Samakal:
2025-08-01@04:49:01 GMT

সম্প্রীতির ইফতার

Published: 16th, March 2025 GMT

সম্প্রীতির ইফতার

বিকেল বাড়ার সঙ্গে ক্যাম্পাসে বাড়তে থাকে ব্যস্তুতা। কেউ ক্যাফেটেরিয়ায় যাচ্ছে, কেউ যাচ্ছে গেটে। কার আগে কে যাবে চলে সেই প্রতিযোগিতা। ফেরার পথে কারও হাতে থাকছে মুড়ি, কারও হাতে ছোলা, আলুর চপ, পেঁয়াজু। এরপর চলে জায়গা খোঁজার প্রতিযোগিতা। মাঠের কোথায় ঘাস আছে, চত্বরের কোন জায়গাটা পরিষ্কার আছে সে জায়গায় বসে পড়া। সূর্য ডোবার আগ মুহূর্তে চলে মুড়ি, ছোলা, পেঁয়াজু, শরবত তৈরির প্রস্তুতি। এই দৃশ্য পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রব)। রমজানের শুরু থেকে এভাবেই ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের ইফতারের আয়োজন চলে। এবারের রমজানে ক্লাস, পরীক্ষা থাকার কারণে অধিকাংশ শিক্ষার্থীই বাড়ি যেতে পারেননি। ক্যাম্পাসে ক্লাস পরীক্ষা চলবে আঠারো রমজান পর্যন্ত। তাই শিক্ষার্থীদের এবারের সাহ্‌রি ও ইফতার সারতে হচ্ছে ক্যাম্পাসেই। অধিকাংশ শিক্ষার্থী  মেসে এবং হলে সাহ্‌রি করলেও ইফতার করতে আসেন ক্যাম্পাসে। বিকেলে 
বন্ধু, সিনিয়র, জুনিয়রদের সঙ্গে বসে শেষ করেন ইফতারি।  প্রতিদিন ক্লাস, পরীক্ষা শেষ করে বিকেলে ক্যাম্পাসে এক এক করে আসতে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ, স্বাধীনতা চত্বর, শহীদ মিনার, মুক্তমঞ্চ, এলিভেটেডের ওপরে এবং লেক পাড়ে নিজেদের পছন্দমতো জায়গা খুঁজে নেন। এর পর শুরু হয় ইফতারের আয়োজন।  ইফতারি কেউ ক্যাফেটেরিয়া থেকে কেনেন কেউ আবার ক্যাম্পাস গেট থেকে। এর পাশাপাশি অনেকে মেস থেকে তৈরি করে আনেন, অনেকে আবার অনলাইনে অর্ডার করেন। নানা প্রকারের ইফতারির পসরা নিয়ে শুরু হয় প্রস্তুতি পর্ব। কোন গ্রুপ পেপার আনতে যাচ্ছে, কোন গ্রুপ প্লেট নিয়ে আসছে। কেউ ফল কাটছে, শরবত বানাচ্ছেন, কেউ ছোলা, পেঁয়াজু, আলুর চপ, বেগুনি মাখাচ্ছে, কেউ বিতরণ করছে। এ যেন এক রীতিমতো এক উৎসব। গল্প আর আড্ডায় চলতে থাকে এই উৎসব। এই ইফতারে সিনিয়র, জুনিয়র পার্থক্য থাকে না। পার্থক্য থাকে না কে মুসলমান কে হিন্দু। সৌহার্দ্য আর সম্প্রীতি এক বিরল দৃশ্যের দেখা মেলে প্রতিদিনের ইফতারে।
বন্ধুদের সঙ্গে ইফতারের সময় মনে পড়ে যায় পরিবারের কথা। মায়ের হাতে বানানো সেই ইফতারের স্বাদ যেন অমৃত। তবু জীবনের তাগিদেই পরিবারের বাইরে ইফতার। তবে এই জায়গাটি যেন আরেকটি পরিবার।  পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের মাহি বিন জাকির বলেন, ‘বাসায় থাকলে সাহ্‌রি, ইফতার পরিবারের সঙ্গেই হতো। কিন্তু ক্লাস পরীক্ষার কারণে সেটা সম্ভব হচ্ছে না। ক্যাম্পাসে সবাই মিলে ইফতার করি। এটাও একটা পরিবার।’ পরিসংখ্যান বিভাগের শ্রী তন্ময় কুমার বলেন, ‘ইফতারি 
আমাদের মাঝে একটা সাম্প্রতিক বন্ধন তৈরি করে। ক্যাম্পাসের ইফতারে কেউ ধর্ম, বর্ণ খোঁজে না। রমজানের এই সময়টাতে 
পুরো ক্যাম্পাসে ইফতারের আয়োজন নিয়ে একটা উৎসব 
বিরাজ করে।’v

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইফত র ইফত র র র ইফত র পর ক ষ পর ব র রমজ ন

এছাড়াও পড়ুন:

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৬০ দিন পর শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীরা, উৎসবের আমেজ

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) দীর্ঘ ১৬০ দিন পর একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে টানা বৃষ্টি উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে এসেছেন। সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে বইছে উৎসবের আমেজ।

সকালে কুয়েট ক্যাম্পাসে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস। ছাতা মাথায় দল বেঁধে ছুটছেন ক্লাসরুমের দিকে। কখনো এক ছাতার নিচে দু-তিনজন। কারও সঙ্গে অভিভাবকও এসেছেন। সকাল নয়টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি শিক্ষাবর্ষের প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী ক্লাসে যোগ দেন। নতুন উপাচার্য অধ্যাপক মাকসুদ হেলালী বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে শ্রেণি কর্মসূচি পর্যবেক্ষণ করেন।

ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ইসিই) বিভাগের ২২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী দীপ্ত বলেন, ‘আমাদের প্রায় এক সেমিস্টার নষ্ট হয়ে গেছে। এই সময়টা খুব অস্বস্তিতে কেটেছে। ক্ষতি যা হওয়ার হয়েছে, তবে এখন আবার ক্লাস শুরু হওয়াটা ইতিবাচক দিক। আমরা আশাবাদী।’ একই ব্যাচের শিক্ষার্থী আম্মান বলেন, ‘অনেক দিন জীবনটা থেমে ছিল। আজকের দিনটা বিশেষ মনে হচ্ছে। ঠিক যেন স্কুলজীবনের প্রথম দিনের মতো। সব হতাশা কাটিয়ে আমরা অনেকটা নতুন করে শুরু করছি।’

হুমায়ুন কবির নামের এক অভিভাবক বলেন, ‘আমার ছেলে বিল্ডিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে পড়ে। পাঁচ মাস ধরে ক্লাস বন্ধ থাকায় ও মানসিকভাবে খুব চাপের মধ্যে ছিল। একসময় অসুস্থও হয়ে পড়ে। কুয়েটে এমন পরিস্থিতি আগে দেখিনি। কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করলে হয়তো আগেই খুলে যেত। তারপরও এখন অন্তত খুলেছে, এটা বড় স্বস্তি।’

কুয়েটের ছাত্র পরিচালক আবদুল্লাহ ইলিয়াস আক্তার বলেন, আজ থেকে কুয়েটে ক্লাস শুরু হয়েছে। তবে এখনো সব শিক্ষার্থী আসেননি। যাঁদের কেবল ক্লাস রয়েছে, তাঁরা অংশ নিচ্ছেন। যাঁদের পরীক্ষা ছিল, তাঁরা প্রস্তুতির জন্য কিছুটা সময় চেয়েছে। প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন হবে ১৪ আগস্ট, ক্লাস শুরু ১৭ আগস্ট।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে শতাধিক ব্যক্তি আহত হন। ওই রাতেই তৎকালীন উপাচার্য ও কয়েকজন শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ ওঠে। এরপর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২৬ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয় উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদ ও সহ-উপাচার্য অধ্যাপক শরিফুল আলমকে অব্যাহতি দেয়। ১ মে চুয়েটের অধ্যাপক হজরত আলীকে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনার বিচার দাবিতে ৪ মে থেকে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দেয় শিক্ষক সমিতি। এরপর কোনো শিক্ষকই ক্লাসে ফেরেননি। শিক্ষক সমিতির বিরোধিতার মুখে হজরত আলী দায়িত্ব পালন করতে না পেরে ২২ মে পদত্যাগ করেন।

এরপর ১০ জুন নতুন উপাচার্য নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয় সরকার। সেই ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার কুয়েটের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মাকসুদ হেলালী। পরদিন শুক্রবার তিনি খুলনায় এসে দায়িত্ব নেন। দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেন। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভায় আন্দোলন কর্মসূচি তিন সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে ক্লাসে ফেরার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে গতকাল সোমবার ক্লাস শুরুর নোটিশ জারি করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাইয়ের ১১ নাটক নিয়ে শিল্পকলায় উৎসব
  • ১৬ কোটি টাকায় সারা দেশে ফুটবলের তিন টুর্নামেন্ট
  • দুদিনের সফরে কলকাতায় ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু
  • ভৌতিক গল্প নিয়ে কানাডায় নুহাশ
  • তাহলে তো স্পন্সর নিয়ে প্রোগ্রাম করলেই চাঁদাবাজি: সালাউদ্দিন
  • সিডনিতে ড্র অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের কেউ না থাকায় হতাশ প্রবাসীরা
  • ‘মুক্তির উৎসব’ করতে সহযোগিতা চেয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সাবেক সমন্বয়কের আবেদন
  • এবার পরিবার নিয়ে ঘরে বসেই ‘উৎসব’
  • খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৬০ দিন পর শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীরা, উৎসবের আমেজ