সময়ের সঙ্গে ভারতের দক্ষিণী সিনেমার দর্শকপ্রিয়তার গ্রাফ ঊর্ধ্বগামী হচ্ছে। মজার ব্যাপার হলো, হিন্দি সিনেমার দর্শকরাও ক্রমান্বয়ে দক্ষিণের দিকেই ঝুঁকছেন। স্বাভাবিক কারণে দক্ষিণী সিনেমার অভিনয়শিল্পীদের পারিশ্রমিকও বৃদ্ধি পাচ্ছে। শুধু তারকা অভিনেতা নন, তারকা অভিনেত্রীরাও পারিশ্রমিক বাড়িয়েছেন। গত বছর বেশ কজন তারকা অভিনেত্রীকে পারিশ্রমিক বৃদ্ধি করতে দেখা গেছে। চলতি বছরে সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক নেওয়া সাত নায়িকাকে নিয়ে এই প্রতিবেদন।

সাই পল্লবী
সাধারণত রোমান্টিক-ড্রামা ঘরানার সিনেমায় বেশি দেখা যায় সাই পল্লবীকে। ভার্সেটাইল অভিনয়শিল্পী হিসেবেও দারুণ খ্যাতি কুড়িয়েছেন। সাই পল্লবী বেছে বেছে কাজ করে থাকেন। ২০১৮ সালে তার অভিনীত ৪টি সিনেমা মুক্তি পেয়েছিল। কিন্তু তারপর আর এমনটা দেখা যায়নি। বলা যায়, বছরে তার অভিনীত একটি সিনেমা মুক্তি পায়। তার অভিনীত সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘থান্ডেল’। এ সিনেমার জন্য ৫ কোটি রুপি পারিশ্রমিক নিয়েছেন সাই পল্লবী। তার পরবর্তী সিনেমা ‘রামায়ণ’। নীতেশ তিওয়ারি পরিচালিত এ সিনেমার জন্য ১৮-২০ কোটি রুপি পারিশ্রমিক নিয়েছেন সাই পল্লবী। এ হিসাব অনুযায়ী, দক্ষিণী সিনেমার সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পাওয়া অভিনেত্রী এখন সাই পল্লবী।

রাশমিকা মান্দানা
ভারতের প্রাক্তন ‘জাতীয় ক্রাশ’ রাশমিকা মান্দানা। টানা বক্স অফিসে ঝড় তোলা সিনেমা উপহার দিয়েছে চলেছেন। ‘অ্যানিমেল’, ‘পুষ্পা টু’ সিনেমার পর তার অভিনীত ‘ছাবা’ সিনেমা বক্স অফিসে ঝড় তুলেছে। ‘পুষ্পা টু’ সিনেমার জন্য ১০ কোটি রুপি এবং ‘ছাবা’ সিনেমায় অভিনয় করে ৪ কোটি রুপি পারিশ্রমিক নেন এই অভিনেত্রী। তার পরবর্তী সিনেমা ‘সিকান্দার’। সালমান খানের সঙ্গে জুটি বেঁধে পর্দায় হাজির হবেন তিনি। সর্বশেষ এ সিনেমার জন্য ১৩ কোটি রুপি পারিশ্রমিক নিয়েছেন রাশমিকা।

তৃষা কৃষ্ণান
দক্ষিণী সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী তৃষা কৃষ্ণান। ৪১ বছরের এই অভিনেত্রী ক্যারিয়ারে অনেক দর্শকপ্রিয় সিনেমা উপহার দিয়েছেন। এখনো দাপটের সঙ্গে কাজ করছেন। প্রতি সিনেমার জন্য ১০-১২ কোটি রুপি পারিশ্রমিক নিয়ে থাকেন। চলতি বছরে সাতটি সিনেমার কাজ হাতে নিয়েছেন। এর মধ্যে বেশ কটির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সর্বশেষ ‘বিশ্বম্ভর’ সিনেমার জন্য ১২ কোটি রুপি পারিশ্রমিক নিয়েছেন তৃষা।

নয়নতারা
দক্ষিণী সিনেমার ‘লেডি সুপাস্টার’ নয়নতারা। কয়েক বছর আগেও দক্ষিণী সিনেমার সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক নেওয়া নায়িকাদের তালিকায় শীর্ষে ছিলেন তিনি। তবে বিয়ে-সন্তান নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় কাজ কমিয়ে দেন। তবে ফের অভিনয়ে সক্রিয় হয়েছেন। ২০২৩ সালে ‘জওয়ান’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে তার অভিষেক ঘটে। সিনেমাটির জন্য ১০ কোটি রুপি পারিশ্রমিক নেন। নয়নতারার বিয়ের ডকুমেন্টারি ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নেটফ্লিক্সে ২৫ কোটি রুপিতে বিক্রি করেছেন।
 
সামান্থা রুথ প্রভু
ভারতের দক্ষিণী সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী সামান্থা রুথ প্রভু। অভিনয় ও শরীরি সৌন্দর্যে মুগ্ধ করেছেন তিনি। দক্ষিণ ভারতের সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক নেওয়া অভিনেত্রীদের তালিকায় এক সময় দ্বিতীয় অবস্থানে ছিলেন তেলেগু সিনেমার এই অভিনেত্রী। তবে বিবাহবিচ্ছেদ-শারীরিক অসুস্থতা পিছিয়ে দেয় তাকে। সাধারণত, প্রতিটি সিনেমার জন্য ৩-৮ কোটি রুপি পারিশ্রমিক নিয়ে থাকেন সামান্থা। তবে ‘সিটাডেল: হানি বানি’-এর জন্য ১০ কোটি রুপি পারিশ্রমিক নিয়েছেন এই অভিনেত্রী।

আনুশকা শেঠি
অভিনেত্রী আনুশকা শেঠি তামিল-তেলেগু ভাষার অনেক সিনেমায় অভিনয় করেছেন। বিশেষ করে ‘বাহুবলি’ সিনেমায় অভিনয় করে বিশেষ খ্যাতি কুড়ান এই অভিনেত্রী। দুঃখজনক ব্যাপার হলো, ‘বাহুবলি’ সিনেমার পর আর কোনো ধামাকা উপহার দিতে পারেননি আনুশকা। ‘বাহুবলি টু’ সিনেমার জন্য ৬ কোটি রুপি পারিশ্রমিক নিয়েছিলেন। গত কয়েক বছরে তাকে চলচ্চিত্রে পাওয়া যায়নি বললেই চলে। চলতি বছরে কয়েকটি সিনেমার কাজ হাতে নিয়েছেন। তবে তার পরবর্তী সিনেমা ‘কানতারা’-এর জন্য ৫ কোটি রুপি পারিশ্রমিক নিয়েছেন এই অভিনেত্রী।

তামান্না ভাটিয়া
দুই দশকের অভিনয় ক্যারিয়ারে অসংখ্য দর্শকপ্রিয় সিনেমা উপহার দিয়েছেন তামান্না ভাটিয়া। তবে ‘বাহুবলি’ সিনেমা ফ্র্যাঞ্চাইজিতে অভিনয় করে বিশেষভাবে নজর কাড়েন এই অভিনেত্রী। ‘বাহুবলি টু’ সিনেমার জন্য ৫ কোটি রুপি পারিশ্রমিক নিয়েছিলেন। তার পরবর্তী সিনেমা ‘ওডেলা টু’। এ সিনেমার জন্য ৫ কোটি রুপি পারিশ্রমিক নিয়েছেন এই অভিনেত্রী।

তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, সিয়াসাত ডটকম

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এ স ন ম র জন য র জন য ৫ ক ট ত র পরবর ত র জন য ১০ উপহ র দ ব হ বল সবচ য়

এছাড়াও পড়ুন:

দেশে বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের ধারণা দিয়েছিলেন এম এন লারমা

মানবেন্দ্র নারায়ণ (এম এন) লারমাই দেশে প্রথম আত্মপরিচয়ের রাজনীতিকে বৈজ্ঞানিকভাবে চিহ্নিত করেছিলেন। তিনি প্রথম দেশে কাঠামোগতভাবে আত্মপরিচয়ের রাজনীতিকে স্পষ্ট করেন। একটি বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের ধারণা দিয়েছিলেন তিনি।

পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য এম এন লারমার ৮৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সোমবার রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।

‘বিপ্লবী মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার ৮৬ম জন্মবার্ষিকী উদ্‌যাপন কমিটি’ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়।

আলোচনা সভায় লেখক ও গবেষক পাভেল পার্থ বলেন, ১৯৫৫-৬৫ সালের মধ্যে তৈরি হওয়া ‘বাইনারি বিভাজন’ পরবর্তীকালে প্রতিষ্ঠা করেছে বাংলাদেশে সরকার। ‘বাইনারি’ মনস্তত্ত্বকে এখনো এই দেশে টিকিয়ে রাখা হয়েছে। এম এন লারমা ‘বাঙালি হেজিমনি’র বিরুদ্ধে আত্মপরিচয়ের বয়ান বাঁচিয়ে রাখতে তৎকালে জোরালো প্রতিবাদ করেছিলেন।

জেএসএসের কেন্দ্রীয় সদস্য দীপায়ন খীসা বলেন, কাপ্তাই বাঁধ না করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়েই ছাত্র এম এন লারমার প্রতিবাদী জীবন শুরু হয়। চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানের পর যে বৈষম্যহীন, অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের কথা বলা হচ্ছে, এম এন লারমা ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নকালেই এসব বিষয় নিয়ে জোরালো বক্তব্য দিয়েছিলেন।

দীপায়ন খীসা বলেন, ‘সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশন বা জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কখনো ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের সঙ্গে সংলাপ করেনি। আমরাও এই দেশের অংশ। তাহলে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের কেন কোনো সংলাপে অংশগ্রহণ করার জন্য আহ্বান জানানো হলো না?’ তিনি বলেন, চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদেরও অংশীদারত্ব আছে। কিন্তু অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে তাদেরই ভুলে গেল এই সরকার।

সভাপতির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়কারী জাকির হোসেন বলেন, ‘বাঙালি হয়ে যাও’ কথাটার পেছনে বাঙালি মুসলিমদের জাত্যভিমানের ব্যাপারটি রয়েছে। এম এন লারমা বাংলাদেশের মধ্যে থেকে নিজেদের অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য আন্দোলন শুরু করেছিলেন। সেই আন্দোলনের প্রেক্ষিতে পরবর্তীকালে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি’ নামে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক শান্তিময় চাকমার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের অর্থ সম্পাদক মেইনথিন প্রমীলা, সাংবাদিক এহসান মাহমুদ, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অং শোয়ে সিং মারমা।

অনুষ্ঠানটি শুরু হয় এম এন লারমাকে সম্মান জানিয়ে কবিতা পাঠের মাধ্যমে। কবিতা পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রেই চাকমা ও লাল নিকিম বম। কবিতা আবৃত্তির পর এম এন লারমার জীবনবৃত্তান্ত পাঠ করেন হিল উইমেন্স ফেডারেশন ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক রিয়া চাকমা।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের তথ্য প্রচার ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক হিরণ মিত্র চাকমা, জেএসএসের কেন্দ্রীয় স্টাফ সদস্য অনন্ত বিকাশ ধামাই, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি শান্তিদেবী তঞ্চঙ্গ্যা, পিসিপি ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি জগদীশ চাকমা, বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অনন্ত তঞ্চঙ্গ্যা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মন্ত্রীদের জন্য গাড়ি কেনার অতিআগ্রহ নিয়ে প্রশ্ন টিআইবির
  • আগামী সরকারের মন্ত্রীদের জন্য গাড়ি কেনার অতি আগ্রহের কারণ কী, প্রশ্ন টিআইবির
  • ডাকসুর ব্যালট পেপারে ২ ভোট নিয়ে যা বলছে নির্বাচন কমিশন
  • নরসিংদীতে ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি স্থগিত
  • দক্ষিণ এশিয়ায় জেন–জি বিপ্লবের পরবর্তী নিশানা কে
  • নেপাল, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা: দক্ষিণ এশিয়ায় জেন–জি বিপ্লবের পরবর্তী নিশানা কে
  • গাজায় পাগলের মতো বোমা ফেলছে ইসরায়েল
  • ফতুল্লা পুলিশের সহায়তায় আপন ঠিকানায় মানসিক প্রতিবন্ধী নারী
  • দেশে বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের ধারণা দিয়েছিলেন এম এন লারমা
  • ফতুল্লায় প্রতারণা করে ১৫ লাখ টাকার রড নিলো প্রতারক চক্র, কুমিল্লায় গ্রেপ্তার ৩