মাগুরার সেই শিশুর মৃত্যু প্রসঙ্গে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অধ্যক্ষ সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী বলেছেন, বিচারপ্রক্রিয়া বিলম্বিত হলে জনগণ আইন হাতে তুলে নিতে বাধ্য হবে। শিশু-নারী ধর্ষণ ও নিপীড়নের ঘটনাসহ সব বিচারপ্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করতে সরকারের নানা পদক্ষেপের কথা শোনা গেলেও বাস্তবে এর কিছুই দেখা যাচ্ছে না।

শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের টিসিবি (ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ) মিলনায়তনে এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ‘বৈষম্যহীন কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সিয়ামের ভূমিকা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তরের ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।

মাগুরার শিশুটির সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে ইসলামের ‘ব্যভিচার আইন’ রাষ্ট্রীয়ভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে বলে মনে করেন সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ। তিনি বলেন, ‘মানুষ ক্রমে আইন হাতে তুলে নিতে অভ্যস্ত হচ্ছে। এটা রাষ্ট্রের জন্য ভালো লক্ষণ নয়। সব জায়গায় এর প্রভাব ছড়িয়ে পড়ে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে উঠছে। জুলাই-আগস্ট পরবর্তী বাংলাদেশে এটা কাম্য ছিল না।’

ইফতার মাহফিলে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দলের সহকারী মহাসচিব মুফতি সৈয়দ এছহাক মুহাম্মাদ আবুল খায়ের বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে পুলিশের চেইন অব কমান্ড ভেঙে গেছে। ফলে পুলিশ সক্রিয় ভূমিকা পালন না করায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। প্রশাসনে ঘাপটি মেরে থাকা ফ্যাসিস্টদের সহযোগীরা নানাভাবে ষড়যন্ত্র করছে। অন্তর্বর্তী সরকারকে এসব কঠোর হস্তে দমন করতে হবে।’

সভায় সভাপতির বক্তব্যে অধ্যক্ষ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ বলেন, ‘কোনো বিশেষ দল বা দেশের অশুভ শক্তির চাপে কোনোভাবেই স্থানীয় নির্বাচন জাতীয় নির্বাচনের পরে আয়োজন করা যাবে না। এমনটা হলে জুলাই-আগস্টের শহীদ ও তাঁদের পরিবারের সঙ্গে গাদ্দারি করা হবে। এ দেশে আবারও স্বৈরাচারের বীজ বপন হবে।’

নগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুহাম্মাদ আরিফুল ইসলামের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে সভায় বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমের (এমআইএস) সহকারী অধ্যাপক আরিফুল ইসলাম ও খেলাফত মজলিসের আনোয়ার হোসাইন প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের পরবর্তী শুনানি বুধবার

রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের (রিভিউ) ওপর পরবর্তী শুনানির জন্য আগামীকাল বুধবার দিন রেখেছেন আপিল বিভাগ। আজ মঙ্গলবার শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের বেঞ্চ পরবর্তী ওই দিন ধার্য করেন।

এর আগে গত ১৮ মে শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ শুনানির জন্য ১ জুলাই দিন ধার্য করেছিলেন। ধার্য তারিখে বিষয়টি শুনানির জন্য রিভিউ আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবীর সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ ১৫ জুলাই পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন। আজ বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকার ৭ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।

ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স সংশোধন করে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। পরে ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। রায়ে রাষ্ট্রের সাংবিধানিক পদধারীদের পদক্রম ওপরের দিকে রাখা ও অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়। পাশাপাশি জেলা জজদের পদক্রম আট ধাপ উন্নীত করে সচিবদের সমান করা হয়।

আপিল বিভাগের রায়ের পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতির পদক্রম এক ধাপ উন্নীত করে জাতীয় সংসদের স্পিকারের সমান এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের (স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদক ও মহান স্বাধীনতাসংগ্রামে অংশগ্রহণ করে যে মুক্তিযোদ্ধারা বীর উত্তম খেতাব পেয়েছেন) পদক্রমে যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত বলে উল্লেখ করা হয়।

ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) তৎকালীন চেয়ারম্যান ২০১৭ সালে পৃথক আবেদন করেন। রিভিউ আবেদনে রাষ্ট্রের ৯০ জন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল পক্ষভুক্ত হন। পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের ওপর গত ২৭ এপ্রিল শুনানি শুরু হয়।

আজ আদালতে রিভিউ আবেদনকারী মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন শুনানি করেন। রিট আবেদনকারী পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম শুনানিতে অংশ নেন।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী, ১৯৮৬ সালে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরি করে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর একই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর তা জারি করা হয়। পরে বিভিন্ন সময়ে তা সংশোধন করা হয়।

সর্বশেষ সংশোধন করা হয় ২০০৩ সালের ডিসেম্বরে। সংশোধিত এই ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরির ক্ষেত্রে সাংবিধানিক পদ, সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত ও সংজ্ঞায়িত পদগুলো প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিচের ক্রমিকে রাখা হয়েছে—এমন উল্লেখ করে এর বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের তৎকালীন মহাসচিব মো. আতাউর রহমান ২০০৬ সালে রিট করেন।

রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট আট দফা নির্দেশনাসহ ১৯৮৬ সালের ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স (সংশোধিত) অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ২০১১ সালে আপিল করে। এ আপিলের ওপর শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ২০১৭ সালে করা আবেদনের ওপর শুনানি চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আসামির কাঠগড়ায় সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের ৪৫ মিনিট
  • পরবর্তী সরকারের পক্ষে এত সহজে সংস্কার আকাঙ্ক্ষাকে উপেক্ষা করা সম্ভব হবে না: আসিফ নজরুল
  • বিসিআইসির নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ
  • এলডিসি উত্তরণের পরবর্তী প্রস্তুতি নিতে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন
  • ৪৪তম বিসিএস: মনোনীত প্রার্থীদের তথ্য চেয়ে পুনরায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ
  • ‘আগামীর বাংলাদেশে মিডিয়াকে দালাল হিসেবে দেখতে চাই না’ 
  • ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের পরবর্তী শুনানি বুধবার
  • মাইলস্টোনে দগ্ধ ৩৩ জন এখনো ভর্তি, আইসিইউতে ৩
  • শেখ হাসিনার অডিওগুলো শুনলে বোঝা যায়, তাঁর এখনো প্রতিশোধ নেওয়ার ইচ্ছা আছে: আইন উপদেষ্টা
  • দ্বিতীয় প্রান্তিকে ব্র্যাক ব্যাংকের মুনাফা বেড়েছে