ছাত্রী হেনস্তায় গ্রেপ্তার কর্মচারীর মুক্তি দাবি করা ব্যক্তিরা ৮ ঘণ্টা পর শাহবাগ থানা ছেড়েছে
Published: 6th, March 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এক ছাত্রীকে হেনস্তার অভিযোগে গ্রেপ্তার ব্যক্তির মুক্তির দাবিতে শাহবাগ থানায় অন্তত আট ঘণ্টা অবস্থান নিয়েছিলেন একদল ব্যক্তি। অবস্থানকালে তাঁদের কেউ কেউ নিজেদের ‘তৌহিদি জনতা’ হিসেবে পরিচয় দেন।
গতকাল বুধবার দিবাগত রাত একটা থেকে দেড়টার দিকে এই ব্যক্তিরা থানার সামনে জড়ো হন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তাঁরা শাহবাগ থানা থেকে চলে যান। শাহবাগ থানা-পুলিশ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
ছাত্রীকে হেনস্তার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সহকারী বাইন্ডার মোস্তফা আসিফকে (অর্ণব) গতকাল সন্ধ্যায় গ্রেপ্তার করে শাহবাগ থানার পুলিশ।
হেনস্তার শিকার ছাত্রী এ বিষয়ে প্রথমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে অভিযোগ করেন। পরে তিনি শাহবাগ থানায় মামলা করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে হেনস্তার অভিযোগে গ্রেপ্তার আসিফের মুক্তির দাবিতে গতকাল মধ্যরাতে শাহবাগ থানায় জড়ো হওয়া ব্যক্তিরা দাবি করেন, অভিযুক্ত ব্যক্তিকে মুক্তি দিতে হবে। কারণ, তিনি এমন কোনো বড় অপরাধ করেননি। তাঁরা উল্টো ভুক্তভোগী ছাত্রীর বিরুদ্ধে পুলিশকে মামলা করতে বলেন।
রাতে আবু আবদুল্লাহ নামের এক ব্যক্তি ভুক্তভোগী ছাত্রীর এজাহারের ছবি ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে বলেন, ‘আমরা ভাইকে (গ্রেপ্তার ব্যক্তি) মুক্ত করেই যাব।’
এই ফেসবুক পোস্টের ফলে হেনস্তার শিকার ছাত্রীর নাম-পরিচয় ও তাঁর মুঠোফোন নম্বর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে ছাত্রীর সঙ্গে নানাভাবে যোগাযোগের চেষ্টা করেছে প্রথম আলো। তবে এখন পর্যন্ত যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
গতকাল শাহবাগ থেকে ক্যাম্পাসে যাওয়ার পথে হেনস্তার শিকার হন বলে এক ফেসবুক পোস্টে অভিযোগ করেন ছাত্রী। তিনি লেখেন, ‘এই লোকটা আজকে আমাকে শাহবাগ থেকে আসার পথে হ্যারাস করেছে। সে আমাকে হুট করে রাস্তায় দাঁড় করায় দিয়ে বলতেসে, আমার ড্রেস ঠিক নাই, আমি পর্দা করি নাই ইত্যাদি ইত্যাদি এবং তার আচরণ খুবই অ্যাগ্রেসিভ ছিল। পরে তাঁকে আমি জিজ্ঞাসা করি, আপনি কোন হলে থাকেন, কোন ডিপার্টমেন্টে পড়েন। সে বলে সে এই ক্যাম্পাসের কেউ না।’
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ওই ব্যক্তি ছাত্রীটিকে তাঁর পোশাক নিয়ে রাস্তায় হেনস্তা করেন। ছাত্রী এ নিয়ে প্রথমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট দেন। পরে প্রক্টর অফিসে অভিযোগ করেন। বিকেলে শিক্ষার্থীরা অভিযুক্তকে শনাক্ত করে প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসেন। এ সময় ওই ব্যক্তি ছাত্রীকে হেনস্তা করার কথা স্বীকার করেন। পরে তাঁকে শাহবাগ থানায় পাঠানো হয়। গ্রন্থাগারকে এ বিষয়ে জানানো হয়।
আরও পড়ুনঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে হেনস্তা, অভিযুক্ত গ্রেপ্তার১৫ ঘণ্টা আগেউৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
১২০০ আহতকে সেবা দিলেন বাংলাদেশের চিকিৎসকরা
মিয়ানমারে ভয়াবহ ভূমিকম্পে আহত ১ হাজার ২০০ জনকে চিকিৎসাসেবা দিয়েছে বাংলাদেশের একদল চিকিৎসক। মঙ্গলবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ওই চিকিৎসকদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়।
গত ২৮ মার্চ ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে মিয়ানমার। এতে তিন হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারান। আহত হন কয়েক হাজার মানুষ।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ভূমিকম্পে আহতদের চিকিৎসাসেবা দিতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও নার্সদের সমন্বয়ে গঠিত একদল চিকিৎসক ১ এপ্রিল থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত মিয়ানমারে অবস্থান করেন। তারা আহত ১ হাজার ২০০ জনের চিকিৎসা দিয়েছেন। তাদের মধ্যে ২০০ জনকে সার্জারি করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত চিকিৎসক দলের উদ্দেশে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেন, মানবতার ধর্মই পরম ধর্ম। এ ধরনের প্রতিকূল পরিস্থিতিতে আপনারা যেভাবে চিকিৎসাসেবা দিয়েছেন, সেটা প্রশংসনীয়। এই প্রশংসনীয় কাজের জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব সাইদুর রহমানসহ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।