যশোরের মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ের এক কর্মচারীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মোতাহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীর দাবি, গতকাল বুধবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে ইউএনও কার্যালয়–সংলগ্ন শহীদ মিনারের সামনে তাঁকে মারধর করা হয়।

ভুক্তভোগী ওই ব্যক্তির নাম শাহীন আলম। তিনি ইউএনও কার্যালয়ে অ্যাকাউন্ট্যান্ট ক্লার্ক হিসেবে কর্মরত।

শাহীন আলম বলেন, ‘গতকাল অফিস শেষে বিকেলে অফিসের সামনের শহীদ মিনারে দাঁড়িয়ে অফিস সহকারী ও সহকর্মী সাইফুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলছিলাম। এ সময় সাইফুলের মুঠোফোনে মোতাহারুল ইসলামের কল আসে। তাঁর সঙ্গে কথার একপর্যায়ে সাইফুল বলে ওঠেন, “শাহীন আমার সামনে আছে।” তখন মোতাহারুল আমার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে সাইফুল আমাকে মুঠোফোনটি ধরিয়ে দেন।’

শাহীন আরও বলেন, ‘মোতাহারুলের সঙ্গে আমার আগে কখনো কথা হয়নি। ফোন ধরতেই তিনি আমাকে গালমন্দ করতে থাকেন। আমি প্রতিবাদ করলে নানা হুমকি দিয়ে আমার অবস্থান জানতে চান। আমি অফিসের সামনে থাকার কথা বললে তিনি ফোন কেটে দেন। বিষয়টি নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে আমি উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মিন্টু ভাইকে কল করি। কথা বলা শুরু করলে দেড় থেকে দুই মিনিটের মধ্যে মোতাহারুল ইসলামের নেতৃত্বে ১৫-২০ জন আমাদের কাছে আসেন। তখন তাঁর সঙ্গে থাকা এক ব্যক্তি আমার মাথায় থাপ্পড় মারেন। অন্যরা ধাক্কাধাক্কি ও টানাহেঁচড়া করতে থাকেন। আসাদুজ্জামান মিন্টু ভাই মুঠোফোনে কথা বলার পর তাঁরা সেখান থেকে চলে যান।’

এই অভিযোগ অস্বীকার করে মোতাহারুল ইসলাম বলেন, শাহীন আলমের সঙ্গে ওই ধরনের ঘটনা ঘটেনি। তাঁর সঙ্গে মুঠোফোনে কোনো কথাই হয়নি। অভিযোগটি মনগড়া।

তবে এ ঘটনাকে অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক হিসেবে উল্লেখ করে মনিরামপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। এ ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে যেন আর না ঘটে সে জন্য আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

জানতে চাইলে মনিরামপুরের ইউএনও নিশাত তামান্না বলেন, উপজেলা চত্বরে শহীদ মিনারের সামনে অতর্কিত হামলা চালিয়ে এক সরকারি কর্মচারীকে মারধরের বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে। তিনি এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেবেন। উপজেলা পরিষদের কর্মচারীরা মানববন্ধন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত তাঁদের মানববন্ধন না করতে বলা হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম ত হ র ল ইসল ম ল ইসল ম র র স মন উপজ ল ম রধর

এছাড়াও পড়ুন:

পরিবারের কাছে ফিরে গেলেন অভিনেতা সমু চৌধুরী

অভিনেতা সমু চৌধুরী পরিবারের কাছে ফিরে গেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সোয়া ৩টার পর পুলিশ তাঁকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। এর আগে ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে মাজারের গাছতলায় গামছাপরিহিত সমু চৌধুরীর ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে নানা জল্পনা শুরু হয়।

গফরগাঁওয়ের পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস আলম বলেন, অভিনেতা সমু চৌধুরীকে রাত ৩টা ২০ মিনিটের দিকে খালাতো ভাই অপু চৌধুরীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ সময় অভিনয়শিল্পী সংঘের লোকজনও ছিলেন। তিনি বলেন, সমু চৌধুরী এর আগে মাজারটিতে কয়েকবার এলেও কেউ তাঁকে চিনতে পারেননি। এবারও মাজারে একাকী সময় কাটাতে এসেছিলেন তিনি।

এর আগে গত বুধবার রাতে ঢাকা থেকে মোটরসাইকেলে করে গফরগাঁও উপজেলার মশাখালী ইউনিয়নে অবস্থিত মুখী শাহ্ মিসকিনের মাজারে আসেন সমু চৌধুরী। পরদিন গতকাল দুপুরে মাজারের গাবগাছের নিচে শুয়ে থাকতে দেখা যায় তাঁকে। মাজারের পাশের বাসিন্দা আল মামুন হৃদয় ফেসবুকে তাঁর গাছতলায় শুয়ে থাকার ছবি পোস্ট করেন। দ্রুত সেটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা সমু চৌধুরীকে মানসিকভাবে অসুস্থ বলে দাবি করেন। সমু চৌধুরীকে এমন অবস্থায় দেখতে পেয়ে সেখানে ভিড় করেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। বিকেল গাড়িয়ে সন্ধ্যা হলে পুলিশের অনুরোধেও থানায় যাননি সমু চৌধুরী। সন্ধ্যার পর লোকজন আরও বাড়তে থাকে। এ অবস্থায় পুলিশের পাশাপাশি মাজার প্রাঙ্গণে সেনাবাহিনী অবস্থান নেয়। এ সময় সমু চৌধুরী জানান, তিনি সুস্থ আছেন। সারা রাত মাজারে ধ্যানে ছিলেন।

আরও পড়ুনঅভিনেতা সমু চৌধুরীকে উদ্ধারের চেষ্টা করেছে পুলিশ, কী হয়েছিল তাঁর২১ ঘণ্টা আগে

গতকাল রাত ৯টার দিকে সমু চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করেন গফরগাঁওয়ের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এন এম আবদুল্লাহ-আল-মামুন। সমু চৌধুরী সুস্থ আছেন কি না, তা জানতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন সেখানে উপস্থিত হন।

ইউএনও এন এম আবদুল্লাহ-আল-মামুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা এক ঘণ্টার বেশি সময় অভিনেতার সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় এবং তাঁকে সুস্থ পাওয়া যায়। তাঁর বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হয়, পুরো ঘটনা তাঁর জবানিতে শোনা হয়। অভিনেতা মাজারভক্ত মানুষ। এ মাজারে আগেও এসেছিলেন। তাঁকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দিলেও গতকাল তাঁর ভাষায় গুরুবার ও গুরুত্বপূর্ণ রাত হওয়ায় তিনি মাজারেই অবস্থান করার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ছবির কারণে বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়।’

সমু চৌধুরীর বয়স ৬২ বছর। তিনি ১৯৯০ সালে একটি নাটকের মাধ্যমে অভিনয়জীবনে প্রবেশ করেন। এ ছাড়া উদীচীর সঙ্গে ছিলেন ১২ বছর। ব্যক্তিজীবনে তিনি অবিবাহিত। তাঁর বাড়ি যশোর। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে শুধু মা জীবিত আছেন। সমু চৌধুরী যশোরে থাকেন বলেও জানান ইউএনও।

আরও পড়ুনমাজার থেকে সরতে চাইছেন না সমু চৌধুরী১৮ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৬ মাস ধরে খোলা আকাশের নিচে ৩১টি পরিবার
  • পরিবারের কাছে ফিরে গেলেন অভিনেতা সমু চৌধুরী