বিচারপ্রক্রিয়া বিলম্বিত হলে জনগণ আইন হাতে তুলে নিতে বাধ্য হবে: ইসলামী আন্দোলন
Published: 14th, March 2025 GMT
মাগুরার সেই শিশুর মৃত্যু প্রসঙ্গে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অধ্যক্ষ সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী বলেছেন, বিচারপ্রক্রিয়া বিলম্বিত হলে জনগণ আইন হাতে তুলে নিতে বাধ্য হবে। শিশু-নারী ধর্ষণ ও নিপীড়নের ঘটনাসহ সব বিচারপ্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করতে সরকারের নানা পদক্ষেপের কথা শোনা গেলেও বাস্তবে এর কিছুই দেখা যাচ্ছে না।
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের টিসিবি (ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ) মিলনায়তনে এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ‘বৈষম্যহীন কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সিয়ামের ভূমিকা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তরের ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।
মাগুরার শিশুটির সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে ইসলামের ‘ব্যভিচার আইন’ রাষ্ট্রীয়ভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে বলে মনে করেন সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ। তিনি বলেন, ‘মানুষ ক্রমে আইন হাতে তুলে নিতে অভ্যস্ত হচ্ছে। এটা রাষ্ট্রের জন্য ভালো লক্ষণ নয়। সব জায়গায় এর প্রভাব ছড়িয়ে পড়ে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে উঠছে। জুলাই-আগস্ট পরবর্তী বাংলাদেশে এটা কাম্য ছিল না।’
ইফতার মাহফিলে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দলের সহকারী মহাসচিব মুফতি সৈয়দ এছহাক মুহাম্মাদ আবুল খায়ের বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে পুলিশের চেইন অব কমান্ড ভেঙে গেছে। ফলে পুলিশ সক্রিয় ভূমিকা পালন না করায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। প্রশাসনে ঘাপটি মেরে থাকা ফ্যাসিস্টদের সহযোগীরা নানাভাবে ষড়যন্ত্র করছে। অন্তর্বর্তী সরকারকে এসব কঠোর হস্তে দমন করতে হবে।’
সভায় সভাপতির বক্তব্যে অধ্যক্ষ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ বলেন, ‘কোনো বিশেষ দল বা দেশের অশুভ শক্তির চাপে কোনোভাবেই স্থানীয় নির্বাচন জাতীয় নির্বাচনের পরে আয়োজন করা যাবে না। এমনটা হলে জুলাই-আগস্টের শহীদ ও তাঁদের পরিবারের সঙ্গে গাদ্দারি করা হবে। এ দেশে আবারও স্বৈরাচারের বীজ বপন হবে।’
নগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুহাম্মাদ আরিফুল ইসলামের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে সভায় বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমের (এমআইএস) সহকারী অধ্যাপক আরিফুল ইসলাম ও খেলাফত মজলিসের আনোয়ার হোসাইন প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
ডাকসুর ব্যালট পেপারে ২ ভোট নিয়ে যা বলছে নির্বাচন কমিশন
গত ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে টিএসসি কেন্দ্রে এক ব্যালট পেপারে পূর্বেই দুই ভোট থাকার অভিযোগ তোলেন এক শিক্ষার্থী।
ঘটনাটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার পর এ নিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
আরো পড়ুন:
প্রথম কার্যনির্বাহী সভায় সিনেটে ৫ ছাত্র প্রতিনিধি ঠিক করল ডাকসু
ডাকসু নির্বাচনে জয়ী ৭ নারী
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ডাকসু নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার অফিস থেকে চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক ড. মো. জসিম উদ্দিন স্বাক্ষরিত ‘টিএসসি কেন্দ্রের অভিযোগ প্রসঙ্গে আমাদের বক্তব্য' শীর্ষক এক বিবৃতিতে এ ব্যাখ্যা প্রদান করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের দিন আনুমানিক সকাল ১১টা নাগাদ টিএসসি কেন্দ্র থেকে কেন্দ্র প্রধান আমাকে ফোনে জানান, একজন ছাত্রী (ভোটার) এক নম্বর টেবিল থেকে ব্যালট গ্রহণ করে বুথে প্রবেশ করেন। প্রায় ১ মিনিটের বেশি সময় পর তিনি বুথ থেকে বের হয়ে দাবি করেন, তার একটি ব্যালটে দুটি প্রার্থীর পক্ষে পূর্ব থেকেই ক্রস চিহ্ন দেওয়া ছিল।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, ছাত্রীটি ওই ব্যালটে ভোট প্রদান করতে অস্বীকৃতি জানান। পরবর্তীতে সেখানে উপস্থিত পোলিং অফিসার এবং ভোট ব্যবস্থাপকদের সহায়তায় তার কাছ থেকে চিহ্নিত ব্যালটটি সংগ্রহ করে আলাদা একটি প্যাকেটে সংরক্ষণ করা হয় এবং তাকে নতুন করে ব্যালটের ১ নম্বর পাতাটি প্রদান করা হয়। পরে তিনি পুনরায় বুথে প্রবেশ করে ভোট দেন এবং চলে যান।
ঘটনার বিষয়ে অবহিত হওয়ার পরপরই আমি চিহ্নিত ব্যালটটি সংরক্ষণ করার নির্দেশ দেই এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বিষয়টি তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠনের অনুরোধ জানাই। পরে সেখানে উপস্থিত তিনজন শিক্ষককে আমরা ঘটনাটি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করি এবং তাদের বর্ণনার সঙ্গে কেন্দ্র প্রধানের বক্তব্যের মিল পাওয়া যায়। ফলে ঘটনাটি তাৎক্ষণিকভাবে মীমাংসিত হয় এবং প্রচলিত নিয়ম ও প্রক্রিয়ায় কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি।
বিবৃতিতে রিটার্নিং কর্মকর্তারা জানান, পরবর্তীতে আমাদের হাতে ঘটনাটির ভিডিও ফুটেজ আসে। ফুটেজ পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, সংশ্লিষ্ট ছাত্রী চারবার বুথে প্রবেশ করেন। প্রথমবার আনুমানিক ৪০ সেকেন্ড, দ্বিতীয়বার আনুমানিক ৬৬ সেকেন্ড, তৃতীয়বার আনুমানিক ২ সেকেন্ড এবং চতুর্থবার আনুমানিক ১০ মিনিটেরও বেশি সময় বুথে অবস্থান করেন। শেষ পর্যন্ত তিনি ভোট দিয়ে কেন্দ্র ত্যাগ করেন।
তবে ভোটকেন্দ্রে তার বারবার বুথে প্রবেশ ও বের হওয়া এবং সেখানে উপস্থিত একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে আলাপচারিতা আমাদের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ ও সন্দেহজনক বলে মনে হয়েছে। বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখছি।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী