমা, বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অনন্ত তঞ্চঙ্গ্যা।