বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ বলেছেন, “ছাত্রদের বৃহত্তর ঐক্য যেন নষ্ট না হয়। গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে সবচেয়ে কঠিন বিষয় হলো, ঐক্য ধরে রাখা।”

রবিবার (১৬ মার্চ) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের উদ্যোগে ‘২৪ জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের ভূমিকা ও পরবর্তী করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, “আমরা যেন ভুলে না যাই, কিভাবে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হয়। আমরা এমন ব্যবস্থায় ফিরে যেতে চাই না। যেখানে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ছিল না, মানবাধিকার ও ভোটাধিকার ছিল না, স্বাধীনভাবে রাজনীতি, মিছিল-মিটিং করা যেত না। আমাদের প্রতিজ্ঞা করা উচিত—আমরা যেন আর কখনো ফ্যাসিবাদী বা কর্তৃত্ববাদী ব্যবস্থায় ফিরে না যাই।”

তিনি আরো বলেন, “গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে অনেকেই অনেককিছু চায়। তাই বিভিন্ন জন নানা দাবিদাওয়া নিয়ে আন্দোলন করছে, রাজপথে নামছে। ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে যারা কাঁধে কাঁধ রেখে কাজ করেছেন, তাদের মাঝেও এখন বিভাজন দেখা যাচ্ছে। এটি বাস্তব কারণ—একটি গণঅভ্যুত্থানের সময় সমাজের প্রত্যেকটি স্তরের মানুষ তাদের মতাদর্শ নিয়ে এতে যুক্ত হয়। কিন্তু যখন অভ্যুত্থান সফল হয়, তখন প্রত্যেকেই দেশ গঠনের বিষয়ে নিজস্ব মতামত দিতে শুরু করে।”

মাহবুব মোর্শেদ বলেন, “এটি স্বাভাবিক। তবে আমাদের মনে রাখতে হবে, এ দাবিগুলো জানাতে গিয়ে গণ-অভ্যুত্থানে যে ঐক্য তৈরি হয়েছিল, তা যেন বিনষ্ট না হয়। ঐক্যের প্রধান শিক্ষা হলো—পারস্পরিক বিভেদ ও মতাদর্শগত ভিন্নতা থাকা সত্ত্বেও আমরা যেন ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারি।”

জবি প্রেসক্লাবের সভপতি সুবর্ণ আসসাইফের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আহনাফ তাহমিদ ফাইয়াজের সঞ্চালনায় এতে উপস্থিত ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড.

সাবিনা শরমীন, দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস এর সম্পাদক মাহবুব রনি।

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ ছাড়াও প্রেসক্লাবের সাবেক ও বর্তমান নেতারা, ছাত্রদল, ইসলামী ছাত্রশিবির, ছাত্র অধিকার পরিষদ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন ক্রিয়াশীল সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

দেশে বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের ধারণা দিয়েছিলেন এম এন লারমা

মানবেন্দ্র নারায়ণ (এম এন) লারমাই দেশে প্রথম আত্মপরিচয়ের রাজনীতিকে বৈজ্ঞানিকভাবে চিহ্নিত করেছিলেন। তিনি প্রথম দেশে কাঠামোগতভাবে আত্মপরিচয়ের রাজনীতিকে স্পষ্ট করেন। একটি বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের ধারণা দিয়েছিলেন তিনি।

পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য এম এন লারমার ৮৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সোমবার রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।

‘বিপ্লবী মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার ৮৬ম জন্মবার্ষিকী উদ্‌যাপন কমিটি’ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়।

আলোচনা সভায় লেখক ও গবেষক পাভেল পার্থ বলেন, ১৯৫৫-৬৫ সালের মধ্যে তৈরি হওয়া ‘বাইনারি বিভাজন’ পরবর্তীকালে প্রতিষ্ঠা করেছে বাংলাদেশে সরকার। ‘বাইনারি’ মনস্তত্ত্বকে এখনো এই দেশে টিকিয়ে রাখা হয়েছে। এম এন লারমা ‘বাঙালি হেজিমনি’র বিরুদ্ধে আত্মপরিচয়ের বয়ান বাঁচিয়ে রাখতে তৎকালে জোরালো প্রতিবাদ করেছিলেন।

জেএসএসের কেন্দ্রীয় সদস্য দীপায়ন খীসা বলেন, কাপ্তাই বাঁধ না করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়েই ছাত্র এম এন লারমার প্রতিবাদী জীবন শুরু হয়। চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানের পর যে বৈষম্যহীন, অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের কথা বলা হচ্ছে, এম এন লারমা ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নকালেই এসব বিষয় নিয়ে জোরালো বক্তব্য দিয়েছিলেন।

দীপায়ন খীসা বলেন, ‘সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশন বা জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কখনো ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের সঙ্গে সংলাপ করেনি। আমরাও এই দেশের অংশ। তাহলে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের কেন কোনো সংলাপে অংশগ্রহণ করার জন্য আহ্বান জানানো হলো না?’ তিনি বলেন, চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদেরও অংশীদারত্ব আছে। কিন্তু অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে তাদেরই ভুলে গেল এই সরকার।

সভাপতির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়কারী জাকির হোসেন বলেন, ‘বাঙালি হয়ে যাও’ কথাটার পেছনে বাঙালি মুসলিমদের জাত্যভিমানের ব্যাপারটি রয়েছে। এম এন লারমা বাংলাদেশের মধ্যে থেকে নিজেদের অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য আন্দোলন শুরু করেছিলেন। সেই আন্দোলনের প্রেক্ষিতে পরবর্তীকালে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি’ নামে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক শান্তিময় চাকমার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের অর্থ সম্পাদক মেইনথিন প্রমীলা, সাংবাদিক এহসান মাহমুদ, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অং শোয়ে সিং মারমা।

অনুষ্ঠানটি শুরু হয় এম এন লারমাকে সম্মান জানিয়ে কবিতা পাঠের মাধ্যমে। কবিতা পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রেই চাকমা ও লাল নিকিম বম। কবিতা আবৃত্তির পর এম এন লারমার জীবনবৃত্তান্ত পাঠ করেন হিল উইমেন্স ফেডারেশন ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক রিয়া চাকমা।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের তথ্য প্রচার ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক হিরণ মিত্র চাকমা, জেএসএসের কেন্দ্রীয় স্টাফ সদস্য অনন্ত বিকাশ ধামাই, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি শান্তিদেবী তঞ্চঙ্গ্যা, পিসিপি ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি জগদীশ চাকমা, বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অনন্ত তঞ্চঙ্গ্যা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মন্ত্রীদের জন্য গাড়ি কেনার অতিআগ্রহ নিয়ে প্রশ্ন টিআইবির
  • আগামী সরকারের মন্ত্রীদের জন্য গাড়ি কেনার অতি আগ্রহের কারণ কী, প্রশ্ন টিআইবির
  • ডাকসুর ব্যালট পেপারে ২ ভোট নিয়ে যা বলছে নির্বাচন কমিশন
  • নরসিংদীতে ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি স্থগিত
  • দক্ষিণ এশিয়ায় জেন–জি বিপ্লবের পরবর্তী নিশানা কে
  • নেপাল, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা: দক্ষিণ এশিয়ায় জেন–জি বিপ্লবের পরবর্তী নিশানা কে
  • গাজায় পাগলের মতো বোমা ফেলছে ইসরায়েল
  • ফতুল্লা পুলিশের সহায়তায় আপন ঠিকানায় মানসিক প্রতিবন্ধী নারী
  • দেশে বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের ধারণা দিয়েছিলেন এম এন লারমা
  • ফতুল্লায় প্রতারণা করে ১৫ লাখ টাকার রড নিলো প্রতারক চক্র, কুমিল্লায় গ্রেপ্তার ৩