জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন বলেছেন, জাতির ঐতিহাসিক প্রয়োজনেই সংস্কার সম্পন্ন করতে হবে। এর ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেছেন, জাতীয়ভাবে রাজনীতির সংস্কারের ওপর নির্ভর করছে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের রূপরেখা। এটা ইচ্ছা-অনিচ্ছা বা ছোট-বড় বিষয় নয়, ঐতিহাসিক প্রয়োজনেই সংস্কার সম্পন্ন করতে হবে। বিদ্যমান নৈরাজ্যকর রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অবস্থার পরিবর্তনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কারের পদক্ষেপই হবে দেশের ভবিষ্যৎ।

আজ সোমবার বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নারীর প্রতি সহিংসতা, ধর্ষণ ও সন্ত্রাসের প্রতিবাদে এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠার দাবিতে জেএসডির এক বিক্ষোভ সমাবেশে শহীদ উদ্দিন মাহমুদ এ কথাগুলো বলেন।

সাম্প্রতিক সময়ে নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনার উল্লেখ করে জেএসডির সাধারণ সম্পাদক বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে অন্যায়, অবিচার ও নিরাপত্তার নৈরাশ্যমূলক সমাজব্যবস্থার উত্তরণ ঘটাতে হবে। নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা মনুষ্যত্বের মহিমাকে ভূলুণ্ঠিত করে। এই মনুষ্যত্ববিরোধী রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে ছুড়ে ফেলতে হবে। একটি মানবিক সমাজ এবং সুশাসন প্রতিটি ব্যক্তিকে পূর্ণ আত্মমর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করতে পারে। এ ধরনের রাষ্ট্রব্যবস্থা বিনির্মাণের লক্ষ্যেই জেএসডি অংশীদারত্বের গণতন্ত্রের রাজনৈতিক বন্দোবস্ত চায়।

প্রতিক্রিয়াশীল রাজনৈতিক তৎপরতার সমালোচনা করেন জেএসডির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি তানিয়া রব। তিনি বলেন, জীবনবিমুখ কোনো মতাদর্শ কিংবা ভাবধারা সমাজ গ্রহণ করবে না। সমাজবিচ্ছিন্ন হয়ে ইতিহাসের গতিপথের পরিবর্তন করা যায় না। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নারীকে ঘরে আবদ্ধ রাখার মতো কোনো প্রতিক্রিয়াশীল রাজনৈতিক মতবাদকে চাপিয়ে দেওয়া সম্ভব হবে না।

জেএসডির ঢাকা মহানগর পূর্ব শাখার আহ্বায়ক মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন দলের সহসভাপতি মোহাম্মদ সিরাজ মিয়া, কে এম জাবির, সৈয়দ বেলায়েত হোসেন, মোশারেফ হোসেন, মো.

মোস্তফা কামাল, মোশারেফ হোসেন, কামাল উদ্দিন মজুমদার প্রমুখ। সমাবেশ শেষে প্রেসক্লাবের সামনে থেকে একটি মিছিল পল্টন, বিজয়নগর এলাকা প্রদক্ষিণ করে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন ত ক জ এসড র

এছাড়াও পড়ুন:

ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের

ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল্লাহ আরিফকে (৩০) হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বাবা বশির উদ্দিন (মাস্টার) এই অভিযোগ করেন।

এ সময় বশির উদ্দিন বলেন, পুলিশ দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ার কোনো সুযোগ নেই; সেখানে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক।

এর আগে গত শনিবার পুলিশ সুপার শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের তথ্য অনুযায়ী অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সাইফুল্লাহ আরিফ মারা গেছেন।

সাইফুল্লাহ আরিফ ভোলা পৌরসভার কালীবাড়ি রোডে নবী মসজিদ গলি এলাকার বশির উদ্দিনের ছেলে। গত ৩১ আগস্ট ভোরে নিজ বাড়ির সামনে থেকে সাইফুল্লাহ আরিফের লাশ উদ্ধার করা হয়।

আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বশির উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে দুর্ঘটনায় নয়, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এর কিছু প্রমাণ আছে। আরিফের শরীরে একাধিক কাটা ও ভাঙা জখম ছিল, এমনকি হাতের রগ কাটা ছিল। পুলিশের দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সুযোগ নেই, কারণ, ছাদে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশ সুপার আমার ছেলেকে নেশাগ্রস্ত আখ্যা দিলেও তাঁর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া পুলিশ কীভাবে এমন কথা বলতে পারে। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

বশির উদ্দিন আরও বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফ কোনো ধরনের মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সে ছাত্রলীগের সহসভাপতি হলেও কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেনি। হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ সত্য গোপন করছে। সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে মামলাটি সিআইডি বা পিবিআইয়ের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বশির উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে অনেকের বিরোধ ছিল। তবে জমিজমার বিরোধ ও মাদক ব্যবসার বিরোধ নিয়ে তাঁর ছেলে খুন হয়নি। এগুলোর সঙ্গে সে জড়িত ছিল না।

শনিবার পুলিশ শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফের মৃত্যুর রহস্য উদ্‌ঘাটনে প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানা যায়, তিনি অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত অনুমান ১২টা ১৫ মিনিটে রাতের খাবার শেষে সাইফুল্লাহসহ পরিবারের সবাই নিজ নিজ ঘরে ঘুমাতে যান। ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ফজরের নামাজের জন্য বের হওয়ার সময় তাঁর বাবা বশির উদ্দীন (৭০) বাড়ির সামনে গেটের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলের মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরতহালে দেখা যায়, আরিফের মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আরিফ দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই ছাদে যেতেন। ঘটনার দিন রাতেও তিনি ছাদে ওঠেন এবং অসতর্কতাবশত রেলিংবিহীন অংশ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান।

পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে আজ দুপুরে পুলিশ সুপার শরীফুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত চলমান। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। তদন্তে তথ্য সংযোগ-বিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঢাকায় আওয়ামী লীগ ও দলটির অঙ্গসংগঠনের ১২ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার
  • ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের