২০২৪ সালে দুবাইয়ে আন্তর্জাতিক যাত্রী এসেছে ১ কোটি ৮৭ লাখ, বেড়েছে ৯%
Published: 2nd, March 2025 GMT
সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই এখন বিশ্বের অন্যতম বহুজাতিক শহর। প্রতিবছরই এই শহরে আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের আগমন বাড়ছে। সেই ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালে দুবাই শহরে ১৮ দশমিক ৭২ মিলিয়ন বা ১ কোটি ৮৭ লাখ আন্তর্জাতিক যাত্রী এসেছেন।
দুবাইয়ের অর্থনীতি ও পর্যটন বিভাগের সূত্রে গালফ নিউজ জানিয়েছে, ২০২৩ সালে তুলনায় ২০১৪ সালে দুবাইয়ে আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীর সংখ্যা বেড়েছে ৯ শতাংশ। এই সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে হিসেবে বলা হয়েছে, দুবাই শহরের কৌশলগত বিনিয়োগের সুযোগ, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, বৈশ্বিক নানা সুযোগ-সুবিধা ইত্যাদি।
আরব আমিরাত সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দুবাই শহরের এই পর্যটক সংখ্যা বৃদ্ধির মূল কারণ হলো দুবাই ইকোনমিক এজেন্ডা ৩৩। এই কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে দুবাই শহরকে ব্যবসা-বাণিজ্য ও অবকাশ যাপনের অন্যতম কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা। বিশেষ করে দুবাইয়ের আবাসন খাত বিশ্বের ধনীদের আকর্ষণের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। বিশ্বের প্রায় সব সেলিব্রিটি এখন দুবাই শহরে বাড়ি কিনেছেন।
দুবাই শহরে আন্তর্জাতিক পর্যটক আগমন বৃদ্ধির সঙ্গে হোটেলের ধারণক্ষমতা বেড়েছে। ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ দুবাই শহরে ৮৩২টি হোটেলে ১ লাখ ৫৪ হাজার ১৬টি কক্ষ ছিল। এই শহরের হোটেলগুলোর গড়পড়তা কক্ষ বুকিংয়ের হার ৭৮ দশমিক ২০ শতাংশ।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিনিয়োগপ্রত্যাশী নীতির কারণে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। দেশটি আবাসন খাতে বিনিয়োগের জন্য অনেকটা দরজা খুলে বসে আছে। দুবাই শহরে বিনিয়োগ করার সক্ষমতা থাকলেই তিনি সেখানে বাড়ি কিনতে পারেন। এর বাইরে আর কিছু খোঁজে না আরব আমিরাতের কর্তৃপক্ষ। সে কারণে দুবাই এখন সাধারণ বহুজাতিক নয়, বরং তা বিদেশিদের শহর হয়ে গেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিন মিলিয়নের বেশি বা ৩০ লক্ষাধিক মানুষের দুবাই শহরে আমিরাতিরা চূড়ান্ত সংখ্যালঘুতে পরিণত হয়েছে, তারা এখন মাত্র ৮ শতাংশ।
ইইউ ট্যাক্স অবজারভেটরির হিসাব অনুযায়ী, দুবাইয়ে সম্পত্তির বাজারের আকার ৫৩ হাজার ৩০০ কোটি ডলারের। এর মধ্যে ২৭ শতাংশ আছে বিদেশি মালিকানায়। সার্বিকভাবে আবাসন খাতের বিদেশি মালিকের হার এর বেশিও হতে পারে। সে ক্ষেত্রে দুবাইয়ে বিদেশিদের মালিকানাধীন সম্পত্তির মূল্য অন্তত ১৪ হাজার ৬০০ কোটি ডলার। দুবাইয়ের অফশোর সম্পত্তির বাজার ব্যাপ্তির দিক থেকে এখন লন্ডনের দ্বিগুণের বেশি, যদিও দুবাইয়ের মোট জনসংখ্যা লন্ডনের তুলনায় এক-তৃতীয়াংশের কিছু বেশি।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ