ম্যাচের আগের দিন দুর্ঘটনায় মানজারুল ইসলাম রানার মৃত্যুসংবাদ পেয়েছিলেন তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু মাশরাফি বিন মুর্তজা। মাঠে নেমে সেই শোককে বানিয়ে ছিলেন প্রেরণা। মাশরাফি-ঝড়ে এলোমেলো হয়ে টেন্ডুলকার-গাঙ্গুলী-দ্রাবিড়ের ভারত অলআউট মাত্র ১৯১ রানে। সেটি বাংলাদেশ পেরিয়ে যায় তামিম, সাকিব ও মুশফিকের তিন ঝলমলে ফিফটিতে। ৫ উইকেটের জয়ে লেখা হয় বাংলাদেশ ক্রিকেটের দুর্দান্ত এক উপাখ্যান। পোর্ট অব স্পেনে ২০০৭ বিশ্বকাপের সেই ম্যাচ প্রথম আলো থেকে কাভার করেছিলেন উৎপল শুভ্র। পরের দিনের পত্রিকায় প্রকাশিত এই ম্যাচ রিপোর্ট পাঠকদের স্মৃতির ভেলায় ভাসিয়ে নিয়ে যাবে ১৮ বছর আগের সেই দিনে…

মানজারুল ইসলাম রানা কি এই ম্যাচটা দেখছিলেন? রহস্যময় অজানা যে ভূবনে চলে গেছেন তিনি, সেখানে কি ক্রিকেট-ফ্রিকেট নিয়ে কেউ মাথা ঘামায়? সেই জগতের আর কেউ না ঘামালেও কেন যেন মনে হয়, ক্রিকেট অন্তপ্রাণ রানা ঠিকই কুইন্স পার্ক ওভালের দিকে তাকিয়ে ছিলেন কাল।
ত্রিনিদাদের সেই কুইন্স পার্ক ওভালের দিকে, যেখানে বাংলাদেশের ক্রিকেটে যোগ হলো গৌরবের আরেকটি নতুন অধ্যায়। গত বিশ্বকাপের দুঃস্বপ্ন মুছে দিয়ে বাংলাদেশ দল ফিরিয়ে আনল ১৯৯৯ বিশ্বকাপের স্মৃতি। বিশ্বকাপ ইতিহাসে সবচেয়ে বড় আপসেট হিসেবে ’৯৬ বিশ্বকাপে কেনিয়ার কাছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পরাজয়ের পাশেই থাকে সেই বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের জয়। কাল ভারতের বিপক্ষে ৫ উইকেটের জয়ও ক্রিকেটীয় বিচারে আপসেটই। কিন্তু যে আপসেটের পূর্বাভাস দেওয়া যায়, সেটিকে কি আর তেমন আপসেট বলা যায়? বাংলাদেশ দল তো এখানে আসার পর থেকেই বলে আসছিল, ভারত-শ্রীলঙ্কার ভয়ে একদমই কম্পিত নয় তাদের হূদয়। নামে কী আসে যায়! মাঠে যারা ভালো খেলবে, তারাই জিতবে।

আরও পড়ুনশাকিবের সঙ্গে সিনেমা করার প্রস্তাব পেলে কী করবেন তাসকিন১১ ঘণ্টা আগে

তা ভালো বাংলাদেশ খেলল বটে। মাশরাফি-রাজ্জাক-রফিকের বোলিং, তামিম-সাকিব-মুশফিকের ব্যাটিং—এই ম্যাচের যা কিছু হাইলাইটস তার সবই তো বাংলাদেশের অবদান। ভারতের প্রবল পরাক্রান্ত ব্যাটিং লাইন আপ মাত্র ১৯১ রানেই শেষ। এরপর বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের যে শুরুটা হলো, সেটি অনেককেই ফিরিয়ে নিয়ে গেল ১৯৯৬ বিশ্বকাপে। সে বিশ্বকাপের জয়াসুরিয়া যেন তরুণতর হয়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং ওপেন করতে নামলেন। মাত্র ১৭ বছরের তামিম ইকবাল এক ইনিংসেই বদলে দিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেট সম্পর্কে বাকি বিশ্বের ধারণা। জহির খানের ওভারের প্রথম বল হেলমেটে লাগল। জাতীয় দলে এসেছেন এই সেদিন, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ার্মআপ ম্যাচটি ছাড়া আর কোনো বড় দলের সঙ্গে খেলার অভিজ্ঞতা নেই। তামিম এরপর কী করতে পারেন? যা করলেন, তা এতদিন অন্য দেশের ব্যাটসম্যানদের করতে দেখে এসেছি আমরা। জহির খানের ওই ওভারেরই শেষ দুই বলে দুই বাউন্ডারি। শেষটি ডাউন দ্য উইকেট বেরিয়ে এসে।

৫৩ বলে ৫১ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেছিলেন তামিম.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আপস ট

এছাড়াও পড়ুন:

রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন

অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।

এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।

আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।

অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’

ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।

অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।

কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’

অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’

এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।

আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফের রিজার্ভ ৩১ বিলিয়ন ডলার 
  • আমার স্বামীর উপরে কু-নজর পড়েছে: অঙ্কিতা
  • সম্পদ বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন করায় সাংবাদিকের ওপর ক্ষেপলেন ট্রাম্প
  • ‘আমি থানার ওসি, আপনার মোবাইল হ্যাকড হয়েছে’
  • অস্ট্রেলীয় সাংবাদিকের প্রশ্নে কেন চটে গেলেন ট্রাম্প, আলবানিজের কাছে নালিশেরও হুমকি দিলেন
  • কালিয়াকৈরে এক মাসে ২০ ডাকাত গ্রেপ্তার 
  • বাঁশির সুরে বিরহের কষ্ট ভুলতে চান রিকশাচালক শফিকুল
  • রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
  • ট্রেন থেকে পড়ে ৮ দিন ধরে হাসপাতালে ছেলে, ফেসবুকে ছবি দেখে ছুটে এলেন মা
  • ভাড়া বাসায় একা থাকতেন বৃদ্ধা, তার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার