ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এক ছাত্রীকে হেনস্তার অভিযোগে গ্রেপ্তার ব্যক্তির মুক্তির দাবিতে শাহবাগ থানায় অন্তত আট ঘণ্টা অবস্থান নিয়েছিলেন একদল ব্যক্তি। অবস্থানকালে তাঁদের কেউ কেউ নিজেদের ‘তৌহিদি জনতা’ হিসেবে পরিচয় দেন।

গতকাল বুধবার দিবাগত রাত একটা থেকে দেড়টার দিকে এই ব্যক্তিরা থানার সামনে জড়ো হন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তাঁরা শাহবাগ থানা থেকে চলে যান। শাহবাগ থানা-পুলিশ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

ছাত্রীকে হেনস্তার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সহকারী বাইন্ডার মোস্তফা আসিফকে (অর্ণব) গতকাল সন্ধ্যায় গ্রেপ্তার করে শাহবাগ থানার পুলিশ।

হেনস্তার শিকার ছাত্রী এ বিষয়ে প্রথমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে অভিযোগ করেন। পরে তিনি শাহবাগ থানায় মামলা করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে হেনস্তার অভিযোগে গ্রেপ্তার আসিফের মুক্তির দাবিতে গতকাল মধ্যরাতে শাহবাগ থানায় জড়ো হওয়া ব্যক্তিরা দাবি করেন, অভিযুক্ত ব্যক্তিকে মুক্তি দিতে হবে। কারণ, তিনি এমন কোনো বড় অপরাধ করেননি। তাঁরা উল্টো ভুক্তভোগী ছাত্রীর বিরুদ্ধে পুলিশকে মামলা করতে বলেন।

রাতে আবু আবদুল্লাহ নামের এক ব্যক্তি ভুক্তভোগী ছাত্রীর এজাহারের ছবি ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে বলেন, ‘আমরা ভাইকে (গ্রেপ্তার ব্যক্তি) মুক্ত করেই যাব।’

এই ফেসবুক পোস্টের ফলে হেনস্তার শিকার ছাত্রীর নাম-পরিচয় ও তাঁর মুঠোফোন নম্বর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে ছাত্রীর সঙ্গে নানাভাবে যোগাযোগের চেষ্টা করেছে প্রথম আলো। তবে এখন পর্যন্ত যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

খালিদ মনসুর আজ সকাল ৯টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার আসিফকে আদালতে পাঠাবেন তাঁরা। এ বিষয়ে কাজ চলছে।

আরও পড়ুনঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে হেনস্তা, গ্রেপ্তার কর্মচারীর মুক্তির দাবিতে শাহবাগ থানায় একদল ব্যক্তি৪ ঘণ্টা আগে

গতকাল শাহবাগ থেকে ক্যাম্পাসে যাওয়ার পথে হেনস্তার শিকার হন বলে এক ফেসবুক পোস্টে অভিযোগ করেন ছাত্রী। তিনি লেখেন, ‘এই লোকটা আজকে আমাকে শাহবাগ থেকে আসার পথে হ্যারাস করেছে। সে আমাকে হুট করে রাস্তায় দাঁড় করায় দিয়ে বলতেসে, আমার ড্রেস ঠিক নাই, আমি পর্দা করি নাই ইত্যাদি ইত্যাদি এবং তার আচরণ খুবই অ্যাগ্রেসিভ ছিল। পরে তাঁকে আমি জিজ্ঞাসা করি, আপনি কোন হলে থাকেন, কোন ডিপার্টমেন্টে পড়েন। সে বলে সে এই ক্যাম্পাসের কেউ না।’

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ওই ব্যক্তি ছাত্রীটিকে তাঁর পোশাক নিয়ে রাস্তায় হেনস্তা করেন। ছাত্রী এ নিয়ে প্রথমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট দেন। পরে প্রক্টর অফিসে অভিযোগ করেন। বিকেলে শিক্ষার্থীরা অভিযুক্তকে শনাক্ত করে প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসেন। এ সময় ওই ব্যক্তি ছাত্রীকে হেনস্তা করার কথা স্বীকার করেন। পরে তাঁকে শাহবাগ থানায় পাঠানো হয়। গ্রন্থাগারকে এ বিষয়ে জানানো হয়।

আরও পড়ুনঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে হেনস্তা, অভিযুক্ত গ্রেপ্তার১৫ ঘণ্টা আগে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য গ কর প রথম গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে: তারেক রহমান

সংবাদপত্রের কালো দিবস ছিল আজ। সোমবার এ উপলক্ষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এক বাণীতে বলেছেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা বহুদলীয় গণতন্ত্রের মৌলিক উপাদান। গণতন্ত্রের নিরাপত্তা ও স্থায়িত্ব দিতে হলে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।

রোববার মধ্যরাতে পাঠানো এক বাণীতে তিনি বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৬ জুন বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কালো দিবস। এদিন তৎকালীন শাসকগোষ্ঠী সব দল বাতিল করে একদলীয় বাকশাল কায়েম করে। তাদের অনুগত চারটি সংবাদপত্র রেখে জাতিকে নির্বাক করে দিয়েছিল। বিভিন্ন সংবাদপত্রে কর্মরত অসংখ্য সংবাদকর্মী বেকার হয়ে পড়েন। তাদের রুজি-রোজগার ও সন্তানদের ভবিষ্যৎ নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়।’

তিনি বলেন, ‘একাত্তরের যুদ্ধের মূল চেতনা ছিল বাংলাদেশের ভৌগোলিক স্বাধীনতা অর্জন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা। গণতন্ত্রে মানুষের নাগরিক স্বাধীনতা নিশ্চিত হয় এবং এর মূল শর্ত হলো বাক, চিন্তা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা। সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় ভিন্নমত প্রকাশের সুযোগ থাকায় রাষ্ট্র ও সমাজ জবাবদিহির আওতায় আসে এবং দেশের সরকার গঠনে নাগরিকের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘ক্ষমতাসীনরা স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল চেতনার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথচলাকে স্তব্ধ করে দিয়ে একদলীয় বাকশাল কায়েম করে। পরে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এ দেশের কাঙ্ক্ষিত বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তন করেন। বাকশাল সরকারের সব ধরনের অগণতান্ত্রিক কালাকানুন বাতিল করে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করেন।’

তারেক রহমান উল্লেখ করেন, ‘সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ মূলত চিন্তা ও বিবেককে বন্দি রাখা। শেখ মুজিবুর রহমানের মতো তার মেয়ে শেখ হাসিনাও একই পথ ধরে তাদের প্রকৃত দর্শন একদলীয় ব্যবস্থার পুনঃপ্রবর্তন করেছিল নতুন আঙ্গিকে। নানা কালাকানুন প্রণয়ন করে সাংবাদিক ও সংবাদপত্রের ওপর অব্যাহত জুলুম চালিয়েছে তারা।’

সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদের সই করা বাণীতে বলা হয়, বাংলাদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছিল। সত্য উচ্চারণ করলেই নেমে আসত নির্যাতনের খড়্গ। বাংলাদেশের গণমাধ্যম কর্মীসহ সব পর্যায়ের মানুষকে সার্বক্ষণিক শঙ্কিত থাকতে হয়েছে।

তারেক রহমান আরও বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টের মতো একের পর এক ড্রাকোনিয়ান (কঠোর) আইন প্রণয়ন করে সংবাদপত্র ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে ভয়াল দুর্গে বন্দি করা হয়েছিল। বিগত ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের পর গণমাধ্যম কিছুটা স্বাধীনতা ভোগ করলেও এখনও ফ্যাসিবাদী শক্তির হাত থেকে পুরোপুরি মুক্ত নয়।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে: তারেক রহমান
  • খুলনায় আওয়ামী লীগ নেতাকে বেধড়ক পেটানোর পর পুলিশে সোপর্দ