ফরিদপুরে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন আইন (রহিতকরণ) অধ্যাদেশ ২০২৫ বাতিল করার দাবিতে জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বুধবার জেলা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বৃহত্তর পাঁচ জেলায় কর্মরত নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় বক্তারা বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন আইন (রহিতকরণ) অধ্যাদেশ ২০২৫ প্রণয়ন ও কার্যকর হলে নির্বাচন ব্যবস্থাপনা তথা ভোটার তালিকা প্রণয়নে নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক ক্ষমতা খর্ব হবে। এছাড়া ভোটার তালিকা প্রণয়নের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনকে সিভিল রেজিস্ট্রেশনের দ্বারস্থ হতে হবে; যা সংবিধানে প্রদত্ত নির্বাচন কমিশনের স্বাধীন অস্তিত্বের পরিপন্থী।

তারা বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র সিভিল রেজিস্ট্রেশনে ন্যস্ত হলে ভোটার তালিকার তথ্য ও জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যের অমিলের কারণে ভোটপ্রদান বাধাগ্রস্ত হবে এবং নির্বাচন পরিচালনায় বিঘ্ন ঘটবে। এছাড়াও তথ্যভাণ্ডারের শুদ্ধতা বিনষ্ট হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হওয়ার পাশাপাশি নাগরিকদের তথ্যের গোপনীয়তার অধিকার ক্ষুণ্ণ হতে পারে।

বক্তারা আরও বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র সিভিল রেজিস্ট্রেশনের কাছে ন্যস্ত করা হলে ভোটার তালিকা হালনাগাদ বাধাগ্রস্ত হওয়াসহ বিঘ্ন ঘটবে আগামী সংসদ নির্বাচনেও।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো.

আলাউদ্দিন, অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম, জেলা নির্বাচন অফিসার তারেক আহমেদ, নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন, মো. মিজানুর রহমান, ফরিদ আহমেদ, মাহফুজ আহমেদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কর মকর ত

এছাড়াও পড়ুন:

বিভিন্ন সম্প্রদায়ের হারিয়ে যাওয়া ভাষা সংরক্ষণের তাগিদ পার্বত্য উপদেষ্টার

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূত (অব.) সুপ্রদীপ চাকমা বলেছেন, ‘‘ইথারে ভেসে থাকা মানুষের কথা ও শব্দগুলো একসময় বিজ্ঞানীরা পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ করতে সক্ষম হবেন।  আমাদের হারিয়ে যাওয়া ভাষাগুলোকে আবার পুনরুদ্ধার করতে হবে।’’

এজন্য হারিয়ে যাওয়া ভাষাগুলোকে সরকারিভাবে পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন, বিতরণ ও বাস্তবায়ন কাজে গুরুত্ব দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি জোর তাগিদ দিয়েছেন সুপ্রদীপ চাকমা।

আজ বুধবার রাজধানীর মতিঝিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড-এনসিটিবি মিলনায়তনে ‘প্রাথমিক স্তরের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর পাঁচটি ভাষায় পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন, বিতরণ ও বাস্তবায়ন সংক্রান্ত বিষয়াদি পর্যালোচনা’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, ‘‘আমাদের দেশের বিভিন্ন সম্প্রদায় গোষ্ঠীর ৪১টি ভাষা এ পর্যন্ত উদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু আমরা কেবল ৫টি ভাষাকে জাতীয়ভাবে মাতৃভাষা পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছি। পার্বত্য চট্টগ্রামে এমন কিছু সম্প্রদায় রয়েছে যার জনগোষ্ঠী অনেক কম। তাদেরও ভাষা আছে। যেমন লুসাই, তাদের মোট জনগোষ্ঠী আড়াই হাজার। তাদের মাতৃভাষাও পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করা দরকার।’’

আমাদের বাকি ভাষাগুলোর কথা বা ভাষাকে উদ্ধার করা ও টিকিয়ে রাখা জরুরি উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘‘পার্বত্য অঞ্চলের দুর্গম এলাকায় মানুষের সংখ্যা অনেক কম। আমাকে এখন পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে গভীর চিন্তা করতে হয়। পার্বত্য অঞ্চলের লুসাই, চাক, বোম সম্প্রদায়ও দেশের মূলধারার সাথে এক হতে চায়। তারা পিছিয়ে থাকতে চায় না। পার্বত্য চট্টগ্রামে আমি কোয়ালিটি এডুকেশন নিশ্চিত করতে চাই। আপাতত প্রি-প্রাইমারি থেকে ক্লাস থ্রি পর্যন্ত শুরু করব। পরে উপজেলা পর্যায়ে দুর্গম এলাকার ছাত্রছাত্রীদের জন্য হোস্টেল নির্মাণ করে থাকার ব্যবস্থা করে কোয়ালিটি এডুকেশন নিশ্চিত করতে চাই। যাতে ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষা থেকে ঝরে না পড়ে।’’

‘‘প্রশিক্ষিত দক্ষ শিক্ষক নিয়োগ প্রদান করা আমার আরেকটি লক্ষ্য। আমার দ্বিতীয় এজেন্ডা হলো লাইভলি হুড ডেভেলপমেন্ট। পার্বত্য অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটানো। আর আমার তৃতীয় এজেন্ডা হলো, পরিবেশ। পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হওয়ায় ব্যাপক এলাকায় পানি সংকট দেখা দিচ্ছে। আমরা কাপ্তাই লেক ও নদী-নালা-ঝিরির পানি সঠিক পদ্ধতিতে ধরে রেখে পানির সমস্যার সমাধান করতে চাই।’’

কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে বিশেষজ্ঞ মতামত ও উন্মুক্ত আলোচনায় পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন, শিক্ষক সংকট, রুটিন সংক্রান্ত বিষয়াদি, ভাষাভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগ, প্রশিক্ষণ ও পদায়ন, ভাষাভিত্তিক মূল্যায়ন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ, পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রম, এমএলই যথাযথ বাস্তবায়নের রূপরেখা, মনিটরিং কার্যক্রম জোরদারকরণ, অন্যান্য ভাষায় পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন সংক্রান্ত বিষয় উঠে আসে।

উল্লেখ্য, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, বাংলাদেশের  বর্ণনা মতে, ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে প্রাক-প্রাথমিক থেকে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য চাকমা ভাষার ৯৩ হাজার ১৬২টি, মারমা ভাষার ৪৫ হাজার ২১৯টি, ককবরক ভাষার ৩৫ হাজার ৫৬০টি, সাদরি ভাষার ৩ হাজার ৮৪৬টি এবং গারো ভাষার ১৫ হাজার ৩৮টিসহ সর্বমোট ১ লাখ ৯২ হাজার ৮২৫টি পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ এবং সরবরাহ করা হয়েছে। সরকার প্রশিক্ষত শিক্ষক দ্বারা শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনা করা, স্ব স্ব ভাষার শিক্ষক নিয়োগ, যথাসময়ে পাঠ্যপুস্তক সরবরাহ এবং মাঠ পর্যায়ে যথাযথ বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করছে। মাতৃভাষাভিত্তিক ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন, পাঠ্যপুস্তক যথাসময়ে মুদ্রণ ও বিতরণ, মাঠ পর্যায়ে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ছাত্রছাত্রীদের শিখন কার্যক্রম যথাযভাবে বাস্তবায়ন করাসহ অবশিষ্ট ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর অন্যান্য ভাষায় পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন করা ছিল কর্মশালার মূল উদ্দেশ্য। 

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানার সভাপতিত্বে এসময় অন্যান্যের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্বে) মো. মনিরুল ইসলাম, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিদ্যালয়) মডারেটর মাসুদ আকতার খান, এনসিটিবি’র চেয়ারম্যান প্রফেসর রবিউল কবীর চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানের কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করেন এনসিটিবি’র ঊর্ধ্বতন বিশেষজ্ঞ মো. আব্দুল মুমিন মোছাব্বির।

ঢাকা/হাসান

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নির্বাচন কমিশনের আশু বাস্তবায়নযোগ্য সুপারিশ চূড়ান্ত: ইসি সানাউল্লাহ
  • বিভিন্ন সম্প্রদায়ের হারিয়ে যাওয়া ভাষা সংরক্ষণের তাগিদ পার্বত্য উপদেষ্টার
  • সোনাপুর-নোবিপ্রবি সড়ক ৪ লেনে উন্নীতকরণে অংশীজন সভা
  • ‘কৃষির উন্নয়নে জাপানের অংশীদারিত্ব আরও বৃদ্ধি করা হবে’
  • না’গঞ্জে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হতাহতদের আড়াই কোটি টাকার অনুদান ও সঞ্চয়পত্র প্রদান 
  • জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগের সাবেক ডিজির এনআইডি ব্লক
  • মধ্যরাত থেকে কাপ্তাই হ্রদে ৩ মাস মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা
  • শ্রমজীবী মানুষের পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ: শ্রম উপদেষ্টা
  • ভিটামিনসমৃদ্ধ নিরাপদ ভোজ্যতেল প্রাপ্তির বাধা দূর করতে হবে
  • মাদ্রাসা ও কারিগরির শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মচারীরা পাবেন অনুদান, আবেদনের সময় বাড়ল