ছোট-বড় বিষয় নয়, জাতির প্রয়োজনেই সংস্কার করতে হবে: জেএসডির সাধারণ সম্পাদক
Published: 17th, March 2025 GMT
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন বলেছেন, জাতির ঐতিহাসিক প্রয়োজনেই সংস্কার সম্পন্ন করতে হবে। এর ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেছেন, জাতীয়ভাবে রাজনীতির সংস্কারের ওপর নির্ভর করছে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের রূপরেখা। এটা ইচ্ছা-অনিচ্ছা বা ছোট-বড় বিষয় নয়, ঐতিহাসিক প্রয়োজনেই সংস্কার সম্পন্ন করতে হবে। বিদ্যমান নৈরাজ্যকর রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অবস্থার পরিবর্তনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কারের পদক্ষেপই হবে দেশের ভবিষ্যৎ।
আজ সোমবার বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নারীর প্রতি সহিংসতা, ধর্ষণ ও সন্ত্রাসের প্রতিবাদে এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠার দাবিতে জেএসডির এক বিক্ষোভ সমাবেশে শহীদ উদ্দিন মাহমুদ এ কথাগুলো বলেন।
সাম্প্রতিক সময়ে নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনার উল্লেখ করে জেএসডির সাধারণ সম্পাদক বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে অন্যায়, অবিচার ও নিরাপত্তার নৈরাশ্যমূলক সমাজব্যবস্থার উত্তরণ ঘটাতে হবে। নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা মনুষ্যত্বের মহিমাকে ভূলুণ্ঠিত করে। এই মনুষ্যত্ববিরোধী রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে ছুড়ে ফেলতে হবে। একটি মানবিক সমাজ এবং সুশাসন প্রতিটি ব্যক্তিকে পূর্ণ আত্মমর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করতে পারে। এ ধরনের রাষ্ট্রব্যবস্থা বিনির্মাণের লক্ষ্যেই জেএসডি অংশীদারত্বের গণতন্ত্রের রাজনৈতিক বন্দোবস্ত চায়।
প্রতিক্রিয়াশীল রাজনৈতিক তৎপরতার সমালোচনা করেন জেএসডির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি তানিয়া রব। তিনি বলেন, জীবনবিমুখ কোনো মতাদর্শ কিংবা ভাবধারা সমাজ গ্রহণ করবে না। সমাজবিচ্ছিন্ন হয়ে ইতিহাসের গতিপথের পরিবর্তন করা যায় না। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নারীকে ঘরে আবদ্ধ রাখার মতো কোনো প্রতিক্রিয়াশীল রাজনৈতিক মতবাদকে চাপিয়ে দেওয়া সম্ভব হবে না।
জেএসডির ঢাকা মহানগর পূর্ব শাখার আহ্বায়ক মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন দলের সহসভাপতি মোহাম্মদ সিরাজ মিয়া, কে এম জাবির, সৈয়দ বেলায়েত হোসেন, মোশারেফ হোসেন, মো.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
হিন্দুদের ভাগ্যোন্নয়নে প্রয়োজন ইসলামি সরকার: গোলাম পরওয়ার
স্বাধীনতার পর যারাই দেশ চালিয়েছে, তারা সবাই হিন্দুদের ব্যবহার করে শুধু নিজেদের ভাগ্যোন্নয়ন করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেছেন, হিন্দুদের ভাগ্যোন্নয়ন ও অবকাঠামো উন্নয়নে প্রয়োজন ইসলামি সরকার।
আজ শুক্রবার খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা স্বাধীনতা চত্বরে উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর হিন্দু কমিটির উদ্যোগে হিন্দু সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গোলাম পরওয়ার এ কথা বলেন। তিনি বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের ভাগ্যোন্নয়ন ও ডুমুরিয়া-ফুলতলাসহ দেশের সার্বিক অবকাঠামো উন্নয়নে এখন প্রয়োজন ইসলামি সরকার। যাঁরা দাঁড়িপাল্লার জোয়ার দেখে ভয়-হুমকি দিচ্ছে, তাদের হুমকিতে হিন্দুরা আর ভয় পাবে না। হিন্দুদের বাধা দিলে জনগণ প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।
গোলাম পরওয়ার বলেন, ৫৪ বছর যারা দেশ চালিয়েছে তারা সন্ত্রাস, দখলদারি ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে হিন্দুদের শোষণ করেছে। জামায়াত রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে দেশ থেকে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও দখলদারদের নির্মূল করা হবে। তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ পরিবর্তন চায়, আমরা সেই পরিবর্তন আনতে চাই। লাঙলের শাসন দেখেছি, ধানের শীষের শাসন দেখেছি, নৌকার শাসনও দেখেছি। একটি দলই বাকি—জামায়াতে ইসলামী, তার প্রতীক দাঁড়িপাল্লা।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামী ছাত্রশিবিরের জয়ের বিষয়টি তুলে ধরে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পরিবর্তনের বার্তা দিয়েছে, আগামীতেও সেই বার্তা জনগণ দেবে।’
চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানে দেড় হাজার শহীদ ও ৪০ হাজার আহতের কথা উল্লেখ করে জামায়াতের এই নেতা বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে নভেম্বরে গণভোট দিয়েই ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে।
উপজেলা হিন্দু কমিটির সভাপতি বাবু কৃষ্ণ নন্দীর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি দেব প্রসাদ মন্ডলের সঞ্চালনায় সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সহসভাপতি আবুল খায়ের, শোভনা ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি মো. মোসলেম উদ্দিন, শরাফপুর সর্বজনীন পূজা মন্দিরের গোঁসাই সাধু প্রমথ গাইন, ডুমুরিয়া উপজেলা হিন্দু কমিটির সহসভাপতি হরিদাস মন্ডল, কানাই লাল কর্মকার ও প্রশান্ত কুমার মন্ডল, কোষাধ্যক্ষ গৌতম কুমার মন্ডল, পল্লীশ্রী মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ সুভাষ সরদার, মাগুরখালী ইউনিয়ন সহসভাপতি সুজিৎ কুমার সরকার, ধামালিয়া ইউনিয়ন সভাপতি গোবিন্দ কুন্ডু, রুদাঘয়া ইউনিয়ন সভাপতি বিপ্লব সরকার, রঘুনাথপুর ইউনিয়ন সভাপতি কার্তিক চন্দ্র সরকার, খর্ণিয়া ইউনিয়ন সভাপতি নারায়ণ রাহা, মাগুরঘোনা ইউনিয়ন সভাপতি বিশ্বনাথ দাস, সাহস ইউনিয়ন সভাপতি তন্ময় মন্ডল, ভান্ডারপাড়া ইউনিয়ন সভাপতি নিরঞ্জন রায়, রংপুর ইউনিয়ন সভাপতি তরুন কুমার মন্ডল, শোভনা ইউনিয়ন হিন্দু কমিটির মহিলা সম্পাদক প্রিয়ংকা মন্ডল, মাগুরখালী ইউনিয়ন সভাপতি প্রদীপ কুমার সরকার, আটলিয়া ইউনিয়ন সভাপতি অনিমেষ মন্ডল, গুটুদিয়া ইউনিয়ন সভাপতি মনোরঞ্জন মন্ডল, শরাফপুর ইউনিয়ন সভাপতি গোবিন্দ কুমার বিশ্বাস, শোভনা ইউনিয়ন সভাপতি স্বদেশ হালদার, ডুমুরিয়া ইউনিয়ন সভাপতি অরুন কুমার আচার্য প্রমুখ।
হিন্দু সম্মেলন ঘিরে ডুমুরিয়ার ১৪টি ইউনিয়ন থেকে বর্ণিল মিছিল এসে জমায়েত হয়। সমাবেশ শেষে একটি গণমিছিল ডুমুরিয়া সদরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
হিন্দু সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, নতুন প্রজন্মের প্রথম ভোট দাঁড়িপাল্লার পক্ষে হোক। আগামী নির্বাচনে দাঁড়িপাল্লায় ভোট দিয়ে মিয়া গোলাম পরওয়ারকে সর্বোচ্চ ভোটে নির্বাচিত করতে সবার প্রতি তিনি আহ্বান জানান।
মতুয়া সংঘের সভাপতি সুদীপ্ত কুমার সুন্দর মন্ডল বলেন, ‘আমরা আর সংখ্যালঘু বলে পরিচয় শুনতে চাই না। আমরা সবাই বাংলাদেশি। স্বাধীনতার পর কোনো সরকার হিন্দুদের দাবিতে কাজ করেনি। এবার প্রমাণ হবে, হিন্দু মানেই একটি নির্দিষ্ট দল নয়।’