ভারতে হোলির ব্যবসা হতে পারে ৬০ হাজার কোটি রুপির
Published: 10th, March 2025 GMT
ধর্মীয় উৎসব অর্থনীতিতে গতি নিয়ে আসে। উৎসবকেন্দ্রিক নির্দিষ্ট কিছু কার্যক্রম থাকে। তাতে নির্দিষ্ট কিছু পণ্যের বেচাকেনা বাড়ে। হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম উৎসব এই হোলি। কনফেডারেশন অব অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্সের (সিএআইটি) প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, হোলি উপলক্ষে এবার ভারতে ৬০ হাজার কোটি রুপির ব্যবসা হবে।
সারা ভারতে ধুমধাম করে উদ্যাপিত হয় রঙের উৎসব হোলি। শুধু হিন্দু সম্প্রদায় নয়, অন্য সম্প্রদায়ের লোকজনও এই উৎসবে মেতে ওঠেন। ফলে স্বাভাবিকভাবেই অর্থনীতিতে তার ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। উৎসব মানেই খাওয়াদাওয়া, কেনাকাটা, উপহার দেওয়া-নেওয়া। এর জেরে বিক্রিও বাড়ে। হোলিতেও তার ব্যতিক্রম হয় না। রং ও আবির থেকে শুরু করে মিষ্টি বা জামাকাপড়ের বিক্রি বেড়ে যায় হোলি উৎসবকে কেন্দ্র করে। খবর লাইভ মিন্ট।
এ বছর ১৪ মার্চ ভারতে হোলি উৎসব। তবে সব জায়গায় এক দিনে এই উৎসব হবে না, কোনো কোনো অঞ্চলে ভিন্ন দিনে উদ্যাপিত হবে এই উৎসব। এখন থেকেই সেই উৎসব উপলক্ষে কেনাকাটা শুরু হয়েছে। এসব মিলিয়েই ব্যবসার পরিমাণ ৬০ হাজার কোটিতে পৌঁছে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। গত বছর এই অঙ্ক ছিল ৫০ হাজার কোটি রুপি। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় হোলিতে ব্যবসা বাড়বে প্রায় ২০ শতাংশ, এমনটাই আশা করছে সিএআইটি। এর মধ্যে ভারতের রাজধানী দিল্লিতেই ব্যবসা হতে পারে আট হাজার কোটি রুপির।
গত কয়েক বছরের মতো এবার হোলিতে চীনের জিনিস বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ভারতীয় ব্যবসায়ীদের একাংশ। এর জেরে ভারতে তৈরি হারবাল রং, আবির, পিচকারি, বেলুন, পূজার জিনিস বিক্রি বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে মিষ্টি, শুকনা ফল, ফুল ও উপহারসামগ্রীর বিক্রি গতবারের চেয়েও বেশি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। মুদিপণ্য, দীর্ঘস্থায়ী ভোগ্যপণ্যের চাহিদাও বাড়বে বলে উঠে এসেছে ওই প্রতিবেদনে। হোলিকেন্দ্রিক পোশাকের বিক্রিও চাঙা থাকবে। এসব মিলিয়েই হোলিতে ভারতের অর্থনীতিতে বেশ গতি আসবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
হোলির দিন মানুষ একে অপরের গায়ে রং মাখিয়ে দেন। সে কারণে সেদিন একাধিক জামাকাপড়ের প্রয়োজন হয়। এই বাস্তবতায় ভারতের বাজারে ইতিমধ্যে টি-শার্ট, কুর্তা-পাজামা ও সালোয়ার কামিজের বিক্রি বেড়েছে। একই সঙ্গে হ্যাপি হোলি লেখা টি-শার্টের চাহিদা বাড়ছে।
সিএআইটির পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, এ বছর রং বা আবির কেনার ক্ষেত্রে ক্রেতাদের মধ্যে হারবাল বা প্রাকৃতিক রং কেনার চাহিদা বেড়েছে। রাসায়নিক রং পরিহার করার চেষ্টা করছেন তাঁরা।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সিডনিতে ড্র অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের কেউ না থাকায় হতাশ প্রবাসীরা
সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে সিডনির ঐতিহাসিক টাউন হল যেন পরিণত হলো এক রঙিন উৎসবের মঞ্চে। ঝকঝকে আলোর ঝলকানি, দৃষ্টিনন্দন সাজসজ্জা, নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা আর বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে দলে দলে আসা অতিথিদের পদচারণে মনে হচ্ছিল এ যেন কোনো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব বা পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। অথচ এটি ছিল ২০২৬ নারী এশিয়ান কাপ ফুটবলের ড্র অনুষ্ঠান, যেখানে এশিয়ার সেরা নারী ফুটবল দলগুলোর ভাগ্য নির্ধারিত হচ্ছিল।
বিকেল সাড়ে পাঁচটায় দরজা খোলার আগেই টাউন হলের সামনে জড়ো হয়েছিলেন নানা দেশের ফুটবলপ্রেমীরা। তাঁদের হাতে নিজ নিজ দেশের পতাকা, পরনে ঐতিহ্যবাহী পোশাক। অস্ট্রেলিয়া, চীন, উত্তর কোরিয়া, জাপান, ভারত, ভিয়েতনাম, উজবেকিস্তান, ফিলিপাইন, ইরানসহ ১১টি দেশের ফুটবল দলের প্রতিনিধি, অধিনায়ক বা কোচের কেউ না কেউ সেখানে উপস্থিত ছিলেন। বিশ্ব ফুটবলের এই মিলনমেলায় সবাই নিজ দেশের নাম উজ্জ্বল করতে এসেছেন। কিন্তু এই আলো ঝলমলে মঞ্চে ছিলেন না বাংলাদেশের নারী ফুটবল দলের কোনো প্রতিনিধি।
অস্ট্রেলিয়ায় বিশ্ব ফুটবলের এত বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ একটি আয়োজন হলো, অথচ বাংলাদেশের কোনো প্রতিনিধি নেই—এটা মেনে নেওয়া যায় না, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা এখানে এসেছিলাম আমাদের মেয়েদের দেখতে, নিজেদের দেশের জার্সি গায়ে দেওয়া তারকাদের সঙ্গে ছবি তুলতে চেয়েছিলাম।সাঈদ ফয়েজ, অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী সাংস্কৃতিক কর্মী ও ইভেন্ট সংগঠকঅথচ এটা বাংলাদেশের জন্য ইতিহাস গড়ার বছর। এই প্রথম বাংলাদেশের মেয়েরা এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নিয়েছেন। কিন্তু সেই গৌরবময় মুহূর্তে, যখন বিশ্ব ফুটবল পরিবার সিডনিতে একত্র, তখন মঞ্চে অনুপস্থিত বাংলাদেশ। না কোনো ফুটবলার, না কোচ, না বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) কোনো কর্মকর্তা। এই অনুপস্থিতি ছিল অত্যন্ত দৃষ্টিকটু এবং বেদনাদায়ক, কারণ মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন ভারতের তারকা খেলোয়াড়সহ অন্যান্য দেশের ক্রীড়া ব্যক্তিত্বরা। তাঁরা ট্রফির পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, বিশ্ব গণমাধ্যমের সামনে নিজেদের দেশকে তুলে ধরেছেন, আর স্মৃতির ক্যামেরায় ধরে রাখছেন ঐতিহাসিক মুহূর্ত। আর বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্বের জায়গাটিতে খাঁ খাঁ শূন্যতা।
ভারত নারী দলের মিডফিল্ডার সংগীতা বাসফোর ড্র–তে বাংলাদেশের নাম তোলেন